০৪:২৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫
পেলেলিউ: স্বর্গের গুয়ের্নিকা যে আঁকিয়ে ছেলের চোখে যুদ্ধের নগ্ন সত্য মানবস্পর্শে বদলে যাচ্ছে ভবিষ্যতের ট্যাক্সি বহর: ওয়েমোর গাড়িতে শিল্পীদের রঙিন ছোঁয়া জেমস এল ব্রুকসের ‘এলা ম্যাকে’: রাজনীতিকে কেন্দ্র করে ব্যর্থ হাস্যরসের এক ক্লান্তিকর প্রত্যাবর্তন এআই–নির্ভর ভবিষ্যৎ পরিবার: ব্রডওয়েতে ‘মার্জোরি প্রাইম’ মঞ্চে আলোচনার ঝড় নিদা ইয়াসির বিতর্ক: ডেলিভারি রাইডার মন্তব্যে ক্ষমা চাইলেন টিভি উপস্থাপক ৪১৫ হাজার বছর আগেই আগুন তৈরির প্রমাণ: ইংল্যান্ডে নব্য আবিষ্কার বদলে দিচ্ছে মানব বিবর্তনের ইতিহাস জেন জেডের উৎসবপ্রীতি বদলে গেল অভিজ্ঞতায় ঢামেকে সাংবাদিকের ওপর হাদির সমর্থকদের হামলা বাড্ডায় চলন্ত বাসে আগুন পাবনায় বিষাক্ত মদপানে দুই তরুণের মৃত্যু

কাতারে হামাস নেতাদের ওপর হামলা, ট্রাম্পের অসন্তোষ

ইসরায়েলের আকস্মিক হামলা

মঙ্গলবার কাতারে হামাসের রাজনৈতিক নেতাদের লক্ষ্য করে ইসরায়েল বিমান হামলা চালায়। এ ঘটনায় মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা নতুনভাবে বেড়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্র এই হামলাকে একতরফা আক্রমণ বলে বর্ণনা করেছে, যা মার্কিন ও ইসরায়েলি স্বার্থকে এগিয়ে নেয় না।

ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, হামলার প্রতিটি দিক নিয়ে তিনি খুবই অসন্তুষ্ট। বুধবার তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত বিবৃতি দেবেন। তিনি বলেন, “এটা ভালো পরিস্থিতি নয়। আমরা জিম্মিদের ফেরত চাই, কিন্তু আজ যা ঘটেছে, তাতে আমি সন্তুষ্ট নই।”

কাতারের ক্ষোভ

কাতার এ হামলাকে বিশ্বাসঘাতকতা ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ আখ্যা দিয়েছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুর রহমান আল-থানি সতর্ক করেছেন, এই আক্রমণ হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান শান্তি আলোচনা ভেস্তে দিতে পারে।

আক্রমণে হতাহত

হামাস জানায়, তাদের পাঁচ সদস্য নিহত হয়েছে, এর মধ্যে আছেন নির্বাসিত নেতা ও প্রধান আলোচক খালিল আল-হায়ার ছেলে। সংগঠনটির দাবি, ইসরায়েল তাদের যুদ্ধবিরতি আলোচক দলের ওপর হত্যাচেষ্টা চালিয়েছে, কিন্তু লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হয়েছে।

কাতার বলেছে, ইসরায়েলের হামলায় তাদের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বাহিনীর এক সদস্য নিহত হয়েছেন এবং আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের বিব্রতকর অবস্থান

ট্রাম্প বলেন, হামাসকে আঘাত করা একটি যৌক্তিক লক্ষ্য হলেও আক্রমণের স্থান কাতার—মার্কিন ঘনিষ্ঠ মিত্র হওয়ায় বিষয়টি তাকে খারাপভাবে আঘাত করেছে। কাতারে আল-উদাইদ মার্কিন ঘাঁটি অবস্থিত, যা মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সামরিক স্থাপনা।

ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যমে লেখেন, “একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র কাতারে, যারা সাহসীভাবে আমাদের সঙ্গে শান্তি আনতে কাজ করছে, সেখানে একতরফা বোমা হামলা ইসরায়েল বা আমেরিকার লক্ষ্য পূরণ করে না। তবে হামাসকে সরিয়ে দেওয়া একটি সঠিক লক্ষ্য।”

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

আক্রমণের পর সৌদি আরব, মিসর, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। ভ্যাটিকান থেকেও বিরলভাবে কড়া সমালোচনা এসেছে। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, কাতার যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছিল, এ হামলা সেই প্রচেষ্টাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

ইসরায়েলের অবস্থান

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেন, হামাস নেতাদের আর কোনো ধরনের নিরাপত্তা বা সুরক্ষা দেওয়া হবে না। জেরুজালেমের কাছে সোমবারের হামলায় ছয়জন নিহত ও গাজায় চার ইসরায়েলি সেনার মৃত্যু হওয়ার পর এই বিমান হামলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

হামলার প্রেক্ষাপট

ইসরায়েল অক্টোবর ২০২৩ থেকে হামাসের বিরুদ্ধে বড় ধরনের সামরিক অভিযান চালাচ্ছে। তখন হামাস ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে ১,২০০ জনকে হত্যা করে এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে। ইসরায়েলি অভিযানে এখন পর্যন্ত গাজায় ৬৪ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে বলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। এই অভিযানের কারণে ইসরায়েল গণহত্যার অভিযোগের মুখে পড়েছে।

গাজায় নতুন সংকট

মঙ্গলবার গাজা নগরীতে বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের কাছে ইসরায়েলি বাহিনী প্রচারণাপত্র ছড়িয়ে দিয়ে শহর ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ইসরায়েলের লক্ষ্য হলো পুরো গাজা উপত্যকাকে সামরিকভাবে নিষ্ক্রিয় করা।

তবে বিশ্বের বহু দেশ সতর্ক করেছে, এই পরিকল্পনা ফিলিস্তিনিদের জন্য ভয়াবহ বিপর্যয় বয়ে আনবে। এমনকি ইসরায়েলের ভেতরেও এ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে, কারণ যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া নিয়ে জনসমর্থন কমে আসছে।

জিম্মিদের ঝুঁকি

ইসরায়েলি জিম্মিদের পরিবার উদ্বিগ্ন, এই আক্রমণ জিম্মিদের আরও বিপদের মুখে ফেলবে। তবে নেতানিয়াহু বলেছেন, হামাসকে পুরোপুরি শেষ না করলে দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।

ইসরায়েলের কাতার হামলা মধ্যপ্রাচ্যের কূটনৈতিক ভারসাম্যে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। একদিকে ইসরায়েল হামাস ধ্বংসের সংকল্পে অটল, অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উদ্বেগ প্রকাশ ক

জনপ্রিয় সংবাদ

পেলেলিউ: স্বর্গের গুয়ের্নিকা যে আঁকিয়ে ছেলের চোখে যুদ্ধের নগ্ন সত্য

কাতারে হামাস নেতাদের ওপর হামলা, ট্রাম্পের অসন্তোষ

০২:৪৬:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ইসরায়েলের আকস্মিক হামলা

মঙ্গলবার কাতারে হামাসের রাজনৈতিক নেতাদের লক্ষ্য করে ইসরায়েল বিমান হামলা চালায়। এ ঘটনায় মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা নতুনভাবে বেড়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্র এই হামলাকে একতরফা আক্রমণ বলে বর্ণনা করেছে, যা মার্কিন ও ইসরায়েলি স্বার্থকে এগিয়ে নেয় না।

ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, হামলার প্রতিটি দিক নিয়ে তিনি খুবই অসন্তুষ্ট। বুধবার তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত বিবৃতি দেবেন। তিনি বলেন, “এটা ভালো পরিস্থিতি নয়। আমরা জিম্মিদের ফেরত চাই, কিন্তু আজ যা ঘটেছে, তাতে আমি সন্তুষ্ট নই।”

কাতারের ক্ষোভ

কাতার এ হামলাকে বিশ্বাসঘাতকতা ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ আখ্যা দিয়েছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুর রহমান আল-থানি সতর্ক করেছেন, এই আক্রমণ হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান শান্তি আলোচনা ভেস্তে দিতে পারে।

