১২:১৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
সপ্তাহের প্রথম দিনে পুঁজিবাজারে মিশ্র চিত্র, ডিএসইতে সূচক কমেছে, সিএসইতে বেড়েছে সোমবার মনোনয়ন জমার শেষ দিন, জমা দিয়েছে মাত্র ১ শতাংশ প্রার্থী  ঢাকা-১৭ ও বগুড়া-৬ আসনে মনোনয়নপত্রে স্বাক্ষর করলেন তারেক রহমান বৃহত্তর ঐক্যের স্বার্থে জামায়াতের নেতৃত্বাধীন জোটে এনসিপি: নাহিদ ইসলাম ভারতে সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতায় গভীর উদ্বেগ ঢাকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য থেকে সরে গেলেও এনসিপি ছাড়ছি না: সামান্থা শিশুদের বিরুদ্ধে সহিংসতার ভয়াবহ ঊর্ধ্বগতি, ৬৩ শতাংশ সংবাদ নেতিবাচক: গবেষণা জানুয়ারি ৩-এর মহাসমাবেশ স্থগিত করল জামায়াতে ইসলামী ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ–পাকিস্তান সম্পর্ক জোরদারে বাড়তি যোগাযোগ ও বিনিয়োগের আহ্বান রাজনৈতিক দলের ভেতরে ফ্যাসিবাদী সহযোগী ও সন্ত্রাসীদের অনুপ্রবেশ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

সিরামিকের প্রতি ফ্যাশনপ্রেমী পুরুষদের আকর্ষণ

আমেরিকার তরুণ, ফ্যাশন-সচেতন পুরুষদের মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে হাতে তৈরি দামি সিরামিক ও মৃৎশিল্পের প্রতি আগ্রহ বেড়েছে। বইয়ের তাক, শোকেস থেকে শুরু করে ডাইনিং টেবিল পর্যন্ত—প্রিমিয়াম মাটির জিনিসপত্র এখন তাদের জীবনযাপনের অংশ হয়ে উঠছে। পোশাকের দোকানগুলোতেও ওয়ালেট বা বেল্টের মতোই সিরামিক প্রদর্শন করা হচ্ছে, যা পুরুষদের জীবনধারায় নতুন ধারা যুক্ত করেছে।

পরিবর্তিত পুরুষ মানসিকতা

এই আগ্রহের পেছনে রয়েছে গৃহসজ্জা ও নান্দনিকতার প্রতি পুরুষদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন। এক সময় সিরামিক সংগ্রহ পুরুষদের কাছে অস্বাভাবিক মনে হলেও এখন এটি শিল্প ও সৌন্দর্যের সঙ্গে যুক্ত একটি ব্যক্তিগত শখ। সান ফ্রান্সিসকোর ল্যান্ডন গেরিটস, যিনি উচ্চমানের শিল্পী-তৈরি সিরামিক সংগ্রহ করেন, বলেন—এটি একই সঙ্গে কার্যকরী এবং দৃষ্টিনন্দন, যা ঘরে দীর্ঘস্থায়ী সৌন্দর্য আনে।

বাজারে চাহিদা ও বিক্রির উত্থান

যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে পুরুষদের পোশাকের দোকানগুলোতে এখন হাতে তৈরি বাটি, কাপ, ফুলদানি বিক্রি হচ্ছে। কোলোরাডোর বোল্ডারে অবস্থিত ‘ক্যানো ক্লাব’ জানিয়েছে, ২০২৫ সালে তাদের সিরামিক বিক্রি বেড়েছে ৭৫ শতাংশ। নিউইয়র্কের ‘কিথ’ দোকানে ৩৭৫ ডলারের হাতে তৈরি ক্র্যাকল ফুলদানি থেকে শুরু করে ১,১৫০ ডলারের ফরাসি মাটির ক্যান্ডেল ভেসেল বিক্রি হচ্ছে। এসব জিনিস শুধু ফ্যাশন নয়, বরং পুরুষদের রুচি ও স্বকীয়তা প্রকাশের মাধ্যম হয়ে উঠছে।

