০১:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
মিয়ানমারের কালোবাজারি যুদ্ধ অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করছে ফেড সুদের হার কমাল, আরও কমানোর ইঙ্গিত; নতুন গভর্নর মিরানের ভিন্ন মত এয়ার ইন্ডিয়া দুর্ঘটনা: ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মামলা বোয়িং ও হানিওয়েলের বিরুদ্ধে “ভারতের আরবান কোম্পানির শেয়ার বাজারে অভিষেক: প্রথম দিনেই ৭৪% উল্লম্ফন, বাজারমূল্য ছুঁল ৩ বিলিয়ন ডলার” ভারতের চালের মজুত সর্বকালের সর্বোচ্চ, গমেও চার বছরের রেকর্ড ব্রিটেনের সিদ্ধান্ত: এই সপ্তাহান্তে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি জাপান ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে না যে সাক্ষাৎকারটি নেয়নি মোদির উত্তরসূরি নিয়ে জল্পনা সত্ত্বেও ক্ষমতায় দৃঢ় অবস্থান নেপালের নতুন ক্ষমতার সমীকরণে ভারত-চীনের শঙ্কা

ভারতের চিপ মিশন বাড়তে পারে ২০ বিলিয়ন ডলারে

নতুন উদ্যোগের পরিকল্পনা

ভারত সরকার সেমিকন্ডাক্টর শিল্পে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করতে দ্বিতীয় দফায় আরও বড় প্রণোদনা প্যাকেজের দিকে এগোচ্ছে। প্রথম ধাপে ১০ বিলিয়ন ডলারের বরাদ্দের পর এখন প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলারের একটি নতুন পরিকল্পনা তৈরি হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় (Meity) এই প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। অনুমোদন পেলে বিষয়টি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় যাবে এবং ২০২৫ সালের শেষের আগে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

প্রথম ধাপের ফলাফল ও তুলনা

Meity এখন একটি প্রতিবেদন প্রস্তুত করছে, যেখানে প্রথম ধাপের অর্জন ও ফেরতের হিসাব দেওয়া হবে এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশের সাথে তুলনা করা হবে। যুক্তরাষ্ট্রের ‘চিপস অ্যাক্ট’ ৫২ বিলিয়ন ডলারের বেশি ভর্তুকি দিয়েছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ৪৩ বিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগ করছে, আর চীন, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়াও সরাসরি তহবিল, কর ছাড় ও অনুদান দিয়ে বড় উদ্যোগ নিয়েছে।

একজন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ভারতের বরাদ্দ তুলনামূলক কম হলেও রাজ্য ও অন্যান্য পরোক্ষ সহায়তা যোগ করলে প্রথম ধাপে খরচ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলার। এজন্যই দ্বিতীয় ধাপে ২০ বিলিয়ন ডলারের প্রস্তাব আনা হয়েছে, যা সরকারের অঙ্গীকারকেও পুনর্ব্যক্ত করছে।

অনুমোদিত প্রকল্প ও বিনিয়োগ

গত চার বছরে ১০ বিলিয়ন ডলারের প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে ইতোমধ্যেই বেশ কিছু বড় প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে। এর মধ্যে আছে টাটা ইলেকট্রনিকস ও তাইওয়ানের পাওয়ারচিপ সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানির যৌথ উদ্যোগে ১১ বিলিয়ন ডলারের চিপ ফ্যাব, যুক্তরাষ্ট্রের মেমোরি চিপ কোম্পানি মাইক্রনের পরীক্ষাগার, এবং দেশীয় সংস্থা মুরুগাপ্পা গ্রুপের সিজি সেমি ও কেইন্স টেকনোলজির প্রকল্প।

দ্বিতীয় ধাপের মূল লক্ষ্য

ISM 2.0 চারটি বিষয়ে জোর দিচ্ছে—

আরও উন্নতমানের চিপ ফ্যাব তৈরি

ভারতের প্রথম ডিসপ্লে ফ্যাব স্থাপন

দেশীয়ভাবে চিপ ডিজাইন ও পেটেন্টকে উৎসাহ দেওয়া

সাপ্লাই চেইন শক্তিশালী করতে উপকরণ, টুলিং ও সেন্সর সরবরাহকারীদের ভর্তুকি দেওয়া

এই উদ্যোগ সফল হলে আগামী দুই বছরে দেশীয় চিপ স্টার্টআপগুলো স্থানীয় শিল্প খাতের জন্য নিজস্ব চিপ ডিজাইন করতে পারবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ১১০ ন্যানোমিটার থেকে ২৮ ন্যানোমিটার পর্যন্ত চিপ দেশে উৎপাদন সম্ভব হবে, যা ভারতের প্রযুক্তিগত স্বয়ংসম্পূর্ণতার বড় পদক্ষেপ হবে।

