০৩:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫
রাশিয়ার নতুন অর্থায়নে তুরস্কের পারমাণবিক স্বপ্নে গতি, আক্কুইউ প্রকল্পে এল ৯ বিলিয়ন ডলার মার্কিন আদালতের নির্দেশ মানার আহ্বান ভেনেজুয়েলানদের, এল সালভাদরের কারাগার থেকে ফেরত বন্দিদের আইনি লড়াই নাইজেরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় সহযোগিতা, একক মার্কিন সামরিক হুমকি এড়াল আবুজা চীনের নিষেধাজ্ঞার কড়া বার্তা, তাইওয়ান অস্ত্র বিক্রিতে মার্কিন প্রতিরক্ষা সংস্থার ওপর চাপ রাশিয়ার ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কেঁপে উঠল কিয়েভ, সক্রিয় আকাশ প্রতিরক্ষা ট্রাম্পের সঙ্গে রোববার গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে জেলেনস্কি, ভূমি ও নিরাপত্তা নিশ্চয়তা নিয়ে চূড়ান্ত সমঝোতার ইঙ্গিত সন্ত্রাস দমনে অপ্রবেশ্য নিরাপত্তা বলয়, সংঘটিত অপরাধে সর্বমুখী আঘাতের ঘোষণা অমিত শাহের ইসরায়েলের ঐতিহাসিক স্বীকৃতি সোমালিল্যান্ডকে, আফ্রিকার শিংয়ে নতুন ভূরাজনৈতিক ঢেউ চীনা যুদ্ধবিমানের প্রধান ক্রেতা হিসেবে পাকিস্তানের উত্থান, পেন্টাগনের প্রতিবেদনে স্পষ্ট বার্তা পাকিস্তানে সৌর বিদ্যুতের উত্থান, নারীরা কি কেবল দর্শক

ট্রাম্প প্রশাসনের পেন্টাগনের নতুন নীতি: সাংবাদিকদের ‘সংবেদনশীল তথ্য’ প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা

সংক্ষিপ্তসার

  • অনুমোদনহীন তথ্য প্রকাশ করলে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার বাতিল হতে পারে
  • পেন্টাগনের দাবি, জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার জন্য এ ব্যবস্থা প্রয়োজন
  • সংবাদমাধ্যম ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে তীব্র সমালোচনা

নতুন বিধি আরোপ

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন মার্কিন সামরিক বাহিনী সংক্রান্ত সংবাদ কাভারেজে নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। এখন থেকে সংবাদমাধ্যমগুলোকে লিখিতভাবে স্বীকার করতে হবে যে তারা সরকারের অনুমোদন ছাড়া কোনো সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশ করবে না।

শুক্রবার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক স্মারকে জানানো হয়, অনুমোদন ছাড়াই এ ধরনের তথ্য প্রকাশ করলে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকদের পেন্টাগন প্রবেশাধিকার বাতিল হতে পারে। সংবাদমাধ্যম সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো বলছে, এটি স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর আঘাত।

ট্রাম্পের মন্তব্য

হোয়াইট হাউসের বাইরে সাংবাদিকরা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “না আমি মনে করি না যে পেন্টাগন ঠিক করবে সাংবাদিকরা কী লিখবে। সাংবাদিকদের থামানোর কিছু নেই।” তবে তিনি সরাসরি নতুন নীতি নিয়ে মন্তব্য করেননি।

স্মারকের মূল বিষয়

স্মারকে বলা হয়েছে, অনুমোদন ছাড়া তথ্য প্রকাশ, দেখা বা সংগ্রহের চেষ্টা করলে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার বাতিল বা অস্বীকার করা হবে।

স্মারকে আরও বলা হয়েছে, “জনগণের আস্থা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে আমরা স্বচ্ছতায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে যুদ্ধবিষয়ক তথ্য প্রকাশের আগে অনুমোদিত কর্মকর্তার অনুমতি অবশ্যই নিতে হবে, এমনকি যদি তা শ্রেণিবদ্ধ না হয়।”

উল্লেখ্য, ট্রাম্প প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তন করে ‘Department of War’ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। এ পরিবর্তন কার্যকর করতে কংগ্রেসের অনুমোদন প্রয়োজন হবে।

