০৭:১৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫
বাংলাদেশের সঙ্গে বিদ্যুৎ রপ্তানি চুক্তির নবায়ন প্রক্রিয়া শুরু ভারতের প্রাচীন ঐতিহ্য থেকে আধুনিক অর্থনীতিতে—ডিজিটাল মিশরের উত্থান ইউফোরিয়া’ সিজন ৩—জ্যাকব এলর্ডির ইঙ্গিতে ফের উচ্ছ্বাস” প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-৩১২) স্ট্রেঞ্জার থিংস’-এর শেষ অধ্যায়—নেটফ্লিক্সের মহাকাব্যিক সিরিজের অন্তরালের গল্প ‘হোয়েন দে বার্নড দ্য বাটারফ্লাই’—নারী গোপন সমাজের ইতিহাস ও আগুনের শক্তি নিয়ে ওয়েন–ই লির নতুন উপন্যাস মেগান লাউ—দর্শনশাস্ত্রের শিক্ষার্থী থেকে ‘হাউস অব ড্যান্সিং ওয়াটার’-এর আকাশচারী নায়িকা সুদানের জ্বালানি পুনর্গঠনে রাশিয়া—যুদ্ধোত্তর পুনরুদ্ধারে মস্কো প্রধান অংশীদার হতে পারে আফগানিস্তানে মাদকবিরোধী কঠোর অভিযান—আসক্তি, ধর্মীয় উপদেশ ও পুনর্বাসনের নতুন বাস্তবতা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৪৩)

বৈদেশিক সহায়তা পুনর্গঠন

হোয়াইট হাউসের নতুন পরিকল্পনা

হোয়াইট হাউস প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক সহায়তা পুনঃনির্দেশের পরিকল্পনা করেছে, যা কংগ্রেসের ব্যয় নির্ধারণ ক্ষমতার ওপর আরেকটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এই পরিকল্পনা মূলত ট্রাম্প প্রশাসনের “আমেরিকা ফার্স্ট” নীতিকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য তৈরি করা হয়েছে।

নতুন নীতির রূপরেখা

১২ সেপ্টেম্বর স্টেট ডিপার্টমেন্ট কংগ্রেসকে পাঠানো একটি নথিতে এই পরিকল্পনার খসড়া তুলে ধরা হয়। ১০ পাতার এই নথিতে বলা হয়েছে, ১.৮ বিলিয়ন ডলার খরচ করা হবে বিদেশে অস্পষ্ট কিছু কর্মসূচিতে, যেমন লাতিন আমেরিকায় “মার্কসবাদী, মার্কিনবিরোধী সরকার” মোকাবিলা, গ্রিনল্যান্ডে বিনিয়োগ, এবং ইউক্রেনে প্রকল্প।
এছাড়া এতে উল্লেখ করা হয়েছে, পশ্চিম তীর ও গাজা উপত্যকার জন্য নির্ধারিত ১৭৫ মিলিয়ন ডলার এবং ইরাকের জন্য ১৫০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ বাতিল করা হয়েছে।

প্রশাসনের যুক্তি

নথিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থ রক্ষার জন্য বৈদেশিক সহায়তার অর্থকে নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ব্যবহার করতে হবে, যা আমেরিকাকে আরও নিরাপদ, শক্তিশালী ও সমৃদ্ধ করবে।

A Credible Grand Strategy: The Urgent Need to Set Priorities • Stimson Center

এটি দীর্ঘদিনের দ্বিদলীয় নীতি থেকে সরে এসে বৈদেশিক সহায়তার নতুন সংজ্ঞা দিতে যাচ্ছে। আগে যেখানে যুক্তরাষ্ট্র রোগ নিরাময়, দুর্ভিক্ষ মোকাবিলা ও গণতন্ত্র প্রচারে অর্থ দিত, সেখানে এখন প্রশাসন কেবল স্বার্থসংশ্লিষ্ট লেনদেনভিত্তিক কর্মসূচি বেছে নিচ্ছে।