ডিজাইন-লিঙ্কড ইনসেনটিভ (DLI) সম্প্রসারণ

নতুন পরিকল্পনায় সেমিকন্ডাক্টর ডিজাইনের জন্য দেওয়া ডিজাইন-লিঙ্কড ইনসেনটিভ (DLI) পাঁচগুণ বাড়িয়ে প্রায় ৫ হাজার কোটি রুপি (৫৭০ মিলিয়ন ডলার) করার চিন্তা চলছে। এর মাধ্যমে দেশীয় কোম্পানি ও স্টার্টআপগুলোকে চিপ ডিজাইন ও উন্নয়নে উৎসাহিত করা হবে।

আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা ও ভারতের সুযোগ

শিল্প বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বৈশ্বিক সেমিকন্ডাক্টর প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে ভারতের এই ব্যয় অপরিহার্য। যুক্তরাষ্ট্রে নীতিগত অস্থিরতা, চীনের বন্ধ অর্থনীতি এবং অন্যান্য বাজারের সীমাবদ্ধতার কারণে ভারত এখন একমাত্র বড় ও উন্মুক্ত অর্থনীতি হিসেবে বৈশ্বিক চিপ কোম্পানিগুলোর কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠতে পারে।

বিসিজি ইন্ডিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঙ্কুশ ওয়াধেরা বলেন, এই মুহূর্তে বিশ্বের বড় চিপ কোম্পানিগুলোকে স্থিতিশীল ও উন্মুক্ত বাজার দিতে পারে একমাত্র ভারত।

জার্মানির সেমিকন্ডাক্টর সাপ্লাই চেইন কোম্পানি মার্কের শীর্ষ কর্মকর্তা কাই বেকম্যান বলেছেন, ভারত বিশ্বের শীর্ষ পাঁচ সেমিকন্ডাক্টর বাজারে জায়গা করে নিতে পারে, তবে এর জন্য নীতিগত স্থিতিশীলতা ও ব্যবসায়িক সহজীকরণ জরুরি। আর সেখানেই ভারতের দ্বিতীয় দফা সেমিকন্ডাক্টর প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

মিয়ানমারের কালোবাজারি যুদ্ধ অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করছে

ভারতের চিপ মিশন বাড়তে পারে ২০ বিলিয়ন ডলারে

১২:৩৬:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নতুন উদ্যোগের পরিকল্পনা

ভারত সরকার সেমিকন্ডাক্টর শিল্পে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করতে দ্বিতীয় দফায় আরও বড় প্রণোদনা প্যাকেজের দিকে এগোচ্ছে। প্রথম ধাপে ১০ বিলিয়ন ডলারের বরাদ্দের পর এখন প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলারের একটি নতুন পরিকল্পনা তৈরি হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় (Meity) এই প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। অনুমোদন পেলে বিষয়টি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় যাবে এবং ২০২৫ সালের শেষের আগে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

প্রথম ধাপের ফলাফল ও তুলনা

Meity এখন একটি প্রতিবেদন প্রস্তুত করছে, যেখানে প্রথম ধাপের অর্জন ও ফেরতের হিসাব দেওয়া হবে এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশের সাথে তুলনা করা হবে। যুক্তরাষ্ট্রের ‘চিপস অ্যাক্ট’ ৫২ বিলিয়ন ডলারের বেশি ভর্তুকি দিয়েছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ৪৩ বিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগ করছে, আর চীন, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়াও সরাসরি তহবিল, কর ছাড় ও অনুদান দিয়ে বড় উদ্যোগ নিয়েছে।

