গুস্তাভ ক্লিম্টের বিখ্যাত চিত্রকর্ম ‘পোর্ট্রেট অব ফ্রয়েলাইন লিজার’ নিউ ইয়র্কে সথেবিজের নিলামে ২৩৬.৪ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি হয়েছে। এটি আধুনিক শিল্পের ইতিহাসে নিলামে বিক্রি হওয়া সর্বাধিক দামের শিল্পকর্ম এবং সামগ্রিকভাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দামের শিল্পকর্ম।
চিত্রকর্মটির গুরুত্ব
চিত্রকর্মটি ১৯১৪-১৯১৬ সালে আঁকা। এতে এলিজাবেথ লিজারকে সাদা ঝলমলে পোশাকে নীলচে পটভূমির সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
এটি সথেবিজের ২৮১ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হওয়া শিল্পকর্মও।
এতদিন পর্যন্ত আধুনিক শিল্পের সর্বোচ্চ বিক্রির রেকর্ড ছিল আমেদেও মোদিলিয়ানির ২০১৮ সালে বিক্রি হওয়া ১৫৭.২ মিলিয়ন ডলারের ‘রেক্লাইনিং নিউড’।
সামগ্রিকভাবে সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হওয়া শিল্পকর্ম এখনো লিওনার্দো দা ভিঞ্চির ‘সালভাতোর মুন্দি’, যা ২০১৭ সালে ৪৫০ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি হয়েছিল।
নিলামে উত্তেজনা ও প্রতিযোগিতা
ক্লিম্টের চিত্রকর্মটি কেনার জন্য অন্তত ছয়জন ক্রেতা প্রতিযোগিতায় অংশ নেন।
১৭১ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছানোর পরও নতুন বিডার যুক্ত হন।
২০ মিনিটের প্রতিযোগিতার পর শেষ পর্যন্ত একজন ফোন-বিডার চিত্রকর্মটির মালিক হন।
নিলাম শেষে পুরো হল করতালিতে মুখরিত হয়ে ওঠে।

ক্লিম্টের পূর্ববর্তী রেকর্ড
এর আগে ক্লিম্টের সর্বোচ্চ বিক্রির রেকর্ড ছিল ২০২৩ সালে বিক্রি হওয়া ‘লেডি উইথ এ ফ্যান’, যার দাম ছিল ১০৮.৮ মিলিয়ন ডলার।
সথেবিজ প্রথমে আশা করেছিল চিত্রকর্মটি ১৫০ মিলিয়ন ডলারে উঠতে পারে, কিন্তু মূল্য অনেক বেশি ছাড়িয়ে যায়।
লিওনার্ড লডারের সংগ্রহ থেকে শিল্পকর্ম
চিত্রকর্মটি এসেছিল বিখ্যাত কসমেটিক্স ব্যবসায়ী ও শিল্প সংগ্রাহক লিওনার্ড লডারের সংগ্রহ থেকে।
লডার মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অব আর্ট-এর বড় দাতা এবং হুইটনি মিউজিয়ামের প্রাক্তন চেয়ারম্যান ছিলেন।
তার সংগ্রহ থেকে সথেবিজ ২৪টি শিল্পকর্ম নিলামে তোলে, যেগুলো বিক্রি হওয়ার কথা ছিল প্রায় ৩৭৯ মিলিয়ন ডলারে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব শিল্পকর্ম বিক্রি হয় মোট ৫২৮ মিলিয়ন ডলারে।
নতুন প্রজন্মের শিল্পীদের নিলাম
লডার সংগ্রহের পর সথেবিজ নতুন প্রজন্মের শিল্পীদের কাজ নিলামে তোলে।
জ্যঁ-মিশেল বাস্কিয়ার ১৯৮১ সালের চিত্রকর্ম ‘ক্রাউনস (পেসো নেটো)’ বিক্রি হয় ৪৮.৪ মিলিয়ন ডলারে, যা পূর্বানুমানের চেয়েও বেশি।
স্বর্ণের টয়লেট ভাস্কর্য ‘আমেরিকা’
মৌরিজিও ক্যাটেলানের ১৮ ক্যারেট স্বর্ণের টয়লেট ভাস্কর্য ‘আমেরিকা’ বিক্রি হয় ১২.১ মিলিয়ন ডলারে।
সোনার বাজারদর অনুযায়ী টুকরোটির স্বর্ণের মূল্য প্রায় ৯.৯ মিলিয়ন ডলার হলেও চূড়ান্ত দাম আরও বেশি ওঠে।
শিল্পকর্মটির মালিক ছিলেন মার্কিন বিলিয়নিয়ার এবং নিউ ইয়র্ক মেটসের মালিক স্টিভ কোহেন।
টয়লেটটি বাস্তবের মতো চলতেও সক্ষম ছিল, যদিও নিলামঘরে তা ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়নি।

নিলাম বাজারে নতুন উত্তেজনা
সাম্প্রতিক তিন বছরের মন্দাভাব কাটিয়ে আবারও শিল্পবাজারে গতি ফিরে এসেছে।
সংগ্রাহকেরা আবারও ব্যয় করতে আগ্রহী, বিশেষ করে জাদুঘর-মানের শিল্পকর্মের ক্ষেত্রে।
সোমবার ক্রিস্টির নিলামে ৬৯০ মিলিয়ন ডলারের বিক্রির পর সথেবিজের এই নিলামও প্রমাণ করেছে যে সংগ্রাহকদের আগ্রহ ফের তুঙ্গে।
# শিল্পনিলাম #আধুনিকশিল্প #গুস্তাভ ক্লিন্ট #সথেবিজ #নিউইয়র্ক শিল্পবাজার
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















