০২:৩৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
সপ্তাহের প্রথম দিনে পুঁজিবাজারে মিশ্র চিত্র, ডিএসইতে সূচক কমেছে, সিএসইতে বেড়েছে সোমবার মনোনয়ন জমার শেষ দিন, জমা দিয়েছে মাত্র ১ শতাংশ প্রার্থী  ঢাকা-১৭ ও বগুড়া-৬ আসনে মনোনয়নপত্রে স্বাক্ষর করলেন তারেক রহমান বৃহত্তর ঐক্যের স্বার্থে জামায়াতের নেতৃত্বাধীন জোটে এনসিপি: নাহিদ ইসলাম ভারতে সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতায় গভীর উদ্বেগ ঢাকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য থেকে সরে গেলেও এনসিপি ছাড়ছি না: সামান্থা শিশুদের বিরুদ্ধে সহিংসতার ভয়াবহ ঊর্ধ্বগতি, ৬৩ শতাংশ সংবাদ নেতিবাচক: গবেষণা জানুয়ারি ৩-এর মহাসমাবেশ স্থগিত করল জামায়াতে ইসলামী ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ–পাকিস্তান সম্পর্ক জোরদারে বাড়তি যোগাযোগ ও বিনিয়োগের আহ্বান রাজনৈতিক দলের ভেতরে ফ্যাসিবাদী সহযোগী ও সন্ত্রাসীদের অনুপ্রবেশ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

অ্যাপলের বড় আইফোন উন্মোচন আসছে ৯ সেপ্টেম্বর

অ্যাপল আগামী ৯ সেপ্টেম্বর নতুন এক ইভেন্ট আয়োজন করতে যাচ্ছে। মঙ্গলবার সাংবাদিকদের পাঠানো আমন্ত্রণপত্রে জানানো হয়েছে, ওই দিনই সম্ভবত উন্মোচিত হবে আইফোন ১৭ এবং নতুন অ্যাপল ওয়াচসহ আরও কিছু ডিভাইস। আমন্ত্রণপত্রে দেওয়া হয়েছে স্লোগান: “Jaw-dropping।”

অ্যাপলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বার্ষিক আয়োজন
২০১২ সাল থেকে সেপ্টেম্বরেই নতুন আইফোন উন্মোচন করে আসছে অ্যাপল। এবারের আয়োজন হবে কুপারটিনো, ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাপল পার্ক ক্যাম্পাসে। এটি প্রযুক্তি জায়ান্টের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বার্ষিক ইভেন্ট হিসেবে বিবেচিত হয়। কারণ আইফোন এখনো অ্যাপলের সর্বাধিক আয়ের উৎস। তবে গ্রাহকরা আর্থিক চাপের সময়ে নতুন ফোন কিনতে কতটা আগ্রহী হবেন, সেটিই এখন বড় প্রশ্ন। একই সঙ্গে ওয়াল স্ট্রিটও খেয়াল রাখবে—অ্যাপল এখনো উদ্ভাবনী শক্তি ধরে রেখেছে কি না, বিশেষত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI) যুগে।

সিরি উন্নয়ন বিলম্ব ও প্রত্যাশা
অ্যাপলের জন্য ঝুঁকি এবার আরও বড়, কারণ প্রতিষ্ঠানটি সিরি ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্টের বড় আপগ্রেড বিলম্বিত করেছে। সেই আপডেটটি হলে ওপেনএআই-এর ChatGPT ও গুগলের Gemini-এর সঙ্গে পাল্লা দেওয়া সম্ভব হতো। যদিও জুলাই মাসে শক্তিশালী আইফোন বিক্রির কারণে শেয়ারবাজারে ইতিবাচক সাড়া পেয়েছিল কোম্পানি। গত বছর অ্যাপল ঘোষণা দিয়েছিল, আইফোন ১৬ তৈরি হয়েছে “Apple Intelligence”-এর জন্য। প্রতিযোগীরা যেখানে এআই বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে, সেখানেই অ্যাপলও এই ধারা বজায় রাখতে পারে।

