০৪:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫
আদানিকে ১০০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধের সিদ্ধান্ত ইসলামাবাদ আদালতের বাইরে আত্মঘাতী হামলায় নিহত ১২, আহত ২৭ গ্লোবাল ফাইন্যান্সের মূল্যায়নে ‘সি’ গ্রেড পেলেন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর পাকিস্তান ২৭তম সংশোধনী বিল অনুমোদিত, বাড়বে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতাও বিচার বিভাগে প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ মোহাম্মদপুরে ছাত্রদল নেতার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার বাংলাদেশে আসছেন পাকিস্তানের জামিয়াতে উলেমা-ই-ইসলাম প্রধান মৌলানা ফজলুর রহমান মুদ্রাস্ফীতির সময় টিআইপিএস বন্ডের সীমাবদ্ধতা  আফগান-পাকিস্তান আলোচনায় অচলাবস্থা: সীমান্তে আবারও সংঘাতের আশঙ্কা দুবাই মেট্রোর ব্লু লাইন নির্মাণে নতুন ১০টির বেশি সড়ক পরিবর্তন ‘ঠান্ডায় খাও, জ্বরে উপোস’—প্রচলিত ধারণার পেছনের আসল সত্য

যখন তিনজন ভারতের ভাগ্য পাল্টাল

ভারতীয় ক্রিকেট কিংবদন্তি বলতে প্রথম সারিতে ওঠে আসেন সুনীল গাভাস্কার, শচীন তেন্ডুলকার ও কপিল দেব—যাদের ধারাবাহিকতা, রেকর্ড ও নেতৃত্ব ভারতকে বিশ্বমঞ্চে প্রতিষ্ঠা দিয়েছে। ১৯৭১ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে অভিষেকেই গাভাস্কার চারটি শতকসহ সিরিজে ৭৭৪ রান করেন, যা টেস্ট ক্রিকেটে স্মরণীয় নজির। নিখুঁত ডিফেন্স, লেট সুইং মোকাবিলায় ব্যাটের নরম হাত ও ধৈর্য—এই ত্রয়ীতে তিনি ঘণ্টার পর ঘণ্টা ক্রিজে থেকে প্রতিপক্ষকে ক্লান্ত করেছেন। ক্যারিয়ার শেষে টেস্টে ১০,১২২ রান ও ৩৪টি শতক নিয়ে তিনি তখনকার সর্বোচ্চ রানের ও শতকের রেকর্ডধারী ছিলেন, যা ভারতীয় ব্যাটিংয়ের আত্মবিশ্বাস গঠনে ভিত্তি তৈরি করে।

মাত্র ১৬ বছর বয়সে ১৯৮৯ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পা রাখেন শচীন তেন্ডুলকার। পরের দুই দশকের বেশি সময়ে তিনি টেস্ট ও ওয়ানডে মিলিয়ে ৩৪ হাজারেরও বেশি রান এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০০টি শতক করেন—এই দুই রেকর্ডই ক্রিকেট ইতিহাসে অনন্য। অফ-ড্রাইভ, ব্যাকফুট পাঞ্চ, কভার ড্রাইভ—শাস্ত্রীয় শট থেকে শুরু করে আধুনিক শট–মেকিং; সব কিছুরই নিখুঁত সংমিশ্রণ দেখা গেছে তাঁর ব্যাটে। ২০১১ সালের বিশ্বকাপ জয়ের পর সতীর্থদের বক্তব্যে স্পষ্ট—ঐ শিরোপা ছিল শচীনের দীর্ঘ ক্যারিয়ারের স্বপ্নপূরণের মুহূর্ত, যা এক প্রজন্মের ক্রিকেটভক্তকে অনুপ্রেরণা দিয়েছে।

কপিল দেব ভারতকে আক্রমণাত্মক মনোভাব শিখিয়েছেন ব্যাট–বল–ফিল্ড—সবখানে। ১৯৮৩ বিশ্বকাপে তাঁর নেতৃত্বে ভারত প্রথমবারের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়। সেই অভিযানে টানব্রিজ ওয়েলসে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তাঁর ১৭৫* রান পরিস্থিতি ঘুরিয়ে দেয়। সুইং–সীম বোলিংয়ে ধারাবাহিক উইকেটের সঙ্গে লোয়ার–মিডল অর্ডারে দ্রুত রান—এই দুই ভূমিকায় তিনি সত্যিকারের অলরাউন্ডার। ক্যারিয়ার শেষে টেস্টে ৪৩৪ উইকেট নিয়ে তিনি বিশ্বের শীর্ষ উইকেটশিকারি হন, যা ভারতীয় পেস ঐতিহ্যের পথ খুলে দেয়।

