আবুধাবির আল আমাল মনোরোগ হাসপাতালে আলঝেইমার ও ডিমেনশিয়া রোগীদের চিকিৎসায় সহায়তার জন্য শুরু হয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-নির্ভর এক নতুন উদ্যোগ। ‘সিনথেটিক মেমোরিজ’ নামের এই প্রযুক্তি রোগীদের ও তাদের পরিবারের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাস্তবধর্মী চিত্র ও ভিডিও তৈরি করে হারিয়ে যাওয়া স্মৃতিগুলোকে জীবন্তভাবে পুনর্গঠন করবে।
প্রকল্পের সূচনা
মোহাম্মদ বিন রশিদ সেন্টার ফর গভর্নমেন্ট ইনোভেশন এবং এমিরেটস হেলথ সার্ভিসেস যৌথভাবে এই প্রকল্পের প্রথম ধাপের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চালু করেছে। আলঝেইমার ও স্মৃতিভ্রংশে ভোগা রোগীদের মানসিক চিকিৎসায় সহায়ক হাতিয়ার হিসেবে প্রযুক্তিটি ব্যবহার করা হবে।
বাস্তবায়ন ও সহযোগিতা
প্রকল্পটি বাস্তবায়নে কাজ করছে স্পেনের প্রতিষ্ঠান ডোমেস্টিক ডাটা স্ট্রিমারস। তাদের সহায়তায় বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে মনোবিজ্ঞানীদের, যাতে তারা নির্দিষ্ট চিকিৎসা পরিকল্পনার আওতায় প্রযুক্তিটি ব্যবহার করতে পারেন। রোগী ও পরিবারের দেওয়া তথ্য ছাড়াও সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইতিহাস থেকে সংগৃহীত আর্কাইভাল ছবি প্রযুক্তির সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।
সংস্কৃতি ও ইতিহাসের অন্তর্ভুক্তি
স্থানীয় সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট বজায় রাখতে ১৯৫০ ও ১৯৬০–এর দশকের ছবি ও নথি সংগ্রহ করা হয়। বিশেষজ্ঞ ইতিহাসবিদরা সেসব চিত্র বিশ্লেষণ ও প্রাসঙ্গিকতা যাচাই করেছেন। এরপর স্থানীয় সংস্কৃতি ও সামাজিক পরিচয় প্রতিফলিত করে এমন ডেটাসেটে প্রযুক্তিটি প্রশিক্ষিত করা হয়।
প্রাথমিক ফলাফল
প্রাথমিক পর্যায়ের চিকিৎসায় ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেছে। রোগীরা ব্যক্তিগতকৃত ভিজ্যুয়াল কনটেন্ট দেখার সময় আবেগীয়ভাবে বেশি সম্পৃক্ত হয়েছেন এবং তাদের প্রতিক্রিয়াশীলতাও বেড়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বাস্তব ছবি ও ভিডিও ক্লিপের মাধ্যমে স্মৃতি পুনর্দর্শন থেরাপিকে এক ভিন্ন আবেগময় মাত্রা দিয়েছে। এতে রোগী ও চিকিৎসকের মধ্যে যোগাযোগও গভীর হয়েছে।
সম্ভাব্য প্রভাব
এই উদ্ভাবনী প্রকল্প প্রবীণ ও স্মৃতিবিভ্রাটে আক্রান্ত রোগীদের জীবনমান উন্নয়নে অবদান রাখবে। একই সঙ্গে আরব আমিরাতের ইতিহাস ও সংস্কৃতির সঙ্গে প্রযুক্তির সমন্বয় ঘটিয়ে এটি বিশ্বে চিকিৎসা উদ্ভাবনের এক নতুন দৃষ্টান্ত তৈরি করছে।