০৪:১৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫
ফখরুলের অভিযোগ: জনগণ ও রাজনৈতিক দলকে প্রতারণা করেছে সমন্বয় কমিশন, অভিযোগের তীর ইউনূসের দিকেও ট্রাম্পের এশিয়া সফরের শেষ গন্তব্য দক্ষিণ কোরিয়া—চীন ও বাণিজ্য আলোচনায় সমঝোতার ইঙ্গিত শতাব্দীর ভয়াবহতম ঘূর্ণিঝড় ‘মেলিসা’ ধ্বংসস্তূপে জ্যামাইকা, বিপদের মুখে কিউবা আরব আমিরাতের পারফিউমশিল্প— রাতের সুবাসে আরবের ঐতিহ্যের ছোঁয়া মানসিক স্বাস্থ্য ও MAID বিতর্ক: কষ্টের অবসান কি মৃত্যুর অনুমোদন নাকি ভালো জীবনের সহায়তা? হোয়াইট হাউসের ৩০০ মিলিয়ন ডলারের বলরুম ও অতিথি সুইট যুক্ত হচ্ছে ট্রাম্পের ‘নতুন’ ইস্ট উইং হামাসের হামলার পর বার্লিনের এক রেস্তোরাঁয় শান্তির স্বপ্ন ভেঙে গেল ট্রাম্প প্রশাসনের বলরুম নির্মাণে হারিয়ে গেল ‘হোয়াইট হাউস’-এর হৃদয় ‘ইস্ট উইং’ ভারতে বিগ বস–১৯ এর প্রতিযোগী আশনূরকে ‘মোটি’ বলে বিদ্রূপ,তান্যা ও নীলমের বিরুদ্ধে ভক্তদের ক্ষোভ গ্রিনউইচ রেলওয়ের সাহায্যে ১৮৫২ সালে সময়সূচী বিপর্যয়ের সমাধান

নরওয়েতে বিদ্যুৎচালিত বিমানের পরীক্ষা: পরিবেশবান্ধব আকাশপথের স্বপ্ন

সারাক্ষণ রিপোর্ট

নরওয়ের উপকূলের উপর দিয়ে উড়তে থাকা মসৃণ, সাদা ‘ড্রাগনফ্লাই’-এর মতো একটি ছোট বিমান থেকে ভেসে আসছিল কেবল হালকা গুঞ্জন। এর লেজে একটি প্রপেলার ঘুরছিল, নিচে দেখা যাচ্ছিল ফিয়র্ড, বনভূমি এবং উত্তর সাগরের সালমন চাষের খামার। এটাই ছিল নরওয়ের আকাশপথে প্রথমবারের মতো একটি বিদ্যুৎচালিত বিমান — Alia CX300 — যা এক শহর থেকে আরেক শহরে পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন সম্পন্ন করল।


বিদ্যুৎচালিত আকাশযাত্রার পেছনের স্বপ্ন

বিদ্যুৎচালিত এই বিমানটি নরওয়ের বিচ্ছিন্ন দ্বীপপুঞ্জ এবং প্রত্যন্ত এলাকাকে সংযোগ দেওয়ার উদ্দেশ্যে তৈরি। দেশটির বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ Avinor এ ধরনের সংযোগের জন্য ছোট দূরত্বের ‘মিল্ক রান রুটস’ (milk run routes) গুলোতে বিদ্যুৎচালিত বিমানের ব্যবহারকে এগিয়ে নিতে চায়। প্রতিদিন নরওয়েতে ৫৬০টি অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট হয়, যার তিন-চতুর্থাংশের দূরত্ব ২৫০ মাইলের (৪০০ কিমি) কম। এদের বেশিরভাগই সরকারি ভর্তুকিতে চলে এবং আর্কটিক সার্কেলের ভেতরের প্রত্যন্ত দ্বীপ ও গ্রামীণ এলাকাকে সংযুক্ত রাখে।


তেল সমৃদ্ধ দেশ থেকে সবুজ জ্বালানিতে রূপান্তর

নরওয়ে ইউরোপের সবচেয়ে বড় তেল উৎপাদনকারী দেশ (রাশিয়ার বাইরে) এবং বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম প্রাকৃতিক গ্যাস রপ্তানিকারক। প্রতিদিন দেশটি দুই মিলিয়ন ব্যারেল সমপরিমাণ তেল উৎপাদন করে। তবে আগামী দশকের মধ্যে উৎপাদন কমতে শুরু করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ভবিষ্যতের জন্য নরওয়ে তাদের ১.৯ ট্রিলিয়ন ডলারের সার্বভৌম তহবিল (sovereign wealth fund) সবুজ জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ করছে। দেশটির ৫০ শতাংশের বেশি তেল ও গ্যাস মজুদ ইতিমধ্যেই উত্তোলিত হয়েছে। নরওয়ের অভ্যন্তরীণ বিদ্যুৎ উৎপাদনের অধিকাংশই বর্তমানে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে আসে।