সংবাদমাধ্যমে চাপের নজির

ট্রাম্প প্রশাসন আগে থেকেই সংবাদমাধ্যমকে পক্ষপাতদুষ্ট মনে করে আসছে। এবারকার পদক্ষেপ পেন্টাগনের প্রবেশাধিকার আরও সীমিত করছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ—যিনি আগে ফক্স নিউজের উপস্থাপক ছিলেন—তার নেতৃত্বে এ বিধিনিষেধ আরও কঠোর করা হচ্ছে।

যেসব সাংবাদিকের প্রবেশাধিকার বাতিল হবে, তারা মার্কিন সামরিক বাহিনীর সব স্থাপনায় প্রবেশ করতে পারবেন না। এর ফলে পেন্টাগনের ঘোষণা থেকে শুরু করে যুদ্ধ বা দুর্যোগ মোকাবিলার খবর কাভারেজ কঠিন হয়ে উঠবে।

তীব্র সমালোচনা

নিউইয়র্ক টাইমস, রয়টার্স, ওয়াশিংটন পোস্ট, ওয়াল স্ট্রিট জার্নালসহ প্রধান সংবাদমাধ্যমগুলো এ পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেছে। ওয়াশিংটন প্রেস ক্লাবের সভাপতি মাইক বালসামো বলেছেন, “যদি সামরিক খবর প্রকাশের আগে সরকারের অনুমোদন নিতে হয়, তবে জনগণ আর স্বাধীন সাংবাদিকতা পাচ্ছে না পাচ্ছে কেবল সরকারি প্রচারণা।”

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া

মার্কিন কংগ্রেসের রিপাবলিকান সদস্য ও সাবেক বিমানবাহিনী কর্মকর্তা ডন বেকন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, “স্বাধীন সংবাদমাধ্যম আমাদের দেশকে শক্তিশালী করে। এটি অপেশাদার আচরণ ছাড়া আর কিছু নয়।”

পেন্টাগনের ব্যাখ্যা

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শন পারনেল বলেছেন, এগুলো মূলত সাধারণ নিরাপত্তা নির্দেশনা—যাতে সংবেদনশীল তথ্য ও জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষা করা যায়।

পূর্ববর্তী পদক্ষেপ

ফেব্রুয়ারিতে পেন্টাগন চারটি সংবাদমাধ্যমকে তাদের নির্দিষ্ট অফিস স্পেস থেকে সরিয়ে দিয়ে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে প্রবেশাধিকার দেওয়ার ব্যবস্থা করে। এর মধ্যে ডানপন্থী সংবাদমাধ্যমও ছিল। মে মাসে মন্ত্রী হেগসেথ নির্দেশ দেন, সাংবাদিকদের ভবনের বেশিরভাগ অংশে প্রবেশের সময় সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে থাকতে হবে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যমের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে পেন্টাগনের এই পদক্ষেপ সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারে। সংবাদমাধ্যম সংগঠনগুলো বলছে, এর ফলে জনগণ নিরপেক্ষ তথ্যের পরিবর্তে সরকারের অনুমোদিত তথ্যই পাবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

রাশিয়ার নতুন অর্থায়নে তুরস্কের পারমাণবিক স্বপ্নে গতি, আক্কুইউ প্রকল্পে এল ৯ বিলিয়ন ডলার

ট্রাম্প প্রশাসনের পেন্টাগনের নতুন নীতি: সাংবাদিকদের ‘সংবেদনশীল তথ্য’ প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা

০১:৫৬:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সংক্ষিপ্তসার

  • অনুমোদনহীন তথ্য প্রকাশ করলে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার বাতিল হতে পারে
  • পেন্টাগনের দাবি, জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার জন্য এ ব্যবস্থা প্রয়োজন
  • সংবাদমাধ্যম ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে তীব্র সমালোচনা

নতুন বিধি আরোপ

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন মার্কিন সামরিক বাহিনী সংক্রান্ত সংবাদ কাভারেজে নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। এখন থেকে সংবাদমাধ্যমগুলোকে লিখিতভাবে স্বীকার করতে হবে যে তারা সরকারের অনুমোদন ছাড়া কোনো সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশ করবে না।

শুক্রবার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক স্মারকে জানানো হয়, অনুমোদন ছাড়াই এ ধরনের তথ্য প্রকাশ করলে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকদের পেন্টাগন প্রবেশাধিকার বাতিল হতে পারে। সংবাদমাধ্যম সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো বলছে, এটি স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর আঘাত।