দ্বিদলীয় কিছু সমর্থন

পরিকল্পনার কিছু অংশে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র ও অংশীদারদের সমর্থন এবং আজারবাইজান-আর্মেনিয়ার মধ্যে শান্তি বজায় রাখার উদ্যোগের কথা বলা হয়েছে, যা রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট উভয়ের কাছেই গুরুত্ব পেয়েছে।

কংগ্রেসের উদ্বেগ

তবে কংগ্রেসের উভয় দলের সহকারীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, প্রশাসনের অগ্রাধিকার অস্পষ্ট এবং আগে থেকে নির্ধারিত প্রকল্পের অর্থ অন্যত্র সরানো আইনি প্রশ্ন তোলে।

ডেমোক্র্যাট সেনেটর জিন শাহিন প্রশাসনকে অভিযুক্ত করে বলেছেন, “তারা গণতন্ত্র শক্তিশালীকরণ ও দুর্বল জনগোষ্ঠীকে সহায়তার মতো অনুমোদিত কর্মসূচি থেকে অর্থ সরিয়ে নিয়ে এক অগণতান্ত্রিক তহবিলে দিচ্ছে।”

New Hampshire Sen. Jeanne Shaheen won't seek reelection in 2026 | CNN Politics

অন্যদিকে রিপাবলিকান সহকারীরা বলছেন, স্টেট ডিপার্টমেন্ট কংগ্রেসের সঙ্গে অংশীদারিত্ব করেই এই প্রক্রিয়া এগিয়েছে এবং এটি “স্বাভাবিক প্রক্রিয়া”। তারা দাবি করছেন, অর্থ বরাদ্দ এখন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষায় বেশি কার্যকরভাবে ব্যবহার হবে।

বাজেট নিয়ে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব

প্রশাসন ইতিমধ্যেই বাজেটের বিভিন্ন অংশে নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে এবং কংগ্রেস অনুমোদিত অর্থ ব্যয় করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। নতুন পরিকল্পনা সেই চেষ্টারই আরেকটি ধাপ।

সাধারণত আর্থিক বছরের শেষে সরকার ব্যয় পুনর্বিন্যাসের অনুমতি চায়। তবে এবার প্রায় ১.৮ বিলিয়ন ডলারের এই প্রস্তাবকে কংগ্রেসের সহকারীরা “অভূতপূর্ব” বলে উল্লেখ করেছেন।

কংগ্রেসের কঠিন সিদ্ধান্ত

অর্থ বছরের সমাপ্তি (৩০ সেপ্টেম্বর) ঘনিয়ে আসায় কংগ্রেসের সামনে দুটি পথ—পরিকল্পনা মেনে নেওয়া এবং নিজেদের ব্যয় নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা দুর্বল করা, অথবা বিরোধিতা করা এবং ঝুঁকি নেওয়া যে অর্থ শেষ পর্যন্ত খরচই হবে না।

ডোনাল্ড লু-র বাংলাদেশ সফর নিয়ে যা জানাল মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট | The Business Standard

একজন ডেমোক্র্যাট সহকারী বলেছেন, “কেউ চায় না যে এই অর্থ অকারণে শেষ হয়ে যাক, বিশেষত যখন বিদেশি সহায়তা ইতিমধ্যেই ব্যাপকভাবে কাটা হয়েছে।”

অতীতের বিতর্ক

এর আগে আগস্টে ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছিল যে তারা প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক সহায়তা খরচ করবে না। এতে ডেমোক্র্যাটদের পাশাপাশি কিছু রিপাবলিকানও প্রতিবাদ করেছিলেন। সেনেট অ্যাপ্রোপ্রিয়েশন্স কমিটির চেয়ার সুসান কলিন্স বলেছিলেন, কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়া তহবিল বাতিল করা সরাসরি আইনের লঙ্ঘন।

