জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ট্রাম্পের আক্রমণাত্মক বক্তব্য
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মঙ্গলবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে প্রদত্ত এক উত্তেজনাপূর্ণ ভাষণে বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠান ও নীতিকে তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি দাবি করেন, বিশ্ব সম্প্রদায়কে এখনই “ব্যর্থ নীতি” বাদ দিতে হবে, নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে আর সমর্থন করা উচিত নয় এবং তিনি ইতোমধ্যেই “সাতটি অন্তহীন যুদ্ধের” সমাপ্তি টেনেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের শক্তি ও সামরিক ক্ষমতার বড়াই
ভাষণে ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী হয়েছে। তিনি জোর দিয়ে উল্লেখ করেন, আমেরিকার হাতে রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র, যদিও তিনি সেগুলো ব্যবহার করতে চান না।
জাতিসংঘকে নতুন সমস্যা তৈরির অভিযোগ
জাতিসংঘের উদ্দেশে ট্রাম্প বলেন, “জাতিসংঘ যেসব সমস্যার সমাধান করার কথা, সেগুলো সমাধান করছে না, বরং অনেক সময় নতুন সমস্যা তৈরি করছে।” তিনি শরণার্থী ও অভিবাসীদের সহায়তায় জাতিসংঘের ভূমিকা সমালোচনা করেন। তাঁর অভিযোগ, “জাতিসংঘের কাজ হলো আগ্রাসন ঠেকানো, নতুন আগ্রাসন সৃষ্টি করা বা তার অর্থায়ন করা নয়।”
বহুপাক্ষিকতার বিরুদ্ধে অবস্থান
জাতিসংঘের আশিতম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ১৯৩ সদস্য দেশের প্রতিনিধিদের সামনে প্রদত্ত এ ভাষণে ট্রাম্প আবারও “গ্লোবালিস্টদের” প্রতি নিজের অবিশ্বাস প্রকাশ করেন। তাঁর এই অবস্থান চীনের বহুপাক্ষিক সহযোগিতার ভাবমূর্তিকে আরও দৃঢ় করেছে বলে বিশ্লেষকদের মন্তব্য।
ইউক্রেন ইস্যুতে ইউরোপকে সমালোচনা
ট্রাম্প তাঁর বক্তব্যে ইউরোপীয় দেশগুলোকেও কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন। তিনি অভিযোগ করেন, ইউরোপ একদিকে রাশিয়ার তেল কিনছে, অন্যদিকে ইউক্রেনকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে সমর্থন দিচ্ছে। এ প্রসঙ্গে তিনি নবায়নযোগ্য জ্বালানিরও উপহাস করেন। ট্রাম্প বলেন, “ওই বিশাল বায়ুচালিত টারবাইনগুলো একেবারেই করুণ। সেগুলো মরচে পড়ে নষ্ট হয়ে যায়।”
ইউক্রেনের প্রতিক্রিয়া
নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে উপস্থিত ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ট্রাম্পের বক্তব্য শুনে প্রতিক্রিয়া জানান। তাঁর মুখভঙ্গি থেকেই ভাষণের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ পায়।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের আশিতম অধিবেশনে ট্রাম্পের এই বক্তব্য শুধু যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানই নয়, বরং বৈশ্বিক সহযোগিতা ও বহুপাক্ষিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি তাঁর অবিশ্বাসও স্পষ্ট করে তোলে। তাঁর আক্রমণাত্মক ভাষা বৈশ্বিক কূটনীতির মঞ্চে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।