মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক হিসাবে ২০২৫ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) যুক্তরাষ্ট্রের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন (জিডিপি) বার্ষিক হারে ৩% বেড়েছে। প্রথম প্রান্তিকে ০.৫% সংকোচনের পর এই ঘুরে দাঁড়ানো অর্থনীতি আবার গতিপথে ফিরেছে, যদিও ধীর গতিতে। ভোক্তা ব্যয় ও বাণিজ্য ঘাত-প্রতিঘাত প্রবৃদ্ধির মূল চালক হলেও ব্যবসায়িক বিনিয়োগ, শ্রমবাজার ও মূল্যস্ফীতিতে মিশ্র সংকেত উঠেছে।
বাণিজ্য বৃদ্ধির প্রধান সূত্র
- • দুই প্রান্তিক মিলিয়ে চলতি বছরের গড় প্রবৃদ্ধি ১.২%,যা ২০২৪ সালের ২.৫% গড় থেকে স্পষ্টভাবে কম।
• আমদানি-রপ্তানির অস্বাভাবিক দোলাচল দ্বিতীয় প্রান্তিকের শিরোনামগত জিডিপিতে প্রায় ৫ শতাংশীয় পয়েন্ট যোগ করেছে—১৯৪৭ সালের পর সর্বোচ্চ।
• ট্রাম্প প্রশাসনের পরিবর্তনশীল শুল্ক-নীতি ব্যবসায়িক পরিকল্পনায় বড় অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে।
ভোক্তা ব্যয়ে মিশ্র চিত্র
- • চাকরি বাজার মজবুত থাকায় ভোক্তা ব্যয় ১.৪% বেড়েছে,যা প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় দ্রুততর।
• প্রোক্টার অ্যান্ড গ্যাম্বলসহ খুচরা-পণ্য প্রস্তুতকারীরা বলছে, ক্রেতারা ঘরে মজুত পণ্য শেষ করে নতুন কেনাকাটা বিলম্বিত করছেন।
• ফেডের ‘ফাইনাল সেলস টু প্রাইভেট ডমেস্টিক পারচেজার্স’ মাত্র ১.২% বেড়েছে—২০২২ সালের শেষ দিকের পর সর্বনিম্ন।
বিনিয়োগ ও শিল্প-খাতের চাপ
- • ভবন ও যন্ত্রপাতিতে ব্যবসায়িক বিনিয়োগের দুর্বলতা সামগ্রিক প্রবৃদ্ধি কমিয়েছে।
• স্টিভেন ম্যাডেন, কার্টারসের মতো কোম্পানিগুলি শুল্ক খরচ ও নীতিগত অনিশ্চয়তায় মুনাফা সংকোচনের ইঙ্গিত দিয়েছে।
সুদ, মূল্যস্ফীতি ও ফেডের অবস্থান
- • ফেডারেল রিজার্ভ স্বল্পমেয়াদি সুদ ৪.২৫%-৪.৫০% পর্যায়ে অপরিবর্তিত রেখেছে।
• খাদ্য-জ্বালানি বাদে মূল্যস্ফীতি বার্ষিক ২.৫%—কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ২% লক্ষ্যমাত্রার ওপরে।
• ফেড বলছে, বছরের প্রথমার্ধে অর্থনৈতিক তৎপরতা মন্থর হয়েছে, তাই নীতি-নির্ধারণে তারা ‘সতর্ক’ থাকবে।
শ্রমবাজার ও আবাসন
- • বেসরকারি খাতে চাকরি সৃষ্টির গতি কমছেই;জুলাইয়ের শ্রমবাজার প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে শিগগিরই।
• উচ্চ সুদের চাপ আবাসন-খাতকে ধীর করেছে; এতে সামগ্রিক চাহিদা আরও দুর্বল হচ্ছে।
সামনে দৃষ্টি
পিএনসি-এর প্রধান অর্থনীতিবিদ গাস ফউচার মনে করেন, অর্থনীতি এখনও ‘সমুন্নত কিন্তু মন্থর’ গতিতে বাড়ছে। বাণিজ্য বিরোধ, অভিবাসন সীমিতকরণ ও উচ্চ ঋণ-খরচ বছরের বাকি সময় প্রবৃদ্ধির গতি কমাতে পারে। অথচ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ৩% প্রবৃদ্ধি উদযাপন করে ফেডকে সুদ কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে মানুষ গৃহঋণ পুনঃনির্ধারণ ও নতুন বাড়ি কিনতে পারে।