ইলেকট্রিক গাড়ির সাফল্য থেকে অনুপ্রেরণা

নরওয়ে পরিবহন খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে। ২০২৪ সালে দেশটিতে বিক্রি হওয়া নতুন গাড়ির প্রায় ৮৯ শতাংশই ছিল বিদ্যুৎচালিত, যা বিশ্বে সর্বোচ্চ।
সরকারি প্রণোদনা এবং কর ছাড়ের মাধ্যমে ইলেকট্রিক গাড়িকে জনপ্রিয় করা হয়েছে। সারা দেশে ১০,১০০-এরও বেশি চার্জিং স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে।

এখন একই মডেল অনুসরণ করে বিমান পরিবহন খাতে বিদ্যুৎ ব্যবহার বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। স্টাভেঙ্গার বিমানবন্দরে (Stavanger Airport) একটি বিশেষ বৈদ্যুতিক চার্জিং স্টেশন তৈরি করা হয়েছে, যা মাটির নিচে কেবল লুকানো অবস্থায় থাকে।

Alia CX300-এর পরীক্ষামূলক যাত্রা

বিদ্যুৎচালিত Alia CX300 বিমানটি Beta Technologies (যুক্তরাষ্ট্র), Bristow (হেলিকপ্টার কোম্পানি), এবং নরওয়ের Avinor-এর যৌথ উদ্যোগে তৈরি।

  • উইংসপ্যান: ৫০ ফুট (১৫ মিটার)
  • সর্বোচ্চ গতি: ঘণ্টায় ১৭৬ মাইল
  • ব্যাটারি প্যাক: পাঁচটি, সম্পূর্ণ চার্জে প্রস্তুত
  • যাত্রাপথ: স্টাভেঙ্গার থেকে বার্গেন (৯৯ মাইল)
  • সময়: মাত্র ৫৫ মিনিট (গাড়ি ও ফেরিতে ৪ ঘণ্টার বেশি লাগত)

বিমানের ভেতরে পাইলটরা — জেরেমি ডেগানি ও কোল হ্যানসন — নেভিগেশনের স্ক্রিনে ভূখণ্ড পর্যবেক্ষণ করছিলেন। শব্দ ছিল খুবই কম, শুধু রেডিও যোগাযোগের আওয়াজ শোনা যাচ্ছিল।

উড্ডয়নের শেষে ব্যাটারি সূচক প্রায় অর্ধেক ছিল। পরে প্রথমবারের মতো বার্গেন বিমানবন্দরের নতুন চার্জারে সেটিকে সংযুক্ত করা হয়। চার্জিং শুরু হতেই উপস্থিত সবাই করতালিতে ফেটে পড়ে।


প্রধান চ্যালেঞ্জ: ব্যাটারির সীমাবদ্ধতা

ক্র্যানফিল্ড ইউনিভার্সিটি (Cranfield University)-এর বিমান বিশেষজ্ঞ গাই গ্রাটন বলেন,

“ইলেকট্রিক বিমানের অ্যাকিলিস হিল হলো ব্যাটারি।”

বর্তমান ব্যাটারিগুলোতে একই পরিমাণ শক্তি সঞ্চয় করতে জ্বালানির তুলনায় ৫০ গুণ বেশি ওজন লাগে। প্রচলিত বিমানের মতো জ্বালানি খরচের কারণে ওজন কমে না। এছাড়া দ্রুত চার্জিং প্রযুক্তি, যা গাড়ির ক্ষেত্রে ভালো কাজ করে, বড় আকারের বিমানের ব্যাটারি দ্রুত নষ্ট করে দিতে পারে।

খরচ কমানো এবং পরিবেশবান্ধব ভবিষ্যৎ

ব্রিস্টো কোম্পানির নির্বাহী সাইমন মিকিন্স বলেন, বিদ্যুৎচালিত বিমান চালাতে খরচ ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কম হবে।
কারণ এ ধরনের বিমানে গিয়ারবক্স বা হাইড্রোলিক সিস্টেম নেই এবং ইঞ্জিনের গঠন অনেক সহজ হওয়ায় রক্ষণাবেক্ষণ খরচ কমে যাবে।

নরওয়ের সরকার ইতোমধ্যেই প্রকল্পে ৫ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। ভবিষ্যতে দেশটির ৪৪টি বিমানবন্দরকে বিদ্যুৎচালিত বিমানের জন্য উপযোগী করে গড়ে তোলা হবে।