একজন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ভারতের বরাদ্দ তুলনামূলক কম হলেও রাজ্য ও অন্যান্য পরোক্ষ সহায়তা যোগ করলে প্রথম ধাপে খরচ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলার। এজন্যই দ্বিতীয় ধাপে ২০ বিলিয়ন ডলারের প্রস্তাব আনা হয়েছে, যা সরকারের অঙ্গীকারকেও পুনর্ব্যক্ত করছে।

অনুমোদিত প্রকল্প ও বিনিয়োগ

গত চার বছরে ১০ বিলিয়ন ডলারের প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে ইতোমধ্যেই বেশ কিছু বড় প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে। এর মধ্যে আছে টাটা ইলেকট্রনিকস ও তাইওয়ানের পাওয়ারচিপ সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানির যৌথ উদ্যোগে ১১ বিলিয়ন ডলারের চিপ ফ্যাব, যুক্তরাষ্ট্রের মেমোরি চিপ কোম্পানি মাইক্রনের পরীক্ষাগার, এবং দেশীয় সংস্থা মুরুগাপ্পা গ্রুপের সিজি সেমি ও কেইন্স টেকনোলজির প্রকল্প।

দ্বিতীয় ধাপের মূল লক্ষ্য

ISM 2.0 চারটি বিষয়ে জোর দিচ্ছে—

আরও উন্নতমানের চিপ ফ্যাব তৈরি

ভারতের প্রথম ডিসপ্লে ফ্যাব স্থাপন

দেশীয়ভাবে চিপ ডিজাইন ও পেটেন্টকে উৎসাহ দেওয়া

সাপ্লাই চেইন শক্তিশালী করতে উপকরণ, টুলিং ও সেন্সর সরবরাহকারীদের ভর্তুকি দেওয়া

এই উদ্যোগ সফল হলে আগামী দুই বছরে দেশীয় চিপ স্টার্টআপগুলো স্থানীয় শিল্প খাতের জন্য নিজস্ব চিপ ডিজাইন করতে পারবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ১১০ ন্যানোমিটার থেকে ২৮ ন্যানোমিটার পর্যন্ত চিপ দেশে উৎপাদন সম্ভব হবে, যা ভারতের প্রযুক্তিগত স্বয়ংসম্পূর্ণতার বড় পদক্ষেপ হবে।

ডিজাইন-লিঙ্কড ইনসেনটিভ (DLI) সম্প্রসারণ

নতুন পরিকল্পনায় সেমিকন্ডাক্টর ডিজাইনের জন্য দেওয়া ডিজাইন-লিঙ্কড ইনসেনটিভ (DLI) পাঁচগুণ বাড়িয়ে প্রায় ৫ হাজার কোটি রুপি (৫৭০ মিলিয়ন ডলার) করার চিন্তা চলছে। এর মাধ্যমে দেশীয় কোম্পানি ও স্টার্টআপগুলোকে চিপ ডিজাইন ও উন্নয়নে উৎসাহিত করা হবে।

আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা ও ভারতের সুযোগ

শিল্প বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বৈশ্বিক সেমিকন্ডাক্টর প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে ভারতের এই ব্যয় অপরিহার্য। যুক্তরাষ্ট্রে নীতিগত অস্থিরতা, চীনের বন্ধ অর্থনীতি এবং অন্যান্য বাজারের সীমাবদ্ধতার কারণে ভারত এখন একমাত্র বড় ও উন্মুক্ত অর্থনীতি হিসেবে বৈশ্বিক চিপ কোম্পানিগুলোর কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠতে পারে।

বিসিজি ইন্ডিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঙ্কুশ ওয়াধেরা বলেন, এই মুহূর্তে বিশ্বের বড় চিপ কোম্পানিগুলোকে স্থিতিশীল ও উন্মুক্ত বাজার দিতে পারে একমাত্র ভারত।

জার্মানির সেমিকন্ডাক্টর সাপ্লাই চেইন কোম্পানি মার্কের শীর্ষ কর্মকর্তা কাই বেকম্যান বলেছেন, ভারত বিশ্বের শীর্ষ পাঁচ সেমিকন্ডাক্টর বাজারে জায়গা করে নিতে পারে, তবে এর জন্য নীতিগত স্থিতিশীলতা ও ব্যবসায়িক সহজীকরণ জরুরি। আর সেখানেই ভারতের দ্বিতীয় দফা সেমিকন্ডাক্টর প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।