১০:৫৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বাংলাদেশের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কেন ঠিকভাবে বাংলা পড়তে পারে না?

বাংলাদেশ রাষ্ট্রভাষা বাংলা হলেও দেখা যায়, অনেক কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সঠিকভাবে বাংলা পড়তে বা ব্যবহার করতে পারে না। এর পেছনে রয়েছে একাধিক ঐতিহাসিক, সামাজিক ও শিক্ষাব্যবস্থাগত সমস্যা। নিচে বিষয়গুলো বিশদভাবে আলোচনা করা হলো।

শিক্ষাব্যবস্থায় বাংলা চর্চার দুর্বলতা

বিদ্যালয় ও কলেজ পর্যায়ে বাংলা পড়াশোনা থাকলেও সেটি প্রায়শই মুখস্থভিত্তিক। শিক্ষার্থীরা সাহিত্য, ব্যাকরণ ও ভাষার ব্যবহারিক দিক বোঝার চেয়ে পরীক্ষায় পাস করার জন্য মুখস্থ করতে অভ্যস্ত হয়ে যায়। এর ফলে তাদের পাঠ দক্ষতা গড়ে ওঠে না।

পাঠাভ্যাসের অভাব

বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ বা গবেষণামূলক বাংলা বই পড়ার আগ্রহ কমে গেছে। তারা অধিকাংশ সময় ব্যয় করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অনলাইন কনটেন্টে, যেখানে বাংলা ব্যবহৃত হলেও তা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভাঙাচোরা বা অশুদ্ধ রূপে থাকে।

মানসম্মত পাঠ্যবই ও রিসোর্সের ঘাটতি

অনেক কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে সমৃদ্ধ বাংলা লাইব্রেরি নেই। মানসম্মত বই, গবেষণাপত্র ও পত্রিকা সহজলভ্য না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা বাংলা পড়াশোনায় গভীরতা অর্জন করতে পারে না।

 শিক্ষকের সীমাবদ্ধতা

বাংলা শিক্ষকদের বড় অংশই ভাষাকে জীবন্তভাবে শেখানোর বদলে কেবল নিয়ম ও মুখস্থভিত্তিক পাঠের ওপর জোর দেন। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা, সাহিত্য বিশ্লেষণ বা ভাষা ব্যবহারিকভাবে শেখানোর পরিবেশ কম তৈরি হয়।

 প্রযুক্তি ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের প্রভাব

অনলাইন ও প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষায় বাংলা কনটেন্ট তুলনামূলক কম। যে কনটেন্ট আছে তার বেশিরভাগই বানান ও ভাষার মান রক্ষা করে না। শিক্ষার্থীরা নিয়মিত ভাঙা-ভাঙা বা অশুদ্ধ বাংলা দেখায় অভ্যস্ত হয়ে যায়।

বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা ঠিকভাবে বাংলা পড়তে না পারার মূল কারণ হলো শিক্ষাব্যবস্থায় বাংলা চর্চার দুর্বলতা, পাঠাভ্যাসের অভাব এবং মানসম্পন্ন রিসোর্স ও শিক্ষকের ঘাটতি। এ সমস্যার সমাধান করতে হলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাংলা বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে, উচ্চশিক্ষায় বাংলা রিসোর্স বাড়াতে হবে এবং পরিবার-সমাজে মাতৃভাষা ব্যবহারে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করতে হবে।

বাংলাদেশের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কেন ঠিকভাবে বাংলা পড়তে পারে না?

০৮:০০:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বাংলাদেশ রাষ্ট্রভাষা বাংলা হলেও দেখা যায়, অনেক কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সঠিকভাবে বাংলা পড়তে বা ব্যবহার করতে পারে না। এর পেছনে রয়েছে একাধিক ঐতিহাসিক, সামাজিক ও শিক্ষাব্যবস্থাগত সমস্যা। নিচে বিষয়গুলো বিশদভাবে আলোচনা করা হলো।

শিক্ষাব্যবস্থায় বাংলা চর্চার দুর্বলতা

বিদ্যালয় ও কলেজ পর্যায়ে বাংলা পড়াশোনা থাকলেও সেটি প্রায়শই মুখস্থভিত্তিক। শিক্ষার্থীরা সাহিত্য, ব্যাকরণ ও ভাষার ব্যবহারিক দিক বোঝার চেয়ে পরীক্ষায় পাস করার জন্য মুখস্থ করতে অভ্যস্ত হয়ে যায়। এর ফলে তাদের পাঠ দক্ষতা গড়ে ওঠে না।

পাঠাভ্যাসের অভাব

বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ বা গবেষণামূলক বাংলা বই পড়ার আগ্রহ কমে গেছে। তারা অধিকাংশ সময় ব্যয় করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অনলাইন কনটেন্টে, যেখানে বাংলা ব্যবহৃত হলেও তা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভাঙাচোরা বা অশুদ্ধ রূপে থাকে।

মানসম্মত পাঠ্যবই ও রিসোর্সের ঘাটতি

অনেক কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে সমৃদ্ধ বাংলা লাইব্রেরি নেই। মানসম্মত বই, গবেষণাপত্র ও পত্রিকা সহজলভ্য না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা বাংলা পড়াশোনায় গভীরতা অর্জন করতে পারে না।

 শিক্ষকের সীমাবদ্ধতা

বাংলা শিক্ষকদের বড় অংশই ভাষাকে জীবন্তভাবে শেখানোর বদলে কেবল নিয়ম ও মুখস্থভিত্তিক পাঠের ওপর জোর দেন। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা, সাহিত্য বিশ্লেষণ বা ভাষা ব্যবহারিকভাবে শেখানোর পরিবেশ কম তৈরি হয়।

 প্রযুক্তি ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের প্রভাব

অনলাইন ও প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষায় বাংলা কনটেন্ট তুলনামূলক কম। যে কনটেন্ট আছে তার বেশিরভাগই বানান ও ভাষার মান রক্ষা করে না। শিক্ষার্থীরা নিয়মিত ভাঙা-ভাঙা বা অশুদ্ধ বাংলা দেখায় অভ্যস্ত হয়ে যায়।

বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা ঠিকভাবে বাংলা পড়তে না পারার মূল কারণ হলো শিক্ষাব্যবস্থায় বাংলা চর্চার দুর্বলতা, পাঠাভ্যাসের অভাব এবং মানসম্পন্ন রিসোর্স ও শিক্ষকের ঘাটতি। এ সমস্যার সমাধান করতে হলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাংলা বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে, উচ্চশিক্ষায় বাংলা রিসোর্স বাড়াতে হবে এবং পরিবার-সমাজে মাতৃভাষা ব্যবহারে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করতে হবে।