মানুষের আশা এবং প্রতিক্রিয়া

দূরবর্তী দ্বীপের বাসিন্দারা প্রকল্পটিকে ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। আর্কটিক অঞ্চলের বাসিন্দা ভিবেকে পারসেন, যিনি শৈশব থেকে ‘মিল্ক রান’ ফ্লাইটে যাতায়াত করেন, বলেন,

“আমি সাধারণত সবচেয়ে সস্তা ভাড়ার ফ্লাইট বেছে নেই। যদি সেটি পরিবেশবান্ধব হয়, তাহলে আমার অপরাধবোধ অনেকটাই কমে যাবে।”

Alia CX300-এর এই পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন নরওয়ের আকাশপথে নতুন যুগের সূচনা করেছে। দেশটি ইতিমধ্যেই বিদ্যুৎচালিত ফেরি এবং গাড়িতে সফলতা দেখিয়েছে। এবার বিদ্যুৎচালিত বিমানের মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব ও অর্থনৈতিক ভ্রমণকে নতুন মাত্রা দেওয়ার পথে এক ধাপ এগিয়ে গেল নরওয়ে।

এটি সফল হলে কেবল নরওয়ের আকাশ নয়, বিশ্বব্যাপী বিমান শিল্পেও বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে।নরওয়েতে বিদ্যুৎচালিত বিমানের পরীক্ষা: পরিবেশবান্ধব আকাশপথের স্বপ্ন

সারাক্ষণ রিপোর্ট

নরওয়ের উপকূলের উপর দিয়ে উড়তে থাকা মসৃণ, সাদা ‘ড্রাগনফ্লাই’-এর মতো একটি ছোট বিমান থেকে ভেসে আসছিল কেবল হালকা গুঞ্জন। এর লেজে একটি প্রপেলার ঘুরছিল, নিচে দেখা যাচ্ছিল ফিয়র্ড, বনভূমি এবং উত্তর সাগরের সালমন চাষের খামার। এটাই ছিল নরওয়ের আকাশপথে প্রথমবারের মতো একটি বিদ্যুৎচালিত বিমান — Alia CX300 — যা এক শহর থেকে আরেক শহরে পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন সম্পন্ন করল।


বিদ্যুৎচালিত আকাশযাত্রার পেছনের স্বপ্ন

বিদ্যুৎচালিত এই বিমানটি নরওয়ের বিচ্ছিন্ন দ্বীপপুঞ্জ এবং প্রত্যন্ত এলাকাকে সংযোগ দেওয়ার উদ্দেশ্যে তৈরি। দেশটির বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ Avinor এ ধরনের সংযোগের জন্য ছোট দূরত্বের ‘মিল্ক রান রুটস’ (milk run routes) গুলোতে বিদ্যুৎচালিত বিমানের ব্যবহারকে এগিয়ে নিতে চায়। প্রতিদিন নরওয়েতে ৫৬০টি অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট হয়, যার তিন-চতুর্থাংশের দূরত্ব ২৫০ মাইলের (৪০০ কিমি) কম। এদের বেশিরভাগই সরকারি ভর্তুকিতে চলে এবং আর্কটিক সার্কেলের ভেতরের প্রত্যন্ত দ্বীপ ও গ্রামীণ এলাকাকে সংযুক্ত রাখে।

তেল সমৃদ্ধ দেশ থেকে সবুজ জ্বালানিতে রূপান্তর

নরওয়ে ইউরোপের সবচেয়ে বড় তেল উৎপাদনকারী দেশ (রাশিয়ার বাইরে) এবং বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম প্রাকৃতিক গ্যাস রপ্তানিকারক। প্রতিদিন দেশটি দুই মিলিয়ন ব্যারেল সমপরিমাণ তেল উৎপাদন করে। তবে আগামী দশকের মধ্যে উৎপাদন কমতে শুরু করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ভবিষ্যতের জন্য নরওয়ে তাদের ১.৯ ট্রিলিয়ন ডলারের সার্বভৌম তহবিল (sovereign wealth fund) সবুজ জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ করছে। দেশটির ৫০ শতাংশের বেশি তেল ও গ্যাস মজুদ ইতিমধ্যেই উত্তোলিত হয়েছে। নরওয়ের অভ্যন্তরীণ বিদ্যুৎ উৎপাদনের অধিকাংশই বর্তমানে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে আসে।