নতুন পরিকল্পনার বিতর্কিত দিক

স্টেট ডিপার্টমেন্টের খসড়ায় আফ্রিকায় “মার্কিন অভিবাসন অগ্রাধিকার” সমর্থন এবং গ্রিনল্যান্ডে “অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সংরক্ষণ” প্রকল্পে অর্থ ব্যয়ের প্রস্তাব রয়েছে। গ্রিনল্যান্ডকে ট্রাম্প একাধিকবার দখল করার ইঙ্গিত দিয়েছেন, যা বিতর্ক বাড়াচ্ছে।

স্টেট ডিপার্টমেন্ট ভবিষ্যতে এ বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

বাংলাদেশের সঙ্গে বিদ্যুৎ রপ্তানি চুক্তির নবায়ন প্রক্রিয়া শুরু ভারতের

বৈদেশিক সহায়তা পুনর্গঠন

০৬:০২:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

হোয়াইট হাউসের নতুন পরিকল্পনা

হোয়াইট হাউস প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক সহায়তা পুনঃনির্দেশের পরিকল্পনা করেছে, যা কংগ্রেসের ব্যয় নির্ধারণ ক্ষমতার ওপর আরেকটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এই পরিকল্পনা মূলত ট্রাম্প প্রশাসনের “আমেরিকা ফার্স্ট” নীতিকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য তৈরি করা হয়েছে।

নতুন নীতির রূপরেখা

১২ সেপ্টেম্বর স্টেট ডিপার্টমেন্ট কংগ্রেসকে পাঠানো একটি নথিতে এই পরিকল্পনার খসড়া তুলে ধরা হয়। ১০ পাতার এই নথিতে বলা হয়েছে, ১.৮ বিলিয়ন ডলার খরচ করা হবে বিদেশে অস্পষ্ট কিছু কর্মসূচিতে, যেমন লাতিন আমেরিকায় “মার্কসবাদী, মার্কিনবিরোধী সরকার” মোকাবিলা, গ্রিনল্যান্ডে বিনিয়োগ, এবং ইউক্রেনে প্রকল্প।
এছাড়া এতে উল্লেখ করা হয়েছে, পশ্চিম তীর ও গাজা উপত্যকার জন্য নির্ধারিত ১৭৫ মিলিয়ন ডলার এবং ইরাকের জন্য ১৫০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ বাতিল করা হয়েছে।

প্রশাসনের যুক্তি

নথিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থ রক্ষার জন্য বৈদেশিক সহায়তার অর্থকে নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ব্যবহার করতে হবে, যা আমেরিকাকে আরও নিরাপদ, শক্তিশালী ও সমৃদ্ধ করবে।

A Credible Grand Strategy: The Urgent Need to Set Priorities • Stimson Center

এটি দীর্ঘদিনের দ্বিদলীয় নীতি থেকে সরে এসে বৈদেশিক সহায়তার নতুন সংজ্ঞা দিতে যাচ্ছে। আগে যেখানে যুক্তরাষ্ট্র রোগ নিরাময়, দুর্ভিক্ষ মোকাবিলা ও গণতন্ত্র প্রচারে অর্থ দিত, সেখানে এখন প্রশাসন কেবল স্বার্থসংশ্লিষ্ট লেনদেনভিত্তিক কর্মসূচি বেছে নিচ্ছে।

দ্বিদলীয় কিছু সমর্থন

পরিকল্পনার কিছু অংশে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র ও অংশীদারদের সমর্থন এবং আজারবাইজান-আর্মেনিয়ার মধ্যে শান্তি বজায় রাখার উদ্যোগের কথা বলা হয়েছে, যা রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট উভয়ের কাছেই গুরুত্ব পেয়েছে।

কংগ্রেসের উদ্বেগ

তবে কংগ্রেসের উভয় দলের সহকারীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, প্রশাসনের অগ্রাধিকার অস্পষ্ট এবং আগে থেকে নির্ধারিত প্রকল্পের অর্থ অন্যত্র সরানো আইনি প্রশ্ন তোলে।

