০৮:৩৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫
ট্রাম্প যখন যুদ্ধ শেষের দম্ভ দেখাচ্ছেন, চীন তখন নীরবে শান্তির পথে কাজ করছে অটিজম চিকিৎসার অপ্রতিষ্ঠিত পথে প্রতিটি পরিবার সাত দশক পর ব্রিটিশ মিউজিক্যালে নতুন জীবন পেল প্রিয় ভালুক সম্পর্কের উষ্ণতা ধরে রাখা উচিৎ, পারিবারিক সীমারেখা রক্ষা করে উৎসব উদযাপনের জ্ঞান শৈশবের গভীর ক্ষত থেকে লেখা এক রন্ধনশিল্পীর আত্মস্বীকারোক্তি মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-৩৬৪) ক্ষমতার নৃত্য: ট্রাম্পের হোয়াইট হাউস বলরুম প্রকল্পে দানের আড়ালে ব্যবসায়িক স্বার্থের খেলা জোহরান মামদানির সিরিয়ান স্ত্রী রামা দুয়াজি সম্পর্কে এই বিষয়গুলো কি জানেন? পুঁজিবাজারে পতনের ধারা অব্যাহত: সপ্তাহ শেষে ডিএসই ও সিএসই লাল সূচকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে মৃত্যু

প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-২৮৫)

পুঙ্খানুপঙ্খভাবে ভারতীয় গণিতজ্ঞরা আলোচনা করেছেন। এবার সমীকরণের শ্রেণী বিভাগ সম্পর্কে ভারতীয়রা কি বলেছেন তা আলোচনা করা যাক।

বাশালীর পাণ্ডুলিপিতে যে ভাবে সমীকরণ লেখা হয়েছে পরবর্তীকালে এই পদ্ধতি চোখ পড়ে না। সমীকরণ লেখার ক্ষেত্রে দেখা গেল একটি পক্ষকে প্রথমে লিখে তারপর দ্বিতীয় পক্ষকে পাশে না লিখে নীচে লেখা হত। যেমন পৃথুদকস্বামী তার টীকায় বলেছেন

যা ব ০ যা ১০ রু ৮   (x²0+x10-8)
যা ব ১ যা ০  রু ১      (x²+x0+1)

এখানে x³= যা ব, x=যা, এবং বিয়োগ চিহ্নকে বোঝাতে গিয়ে সংখ্যার মাথায় একটি বিন্দু দেওয়া হয়েছে।

দ্বিতীয় ভাস্করাচার্য সমীকরণকে লিখতেন এই একইভাবে। প্রসঙ্গক্রমে তাঁর একটি উদাহরণ এবং সঙ্গে সঙ্গে কিভাবে সমীকরণ পাত করতেন এবং তারপর কিভাবে

সমাধান করতেন পরে সংক্ষিপ্ত উল্লেখ করছি-

অসমানসমচ্ছেদান রাশীংস্তাংশ্চতুরোবদ

যদৈক্যং যদ ঘনৈক্য বা যেষাং বর্গৈক্যসংমিতম।

অত্র রাশয়ঃ যা ১, যা ২, যা ৩, যা ৪, এষাং যোগঃ যা ১০

বর্গযোগেনানের যাব ৩০, সম ইতি পক্ষৌ যাবত্তাবতাহপবর্তে

ন্যাসঃ

যা ৩০ রু ০

যা ০ রু ১০

সমশোধনাদিন। প্রাগল্পওযাবত্তারম্মানেনোত খাপিতা রাশঃ

এখানে সমশোধন, কথাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ সম্পর্কে ব্রহ্মগুপ্ত দ্বিতীয় ভাস্করাচার্য, শ্রীপতি প্রমুখেরা উল্লেখ করেছেন।
শ্রীপতি তাঁর সিদ্ধান্ত শেখরের চতুর্দশ অধ্যায়ের ১৭ তম শ্লোকে বলেছেন-

বর্গো যতোহব্যক্তগুণং চ শোধ্যং
সমুজ,ভ্য রূপাণি তদকৃতজ্ঞ
রূপাণি বর্গৈগুণয়েচ্চতুডি
রব্যক্তবর্গং চ নিধায় মূলম,।

অর্থাৎ “বর্গসমীকরণে দুটি সমানপক্ষস্থলে প্রথম (এক) পক্ষ হইতে অব্যক্তবর্গ এবং অব্যক্ত রাশি শোধন করিবে এবং দ্বিতীয় পক্ষে প্রথম পক্ষের রূপ (ব্যক্ত) রাশি শোধন করিবে। অতঃপর বর্গের সহিত দ্বির রূপ রাশিকে চতুরাহত করিয়া।।

