০৭:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৫
কিছু রাজনৈতিক দলের পদক্ষেপ জনগণের অধিকার বিপন্ন করতে পারে: তারেক রহমান নাইজেরিয়া বন্যপ্রাণী পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির আইন পাস করল মাইক্রোসফট ও জি৪২ সংযুক্ত আরব আমিরাতে ডেটা-সেন্টার বিস্তার ঘোষণা বড় টেকের চাপের মুখে ইইউ এইআই আইন বাস্তবায়ন বিলম্বে বিবেচনায় বাংলাদেশ আমেরিকা থেকে গম কিনছে, বাণিজ্য উত্তেজনা কমাতে বড় পদক্ষেপ ব্লেক লাইভলির মামলায় সাক্ষী টেইলর সুইফট ও হিউ জ্যাকম্যান; ক্ষতিপূরণের দাবি ১৬১ মিলিয়ন ডলার ডাক রাশ্মিকার ‘দ্য গার্লফ্রেন্ড’ প্রথম দিনেই ব্যর্থতার মুখে ৩ দফা দাবি: শহীদ মিনারে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি গাজীপুরে তুলার গুদামে আগুন নিয়ন্ত্রণে

হিউএনচাঙ (পর্ব-১৫১)

পুরাতন বন্ধু ও সহপাঠীদের সঙ্গে আনন্দে দুই মাস কাটিয়ে তিনি আবার এক মাস আর কিছুদিন ভ্রমণ করে জলন্ধরে উপনীত হলেন।

প্রত্যাবর্তন

বিদ্বান সর্বত্র পূজ্যতে। হিউ এনচাঙের বিবরণ থেকে দেখা যায় যে, তিনি যে দেশেই গিয়েছিলেন, চীনা তুরুস্ক হন হিন্দু বৌদ্ধ ছোট-বড় রাজা-সম্রাট সকলেই তাঁর চরণে প্রণত হয়েছিলেন। আজকের দিনে একথা অদ্ভুত মনে হয়। একথাও মনে রাখা উচিত যে, এসব রাজারা সর্বদাই পরস্পর আক্রমণে, আত্মরক্ষায়, যুদ্ধবিগ্রহে রত থাকতেন। তবু বিদ্বানের প্রতি সম্মান প্রদর্শন প্রত্যেকেই অবশ্য কর্তব্য বলে মনে করতেন।

বিশেষতঃ সম্রাট হর্ষবর্ধনের সখ্যলাভ হওয়াতে আর্যাবর্তের সকল রাজাই হিউএনচাঙকে সাহায্য করতে আগ্রহান্বিত হলেন।এখন তাঁর প্রধান চিন্তার বিষয় ছিল যে, যেসমস্ত মূর্তি গ্রন্থ ইত্যাদি তিনি সংগ্রহ করেছিলেন, সেগুলি কী করে নিরাপদে চীন দেশ পর্যন্ত পৌঁছবে। উধিত নামে পঞ্চনদ প্রদেশের একজন রাজা হর্ষবর্ধনের মহামোক্ষপরিষদে যোগদান করতে এসেছিলেন।

এখন তিনিও তাঁর রাজ্যে ফিরছিলেন। তাঁর সঙ্গে অবশ্য তাঁর অনুচর সৈন্যসামন্ত ইত্যাদি ছিল। তিনি হিউ এনচাঙকে আর তাঁর মালপত্র ভারতের সীমান্ত পর্যন্ত নিরাপদে পৌঁছে দেওয়ার ভার নিলেন। সম্রাট নিজেও এইসব জিনিসের জন্যে প্রকাণ্ড একটা হাতী আর পথখরচের জন্যে তিন হাজার স্বর্ণমুদ্রা আর দশ হাজার রৌপ্যমুদ্রা দিলেন।

প্রয়াগ থেকে তাঁর যাত্রা করবার তিনদিন পরে কুমাররাজাকে, ধ্রুবভট্ট রাজাকে আর কয়েক শত অশ্বারোহী সৈন্য সঙ্গে করে সম্রাট আবার এসে হিউএনচাঙের কাছে শেষ বিদায় নিয়ে গেলেন। তাছাড়া তিনি হিউএনচাঙের সঙ্গে যাবার জন্যে চারজন ‘মহাতার’ নামক পথপ্রদর্শক-কর্মচারী নিযুক্ত করে দিলেন। আর তাদের সঙ্গে কতকগুলি পাতলা কাপড়ে লেখা চিঠি লাল মোহরাঙ্কিত করে দিলেন। এসব চিঠিতে, মহাচীনের সীমান্ত পর্যন্ত সমস্ত দেশের রাজাদের প্রতিই অনুরোধ ছিল যে, ধর্মগুরু ও তাঁর সঙ্গের জিনিসগুলির জন্যে যেন যানবাহন বন্দোবস্ত করা হয়।

৬৪৩ খৃস্টাব্দে সম্ভবতঃ বৈশাখমাসে হিউএনচাঙ প্রয়াগ ত্যাগ করেন। প্রথমে তিনি দক্ষিণে গিয়ে আর একবার কৌশাম্বী দর্শন করলেন। তার পর উধিত রাজার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমে চললেন। এক মাস আর কিছুদিন পরে আধুনিক ইটা জেলার বীরাসনে আবার উপস্থিত হয়ে এখানেই বর্ষাবাস করলেন। পুরাতন বন্ধু ও সহপাঠীদের সঙ্গে আনন্দে দুই মাস কাটিয়ে তিনি আবার এক মাস আর কিছুদিন ভ্রমণ করে জলন্ধরে উপনীত হলেন। জলন্ধরই এ সময়ে উত্তর ভারতের প্রাদেশিক রাজধানী ছিল। উধিত রাজা এখানেই বিদায় নিলেন, কিন্তু হিউ এনচাঙের সঙ্গে যাওয়ার জন্যে রক্ষীদল নিযুক্ত করে দিলেন।