ডেমোক্র্যাট সেনেটর জিন শাহিন প্রশাসনকে অভিযুক্ত করে বলেছেন, “তারা গণতন্ত্র শক্তিশালীকরণ ও দুর্বল জনগোষ্ঠীকে সহায়তার মতো অনুমোদিত কর্মসূচি থেকে অর্থ সরিয়ে নিয়ে এক অগণতান্ত্রিক তহবিলে দিচ্ছে।”

New Hampshire Sen. Jeanne Shaheen won't seek reelection in 2026 | CNN Politics

অন্যদিকে রিপাবলিকান সহকারীরা বলছেন, স্টেট ডিপার্টমেন্ট কংগ্রেসের সঙ্গে অংশীদারিত্ব করেই এই প্রক্রিয়া এগিয়েছে এবং এটি “স্বাভাবিক প্রক্রিয়া”। তারা দাবি করছেন, অর্থ বরাদ্দ এখন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষায় বেশি কার্যকরভাবে ব্যবহার হবে।

বাজেট নিয়ে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব

প্রশাসন ইতিমধ্যেই বাজেটের বিভিন্ন অংশে নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে এবং কংগ্রেস অনুমোদিত অর্থ ব্যয় করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। নতুন পরিকল্পনা সেই চেষ্টারই আরেকটি ধাপ।

সাধারণত আর্থিক বছরের শেষে সরকার ব্যয় পুনর্বিন্যাসের অনুমতি চায়। তবে এবার প্রায় ১.৮ বিলিয়ন ডলারের এই প্রস্তাবকে কংগ্রেসের সহকারীরা “অভূতপূর্ব” বলে উল্লেখ করেছেন।

কংগ্রেসের কঠিন সিদ্ধান্ত

অর্থ বছরের সমাপ্তি (৩০ সেপ্টেম্বর) ঘনিয়ে আসায় কংগ্রেসের সামনে দুটি পথ—পরিকল্পনা মেনে নেওয়া এবং নিজেদের ব্যয় নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা দুর্বল করা, অথবা বিরোধিতা করা এবং ঝুঁকি নেওয়া যে অর্থ শেষ পর্যন্ত খরচই হবে না।

ডোনাল্ড লু-র বাংলাদেশ সফর নিয়ে যা জানাল মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট | The Business Standard

একজন ডেমোক্র্যাট সহকারী বলেছেন, “কেউ চায় না যে এই অর্থ অকারণে শেষ হয়ে যাক, বিশেষত যখন বিদেশি সহায়তা ইতিমধ্যেই ব্যাপকভাবে কাটা হয়েছে।”

অতীতের বিতর্ক

এর আগে আগস্টে ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছিল যে তারা প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক সহায়তা খরচ করবে না। এতে ডেমোক্র্যাটদের পাশাপাশি কিছু রিপাবলিকানও প্রতিবাদ করেছিলেন। সেনেট অ্যাপ্রোপ্রিয়েশন্স কমিটির চেয়ার সুসান কলিন্স বলেছিলেন, কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়া তহবিল বাতিল করা সরাসরি আইনের লঙ্ঘন।

নতুন পরিকল্পনার বিতর্কিত দিক

স্টেট ডিপার্টমেন্টের খসড়ায় আফ্রিকায় “মার্কিন অভিবাসন অগ্রাধিকার” সমর্থন এবং গ্রিনল্যান্ডে “অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সংরক্ষণ” প্রকল্পে অর্থ ব্যয়ের প্রস্তাব রয়েছে। গ্রিনল্যান্ডকে ট্রাম্প একাধিকবার দখল করার ইঙ্গিত দিয়েছেন, যা বিতর্ক বাড়াচ্ছে।

স্টেট ডিপার্টমেন্ট ভবিষ্যতে এ বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।