(অর্থাৎ উভয়পক্ষকে চার দ্বারা গুণ করিয়া তাহাতে কিছু অব্যক্ত বর্গ যোগ করিয়া) মূল গ্রহণ করিবে।”

স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে শেষের লাইন গুলি ax²+bx+c=0 ধরণের সমীকরণের বীজ নির্ণয় করার পদ্ধতি বলছেন।

এই সমস্ত আলোচনায় দেখা যাচ্ছে যে সমীকরণ কিভাবে গঠন করতে হয় তা পুঙ্খানুপঙ্খভাবে ভারতীয় গণিতজ্ঞরা আলোচনা করেছেন। এবার সমীকরণের শ্রেণী বিভাগ সম্পর্কে ভারতীয়রা কি বলেছেন তা আলোচনা করা যাক।

তাঁরা সমীকরণকে চারভাগে ভাগ করেছেন। যথা

(ক) যাবৎ তাবৎ (Simple equation), (খ) বর্গ (Quadratic equation), (গ) ঘন (Cubic equation) (ঘ) বর্গ-বর্গ (biquadratic equation)
ব্রহ্মগুপ্ত সমীকরণকে তিনভাগে ভাগ করেছেন। যথা
(ক) একবর্ণ সমীকরণ (equations in one unknown quantity)
(খ) অনেকবর্ণ সমীকরণ (equation in several unknowns)
(গ) ভাবিত (equation involving products of unknowns)

একবর্ণ সমীকরণ আবার দুভাগে বিভক্ত। যথা (১) রৈখিক সমীকরণ (linear equations) (২) অব্যক্তবর্গ সমীকরণ (quadratic equations)
বিখ্যাত ভায়কার পৃথুদক স্বামী সমীকরণকে চারভাগে বিভক্ত করেছেন।
(ক) একবর্ণ সমীকরণ (খ) অনেকবর্ণ সমীকরণ (গ) মধ্যমাহরণ (equa-
tions with one, two or more unknowns in their second and higher powers.) (ঘ) ভাবিত।

এছাড়াও দ্বিতীয় ভাস্করাচার্য, শ্রীপতি প্রমুখেরা সমীকরণের বিভাগ সম্বন্ধে অথবা কয়েক প্রকার সমীকরণ নিয়ে আলোচনা করেছেন। অনেক ক্ষেত্রে কতকগুলি সমীকরণ উল্লেখ করা হয়েছে যেগুলি পূর্বসূরীরা উল্লেখ করে নাই।

(চলবে)

 

 

 

জনপ্রিয় সংবাদ

ট্রাম্প যখন যুদ্ধ শেষের দম্ভ দেখাচ্ছেন, চীন তখন নীরবে শান্তির পথে কাজ করছে

প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-২৮৫)

০৩:০০:২০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

পুঙ্খানুপঙ্খভাবে ভারতীয় গণিতজ্ঞরা আলোচনা করেছেন। এবার সমীকরণের শ্রেণী বিভাগ সম্পর্কে ভারতীয়রা কি বলেছেন তা আলোচনা করা যাক।

বাশালীর পাণ্ডুলিপিতে যে ভাবে সমীকরণ লেখা হয়েছে পরবর্তীকালে এই পদ্ধতি চোখ পড়ে না। সমীকরণ লেখার ক্ষেত্রে দেখা গেল একটি পক্ষকে প্রথমে লিখে তারপর দ্বিতীয় পক্ষকে পাশে না লিখে নীচে লেখা হত। যেমন পৃথুদকস্বামী তার টীকায় বলেছেন

যা ব ০ যা ১০ রু ৮   (x²0+x10-8)
যা ব ১ যা ০  রু ১      (x²+x0+1)

এখানে x³= যা ব, x=যা, এবং বিয়োগ চিহ্নকে বোঝাতে গিয়ে সংখ্যার মাথায় একটি বিন্দু দেওয়া হয়েছে।

দ্বিতীয় ভাস্করাচার্য সমীকরণকে লিখতেন এই একইভাবে। প্রসঙ্গক্রমে তাঁর একটি উদাহরণ এবং সঙ্গে সঙ্গে কিভাবে সমীকরণ পাত করতেন এবং তারপর কিভাবে