ইলেকট্রিক গাড়ির সাফল্য থেকে অনুপ্রেরণা

নরওয়ে পরিবহন খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে। ২০২৪ সালে দেশটিতে বিক্রি হওয়া নতুন গাড়ির প্রায় ৮৯ শতাংশই ছিল বিদ্যুৎচালিত, যা বিশ্বে সর্বোচ্চ।
সরকারি প্রণোদনা এবং কর ছাড়ের মাধ্যমে ইলেকট্রিক গাড়িকে জনপ্রিয় করা হয়েছে। সারা দেশে ১০,১০০-এরও বেশি চার্জিং স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে।

এখন একই মডেল অনুসরণ করে বিমান পরিবহন খাতে বিদ্যুৎ ব্যবহার বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। স্টাভেঙ্গার বিমানবন্দরে (Stavanger Airport) একটি বিশেষ বৈদ্যুতিক চার্জিং স্টেশন তৈরি করা হয়েছে, যা মাটির নিচে কেবল লুকানো অবস্থায় থাকে।


Alia CX300-এর পরীক্ষামূলক যাত্রা

বিদ্যুৎচালিত Alia CX300 বিমানটি Beta Technologies (যুক্তরাষ্ট্র), Bristow (হেলিকপ্টার কোম্পানি), এবং নরওয়ের Avinor-এর যৌথ উদ্যোগে তৈরি।

  • উইংসপ্যান: ৫০ ফুট (১৫ মিটার)
  • সর্বোচ্চ গতি: ঘণ্টায় ১৭৬ মাইল
  • ব্যাটারি প্যাক: পাঁচটি, সম্পূর্ণ চার্জে প্রস্তুত
  • যাত্রাপথ: স্টাভেঙ্গার থেকে বার্গেন (৯৯ মাইল)
  • সময়: মাত্র ৫৫ মিনিট (গাড়ি ও ফেরিতে ৪ ঘণ্টার বেশি লাগত)

বিমানের ভেতরে পাইলটরা — জেরেমি ডেগানি ও কোল হ্যানসন — নেভিগেশনের স্ক্রিনে ভূখণ্ড পর্যবেক্ষণ করছিলেন। শব্দ ছিল খুবই কম, শুধু রেডিও যোগাযোগের আওয়াজ শোনা যাচ্ছিল।

উড্ডয়নের শেষে ব্যাটারি সূচক প্রায় অর্ধেক ছিল। পরে প্রথমবারের মতো বার্গেন বিমানবন্দরের নতুন চার্জারে সেটিকে সংযুক্ত করা হয়। চার্জিং শুরু হতেই উপস্থিত সবাই করতালিতে ফেটে পড়ে।

প্রধান চ্যালেঞ্জ: ব্যাটারির সীমাবদ্ধতা

ক্র্যানফিল্ড ইউনিভার্সিটি (Cranfield University)-এর বিমান বিশেষজ্ঞ গাই গ্রাটন বলেন,

“ইলেকট্রিক বিমানের অ্যাকিলিস হিল হলো ব্যাটারি।”

বর্তমান ব্যাটারিগুলোতে একই পরিমাণ শক্তি সঞ্চয় করতে জ্বালানির তুলনায় ৫০ গুণ বেশি ওজন লাগে। প্রচলিত বিমানের মতো জ্বালানি খরচের কারণে ওজন কমে না। এছাড়া দ্রুত চার্জিং প্রযুক্তি, যা গাড়ির ক্ষেত্রে ভালো কাজ করে, বড় আকারের বিমানের ব্যাটারি দ্রুত নষ্ট করে দিতে পারে।


খরচ কমানো এবং পরিবেশবান্ধব ভবিষ্যৎ

ব্রিস্টো কোম্পানির নির্বাহী সাইমন মিকিন্স বলেন, বিদ্যুৎচালিত বিমান চালাতে খরচ ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কম হবে।
কারণ এ ধরনের বিমানে গিয়ারবক্স বা হাইড্রোলিক সিস্টেম নেই এবং ইঞ্জিনের গঠন অনেক সহজ হওয়ায় রক্ষণাবেক্ষণ খরচ কমে যাবে।

নরওয়ের সরকার ইতোমধ্যেই প্রকল্পে ৫ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। ভবিষ্যতে দেশটির ৪৪টি বিমানবন্দরকে বিদ্যুৎচালিত বিমানের জন্য উপযোগী করে গড়ে তোলা হবে।


মানুষের আশা এবং প্রতিক্রিয়া

দূরবর্তী দ্বীপের বাসিন্দারা প্রকল্পটিকে ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। আর্কটিক অঞ্চলের বাসিন্দা ভিবেকে পারসেন, যিনি শৈশব থেকে ‘মিল্ক রান’ ফ্লাইটে যাতায়াত করেন, বলেন,