অতিস্লিম আইফোনের জুয়া
ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, এবার অ্যাপল বাজি ধরছে একেবারে পাতলা আইফোনে—যেমন ম্যাকবুক এয়ারকে বলা হয় আল্ট্রা-স্লিম ল্যাপটপ। ধারণা করা হচ্ছে, নতুন মডেল হবে অনেক বেশি চিত্তাকর্ষক, তবে এর ফলে ব্যাটারি ও ক্যামেরার সক্ষমতায় কিছুটা ছাড় দিতে হতে পারে।
ফোনের নকশায় পরিবর্তন বাজারে নতুন আগ্রহ জাগাতে পারে। কারণ বর্তমানে বেশিরভাগ মানুষ কেবল প্রয়োজনের তাগিদে ফোন বদলাচ্ছেন। অন্য নির্মাতারা ইতিমধ্যে ভাঁজযোগ্য ফোন বাজারে এনেছে, কিন্তু আইফোনের বাহ্যিক রূপ বহু বছর ধরেই অপরিবর্তিত।

ছোট-বড় মডেলের ব্যর্থতা
বিভিন্ন আকারের আইফোন দিয়ে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সফল হয়নি। মাত্র দুই প্রজন্ম পরেই অ্যাপল আইফোন মিনি বাতিল করে। অন্যদিকে বড় আকারের আইফোন 16 প্লাস ২০২৪ সালের জুলাই পর্যন্ত কোম্পানির মোট চালানের মাত্র ৫ থেকে ১০ শতাংশ দখল করতে পেরেছে। পরিচিত বিশ্লেষক মিং-চি কুওর মতে, ২০২৫ সালেই প্লাস মডেলকে বাজার থেকে তুলে নেবে অ্যাপল।

আইফোন ১৭ সিরিজ: স্ট্যান্ডার্ড ও প্রো
এবার একটি নতুন অতিস্লিম মডেলের পাশাপাশি অ্যাপল আনবে স্ট্যান্ডার্ড আইফোন ১৭ এবং উন্নতমানের প্রো মডেল। সাধারণ মডেলে থাকবে নতুন প্রসেসর, ব্যাটারি ও ক্যামেরায় সামান্য উন্নতি। আর প্রো মডেলে দেওয়া হবে বড় স্ক্রিন, উন্নত ক্যামেরা, আরও শক্তিশালী প্রসেসর ও টাইটানিয়াম বডি।

বাণিজ্যিক চাপ ও শুল্কের প্রভাব
উজ্জ্বল এই ইভেন্টটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে এমন এক সময়ে, যখন অ্যাপল প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত শুল্ক নীতির চাপ মোকাবিলা করছে। জুলাইয়ে টিম কুক বিশ্লেষকদের জানান, সেপ্টেম্বর কোয়ার্টারে শুল্কজনিত খরচ দাঁড়াবে ১.১ বিলিয়ন ডলার।
চীনের ওপর নির্ভরতা কমাতে যুক্তরাষ্ট্রমুখী আইফোন উৎপাদনের বড় অংশ ইতিমধ্যেই ভারতে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। যদিও বুধবার থেকে ভারতের বেশিরভাগ পণ্যের ওপর শুল্ক দ্বিগুণ হয়ে ৫০ শতাংশ হতে যাচ্ছে, তবে স্মার্টফোনের ব্যতিক্রম।

মার্কিন বিনিয়োগ পরিকল্পনা
ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন, অ্যাপল হয়তো আগামী ১০০ শতাংশ সেমিকন্ডাক্টর শুল্কের আওতায় আসবে না। কারণ, যে কোম্পানিগুলো যুক্তরাষ্ট্রে কারখানা স্থাপন করেছে, তারা ছাড় পাবে। এরই ধারাবাহিকতায় অ্যাপল জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রে ৬০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। এতে স্থানীয়ভাবে চিপ উৎপাদন সরবরাহ চেইন তৈরি হবে।


