৩০০ খ্রীষ্টপূর্বে লিখিত জৈন সাহিত্য স্থানাঙ্গ সূত্রে অজ্ঞাতরাশিকে “যাবৎ তাবৎ” বলা হয়েছে।
সহগ-সহগ বলতে যা বোঝায় প্রাচীন ভারতের গণিতশাস্ত্রে ঠিক সেরকম দেখা যায় না। তবে ব্রহ্মগুপ্ত কখনও কখনও সহগকে গুণক, গুণকার ইত্যাদি বলেছেন। ব্রাহ্মস্ফুট সিদ্ধান্তের নানা অধ্যায়ে এর উল্লেখ থাকতে দেখা যায়। যেমন বলা হয়েছে অন্যত্র “গুণকে প্রথমং গুণক গুণাদিষ্ট যুত পৃথুদকস্বামী অবশ্য সহগকে অঙ্ক বা প্রকৃতি বলেছেন। এগুলি শ্রীপতি ও দ্বিতীয় ভাস্করাচার্যের (১১৫০ খ্রীঃ) লেখার মধ্যে দেখা যায়।
অজ্ঞাতরাশি-আধুনিক বীজগণিতে অজ্ঞাতরাশিকে x, y, z প্রভৃতি প্রতীক চিহ্ন দিয়ে লেখা হয়। কিন্তু প্রাচীন ভারতবর্ষে ঠিক এভাবে লেখা হত না। ৩০০ খ্রীষ্টপূর্বে লিখিত জৈন সাহিত্য স্থানাঙ্গ সূত্রে অজ্ঞাতরাশিকে “যাবৎ তাবৎ” বলা হয়েছে। বাক্শালীর পাণ্ডুলিপিতে যদৃচ্ছা, বাঞ্ছা, কামিক প্রভৃতি শব্দ অজ্ঞাত-রাশির পরিবর্তে ব্যবহৃত হতে দেখা যায়। প্রথম আর্যভট অবশ্য অজ্ঞাতরাশিটিকে “গুলিকা” বলেছেন।
যেমন ধরা যাক গণিতপদের ৩০ তম শ্লোকে তিনি বলেছেন “গুলিকান্তরেণ বিভজেদ, ব্রহ্মগুপ্ত অবশ্য বলেছেন “অব্যক্ত”, দ্বিতীয় ভাস্করাচার্য (১১৫০খ্রীঃ) অজ্ঞাতরাশিটিকে যাবৎ তাবৎ, কালক, নীলক, পীতক, লোহিত, হরিতক, স্বেতক, কপিলক, পিঙ্গলক, ধুম্রক, পাতলক, শ্যামলক প্রভৃতি বলেছেন।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে অজ্ঞাতরাশিটিকে ভারতীয় গণিতবিদেরা কি ভাবে লিখতেন? লক্ষ্য করা গিয়েছে যে ভারতীয়রা অজ্ঞাতরাশিকে শুধু “য়ারৎ তাবৎ” প্রভৃতি বলতেন সঙ্গে সঙ্গে এগুলি অজ্ঞাতরাশির পরিবর্তে লিখতেন। বাক্শালীর পাণ্ডুলিপিতে “0” প্রতীক দিয়ে লেখা হত। যেমন
![]()
এটিকে আধুনিক বীজগনিতে লিখলে দাঁড়ায়
![]()
শ্রীপতি সিদ্ধান্তশেখরের অব্যক্ত গণিতাধ্যায়ের দ্বিতীয় শ্লোকে বলেছেন-
যাবত্তাবত, কালকো নীলকান্তা
বর্ণা: কন্ন্যা নূনমব্যক্তমানে
তেষাং তুল্যা ভাস্বতঃ স্বোট্গমাহি
সংবর্গঃ সান্তাবিতং চাপমানম্।
(চলবে)
প্রদীপ কুমার মজুমদার 



