“আমি সাধারণত সবচেয়ে সস্তা ভাড়ার ফ্লাইট বেছে নেই। যদি সেটি পরিবেশবান্ধব হয়, তাহলে আমার অপরাধবোধ অনেকটাই কমে যাবে।”

Alia CX300-এর এই পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন নরওয়ের আকাশপথে নতুন যুগের সূচনা করেছে। দেশটি ইতিমধ্যেই বিদ্যুৎচালিত ফেরি এবং গাড়িতে সফলতা দেখিয়েছে। এবার বিদ্যুৎচালিত বিমানের মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব ও অর্থনৈতিক ভ্রমণকে নতুন মাত্রা দেওয়ার পথে এক ধাপ এগিয়ে গেল নরওয়ে।

এটি সফল হলে কেবল নরওয়ের আকাশ নয়, বিশ্বব্যাপী বিমান শিল্পেও বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে।

জনপ্রিয় সংবাদ

ফখরুলের অভিযোগ: জনগণ ও রাজনৈতিক দলকে প্রতারণা করেছে সমন্বয় কমিশন, অভিযোগের তীর ইউনূসের দিকেও

নরওয়েতে বিদ্যুৎচালিত বিমানের পরীক্ষা: পরিবেশবান্ধব আকাশপথের স্বপ্ন

০৭:০০:২৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সারাক্ষণ রিপোর্ট

নরওয়ের উপকূলের উপর দিয়ে উড়তে থাকা মসৃণ, সাদা ‘ড্রাগনফ্লাই’-এর মতো একটি ছোট বিমান থেকে ভেসে আসছিল কেবল হালকা গুঞ্জন। এর লেজে একটি প্রপেলার ঘুরছিল, নিচে দেখা যাচ্ছিল ফিয়র্ড, বনভূমি এবং উত্তর সাগরের সালমন চাষের খামার। এটাই ছিল নরওয়ের আকাশপথে প্রথমবারের মতো একটি বিদ্যুৎচালিত বিমান — Alia CX300 — যা এক শহর থেকে আরেক শহরে পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন সম্পন্ন করল।


বিদ্যুৎচালিত আকাশযাত্রার পেছনের স্বপ্ন

বিদ্যুৎচালিত এই বিমানটি নরওয়ের বিচ্ছিন্ন দ্বীপপুঞ্জ এবং প্রত্যন্ত এলাকাকে সংযোগ দেওয়ার উদ্দেশ্যে তৈরি। দেশটির বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ Avinor এ ধরনের সংযোগের জন্য ছোট দূরত্বের ‘মিল্ক রান রুটস’ (milk run routes) গুলোতে বিদ্যুৎচালিত বিমানের ব্যবহারকে এগিয়ে নিতে চায়। প্রতিদিন নরওয়েতে ৫৬০টি অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট হয়, যার তিন-চতুর্থাংশের দূরত্ব ২৫০ মাইলের (৪০০ কিমি) কম। এদের বেশিরভাগই সরকারি ভর্তুকিতে চলে এবং আর্কটিক সার্কেলের ভেতরের প্রত্যন্ত দ্বীপ ও গ্রামীণ এলাকাকে সংযুক্ত রাখে।


তেল সমৃদ্ধ দেশ থেকে সবুজ জ্বালানিতে রূপান্তর

নরওয়ে ইউরোপের সবচেয়ে বড় তেল উৎপাদনকারী দেশ (রাশিয়ার বাইরে) এবং বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম প্রাকৃতিক গ্যাস রপ্তানিকারক। প্রতিদিন দেশটি দুই মিলিয়ন ব্যারেল সমপরিমাণ তেল উৎপাদন করে। তবে আগামী দশকের মধ্যে উৎপাদন কমতে শুরু করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ভবিষ্যতের জন্য নরওয়ে তাদের ১.৯ ট্রিলিয়ন ডলারের সার্বভৌম তহবিল (sovereign wealth fund) সবুজ জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ করছে। দেশটির ৫০ শতাংশের বেশি তেল ও গ্যাস মজুদ ইতিমধ্যেই উত্তোলিত হয়েছে। নরওয়ের অভ্যন্তরীণ বিদ্যুৎ উৎপাদনের অধিকাংশই বর্তমানে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে আসে।


ইলেকট্রিক গাড়ির সাফল্য থেকে অনুপ্রেরণা

নরওয়ে পরিবহন খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে। ২০২৪ সালে দেশটিতে বিক্রি হওয়া নতুন গাড়ির প্রায় ৮৯ শতাংশই ছিল বিদ্যুৎচালিত, যা বিশ্বে সর্বোচ্চ।
সরকারি প্রণোদনা এবং কর ছাড়ের মাধ্যমে ইলেকট্রিক গাড়িকে জনপ্রিয় করা হয়েছে। সারা দেশে ১০,১০০-এরও বেশি চার্জিং স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে।