নতুন জীবনধারার প্রতিফলন

ডিজাইনার ইভান কিনোরি বলেন, পোশাক পুরুষদের গৃহসজ্জার দিকে আগ্রহী হওয়ার একটি মাধ্যম। তার দোকানে জাপান ও নিউ মেক্সিকোর শিল্পীদের তৈরি ৬৫ ডলার থেকে ১,৫০০ ডলারের সিরামিক পাওয়া যায়। এগুলো তার মিনিমালিস্ট পোশাকের ডিজাইনের সঙ্গে মিল রেখে টেক্সচার ও প্রাকৃতিক রঙে তৈরি, যা ‘ওয়াবি-সাবি’ নান্দনিকতাকে ফুটিয়ে তোলে।

গ্যালারি ও শিল্পীদের বাজারে প্রভাব

শুধু ফ্যাশন দোকানই নয়, লস অ্যাঞ্জেলসের কোর্টনি ডানকান, ভারমন্টের জেরেমি আইয়ার্স এবং শিকাগোর উচ্চমানের খুচরা বিক্রেতা ‘জেসন হোম’-এর মতো শিল্পী ও দোকানেও পুরুষ ক্রেতা বাড়ছে। কানেকটিকাটের ওয়াশিংটনে অবস্থিত ‘প্লেইন গুডস’ জানিয়েছে, ২০২৪ সালে যেখানে ক্রেতাদের ৩০ শতাংশ ছিল পুরুষ, ২০২৫ সালে তা বেড়ে ৫০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

কোভিড-১৯ পরবর্তী পরিবর্তন

বিশেষজ্ঞদের মতে, কোভিড-১৯ মহামারির সময় ঘর সাজানোর প্রতি পুরুষদের আগ্রহ বাড়তে শুরু করে। এখন তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পুরুষদের পরিচয়ের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ব্যক্তিগত রুচি ও স্বকীয়তার প্রতীক হিসেবে প্রিমিয়াম মাটির জিনিসের চাহিদা বাড়ছে।

ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা

সান ফ্রান্সিসকোর কপিরাইটার অ্যালেক্স অ্যাপলগেট জানান, তার সিরামিক সংগ্রহ ভিন্নধর্মী ও ব্যতিক্রমী, যদিও কখনও ভেঙে গেলে তা আবার জোড়া লাগিয়ে ব্যবহার করেন—যেমন গাছের স্ট্যান্ড হিসেবে। তার মতে, এটি জীবনে এক ধরনের ‘রোমান্টিক বিলাসিতা’ যোগ করে, যা দৈনন্দিন জীবনকে আরও সুন্দর করে তোলে।

সিরামিক এখন শুধু একটি শিল্পকর্ম বা গৃহস্থালির সামগ্রী নয়, বরং আধুনিক পুরুষদের রুচি, নান্দনিকতা ও জীবনদর্শনের প্রতিফলন। এই প্রবণতা ভবিষ্যতে আরও প্রসারিত হবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ী ও শিল্পীরা।

জনপ্রিয় সংবাদ

সপ্তাহের প্রথম দিনে পুঁজিবাজারে মিশ্র চিত্র, ডিএসইতে সূচক কমেছে, সিএসইতে বেড়েছে

সিরামিকের প্রতি ফ্যাশনপ্রেমী পুরুষদের আকর্ষণ

০৫:৪৬:১৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫

আমেরিকার তরুণ, ফ্যাশন-সচেতন পুরুষদের মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে হাতে তৈরি দামি সিরামিক ও মৃৎশিল্পের প্রতি আগ্রহ বেড়েছে। বইয়ের তাক, শোকেস থেকে শুরু করে ডাইনিং টেবিল পর্যন্ত—প্রিমিয়াম মাটির জিনিসপত্র এখন তাদের জীবনযাপনের অংশ হয়ে উঠছে। পোশাকের দোকানগুলোতেও ওয়ালেট বা বেল্টের মতোই সিরামিক প্রদর্শন করা হচ্ছে, যা পুরুষদের জীবনধারায় নতুন ধারা যুক্ত করেছে।

পরিবর্তিত পুরুষ মানসিকতা

এই আগ্রহের পেছনে রয়েছে গৃহসজ্জা ও নান্দনিকতার প্রতি পুরুষদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন। এক সময় সিরামিক সংগ্রহ পুরুষদের কাছে অস্বাভাবিক মনে হলেও এখন এটি শিল্প ও সৌন্দর্যের সঙ্গে যুক্ত একটি ব্যক্তিগত শখ। সান ফ্রান্সিসকোর ল্যান্ডন গেরিটস, যিনি উচ্চমানের শিল্পী-তৈরি সিরামিক সংগ্রহ করেন, বলেন—এটি একই সঙ্গে কার্যকরী এবং দৃষ্টিনন্দন, যা ঘরে দীর্ঘস্থায়ী সৌন্দর্য আনে।