ট্রাম্পের মন্তব্য

হোয়াইট হাউসের বাইরে সাংবাদিকরা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “না আমি মনে করি না যে পেন্টাগন ঠিক করবে সাংবাদিকরা কী লিখবে। সাংবাদিকদের থামানোর কিছু নেই।” তবে তিনি সরাসরি নতুন নীতি নিয়ে মন্তব্য করেননি।

স্মারকের মূল বিষয়

স্মারকে বলা হয়েছে, অনুমোদন ছাড়া তথ্য প্রকাশ, দেখা বা সংগ্রহের চেষ্টা করলে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার বাতিল বা অস্বীকার করা হবে।

স্মারকে আরও বলা হয়েছে, “জনগণের আস্থা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে আমরা স্বচ্ছতায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে যুদ্ধবিষয়ক তথ্য প্রকাশের আগে অনুমোদিত কর্মকর্তার অনুমতি অবশ্যই নিতে হবে, এমনকি যদি তা শ্রেণিবদ্ধ না হয়।”

উল্লেখ্য, ট্রাম্প প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তন করে ‘Department of War’ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। এ পরিবর্তন কার্যকর করতে কংগ্রেসের অনুমোদন প্রয়োজন হবে।

সংবাদমাধ্যমে চাপের নজির

ট্রাম্প প্রশাসন আগে থেকেই সংবাদমাধ্যমকে পক্ষপাতদুষ্ট মনে করে আসছে। এবারকার পদক্ষেপ পেন্টাগনের প্রবেশাধিকার আরও সীমিত করছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ—যিনি আগে ফক্স নিউজের উপস্থাপক ছিলেন—তার নেতৃত্বে এ বিধিনিষেধ আরও কঠোর করা হচ্ছে।

যেসব সাংবাদিকের প্রবেশাধিকার বাতিল হবে, তারা মার্কিন সামরিক বাহিনীর সব স্থাপনায় প্রবেশ করতে পারবেন না। এর ফলে পেন্টাগনের ঘোষণা থেকে শুরু করে যুদ্ধ বা দুর্যোগ মোকাবিলার খবর কাভারেজ কঠিন হয়ে উঠবে।

তীব্র সমালোচনা

নিউইয়র্ক টাইমস, রয়টার্স, ওয়াশিংটন পোস্ট, ওয়াল স্ট্রিট জার্নালসহ প্রধান সংবাদমাধ্যমগুলো এ পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেছে। ওয়াশিংটন প্রেস ক্লাবের সভাপতি মাইক বালসামো বলেছেন, “যদি সামরিক খবর প্রকাশের আগে সরকারের অনুমোদন নিতে হয়, তবে জনগণ আর স্বাধীন সাংবাদিকতা পাচ্ছে না পাচ্ছে কেবল সরকারি প্রচারণা।”

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া

মার্কিন কংগ্রেসের রিপাবলিকান সদস্য ও সাবেক বিমানবাহিনী কর্মকর্তা ডন বেকন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, “স্বাধীন সংবাদমাধ্যম আমাদের দেশকে শক্তিশালী করে। এটি অপেশাদার আচরণ ছাড়া আর কিছু নয়।”

পেন্টাগনের ব্যাখ্যা

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শন পারনেল বলেছেন, এগুলো মূলত সাধারণ নিরাপত্তা নির্দেশনা—যাতে সংবেদনশীল তথ্য ও জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষা করা যায়।

পূর্ববর্তী পদক্ষেপ

ফেব্রুয়ারিতে পেন্টাগন চারটি সংবাদমাধ্যমকে তাদের নির্দিষ্ট অফিস স্পেস থেকে সরিয়ে দিয়ে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে প্রবেশাধিকার দেওয়ার ব্যবস্থা করে। এর মধ্যে ডানপন্থী সংবাদমাধ্যমও ছিল। মে মাসে মন্ত্রী হেগসেথ নির্দেশ দেন, সাংবাদিকদের ভবনের বেশিরভাগ অংশে প্রবেশের সময় সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে থাকতে হবে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যমের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে পেন্টাগনের এই পদক্ষেপ সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারে। সংবাদমাধ্যম সংগঠনগুলো বলছে, এর ফলে জনগণ নিরপেক্ষ তথ্যের পরিবর্তে সরকারের অনুমোদিত তথ্যই পাবে।