সব মিলিয়ে, ৯ সেপ্টেম্বরের আয়োজনকে ঘিরে রয়েছে বিপুল আগ্রহ। প্রশ্ন হচ্ছে—অতিস্লিম ডিজাইন ও নতুন মডেল কি গ্রাহকদের আবারও মুগ্ধ করতে পারবে? আর অ্যাপল কি এআই যুগেও নিজেদের শীর্ষস্থান ধরে রাখতে পারবে? তা জানার জন্য অপেক্ষা করতে হবে আর কয়েকদিন।

জনপ্রিয় সংবাদ

সপ্তাহের প্রথম দিনে পুঁজিবাজারে মিশ্র চিত্র, ডিএসইতে সূচক কমেছে, সিএসইতে বেড়েছে

অ্যাপলের বড় আইফোন উন্মোচন আসছে ৯ সেপ্টেম্বর

১২:১৪:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫

অ্যাপল আগামী ৯ সেপ্টেম্বর নতুন এক ইভেন্ট আয়োজন করতে যাচ্ছে। মঙ্গলবার সাংবাদিকদের পাঠানো আমন্ত্রণপত্রে জানানো হয়েছে, ওই দিনই সম্ভবত উন্মোচিত হবে আইফোন ১৭ এবং নতুন অ্যাপল ওয়াচসহ আরও কিছু ডিভাইস। আমন্ত্রণপত্রে দেওয়া হয়েছে স্লোগান: “Jaw-dropping।”

অ্যাপলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বার্ষিক আয়োজন
২০১২ সাল থেকে সেপ্টেম্বরেই নতুন আইফোন উন্মোচন করে আসছে অ্যাপল। এবারের আয়োজন হবে কুপারটিনো, ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাপল পার্ক ক্যাম্পাসে। এটি প্রযুক্তি জায়ান্টের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বার্ষিক ইভেন্ট হিসেবে বিবেচিত হয়। কারণ আইফোন এখনো অ্যাপলের সর্বাধিক আয়ের উৎস। তবে গ্রাহকরা আর্থিক চাপের সময়ে নতুন ফোন কিনতে কতটা আগ্রহী হবেন, সেটিই এখন বড় প্রশ্ন। একই সঙ্গে ওয়াল স্ট্রিটও খেয়াল রাখবে—অ্যাপল এখনো উদ্ভাবনী শক্তি ধরে রেখেছে কি না, বিশেষত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI) যুগে।

সিরি উন্নয়ন বিলম্ব ও প্রত্যাশা
অ্যাপলের জন্য ঝুঁকি এবার আরও বড়, কারণ প্রতিষ্ঠানটি সিরি ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্টের বড় আপগ্রেড বিলম্বিত করেছে। সেই আপডেটটি হলে ওপেনএআই-এর ChatGPT ও গুগলের Gemini-এর সঙ্গে পাল্লা দেওয়া সম্ভব হতো। যদিও জুলাই মাসে শক্তিশালী আইফোন বিক্রির কারণে শেয়ারবাজারে ইতিবাচক সাড়া পেয়েছিল কোম্পানি। গত বছর অ্যাপল ঘোষণা দিয়েছিল, আইফোন ১৬ তৈরি হয়েছে “Apple Intelligence”-এর জন্য। প্রতিযোগীরা যেখানে এআই বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে, সেখানেই অ্যাপলও এই ধারা বজায় রাখতে পারে।