এখন একই মডেল অনুসরণ করে বিমান পরিবহন খাতে বিদ্যুৎ ব্যবহার বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। স্টাভেঙ্গার বিমানবন্দরে (Stavanger Airport) একটি বিশেষ বৈদ্যুতিক চার্জিং স্টেশন তৈরি করা হয়েছে, যা মাটির নিচে কেবল লুকানো অবস্থায় থাকে।

Alia CX300-এর পরীক্ষামূলক যাত্রা

বিদ্যুৎচালিত Alia CX300 বিমানটি Beta Technologies (যুক্তরাষ্ট্র), Bristow (হেলিকপ্টার কোম্পানি), এবং নরওয়ের Avinor-এর যৌথ উদ্যোগে তৈরি।

  • উইংসপ্যান: ৫০ ফুট (১৫ মিটার)
  • সর্বোচ্চ গতি: ঘণ্টায় ১৭৬ মাইল
  • ব্যাটারি প্যাক: পাঁচটি, সম্পূর্ণ চার্জে প্রস্তুত
  • যাত্রাপথ: স্টাভেঙ্গার থেকে বার্গেন (৯৯ মাইল)
  • সময়: মাত্র ৫৫ মিনিট (গাড়ি ও ফেরিতে ৪ ঘণ্টার বেশি লাগত)

বিমানের ভেতরে পাইলটরা — জেরেমি ডেগানি ও কোল হ্যানসন — নেভিগেশনের স্ক্রিনে ভূখণ্ড পর্যবেক্ষণ করছিলেন। শব্দ ছিল খুবই কম, শুধু রেডিও যোগাযোগের আওয়াজ শোনা যাচ্ছিল।

উড্ডয়নের শেষে ব্যাটারি সূচক প্রায় অর্ধেক ছিল। পরে প্রথমবারের মতো বার্গেন বিমানবন্দরের নতুন চার্জারে সেটিকে সংযুক্ত করা হয়। চার্জিং শুরু হতেই উপস্থিত সবাই করতালিতে ফেটে পড়ে।


প্রধান চ্যালেঞ্জ: ব্যাটারির সীমাবদ্ধতা

ক্র্যানফিল্ড ইউনিভার্সিটি (Cranfield University)-এর বিমান বিশেষজ্ঞ গাই গ্রাটন বলেন,

“ইলেকট্রিক বিমানের অ্যাকিলিস হিল হলো ব্যাটারি।”

বর্তমান ব্যাটারিগুলোতে একই পরিমাণ শক্তি সঞ্চয় করতে জ্বালানির তুলনায় ৫০ গুণ বেশি ওজন লাগে। প্রচলিত বিমানের মতো জ্বালানি খরচের কারণে ওজন কমে না। এছাড়া দ্রুত চার্জিং প্রযুক্তি, যা গাড়ির ক্ষেত্রে ভালো কাজ করে, বড় আকারের বিমানের ব্যাটারি দ্রুত নষ্ট করে দিতে পারে।

খরচ কমানো এবং পরিবেশবান্ধব ভবিষ্যৎ

ব্রিস্টো কোম্পানির নির্বাহী সাইমন মিকিন্স বলেন, বিদ্যুৎচালিত বিমান চালাতে খরচ ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কম হবে।
কারণ এ ধরনের বিমানে গিয়ারবক্স বা হাইড্রোলিক সিস্টেম নেই এবং ইঞ্জিনের গঠন অনেক সহজ হওয়ায় রক্ষণাবেক্ষণ খরচ কমে যাবে।

নরওয়ের সরকার ইতোমধ্যেই প্রকল্পে ৫ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। ভবিষ্যতে দেশটির ৪৪টি বিমানবন্দরকে বিদ্যুৎচালিত বিমানের জন্য উপযোগী করে গড়ে তোলা হবে।


মানুষের আশা এবং প্রতিক্রিয়া

দূরবর্তী দ্বীপের বাসিন্দারা প্রকল্পটিকে ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। আর্কটিক অঞ্চলের বাসিন্দা ভিবেকে পারসেন, যিনি শৈশব থেকে ‘মিল্ক রান’ ফ্লাইটে যাতায়াত করেন, বলেন,

“আমি সাধারণত সবচেয়ে সস্তা ভাড়ার ফ্লাইট বেছে নেই। যদি সেটি পরিবেশবান্ধব হয়, তাহলে আমার অপরাধবোধ অনেকটাই কমে যাবে।”

