নবাব সাহেবের মেনেজার একজন ইউরুপীয়ান সাহেব আসিল, তাহাদিগকে অনেক প্রবোধ দিয়া নবাব সাহেবের বাড়িতে লইয়া গেল, আমরাও চলিয়া আসিলাম।
জেমস টেলর
ঢাকা নিয়ে গবেষণা করতে গেলে প্রাথমিক আকর হিসেবে জেমস টেলরের এ স্কেচ অব দি টপোগ্রাফি অ্যান্ড স্ট্যাটিটকস অফ ঢাকার শরণাপন্ন হতেই হবে। তিনি ছিলেন কোম্পানির মেডিকেল সার্ভিসের সদস্য। ১৮৩০ সালে তিনি ঢাকায় আসেন। ১৮৩৮ পর্যন্ত ছিলেন ঢাকার সিভিল সার্জন। ডাক্তার হিসেবে পেশাগত কাজ ছাড়াও ঢাকার বিভিন্ন সমাজকর্মে ছিলেন জড়িত।
জেমস টেলরের বইয়ের নামপত্র
ইত্যাদিকে বলিল- জলদি বাম্বু লাও। তখন তাহারা বাঁশ আনিয়া ঐ গাছে লাগাইয়া দিল এবং সাহেব ঐ উড়নেওয়ালী মিসকে বলিতে লাগিল, মেম সাহেব ঐ বাম্বু অবলম্বন করিয়া গাছ হইতে নামিয়া পড়। কিন্তু মিস্ বলিল, আমার মা ও ভাইকে আনাও, রশি ও লেন্টন আনাও নতুবা আমি নামিতে পারিব না। কিন্তু পুলিশ সাহেব তাহাকে ধমকাইয়া জোর গলায় বলিতে লাগিল, বাম্বু মজবুত হেয়, কুছ পরওয়া নেই, উতার যাও, হাম লোক নিচে হেয়, তখন ঐ উড়নেওয়ালী মিস বাঁশ অবলম্বন করিয়া নামিতে আরম্ভ করিল। অর্দ্ধেক বাম্বু নামিলে পর বাম্বু ভাঙ্গিয়া গেল, ও মিস পাক্কা ভূমিতে পড়িয়া প্রাণত্যাগ করিল।
জনসাধারণ হাহাকার করিতে লাগিল ও পুলিশ সাহেব পলাইল। শেষে তাহার মা ও ভাই আসিয়া ক্রন্দন করিতে লাগিল ও পুলিশ সাহেবকে গালাগালি করিতে লাগিল, ও তাহাকে জোর করিয়া যে নামাইয়াছে তাহার প্রমাণ সংগ্রহ করিতে লাগিল পুলিশ সাহেবের বিরুদ্ধে মোকদ্দমা আনিব বলিতে লাগিল। ইতিমধ্যে নবাব সাহেবের মেনেজার একজন ইউরুপীয়ান সাহেব আসিল, তাহাদিগকে অনেক প্রবোধ দিয়া নবাব সাহেবের বাড়িতে লইয়া গেল, আমরাও চলিয়া আসিলাম।
ও যখন আমরা চুড়িহাট্টার বাড়ীতে খাইতে বসিলাম তখন আমাদের পরিচিত বানিয়াচঙ্গ নিবাসী আমিনউদ্দিন মিয়া বলিতে লাগিলেন যে, যে ১০,০০০ দশ হাজার টাকার জন্য আইজ মেয়েটি মারা পড়িল, যদি আমাকে তাহার মা ভাই ঐ মেয়েটিকে দিয়া দিত তবে আমি ঐ ১০,০০০ দশ হাজার টাকা দিতাম তাহারও প্রাণ রক্ষা হইত, আমরা বলিলাম, বাস্তবিক ঐ মেয়েটি যেরুপ সুন্দরী ইউরুপীয়ানদিগের মধ্যেও সচরাচর এরূপ সুন্দরী দেখা যায় না। এই ইউরুপীয়ান লেডিকে প্রাপ্ত হইলে ১০,০০০ দশ হাজার টাকা কোন ছার, নবাব সাহেব যদি তাহার ভোগবিলাসের জন্য ২০,০০০ বিশ হাজার টাকা দিয়াও ঐ ইংলিশ লেডিকে রাখিয়া ফেলিতেন, তাহা হইলে তাহার নাম অনেক দূর পর্যন্ত যাইত ও ঐ লেডির জীবন বিনাশ না হইয়া বাঁচিয়া থাকিত। এ লেডির মা ভাই পুলিশ সাহেবের উপর মোকদ্দমা করিবে ও নবাব সাহেব মধ্যস্থ হইয়া আপোষে মীমাংসা করিয়া দিবেন বলিয়া ও তাহাদিগকে টাকা দিয়া বাধ্য করিবেন বলিয়া প্রকাশ হইয়াছিল। টাকা অবশ্য পুলিশ সাহেব হইতে লইয়াই দিবেন সকলে অনুমান করিয়াছিল।”
(চলবে)