অতিস্লিম আইফোনের জুয়া
ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, এবার অ্যাপল বাজি ধরছে একেবারে পাতলা আইফোনে—যেমন ম্যাকবুক এয়ারকে বলা হয় আল্ট্রা-স্লিম ল্যাপটপ। ধারণা করা হচ্ছে, নতুন মডেল হবে অনেক বেশি চিত্তাকর্ষক, তবে এর ফলে ব্যাটারি ও ক্যামেরার সক্ষমতায় কিছুটা ছাড় দিতে হতে পারে।
ফোনের নকশায় পরিবর্তন বাজারে নতুন আগ্রহ জাগাতে পারে। কারণ বর্তমানে বেশিরভাগ মানুষ কেবল প্রয়োজনের তাগিদে ফোন বদলাচ্ছেন। অন্য নির্মাতারা ইতিমধ্যে ভাঁজযোগ্য ফোন বাজারে এনেছে, কিন্তু আইফোনের বাহ্যিক রূপ বহু বছর ধরেই অপরিবর্তিত।

ছোট-বড় মডেলের ব্যর্থতা
বিভিন্ন আকারের আইফোন দিয়ে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সফল হয়নি। মাত্র দুই প্রজন্ম পরেই অ্যাপল আইফোন মিনি বাতিল করে। অন্যদিকে বড় আকারের আইফোন 16 প্লাস ২০২৪ সালের জুলাই পর্যন্ত কোম্পানির মোট চালানের মাত্র ৫ থেকে ১০ শতাংশ দখল করতে পেরেছে। পরিচিত বিশ্লেষক মিং-চি কুওর মতে, ২০২৫ সালেই প্লাস মডেলকে বাজার থেকে তুলে নেবে অ্যাপল।

আইফোন ১৭ সিরিজ: স্ট্যান্ডার্ড ও প্রো
এবার একটি নতুন অতিস্লিম মডেলের পাশাপাশি অ্যাপল আনবে স্ট্যান্ডার্ড আইফোন ১৭ এবং উন্নতমানের প্রো মডেল। সাধারণ মডেলে থাকবে নতুন প্রসেসর, ব্যাটারি ও ক্যামেরায় সামান্য উন্নতি। আর প্রো মডেলে দেওয়া হবে বড় স্ক্রিন, উন্নত ক্যামেরা, আরও শক্তিশালী প্রসেসর ও টাইটানিয়াম বডি।

বাণিজ্যিক চাপ ও শুল্কের প্রভাব
উজ্জ্বল এই ইভেন্টটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে এমন এক সময়ে, যখন অ্যাপল প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত শুল্ক নীতির চাপ মোকাবিলা করছে। জুলাইয়ে টিম কুক বিশ্লেষকদের জানান, সেপ্টেম্বর কোয়ার্টারে শুল্কজনিত খরচ দাঁড়াবে ১.১ বিলিয়ন ডলার।
চীনের ওপর নির্ভরতা কমাতে যুক্তরাষ্ট্রমুখী আইফোন উৎপাদনের বড় অংশ ইতিমধ্যেই ভারতে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। যদিও বুধবার থেকে ভারতের বেশিরভাগ পণ্যের ওপর শুল্ক দ্বিগুণ হয়ে ৫০ শতাংশ হতে যাচ্ছে, তবে স্মার্টফোনের ব্যতিক্রম।

মার্কিন বিনিয়োগ পরিকল্পনা
ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন, অ্যাপল হয়তো আগামী ১০০ শতাংশ সেমিকন্ডাক্টর শুল্কের আওতায় আসবে না। কারণ, যে কোম্পানিগুলো যুক্তরাষ্ট্রে কারখানা স্থাপন করেছে, তারা ছাড় পাবে। এরই ধারাবাহিকতায় অ্যাপল জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রে ৬০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। এতে স্থানীয়ভাবে চিপ উৎপাদন সরবরাহ চেইন তৈরি হবে।


সব মিলিয়ে, ৯ সেপ্টেম্বরের আয়োজনকে ঘিরে রয়েছে বিপুল আগ্রহ। প্রশ্ন হচ্ছে—অতিস্লিম ডিজাইন ও নতুন মডেল কি গ্রাহকদের আবারও মুগ্ধ করতে পারবে? আর অ্যাপল কি এআই যুগেও নিজেদের শীর্ষস্থান ধরে রাখতে পারবে? তা জানার জন্য অপেক্ষা করতে হবে আর কয়েকদিন।