১১:০৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫

মোদি-ট্রাম্প সম্পর্ক পুনর্গঠনের প্রথম পদক্ষেপ

ব্যক্তিগত বন্ধুত্বের বার্তা

শনিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্যকে স্বাগত জানান। ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, তিনি সবসময় মোদির বন্ধু থাকবেন এবং ভারত-মার্কিন বিশেষ সম্পর্কে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। এই বার্তার প্রতিক্রিয়ায় মোদি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক আরও মজবুত করতে তিনি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

বাণিজ্য ও জ্বালানি ইস্যুতে টানাপোড়েন

সম্প্রতি ভারত-মার্কিন সম্পর্ক কিছুটা শীতল হয়ে পড়েছিল। কারণ ছিল বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে মতভেদ এবং রাশিয়ার তেল আমদানিকে ঘিরে দ্বন্দ্ব। তবে মোদি ও ট্রাম্পের পারস্পরিক আশ্বাসের পর এখন দুই দেশের কর্মকর্তারা আলোচনায় বসে একটি পারস্পরিক লাভজনক চুক্তি চূড়ান্ত করার চেষ্টা করবেন।

জয়শংকরের বার্তা

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শংকরও পরিষ্কার করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্ব দেন। এটি ভারতের কূটনৈতিক অবস্থানের স্পষ্ট ইঙ্গিত।

ট্রাম্পের মন্তব্য

এক প্রশ্নের জবাবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, তিনি মনে করেন না যে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের মতো মিত্রকে হারাচ্ছে কিংবা ভারত চীনের দিকে ঝুঁকছে। তিনি আরও স্মরণ করিয়ে দেন, “মোদির সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভালো। কিছুদিন আগে তিনি ওয়াশিংটনে এসেছিলেন, আমরা রোজ গার্ডেনে যৌথ সংবাদ সম্মেলনও করেছি।”

ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ

দুই নেতা স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে তারা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করতে চান। তাই ওয়াশিংটন থেকে ভারতের বিরুদ্ধে যে কড়া মন্তব্যগুলো আসছিল, তা এখন হয়তো থেমে যাবে অথবা নরম হয়ে আসবে। এমনকি দুই নেতা শিগগিরই টেলিফোনে আবার কথা বলে কর্মকর্তাদের সুনির্দিষ্ট নির্দেশ দিতে পারেন।

মোদির টুইট

গত ১৭ জুন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপের পর মোদি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ লিখেন: “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ইতিবাচক মনোভাব ও মূল্যায়নকে আমি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞতা জানাই এবং সমানভাবে প্রতিদান দিই। ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি ইতিবাচক ও ভবিষ্যতমুখী সামগ্রিক কৌশলগত অংশীদারিত্ব রয়েছে।”

নয়াদিল্লির মনোভাব

নয়াদিল্লির দৃষ্টিভঙ্গি হলো—ভারত কোনোভাবেই চীনের দিকে ঝুঁকছে না। বরং চীনের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক বজায় রেখে একইসঙ্গে রাশিয়ার সঙ্গেও যোগাযোগ রক্ষা করছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কই ভারতের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

বাণিজ্য চুক্তির আশাবাদ

ভারতীয় নীতিনির্ধারকরা আশা করছেন, যুক্তরাষ্ট্রও বুঝবে যে দুই দেশের সম্পর্ক বৈশ্বিক কল্যাণের জন্য অপরিহার্য। তাই শিগগিরই একটি পারস্পরিক লাভজনক বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন হতে পারে।

নিরাপত্তা সংলাপের ইতিবাচক ইঙ্গিত

গত মাসে ভারতের একজন শীর্ষ জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা যুক্তরাষ্ট্র সফর করে সেখানকার গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তখন যুক্তরাষ্ট্র থেকে পরিষ্কার বার্তা এসেছিল যে বাণিজ্য নিয়ে মতভেদ কেবল অস্থায়ী সমস্যা। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আগের মতোই চলবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