সমাধান করতেন পরে সংক্ষিপ্ত উল্লেখ করছি-

অসমানসমচ্ছেদান রাশীংস্তাংশ্চতুরোবদ

যদৈক্যং যদ ঘনৈক্য বা যেষাং বর্গৈক্যসংমিতম।

অত্র রাশয়ঃ যা ১, যা ২, যা ৩, যা ৪, এষাং যোগঃ যা ১০

বর্গযোগেনানের যাব ৩০, সম ইতি পক্ষৌ যাবত্তাবতাহপবর্তে

ন্যাসঃ

যা ৩০ রু ০

যা ০ রু ১০

সমশোধনাদিন। প্রাগল্পওযাবত্তারম্মানেনোত খাপিতা রাশঃ

এখানে সমশোধন, কথাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ সম্পর্কে ব্রহ্মগুপ্ত দ্বিতীয় ভাস্করাচার্য, শ্রীপতি প্রমুখেরা উল্লেখ করেছেন।
শ্রীপতি তাঁর সিদ্ধান্ত শেখরের চতুর্দশ অধ্যায়ের ১৭ তম শ্লোকে বলেছেন-

বর্গো যতোহব্যক্তগুণং চ শোধ্যং
সমুজ,ভ্য রূপাণি তদকৃতজ্ঞ
রূপাণি বর্গৈগুণয়েচ্চতুডি
রব্যক্তবর্গং চ নিধায় মূলম,।

অর্থাৎ “বর্গসমীকরণে দুটি সমানপক্ষস্থলে প্রথম (এক) পক্ষ হইতে অব্যক্তবর্গ এবং অব্যক্ত রাশি শোধন করিবে এবং দ্বিতীয় পক্ষে প্রথম পক্ষের রূপ (ব্যক্ত) রাশি শোধন করিবে। অতঃপর বর্গের সহিত দ্বির রূপ রাশিকে চতুরাহত করিয়া।।

(অর্থাৎ উভয়পক্ষকে চার দ্বারা গুণ করিয়া তাহাতে কিছু অব্যক্ত বর্গ যোগ করিয়া) মূল গ্রহণ করিবে।”

স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে শেষের লাইন গুলি ax²+bx+c=0 ধরণের সমীকরণের বীজ নির্ণয় করার পদ্ধতি বলছেন।

এই সমস্ত আলোচনায় দেখা যাচ্ছে যে সমীকরণ কিভাবে গঠন করতে হয় তা পুঙ্খানুপঙ্খভাবে ভারতীয় গণিতজ্ঞরা আলোচনা করেছেন। এবার সমীকরণের শ্রেণী বিভাগ সম্পর্কে ভারতীয়রা কি বলেছেন তা আলোচনা করা যাক।

তাঁরা সমীকরণকে চারভাগে ভাগ করেছেন। যথা

(ক) যাবৎ তাবৎ (Simple equation), (খ) বর্গ (Quadratic equation), (গ) ঘন (Cubic equation) (ঘ) বর্গ-বর্গ (biquadratic equation)
ব্রহ্মগুপ্ত সমীকরণকে তিনভাগে ভাগ করেছেন। যথা
(ক) একবর্ণ সমীকরণ (equations in one unknown quantity)
(খ) অনেকবর্ণ সমীকরণ (equation in several unknowns)
(গ) ভাবিত (equation involving products of unknowns)

একবর্ণ সমীকরণ আবার দুভাগে বিভক্ত। যথা (১) রৈখিক সমীকরণ (linear equations) (২) অব্যক্তবর্গ সমীকরণ (quadratic equations)
বিখ্যাত ভায়কার পৃথুদক স্বামী সমীকরণকে চারভাগে বিভক্ত করেছেন।
(ক) একবর্ণ সমীকরণ (খ) অনেকবর্ণ সমীকরণ (গ) মধ্যমাহরণ (equa-
tions with one, two or more unknowns in their second and higher powers.) (ঘ) ভাবিত।

এছাড়াও দ্বিতীয় ভাস্করাচার্য, শ্রীপতি প্রমুখেরা সমীকরণের বিভাগ সম্বন্ধে অথবা কয়েক প্রকার সমীকরণ নিয়ে আলোচনা করেছেন। অনেক ক্ষেত্রে কতকগুলি সমীকরণ উল্লেখ করা হয়েছে যেগুলি পূর্বসূরীরা উল্লেখ করে নাই।

(চলবে)