বাজারে চাহিদা ও বিক্রির উত্থান

যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে পুরুষদের পোশাকের দোকানগুলোতে এখন হাতে তৈরি বাটি, কাপ, ফুলদানি বিক্রি হচ্ছে। কোলোরাডোর বোল্ডারে অবস্থিত ‘ক্যানো ক্লাব’ জানিয়েছে, ২০২৫ সালে তাদের সিরামিক বিক্রি বেড়েছে ৭৫ শতাংশ। নিউইয়র্কের ‘কিথ’ দোকানে ৩৭৫ ডলারের হাতে তৈরি ক্র্যাকল ফুলদানি থেকে শুরু করে ১,১৫০ ডলারের ফরাসি মাটির ক্যান্ডেল ভেসেল বিক্রি হচ্ছে। এসব জিনিস শুধু ফ্যাশন নয়, বরং পুরুষদের রুচি ও স্বকীয়তা প্রকাশের মাধ্যম হয়ে উঠছে।

নতুন জীবনধারার প্রতিফলন

ডিজাইনার ইভান কিনোরি বলেন, পোশাক পুরুষদের গৃহসজ্জার দিকে আগ্রহী হওয়ার একটি মাধ্যম। তার দোকানে জাপান ও নিউ মেক্সিকোর শিল্পীদের তৈরি ৬৫ ডলার থেকে ১,৫০০ ডলারের সিরামিক পাওয়া যায়। এগুলো তার মিনিমালিস্ট পোশাকের ডিজাইনের সঙ্গে মিল রেখে টেক্সচার ও প্রাকৃতিক রঙে তৈরি, যা ‘ওয়াবি-সাবি’ নান্দনিকতাকে ফুটিয়ে তোলে।

গ্যালারি ও শিল্পীদের বাজারে প্রভাব

শুধু ফ্যাশন দোকানই নয়, লস অ্যাঞ্জেলসের কোর্টনি ডানকান, ভারমন্টের জেরেমি আইয়ার্স এবং শিকাগোর উচ্চমানের খুচরা বিক্রেতা ‘জেসন হোম’-এর মতো শিল্পী ও দোকানেও পুরুষ ক্রেতা বাড়ছে। কানেকটিকাটের ওয়াশিংটনে অবস্থিত ‘প্লেইন গুডস’ জানিয়েছে, ২০২৪ সালে যেখানে ক্রেতাদের ৩০ শতাংশ ছিল পুরুষ, ২০২৫ সালে তা বেড়ে ৫০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

কোভিড-১৯ পরবর্তী পরিবর্তন

বিশেষজ্ঞদের মতে, কোভিড-১৯ মহামারির সময় ঘর সাজানোর প্রতি পুরুষদের আগ্রহ বাড়তে শুরু করে। এখন তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পুরুষদের পরিচয়ের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ব্যক্তিগত রুচি ও স্বকীয়তার প্রতীক হিসেবে প্রিমিয়াম মাটির জিনিসের চাহিদা বাড়ছে।

ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা

সান ফ্রান্সিসকোর কপিরাইটার অ্যালেক্স অ্যাপলগেট জানান, তার সিরামিক সংগ্রহ ভিন্নধর্মী ও ব্যতিক্রমী, যদিও কখনও ভেঙে গেলে তা আবার জোড়া লাগিয়ে ব্যবহার করেন—যেমন গাছের স্ট্যান্ড হিসেবে। তার মতে, এটি জীবনে এক ধরনের ‘রোমান্টিক বিলাসিতা’ যোগ করে, যা দৈনন্দিন জীবনকে আরও সুন্দর করে তোলে।

সিরামিক এখন শুধু একটি শিল্পকর্ম বা গৃহস্থালির সামগ্রী নয়, বরং আধুনিক পুরুষদের রুচি, নান্দনিকতা ও জীবনদর্শনের প্রতিফলন। এই প্রবণতা ভবিষ্যতে আরও প্রসারিত হবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ী ও শিল্পীরা।