প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান মেটা ঘোষণা করেছে, তাদের এআই চ্যাটবট এখন থেকে কিশোর-কিশোরীদের (১৩ থেকে ১৮ বছর বয়সী) সঙ্গে আত্মহত্যা, আত্মক্ষতি বা খাদ্যাভ্যাসজনিত সমস্যার মতো সংবেদনশীল বিষয়ে আর কোনো কথোপকথন করবে না। মেটা জানিয়েছে, এই নতুন নীতির মূল উদ্দেশ্য হলো তরুণ ব্যবহারকারীদের জন্য নিরাপদ ও সুরক্ষিত অনলাইন পরিবেশ তৈরি করা। এ সিদ্ধান্ত বিশ্বব্যাপী কিশোরদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
একই সঙ্গে মেটা নতুন প্রাইভেসি সেটিং চালু করেছে, যা বিশেষভাবে ১৩ থেকে ১৮ বছর বয়সী ব্যবহারকারীদের জন্য প্রযোজ্য। এসব সেটিং সক্রিয় হলে কিশোরদের অ্যাকাউন্টে প্রদর্শিত কনটেন্ট আরও সীমিত ও নিরাপদ থাকবে। পাশাপাশি, অভিভাবকেরা দেখতে পারবেন তাদের সন্তান গত সাত দিনে কোন কোন এআই চ্যাটবটের সঙ্গে কথা বলেছে। এতে একদিকে কিশোররা সুরক্ষিত থাকবে, অন্যদিকে অভিভাবকেরা তাদের সন্তানের অনলাইন অভিজ্ঞতা সম্পর্কে সচেতন থাকতে পারবেন।
এই পদক্ষেপের পেছনে একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় এক দম্পতি সম্প্রতি ওপেনএআই-এর বিরুদ্ধে মামলা করেন। তাদের অভিযোগ, চ্যাটজিপিটি (ChatGPT) তাদের ছেলেকে আত্মহত্যার পথে প্ররোচিত করেছিল। এ অভিযোগের পর এআই চ্যাটবটগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে আলোচনার সূচনা হয় এবং নীতিনির্ধারক ও প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো শিশু-কিশোরদের জন্য অতিরিক্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা জোরদারে উদ্যোগী হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের পদক্ষেপ কিশোরদের অনলাইন ঝুঁকি কমাতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। যদিও প্রযুক্তি সব ঝুঁকি একসঙ্গে দূর করতে পারে না, তবুও সংবেদনশীল বিষয়গুলো সীমিত করা কিশোরদের মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। মেটার এই উদ্যোগ কেবল তাদের নিজেদের প্ল্যাটফর্মেই নয়, বরং বৈশ্বিক প্রযুক্তি খাতেও কিশোর ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা নীতি জোরদারের একটি উদাহরণ হয়ে উঠতে পারে।