(চলবে)

হিউএনচাঙ (পর্ব-১৫০)

হিউএনচাঙ (পর্ব-১৫০)

 

জনপ্রিয় সংবাদ

কিছু রাজনৈতিক দলের পদক্ষেপ জনগণের অধিকার বিপন্ন করতে পারে: তারেক রহমান

হিউএনচাঙ (পর্ব-১৫১)

০৯:০০:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫

পুরাতন বন্ধু ও সহপাঠীদের সঙ্গে আনন্দে দুই মাস কাটিয়ে তিনি আবার এক মাস আর কিছুদিন ভ্রমণ করে জলন্ধরে উপনীত হলেন।

প্রত্যাবর্তন

বিদ্বান সর্বত্র পূজ্যতে। হিউ এনচাঙের বিবরণ থেকে দেখা যায় যে, তিনি যে দেশেই গিয়েছিলেন, চীনা তুরুস্ক হন হিন্দু বৌদ্ধ ছোট-বড় রাজা-সম্রাট সকলেই তাঁর চরণে প্রণত হয়েছিলেন। আজকের দিনে একথা অদ্ভুত মনে হয়। একথাও মনে রাখা উচিত যে, এসব রাজারা সর্বদাই পরস্পর আক্রমণে, আত্মরক্ষায়, যুদ্ধবিগ্রহে রত থাকতেন। তবু বিদ্বানের প্রতি সম্মান প্রদর্শন প্রত্যেকেই অবশ্য কর্তব্য বলে মনে করতেন।

বিশেষতঃ সম্রাট হর্ষবর্ধনের সখ্যলাভ হওয়াতে আর্যাবর্তের সকল রাজাই হিউএনচাঙকে সাহায্য করতে আগ্রহান্বিত হলেন।এখন তাঁর প্রধান চিন্তার বিষয় ছিল যে, যেসমস্ত মূর্তি গ্রন্থ ইত্যাদি তিনি সংগ্রহ করেছিলেন, সেগুলি কী করে নিরাপদে চীন দেশ পর্যন্ত পৌঁছবে। উধিত নামে পঞ্চনদ প্রদেশের একজন রাজা হর্ষবর্ধনের মহামোক্ষপরিষদে যোগদান করতে এসেছিলেন।

এখন তিনিও তাঁর রাজ্যে ফিরছিলেন। তাঁর সঙ্গে অবশ্য তাঁর অনুচর সৈন্যসামন্ত ইত্যাদি ছিল। তিনি হিউ এনচাঙকে আর তাঁর মালপত্র ভারতের সীমান্ত পর্যন্ত নিরাপদে পৌঁছে দেওয়ার ভার নিলেন। সম্রাট নিজেও এইসব জিনিসের জন্যে প্রকাণ্ড একটা হাতী আর পথখরচের জন্যে তিন হাজার স্বর্ণমুদ্রা আর দশ হাজার রৌপ্যমুদ্রা দিলেন।

প্রয়াগ থেকে তাঁর যাত্রা করবার তিনদিন পরে কুমাররাজাকে, ধ্রুবভট্ট রাজাকে আর কয়েক শত অশ্বারোহী সৈন্য সঙ্গে করে সম্রাট আবার এসে হিউএনচাঙের কাছে শেষ বিদায় নিয়ে গেলেন। তাছাড়া তিনি হিউএনচাঙের সঙ্গে যাবার জন্যে চারজন ‘মহাতার’ নামক পথপ্রদর্শক-কর্মচারী নিযুক্ত করে দিলেন। আর তাদের সঙ্গে কতকগুলি পাতলা কাপড়ে লেখা চিঠি লাল মোহরাঙ্কিত করে দিলেন। এসব চিঠিতে, মহাচীনের সীমান্ত পর্যন্ত সমস্ত দেশের রাজাদের প্রতিই অনুরোধ ছিল যে, ধর্মগুরু ও তাঁর সঙ্গের জিনিসগুলির জন্যে যেন যানবাহন বন্দোবস্ত করা হয়।

৬৪৩ খৃস্টাব্দে সম্ভবতঃ বৈশাখমাসে হিউএনচাঙ প্রয়াগ ত্যাগ করেন। প্রথমে তিনি দক্ষিণে গিয়ে আর একবার কৌশাম্বী দর্শন করলেন। তার পর উধিত রাজার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমে চললেন। এক মাস আর কিছুদিন পরে আধুনিক ইটা জেলার বীরাসনে আবার উপস্থিত হয়ে এখানেই বর্ষাবাস করলেন। পুরাতন বন্ধু ও সহপাঠীদের সঙ্গে আনন্দে দুই মাস কাটিয়ে তিনি আবার এক মাস আর কিছুদিন ভ্রমণ করে জলন্ধরে উপনীত হলেন। জলন্ধরই এ সময়ে উত্তর ভারতের প্রাদেশিক রাজধানী ছিল। উধিত রাজা এখানেই বিদায় নিলেন, কিন্তু হিউ এনচাঙের সঙ্গে যাওয়ার জন্যে রক্ষীদল নিযুক্ত করে দিলেন।

(চলবে)

হিউএনচাঙ (পর্ব-১৫০)

হিউএনচাঙ (পর্ব-১৫০)