আক্রমণে হতাহত

হামাস জানায়, তাদের পাঁচ সদস্য নিহত হয়েছে, এর মধ্যে আছেন নির্বাসিত নেতা ও প্রধান আলোচক খালিল আল-হায়ার ছেলে। সংগঠনটির দাবি, ইসরায়েল তাদের যুদ্ধবিরতি আলোচক দলের ওপর হত্যাচেষ্টা চালিয়েছে, কিন্তু লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হয়েছে।

কাতার বলেছে, ইসরায়েলের হামলায় তাদের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বাহিনীর এক সদস্য নিহত হয়েছেন এবং আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের বিব্রতকর অবস্থান

ট্রাম্প বলেন, হামাসকে আঘাত করা একটি যৌক্তিক লক্ষ্য হলেও আক্রমণের স্থান কাতার—মার্কিন ঘনিষ্ঠ মিত্র হওয়ায় বিষয়টি তাকে খারাপভাবে আঘাত করেছে। কাতারে আল-উদাইদ মার্কিন ঘাঁটি অবস্থিত, যা মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সামরিক স্থাপনা।

ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যমে লেখেন, “একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র কাতারে, যারা সাহসীভাবে আমাদের সঙ্গে শান্তি আনতে কাজ করছে, সেখানে একতরফা বোমা হামলা ইসরায়েল বা আমেরিকার লক্ষ্য পূরণ করে না। তবে হামাসকে সরিয়ে দেওয়া একটি সঠিক লক্ষ্য।”

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

আক্রমণের পর সৌদি আরব, মিসর, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। ভ্যাটিকান থেকেও বিরলভাবে কড়া সমালোচনা এসেছে। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, কাতার যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছিল, এ হামলা সেই প্রচেষ্টাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

ইসরায়েলের অবস্থান

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেন, হামাস নেতাদের আর কোনো ধরনের নিরাপত্তা বা সুরক্ষা দেওয়া হবে না। জেরুজালেমের কাছে সোমবারের হামলায় ছয়জন নিহত ও গাজায় চার ইসরায়েলি সেনার মৃত্যু হওয়ার পর এই বিমান হামলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

হামলার প্রেক্ষাপট

ইসরায়েল অক্টোবর ২০২৩ থেকে হামাসের বিরুদ্ধে বড় ধরনের সামরিক অভিযান চালাচ্ছে। তখন হামাস ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে ১,২০০ জনকে হত্যা করে এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে। ইসরায়েলি অভিযানে এখন পর্যন্ত গাজায় ৬৪ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে বলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। এই অভিযানের কারণে ইসরায়েল গণহত্যার অভিযোগের মুখে পড়েছে।

গাজায় নতুন সংকট

মঙ্গলবার গাজা নগরীতে বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের কাছে ইসরায়েলি বাহিনী প্রচারণাপত্র ছড়িয়ে দিয়ে শহর ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ইসরায়েলের লক্ষ্য হলো পুরো গাজা উপত্যকাকে সামরিকভাবে নিষ্ক্রিয় করা।

তবে বিশ্বের বহু দেশ সতর্ক করেছে, এই পরিকল্পনা ফিলিস্তিনিদের জন্য ভয়াবহ বিপর্যয় বয়ে আনবে। এমনকি ইসরায়েলের ভেতরেও এ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে, কারণ যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া নিয়ে জনসমর্থন কমে আসছে।

জিম্মিদের ঝুঁকি

ইসরায়েলি জিম্মিদের পরিবার উদ্বিগ্ন, এই আক্রমণ জিম্মিদের আরও বিপদের মুখে ফেলবে। তবে নেতানিয়াহু বলেছেন, হামাসকে পুরোপুরি শেষ না করলে দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।

ইসরায়েলের কাতার হামলা মধ্যপ্রাচ্যের কূটনৈতিক ভারসাম্যে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। একদিকে ইসরায়েল হামাস ধ্বংসের সংকল্পে অটল, অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উদ্বেগ প্রকাশ ক