মোদি-ট্রাম্প সম্পর্ক পুনর্গঠনের প্রথম পদক্ষেপ

০৫:৪৭:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ব্যক্তিগত বন্ধুত্বের বার্তা

শনিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্যকে স্বাগত জানান। ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, তিনি সবসময় মোদির বন্ধু থাকবেন এবং ভারত-মার্কিন বিশেষ সম্পর্কে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। এই বার্তার প্রতিক্রিয়ায় মোদি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক আরও মজবুত করতে তিনি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

বাণিজ্য ও জ্বালানি ইস্যুতে টানাপোড়েন

সম্প্রতি ভারত-মার্কিন সম্পর্ক কিছুটা শীতল হয়ে পড়েছিল। কারণ ছিল বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে মতভেদ এবং রাশিয়ার তেল আমদানিকে ঘিরে দ্বন্দ্ব। তবে মোদি ও ট্রাম্পের পারস্পরিক আশ্বাসের পর এখন দুই দেশের কর্মকর্তারা আলোচনায় বসে একটি পারস্পরিক লাভজনক চুক্তি চূড়ান্ত করার চেষ্টা করবেন।

জয়শংকরের বার্তা

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শংকরও পরিষ্কার করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্ব দেন। এটি ভারতের কূটনৈতিক অবস্থানের স্পষ্ট ইঙ্গিত।

ট্রাম্পের মন্তব্য

এক প্রশ্নের জবাবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, তিনি মনে করেন না যে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের মতো মিত্রকে হারাচ্ছে কিংবা ভারত চীনের দিকে ঝুঁকছে। তিনি আরও স্মরণ করিয়ে দেন, “মোদির সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভালো। কিছুদিন আগে তিনি ওয়াশিংটনে এসেছিলেন, আমরা রোজ গার্ডেনে যৌথ সংবাদ সম্মেলনও করেছি।”

ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ

দুই নেতা স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে তারা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করতে চান। তাই ওয়াশিংটন থেকে ভারতের বিরুদ্ধে যে কড়া মন্তব্যগুলো আসছিল, তা এখন হয়তো থেমে যাবে অথবা নরম হয়ে আসবে। এমনকি দুই নেতা শিগগিরই টেলিফোনে আবার কথা বলে কর্মকর্তাদের সুনির্দিষ্ট নির্দেশ দিতে পারেন।

মোদির টুইট

গত ১৭ জুন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপের পর মোদি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ লিখেন: “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ইতিবাচক মনোভাব ও মূল্যায়নকে আমি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞতা জানাই এবং সমানভাবে প্রতিদান দিই। ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি ইতিবাচক ও ভবিষ্যতমুখী সামগ্রিক কৌশলগত অংশীদারিত্ব রয়েছে।”

নয়াদিল্লির মনোভাব

নয়াদিল্লির দৃষ্টিভঙ্গি হলো—ভারত কোনোভাবেই চীনের দিকে ঝুঁকছে না। বরং চীনের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক বজায় রেখে একইসঙ্গে রাশিয়ার সঙ্গেও যোগাযোগ রক্ষা করছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কই ভারতের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

বাণিজ্য চুক্তির আশাবাদ

ভারতীয় নীতিনির্ধারকরা আশা করছেন, যুক্তরাষ্ট্রও বুঝবে যে দুই দেশের সম্পর্ক বৈশ্বিক কল্যাণের জন্য অপরিহার্য। তাই শিগগিরই একটি পারস্পরিক লাভজনক বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন হতে পারে।

নিরাপত্তা সংলাপের ইতিবাচক ইঙ্গিত

গত মাসে ভারতের একজন শীর্ষ জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা যুক্তরাষ্ট্র সফর করে সেখানকার গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তখন যুক্তরাষ্ট্র থেকে পরিষ্কার বার্তা এসেছিল যে বাণিজ্য নিয়ে মতভেদ কেবল অস্থায়ী সমস্যা। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আগের মতোই চলবে।