‘কথিত আছে কৌশাম্বীরাজ উদয়ন বুদ্ধের জীবিতাবস্থায় এই মূর্তি নির্মাণ করেছিলেন। বুদ্ধের নির্বাণের পর মূর্তিটা আকাশে উড়ে এখানে এসেছে।
‘এখন আমার সঙ্গের বড় হাতীটা জলে নষ্ট হওয়ায় আমি যেসব নানা গ্রন্থ নিয়ে এসেছি সেগুলির বহনের ব্যবস্থা এখনো করতে পারি নি। বন্দোবস্ত যদি না হয়, তা হলে আমি একাই অগ্রসর হয়ে সম্রাটের কাছে উপস্থিত হতে অভিলাষ করি। এই উদ্দেশ্যে কাউচাঙ (তুরফান) প্রদেশের মা-হুয়ান্-চি নামক একজন গৃহস্থকে বণিকবাহিনীর সঙ্গে পাঠাচ্ছি। সে আপনার সমীপে এই পত্র সভক্তি নিবেদন করবে আর আমার অভিপ্রায় জ্ঞাপন করবে।’
এই পত্র পাঠাবার সাত-আট মাস পরে সম্রাটের সানুগ্রহ প্রত্যুত্তর এল। সম্রাট লিখেছেন-
‘যে গুরু ধর্মপুস্তকের অন্বেষণে গিয়েছিলেন, তিনি এখন প্রত্যাগমন করছেন জেনে আমি অপরিসীম আনন্দ বোধ করছি। আমার অনুরোধ, আপনি শীঘ্রই এসে আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। এ রাজ্যের যে ধর্মযাজকর। পুণ্যভাষা (সংস্কৃত) জানেন আর ধর্মগ্রন্থের অর্থ বুঝতে পারেন তাঁদেরও এখানে এসে আপনার সঙ্গে দেখা করতে আদেশ দিয়েছি। খোটানের ও অন্যস্থানের কর্মচারীদের আদেশ করেছি তাঁরা আপনার প্রয়োজনমত পথপ্রদর্শক আর যানবাহন সরবরাহ করবে। মরুভূমির ভিতর আপনাকে পথপ্রদর্শন করে নিয়ে আসতে টুনহুয়াঙের শাসকদের আদেশ করেছি।’
এই পত্র পাওয়ায় হিউএনচাঙ আর কালবিলম্ব না করে বেরিয়ে পড়লেন।খোটান থেকে ষাট মাইল পুবে ‘ভীমা’ নগরে তিনি একটা চন্দন কাঠের ত্রিশ ফুটেরও বেশি উঁচু দণ্ডায়মান বুদ্ধমূর্তি দেখেছিলেন। এই মূর্তি অলৌকিক গুণসম্পন্ন। ‘কথিত আছে কৌশাম্বীরাজ উদয়ন বুদ্ধের জীবিতাবস্থায় এই মূর্তি নির্মাণ করেছিলেন। বুদ্ধের নির্বাণের পর মূর্তিটা আকাশে উড়ে এখানে এসেছে। আর শাক্যের ধর্ম পৃথিবী থেকে লোপ পেলে এটা দানবপুরীতে প্রবেশ করবে।’
(চলবে)