ভাওয়ালের রাজার ঢাকার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। কামরাঙ্গির চর, ফুলবাড়িয়া প্রভৃতি স্থানে গভীর গর্ত হয়ে গিয়েছিল।’
পত্রিকার সংবাদ অনুযায়ী যেসব ইমারত ক্ষতিগ্রস্তজ হয়েছিল, সেগুলো হলো-সেন্ট থমাস গীর্জা, সাধারণ ব্রাহ্মসমাজ ভবন, ইডেন ফিমেল স্কুল, ইম্পিরিয়াল সেমিনারি, নওয়াব বাড়ি, কালীপ্রসন্ন ঘোষ (বান্ধব কুটির), নন্দলাল মুন্সী, চন্দ্রকান্ত গাঙ্গুলির বাড়ির অংশ। “জজ ম্যাজিস্ট্রেট প্রভৃতি সাহেবদিগের অধিকাংশ বাড়ি বাসের অনুপযুক্ত হইয়াছে। নবাবপুরের শাহীন মেডিকেল হল নামক ঔষধালয়টি একেবারে চূর্ণ হইয়াছে।
তাহার দ্বিতলে হাইকোজানি নামধেয় আম্মানী সাহেবেরা সপরিবারে ছিলেন। ১টি সাহেব ও ১টি মেম তখনই মরিয়াছেন। ৩টি মেম মুমূর্ষ, একটি মেমের জীবনের কোনো আশঙ্খা নাই। নাজিরের মঠের পতনে জন্মধ্যে স্থিত একটি বেশধারী ও দুইটি ধোবার মৃত্যু হইয়াছে, প্রায় পাঁচশত বাড়ি একেবারে নষ্ট ও আট হাজার বাড়ির কোনো না কোনো ক্ষতি হইয়াছে…”। আহত এক মহিলা পরে মারা যান। ভাওয়ালের রাজার ঢাকার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। কামরাঙ্গির চর, ফুলবাড়িয়া প্রভৃতি স্থানে গভীর গর্ত হয়ে গিয়েছিল।’
ক্ষতির বিবরণটি সংবাদপত্রে যা ছাপা হয়েছে তা সঠিক। মৃতের সংখ্যা সরকারি হিসাবে পাঁচজন, বেসরকারি হিসাবে ছয়জন। তবে, ক্ষতির পরিমাণ সরকার যে দেড় লক্ষ রুপি বলেছেন তা খানিকটা কম। আবার সংবাদপত্র বিশ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে যে দাবি করেছে তাও খুব বেশি বলে মনে হয়।
স্বাভাবিকভাবেই ঢাকার মানুষজন এ ভূমিকম্পে মানসিকভাবে বিপর্যন্ত হয়ে গিয়েছিল। নওয়াব আহসান উল্লাহ ডায়েরিতে লিখেছিলেন-“একটু পরেই ভূমিকম্প শুরু হলো। আমি বাড়ির দিকে যাচ্ছিলাম, রবার গাছের কাছে পৌঁছলে দালানের কার্নিশ ভেঙে পড়তে লাগল। আমি সেখানেই সেজদায় পড়ে গেলাম এবং স্ত্রী ও ছেলেমেয়েদের আগমন পর্যন্ত ওখানে সেজদায় রইলাম। এত ভূমিকম্প আজ পর্যন্ত আর হয় নি।
(চলবে)
মুনতাসীর মামুন 



















