ভয়াবহ দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি
গত জুনে আহমেদাবাদ থেকে গ্যাটউইকগামী এয়ার ইন্ডিয়ার একটি ফ্লাইট উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই বিধ্বস্ত হয়। এতে বিমানের ২৪২ জন যাত্রী এবং মাটিতে থাকা আরও ১৯ জন নিহত হন। মাত্র একজন বেঁচে যান। মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় ২৬১।
আদালতের কঠোর মন্তব্য
ভারতের সর্বোচ্চ আদালত দেশটির বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছে। আদালত বলেছে, পাইলটের ভুলকেই দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে সংবাদমাধ্যমে ফাঁস করা ছিল ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’। আদালত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে সরকারের প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছে। এরপরই আদালত রায় দেবে, যা মানবাধিকারকর্মীদের করা স্বাধীন তদন্তের দাবির আবেদনের ভিত্তিতে হবে।
প্রাথমিক তদন্তের বিতর্কিত ফলাফল
বিমান দুর্ঘটনা তদন্ত ব্যুরো (AAIB) জুলাই মাসে প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে বলা হয়, উড্ডয়নের কয়েক সেকেন্ড পরেই বিমানের ইঞ্জিনে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। ককপিট ভয়েস রেকর্ডিংয়ে একজন পাইলটকে প্রশ্ন করতে শোনা যায়, “কেন বন্ধ করলেন?” অপরজন জবাব দেন, তিনি তা করেননি। তবে রেকর্ডিং থেকে বোঝা যায়নি কে কোন কথা বলেছেন। দুর্ঘটনার সময় কো-পাইলট উড়োজাহাজ চালাচ্ছিলেন, আর ক্যাপ্টেন পর্যবেক্ষণ করছিলেন।
নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের চ্যালেঞ্জ
‘সেফটি ম্যাটার্স ফাউন্ডেশন’ নামের একটি নিরাপত্তা সংস্থা এই প্রতিবেদনের বিরোধিতা করেছে। তারা স্বাধীন তদন্ত দাবি করেছে। সুপ্রিম কোর্টের এক বিচারপতি মন্তব্য করেন, পাইলটরা ইচ্ছাকৃতভাবে জ্বালানি বন্ধ করে দিয়েছিলেন—এমন ইঙ্গিত দেওয়া ছিল ‘অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ও দায়িত্বজ্ঞানহীন’।
ভারতের আকাশপথ নিয়ে প্রশ্ন
দুর্ঘটনার পর ভারতের আকাশপথের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তবে বেসামরিক বিমান চলাচল অধিদফতর (DGCA) প্রধান বিবিসিকে জুলাইয়ে বলেন, “ভারতের আকাশ সবসময়ই নিরাপদ।” কিন্তু একই সময়ে বার্ষিক অডিটে দেখা যায়, গত এক বছরে এয়ার ইন্ডিয়ায় ৫১টি নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে।
আন্তর্জাতিক মামলা
দুর্ঘটনায় নিহত চার যাত্রীর পরিবার যুক্তরাষ্ট্রে বিমানের নির্মাতা বোয়িং ও যন্ত্রাংশ প্রস্তুতকারী হানিওয়েলের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। তাদের অভিযোগ, নকশাগত ঝুঁকি সম্পর্কে জানার পরও কোম্পানিগুলো কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এ কারণে তারা অবহেলার দায়ে অভিযুক্ত।