০৭:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ৪১)

গত শতকের পঞ্চাশ দশক থেকে তারা প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হয় এবং একসময় প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে তারা হারিয়ে যায়

চামেলিবাগ

দক্ষিণ শান্তিনগরে চামেলিবাগ, ছোট একটা মহল্লা, খুব সম্ভব বিশ শতকের শুরুতে যখন পল্টন গড়ে ওঠে, তখন এখানেও দু’একজন করে বসতি বাঁধেন। তারাই বোধহয় এর নাম দেন চামেলিবাগ।

চিনাপট্টি

পৃথিবীর সব দেশেই আছে ‘চায়না টাউন’। জীবিকার টানে অষ্টাদশ শতক থেকেই চিনারা পৃথিবীময় ছড়িয়ে পড়েন, বিশেষ করে উনিশ শতকে। আমার ধারণা ক্যান্টন বা আশেপাশের এলাকার চিনারাই বেশি দেশ ছেড়েছিলেন। কারণ, ক্যান্টন ম্যাকাও এই পথেই বাণিজ্য বেশি হতো সমুদ্রের কারণে।

ঢাকায়ও চিনারা এসেছিলেন। কিন্তু কোন সময় থেকে এসেছিলেন তা নির্ণয় করা যায়নি। খুব সম্ভব উনিশ শতকের শুরু থেকেই তাঁদের আগমন। চিনা অভিবাসীরা সবসময় একসঙ্গে থাকতে ভালোবাসেন। এখানেও ব্যতিক্রম হয়নি।

জনৈক চিনা কারিগর জুতা তৈরি করছেন

মিটফোর্ড থেকে যে রাস্তা গেছে নলগোলার দিকে সে রাস্তার শুরুতেই তারা বসবাস করতেন। এই মহল্লার নাম ছিল চিনাপট্টি। গত শতকের ষাটের দশকে দেখেছি তখনও চিনাপট্টি ছিল, তবে চিনাদের সংখ্যা কমে গিয়েছিল।

চিনাপট্টি বিখ্যাত ছিল জুতার জন্য। নিজেদের নকশা অনুযায়ী যেমন তারা জুতা বানাতো, তেমনি মাপমতো জুতা বানিয়ে দিত। জুতার রমরমা ব্যবসা ছিল চিনাদের। তাদের সঙ্গে ঢাকার সাধারণের খুব একটা যোগাযোগ ছিল না।

নিজেদের ভাষা-সংস্কৃতি নিয়ে জোটবদ্ধ হয়ে তারা বসবাস করত। গত শতকের পঞ্চাশ দশক থেকে তারা প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হয় এবং একসময় প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে তারা হারিয়ে যায়। চিনাপট্টি নামটিও এখন লুপ্ত।

ছাপড়া মসজিদ

আজিমপুরের পাশে ছাপড়া মসজিদ। আয়েশা বেগম লিখেছেন, সেখানে হোসাইন কাশেমী নামে একজন দেওবন্দ থেকে পাশ করে ঢাকা আসেন। আজিমপুর দায়রা শরিফ থেকে তাঁকে এক খণ্ড জমি দেওয়া হয়।

ছাপড়া মসজিদ

সেখানে ১৯৪১ সালে তিনি ছাপড়ার ঘরে (বাঁশের বেড়া) একটি মসজিদ প্রতিষ্ঠিত করেন। সে থেকেই এটির নাম হয়ে যায়। ছাপড়া মসজিদ। গত শতকের ষাটের দশকে স্থানীয়দের দানে এখানে মিনার শোভিত দোতলা মসজিদ করা হয়।

(চলবে)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ৪০)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ৪০)

 

দুর্ভাগ্যজনক মৃত্যু

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ৪১)

০৭:০০:৩৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫

গত শতকের পঞ্চাশ দশক থেকে তারা প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হয় এবং একসময় প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে তারা হারিয়ে যায়

চামেলিবাগ

দক্ষিণ শান্তিনগরে চামেলিবাগ, ছোট একটা মহল্লা, খুব সম্ভব বিশ শতকের শুরুতে যখন পল্টন গড়ে ওঠে, তখন এখানেও দু’একজন করে বসতি বাঁধেন। তারাই বোধহয় এর নাম দেন চামেলিবাগ।

চিনাপট্টি

পৃথিবীর সব দেশেই আছে ‘চায়না টাউন’। জীবিকার টানে অষ্টাদশ শতক থেকেই চিনারা পৃথিবীময় ছড়িয়ে পড়েন, বিশেষ করে উনিশ শতকে। আমার ধারণা ক্যান্টন বা আশেপাশের এলাকার চিনারাই বেশি দেশ ছেড়েছিলেন। কারণ, ক্যান্টন ম্যাকাও এই পথেই বাণিজ্য বেশি হতো সমুদ্রের কারণে।

ঢাকায়ও চিনারা এসেছিলেন। কিন্তু কোন সময় থেকে এসেছিলেন তা নির্ণয় করা যায়নি। খুব সম্ভব উনিশ শতকের শুরু থেকেই তাঁদের আগমন। চিনা অভিবাসীরা সবসময় একসঙ্গে থাকতে ভালোবাসেন। এখানেও ব্যতিক্রম হয়নি।

জনৈক চিনা কারিগর জুতা তৈরি করছেন

মিটফোর্ড থেকে যে রাস্তা গেছে নলগোলার দিকে সে রাস্তার শুরুতেই তারা বসবাস করতেন। এই মহল্লার নাম ছিল চিনাপট্টি। গত শতকের ষাটের দশকে দেখেছি তখনও চিনাপট্টি ছিল, তবে চিনাদের সংখ্যা কমে গিয়েছিল।

চিনাপট্টি বিখ্যাত ছিল জুতার জন্য। নিজেদের নকশা অনুযায়ী যেমন তারা জুতা বানাতো, তেমনি মাপমতো জুতা বানিয়ে দিত। জুতার রমরমা ব্যবসা ছিল চিনাদের। তাদের সঙ্গে ঢাকার সাধারণের খুব একটা যোগাযোগ ছিল না।

নিজেদের ভাষা-সংস্কৃতি নিয়ে জোটবদ্ধ হয়ে তারা বসবাস করত। গত শতকের পঞ্চাশ দশক থেকে তারা প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হয় এবং একসময় প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে তারা হারিয়ে যায়। চিনাপট্টি নামটিও এখন লুপ্ত।

ছাপড়া মসজিদ

আজিমপুরের পাশে ছাপড়া মসজিদ। আয়েশা বেগম লিখেছেন, সেখানে হোসাইন কাশেমী নামে একজন দেওবন্দ থেকে পাশ করে ঢাকা আসেন। আজিমপুর দায়রা শরিফ থেকে তাঁকে এক খণ্ড জমি দেওয়া হয়।

ছাপড়া মসজিদ

সেখানে ১৯৪১ সালে তিনি ছাপড়ার ঘরে (বাঁশের বেড়া) একটি মসজিদ প্রতিষ্ঠিত করেন। সে থেকেই এটির নাম হয়ে যায়। ছাপড়া মসজিদ। গত শতকের ষাটের দশকে স্থানীয়দের দানে এখানে মিনার শোভিত দোতলা মসজিদ করা হয়।

(চলবে)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ৪০)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ৪০)