Alia CX300-এর এই পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন নরওয়ের আকাশপথে নতুন যুগের সূচনা করেছে। দেশটি ইতিমধ্যেই বিদ্যুৎচালিত ফেরি এবং গাড়িতে সফলতা দেখিয়েছে। এবার বিদ্যুৎচালিত বিমানের মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব ও অর্থনৈতিক ভ্রমণকে নতুন মাত্রা দেওয়ার পথে এক ধাপ এগিয়ে গেল নরওয়ে।

এটি সফল হলে কেবল নরওয়ের আকাশ নয়, বিশ্বব্যাপী বিমান শিল্পেও বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে।নরওয়েতে বিদ্যুৎচালিত বিমানের পরীক্ষা: পরিবেশবান্ধব আকাশপথের স্বপ্ন

সারাক্ষণ রিপোর্ট

নরওয়ের উপকূলের উপর দিয়ে উড়তে থাকা মসৃণ, সাদা ‘ড্রাগনফ্লাই’-এর মতো একটি ছোট বিমান থেকে ভেসে আসছিল কেবল হালকা গুঞ্জন। এর লেজে একটি প্রপেলার ঘুরছিল, নিচে দেখা যাচ্ছিল ফিয়র্ড, বনভূমি এবং উত্তর সাগরের সালমন চাষের খামার। এটাই ছিল নরওয়ের আকাশপথে প্রথমবারের মতো একটি বিদ্যুৎচালিত বিমান — Alia CX300 — যা এক শহর থেকে আরেক শহরে পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন সম্পন্ন করল।


বিদ্যুৎচালিত আকাশযাত্রার পেছনের স্বপ্ন

বিদ্যুৎচালিত এই বিমানটি নরওয়ের বিচ্ছিন্ন দ্বীপপুঞ্জ এবং প্রত্যন্ত এলাকাকে সংযোগ দেওয়ার উদ্দেশ্যে তৈরি। দেশটির বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ Avinor এ ধরনের সংযোগের জন্য ছোট দূরত্বের ‘মিল্ক রান রুটস’ (milk run routes) গুলোতে বিদ্যুৎচালিত বিমানের ব্যবহারকে এগিয়ে নিতে চায়। প্রতিদিন নরওয়েতে ৫৬০টি অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট হয়, যার তিন-চতুর্থাংশের দূরত্ব ২৫০ মাইলের (৪০০ কিমি) কম। এদের বেশিরভাগই সরকারি ভর্তুকিতে চলে এবং আর্কটিক সার্কেলের ভেতরের প্রত্যন্ত দ্বীপ ও গ্রামীণ এলাকাকে সংযুক্ত রাখে।

তেল সমৃদ্ধ দেশ থেকে সবুজ জ্বালানিতে রূপান্তর

নরওয়ে ইউরোপের সবচেয়ে বড় তেল উৎপাদনকারী দেশ (রাশিয়ার বাইরে) এবং বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম প্রাকৃতিক গ্যাস রপ্তানিকারক। প্রতিদিন দেশটি দুই মিলিয়ন ব্যারেল সমপরিমাণ তেল উৎপাদন করে। তবে আগামী দশকের মধ্যে উৎপাদন কমতে শুরু করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ভবিষ্যতের জন্য নরওয়ে তাদের ১.৯ ট্রিলিয়ন ডলারের সার্বভৌম তহবিল (sovereign wealth fund) সবুজ জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ করছে। দেশটির ৫০ শতাংশের বেশি তেল ও গ্যাস মজুদ ইতিমধ্যেই উত্তোলিত হয়েছে। নরওয়ের অভ্যন্তরীণ বিদ্যুৎ উৎপাদনের অধিকাংশই বর্তমানে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে আসে।


ইলেকট্রিক গাড়ির সাফল্য থেকে অনুপ্রেরণা

নরওয়ে পরিবহন খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে। ২০২৪ সালে দেশটিতে বিক্রি হওয়া নতুন গাড়ির প্রায় ৮৯ শতাংশই ছিল বিদ্যুৎচালিত, যা বিশ্বে সর্বোচ্চ।
সরকারি প্রণোদনা এবং কর ছাড়ের মাধ্যমে ইলেকট্রিক গাড়িকে জনপ্রিয় করা হয়েছে। সারা দেশে ১০,১০০-এরও বেশি চার্জিং স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে।

এখন একই মডেল অনুসরণ করে বিমান পরিবহন খাতে বিদ্যুৎ ব্যবহার বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। স্টাভেঙ্গার বিমানবন্দরে (Stavanger Airport) একটি বিশেষ বৈদ্যুতিক চার্জিং স্টেশন তৈরি করা হয়েছে, যা মাটির নিচে কেবল লুকানো অবস্থায় থাকে।