এই তিন স্তম্ভ মিলে তৈরি হয়েছে আধুনিক ভারতের ক্রিকেট–ডিএনএ—টেকনিক, মানসিক দৃঢ়তা ও ম্যাচ জেতার সংস্কৃতি। গাভাস্কার ধৈর্য–টেকনিক দিয়ে ভীত দৃঢ় করেছেন, শচীন বিশ্বসেরা ব্যাটিং–মানদণ্ড স্থাপন করেছেন, কপিল নেতৃত্ব ও অলরাউন্ড দক্ষতায় বড় মঞ্চে জেতার পথ দেখিয়েছেন। পরবর্তী প্রজন্মের সাফল্য—বিশ্বকাপ, আইসিসি টাইটেল, বিদেশে সিরিজ জয়—সবকিছুর পেছনে রয়েছে এই ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা। সার্বিকভাবে, ভারতীয় ক্রিকেট কিংবদন্তি ত্রয়ীর উত্তরাধিকারই আজকের ভারতের প্রতিটি বড় জয়ের ভিত্তি।

জনপ্রিয় সংবাদ

আদানিকে ১০০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধের সিদ্ধান্ত

যখন তিনজন ভারতের ভাগ্য পাল্টাল

০৪:১৯:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ভারতীয় ক্রিকেট কিংবদন্তি বলতে প্রথম সারিতে ওঠে আসেন সুনীল গাভাস্কার, শচীন তেন্ডুলকার ও কপিল দেব—যাদের ধারাবাহিকতা, রেকর্ড ও নেতৃত্ব ভারতকে বিশ্বমঞ্চে প্রতিষ্ঠা দিয়েছে। ১৯৭১ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে অভিষেকেই গাভাস্কার চারটি শতকসহ সিরিজে ৭৭৪ রান করেন, যা টেস্ট ক্রিকেটে স্মরণীয় নজির। নিখুঁত ডিফেন্স, লেট সুইং মোকাবিলায় ব্যাটের নরম হাত ও ধৈর্য—এই ত্রয়ীতে তিনি ঘণ্টার পর ঘণ্টা ক্রিজে থেকে প্রতিপক্ষকে ক্লান্ত করেছেন। ক্যারিয়ার শেষে টেস্টে ১০,১২২ রান ও ৩৪টি শতক নিয়ে তিনি তখনকার সর্বোচ্চ রানের ও শতকের রেকর্ডধারী ছিলেন, যা ভারতীয় ব্যাটিংয়ের আত্মবিশ্বাস গঠনে ভিত্তি তৈরি করে।

মাত্র ১৬ বছর বয়সে ১৯৮৯ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পা রাখেন শচীন তেন্ডুলকার। পরের দুই দশকের বেশি সময়ে তিনি টেস্ট ও ওয়ানডে মিলিয়ে ৩৪ হাজারেরও বেশি রান এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০০টি শতক করেন—এই দুই রেকর্ডই ক্রিকেট ইতিহাসে অনন্য। অফ-ড্রাইভ, ব্যাকফুট পাঞ্চ, কভার ড্রাইভ—শাস্ত্রীয় শট থেকে শুরু করে আধুনিক শট–মেকিং; সব কিছুরই নিখুঁত সংমিশ্রণ দেখা গেছে তাঁর ব্যাটে। ২০১১ সালের বিশ্বকাপ জয়ের পর সতীর্থদের বক্তব্যে স্পষ্ট—ঐ শিরোপা ছিল শচীনের দীর্ঘ ক্যারিয়ারের স্বপ্নপূরণের মুহূর্ত, যা এক প্রজন্মের ক্রিকেটভক্তকে অনুপ্রেরণা দিয়েছে।

কপিল দেব ভারতকে আক্রমণাত্মক মনোভাব শিখিয়েছেন ব্যাট–বল–ফিল্ড—সবখানে। ১৯৮৩ বিশ্বকাপে তাঁর নেতৃত্বে ভারত প্রথমবারের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়। সেই অভিযানে টানব্রিজ ওয়েলসে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তাঁর ১৭৫* রান পরিস্থিতি ঘুরিয়ে দেয়। সুইং–সীম বোলিংয়ে ধারাবাহিক উইকেটের সঙ্গে লোয়ার–মিডল অর্ডারে দ্রুত রান—এই দুই ভূমিকায় তিনি সত্যিকারের অলরাউন্ডার। ক্যারিয়ার শেষে টেস্টে ৪৩৪ উইকেট নিয়ে তিনি বিশ্বের শীর্ষ উইকেটশিকারি হন, যা ভারতীয় পেস ঐতিহ্যের পথ খুলে দেয়।

এই তিন স্তম্ভ মিলে তৈরি হয়েছে আধুনিক ভারতের ক্রিকেট–ডিএনএ—টেকনিক, মানসিক দৃঢ়তা ও ম্যাচ জেতার সংস্কৃতি। গাভাস্কার ধৈর্য–টেকনিক দিয়ে ভীত দৃঢ় করেছেন, শচীন বিশ্বসেরা ব্যাটিং–মানদণ্ড স্থাপন করেছেন, কপিল নেতৃত্ব ও অলরাউন্ড দক্ষতায় বড় মঞ্চে জেতার পথ দেখিয়েছেন। পরবর্তী প্রজন্মের সাফল্য—বিশ্বকাপ, আইসিসি টাইটেল, বিদেশে সিরিজ জয়—সবকিছুর পেছনে রয়েছে এই ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা। সার্বিকভাবে, ভারতীয় ক্রিকেট কিংবদন্তি ত্রয়ীর উত্তরাধিকারই আজকের ভারতের প্রতিটি বড় জয়ের ভিত্তি।