Alia CX300-এর পরীক্ষামূলক যাত্রা

বিদ্যুৎচালিত Alia CX300 বিমানটি Beta Technologies (যুক্তরাষ্ট্র), Bristow (হেলিকপ্টার কোম্পানি), এবং নরওয়ের Avinor-এর যৌথ উদ্যোগে তৈরি।

  • উইংসপ্যান: ৫০ ফুট (১৫ মিটার)
  • সর্বোচ্চ গতি: ঘণ্টায় ১৭৬ মাইল
  • ব্যাটারি প্যাক: পাঁচটি, সম্পূর্ণ চার্জে প্রস্তুত
  • যাত্রাপথ: স্টাভেঙ্গার থেকে বার্গেন (৯৯ মাইল)
  • সময়: মাত্র ৫৫ মিনিট (গাড়ি ও ফেরিতে ৪ ঘণ্টার বেশি লাগত)

বিমানের ভেতরে পাইলটরা — জেরেমি ডেগানি ও কোল হ্যানসন — নেভিগেশনের স্ক্রিনে ভূখণ্ড পর্যবেক্ষণ করছিলেন। শব্দ ছিল খুবই কম, শুধু রেডিও যোগাযোগের আওয়াজ শোনা যাচ্ছিল।

উড্ডয়নের শেষে ব্যাটারি সূচক প্রায় অর্ধেক ছিল। পরে প্রথমবারের মতো বার্গেন বিমানবন্দরের নতুন চার্জারে সেটিকে সংযুক্ত করা হয়। চার্জিং শুরু হতেই উপস্থিত সবাই করতালিতে ফেটে পড়ে।

প্রধান চ্যালেঞ্জ: ব্যাটারির সীমাবদ্ধতা

ক্র্যানফিল্ড ইউনিভার্সিটি (Cranfield University)-এর বিমান বিশেষজ্ঞ গাই গ্রাটন বলেন,

“ইলেকট্রিক বিমানের অ্যাকিলিস হিল হলো ব্যাটারি।”

বর্তমান ব্যাটারিগুলোতে একই পরিমাণ শক্তি সঞ্চয় করতে জ্বালানির তুলনায় ৫০ গুণ বেশি ওজন লাগে। প্রচলিত বিমানের মতো জ্বালানি খরচের কারণে ওজন কমে না। এছাড়া দ্রুত চার্জিং প্রযুক্তি, যা গাড়ির ক্ষেত্রে ভালো কাজ করে, বড় আকারের বিমানের ব্যাটারি দ্রুত নষ্ট করে দিতে পারে।


খরচ কমানো এবং পরিবেশবান্ধব ভবিষ্যৎ

ব্রিস্টো কোম্পানির নির্বাহী সাইমন মিকিন্স বলেন, বিদ্যুৎচালিত বিমান চালাতে খরচ ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কম হবে।
কারণ এ ধরনের বিমানে গিয়ারবক্স বা হাইড্রোলিক সিস্টেম নেই এবং ইঞ্জিনের গঠন অনেক সহজ হওয়ায় রক্ষণাবেক্ষণ খরচ কমে যাবে।

নরওয়ের সরকার ইতোমধ্যেই প্রকল্পে ৫ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। ভবিষ্যতে দেশটির ৪৪টি বিমানবন্দরকে বিদ্যুৎচালিত বিমানের জন্য উপযোগী করে গড়ে তোলা হবে।


মানুষের আশা এবং প্রতিক্রিয়া

দূরবর্তী দ্বীপের বাসিন্দারা প্রকল্পটিকে ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। আর্কটিক অঞ্চলের বাসিন্দা ভিবেকে পারসেন, যিনি শৈশব থেকে ‘মিল্ক রান’ ফ্লাইটে যাতায়াত করেন, বলেন,

“আমি সাধারণত সবচেয়ে সস্তা ভাড়ার ফ্লাইট বেছে নেই। যদি সেটি পরিবেশবান্ধব হয়, তাহলে আমার অপরাধবোধ অনেকটাই কমে যাবে।”

Alia CX300-এর এই পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন নরওয়ের আকাশপথে নতুন যুগের সূচনা করেছে। দেশটি ইতিমধ্যেই বিদ্যুৎচালিত ফেরি এবং গাড়িতে সফলতা দেখিয়েছে। এবার বিদ্যুৎচালিত বিমানের মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব ও অর্থনৈতিক ভ্রমণকে নতুন মাত্রা দেওয়ার পথে এক ধাপ এগিয়ে গেল নরওয়ে।

এটি সফল হলে কেবল নরওয়ের আকাশ নয়, বিশ্বব্যাপী বিমান শিল্পেও বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে।