০৭:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫
মানসিক রোগের ভাইরাস কোথা থেকে আসছে হোক্কাইদোতে স্যামন রোর দাম চড়া—ধরা কম, খরচ বেশি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হত্যার বিচার হবে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে ডেঙ্গুতে আরও ৪ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৯৪২ জন গণতন্ত্রের অধঃপতন ও ইতিহাসের উল্টোদিক—“স্বাধীনতার আত্মা” আবার জাগ্রত করার আহ্বান রাতে দোকান থেকে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তদের হামলায় প্রাণ গেল ১৫ বছরের রুমানের জুলাই আন্দোলনের পরও রাজনৈতিক বিভাজন বাড়ছে: দুঃখ প্রকাশ মির্জা ফখরুলের শুধু নির্গমন কমালেই হবে না—অভিযোজনেই জোর দিন: ডব্লিউএসজে মতামতধারার আলোচ্য রাজশাহীতে চারঘাট পৌরসভার পুকুরে ভেসে থাকা মরদেহে ছড়িয়ে পড়ে দুর্গন্ধ  রাতের বেলা ঘর থেকে বেরিয়ে আর ফেরা হলো না জিহাদের

সিঙ্গাপুরের নেতৃত্বে সামুদ্রিক ও উপকূলীয় বাস্তুসংস্থান রক্ষায় নতুন উদ্যোগ

নতুন উদ্যোগের সূচনা

সিঙ্গাপুরের নেতৃত্বে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সামুদ্রিক ও উপকূলীয় বাস্তুসংস্থান রক্ষা ও পুনরুদ্ধারের জন্য একটি উদ্যোগ চালু হয়েছে। নিউইয়র্কে ২৪ সেপ্টেম্বর ‘ব্লু ক্যাটালিস্ট’ নামে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এর মূল উদ্দেশ্য হলো প্রকৃতি-ভিত্তিক সমাধানের মাধ্যমে কার্বন ক্রেডিট উৎপাদন ও বাজার সম্প্রসারণ।

এই কর্মসূচি সিঙ্গাপুরের ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (EDB) দ্বারা সমর্থিত। এখানে প্রাথমিক পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য মানচিত্রায়ন, ম্যানগ্রোভ ও সামুদ্রিক গাছের চারা বাঁচিয়ে রাখা এবং প্রকল্প বাস্তবায়নে সক্ষম হবে।


WWF ও অন্যান্য অংশীদার

১২ মাসব্যাপী এই কর্মসূচির আওতায় প্রতিষ্ঠানগুলো বাস্তব সংরক্ষণ এলাকায় প্রযুক্তি পরীক্ষা করতে পারবে, যা পরিচালনা করবে বিশ্ববিখ্যাত সংরক্ষণ সংস্থা WWF। WWF তার বৈজ্ঞানিক জ্ঞান ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ নেটওয়ার্কের সহায়তা দেবে।

হ্যাচ ব্লু নামের একটি আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ ও উদ্ভাবনী প্রতিষ্ঠান এই উদ্যোগে কাজ করবে। তারা স্টার্ট-আপ প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিনিয়োগ আকর্ষণ ও ব্যবসা সম্প্রসারণে সহায়তা করবে।

২৪ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক ক্লাইমেট উইকের অংশ হিসেবে নর্থ আমেরিকা ক্লাইমেট সামিটে WWF-সিঙ্গাপুর, হ্যাচ ব্লু ও EDB এই সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করে। ডিসেম্বর মাসে WWF ও হ্যাচ ব্লু আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন আহ্বান ও কর্মসূচির বিস্তারিত জানাবে।


ব্লু কার্বন ও এর গুরুত্ব

‘ব্লু কার্বন’ বলতে উপকূলীয় ও সামুদ্রিক বাস্তুসংস্থানে জমা থাকা কার্বনকে বোঝায়। এর মধ্যে ম্যানগ্রোভ, সীগ্রাস ও উপকূলীয় জলাভূমি রয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বিশ্বের ৩০ শতাংশের বেশি ম্যানগ্রোভ ও সীগ্রাস অবস্থান করছে।

এই বাস্তুসংস্থান প্রতি হেক্টরে উষ্ণমণ্ডলীয় অরণ্যের চেয়ে বেশি কার্বন জমা রাখতে পারে। পাশাপাশি এটি ঝড় থেকে উপকূলীয় জনগণকে রক্ষা করে এবং বহু প্রজাতির প্রাণীর আবাসস্থল।

কার্বন ক্রেডিটের ধারণা অনুযায়ী, প্রতিটি ক্রেডিট মানে এক টন কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ বা নির্গমন প্রতিরোধ। কোম্পানিগুলো তাদের নিজেদের নির্গমন সমন্বয়ের জন্য এসব ক্রেডিট কিনে থাকে।


বর্তমান চ্যালেঞ্জ

WWF-সিঙ্গাপুরের প্রধান নির্বাহী বিবেক কুমার জানিয়েছেন, ব্লু কার্বন প্রকল্পের সম্ভাবনা বিশাল হলেও বাস্তবায়ন ও ফলাফল পরিমাপ করা কঠিন। হ্যাচ ব্লুর সহপ্রতিষ্ঠাতা ওয়েন মারফি বলেন, বর্তমানে স্বেচ্ছাসেবী কার্বন বাজারে ব্লু কার্বন প্রকল্প থেকে আসা ক্রেডিট মাত্র ০.২ শতাংশ।

কারণ হলো, সমুদ্রতলের পলি বা পানির নিচে জমা থাকা কার্বনের সঠিক পরিমাণ নির্ধারণ জটিল। বনাঞ্চলে লেজার বা স্যাটেলাইট স্ক্যান দিয়ে তুলনামূলক সহজে হিসাব করা গেলেও, সামুদ্রিক পরিবেশে এই প্রক্রিয়া অনিশ্চিত। এর ফলে বিনিয়োগকারীরা প্রত্যাশিত মুনাফা নিশ্চিতভাবে বুঝতে পারেন না।

এছাড়া, ২০২৩ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, গত ৪০ বছরে প্রায় অর্ধেক ম্যানগ্রোভ পুনরুদ্ধার প্রকল্প ব্যর্থ হয়েছে।


প্রযুক্তির ভূমিকা

নতুন কর্মসূচির মাধ্যমে প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার চেষ্টা হবে। যেমন—

  • ভূ-তাত্ত্বিক মানচিত্রায়ন (geospatial mapping) ব্যবহার করে বাস্তুসংস্থানের পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ।
  • সফটওয়্যার মডেলিংয়ের মাধ্যমে কার্বন জমা রাখার মাত্রা সময়ভিত্তিক বোঝানো।
  • নার্সারি উন্নয়নের মাধ্যমে ম্যানগ্রোভ পুনরুদ্ধার প্রকল্পের সফলতার হার বাড়ানো।

এগুলো বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াতে সহায়তা করবে এবং আরও ব্লু কার্বন প্রকল্প এগিয়ে নিতে অনুপ্রাণিত করবে।


সিঙ্গাপুরের কার্বন বাজার কৌশল

EDB-এর নির্বাহী ভাইস-প্রেসিডেন্ট লিম ওয়েই-লেন জানিয়েছেন, এই কর্মসূচি বাজারে বিদ্যমান ঘাটতি পূরণ করবে। সিঙ্গাপুর ইতিমধ্যে ২০৫০ সালের মধ্যে নেট-শূন্য নির্গমনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে এবং কার্বন বাজারকে সে লক্ষ্যে পৌঁছানোর একটি পথ হিসেবে বেছে নিয়েছে।

সিঙ্গাপুর অনুমান করেছে যে, এই দশকে প্রতি বছর প্রায় ২.৫১ মিলিয়ন টন নির্গমন উচ্চমানের কার্বন ক্রেডিট ব্যবহার করে সমন্বয় করা হবে। ২০৩০ সালে দেশটির মোট গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন ৬২.৫১ মিলিয়ন টন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যা ক্রেডিট ব্যবহারের মাধ্যমে ৬০ মিলিয়ন টনে নামিয়ে আনা হবে।

সরকার মনে করছে, কার্বন বাজার কেবল পরিবেশগত নয়, অর্থনৈতিক সুযোগও তৈরি করবে। এর মাধ্যমে স্থানীয়দের জন্য টেকসই উন্নয়ন, কার্বন বাজার যাচাই ও নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।


ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

সিঙ্গাপুরের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মহাপরিচালক বেনেডিক্ট চিয়া জানিয়েছেন, দেশটি জ্বালানি ও প্রকৃতি, এই দুই ধরনের প্রকল্প থেকে কার্বন ক্রেডিট আহরণের চেষ্টা করছে।

জ্বালানিতে ‘ট্রানজিশন ক্রেডিট’ বা কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র আগেভাগে বন্ধ করে নির্গমন কমানোকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। প্রকৃতির ক্ষেত্রে ঘানা, প্যারাগুয়ে ও পেরুতে পুনরুদ্ধার প্রকল্প থেকে কার্বন ক্রেডিট সংগ্রহে সিঙ্গাপুর ইতিমধ্যে চুক্তি করেছে।

২০২৫ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে আরও প্রস্তাব আহ্বান করা হবে বলে জানানো হয়েছে। বর্তমানে সিঙ্গাপুর নয়টি দেশের সঙ্গে কার্বন বাণিজ্য চুক্তি করেছে এবং তাদের অনুমোদিত তালিকায় ব্লু কার্বন প্রকল্পও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।


এই উদ্যোগ সফল হলে জলবায়ু, জীববৈচিত্র্য ও উপকূলীয় জনগোষ্ঠী—সবাই উপকৃত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

মানসিক রোগের ভাইরাস কোথা থেকে আসছে

সিঙ্গাপুরের নেতৃত্বে সামুদ্রিক ও উপকূলীয় বাস্তুসংস্থান রক্ষায় নতুন উদ্যোগ

০১:৩৬:১১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নতুন উদ্যোগের সূচনা

সিঙ্গাপুরের নেতৃত্বে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সামুদ্রিক ও উপকূলীয় বাস্তুসংস্থান রক্ষা ও পুনরুদ্ধারের জন্য একটি উদ্যোগ চালু হয়েছে। নিউইয়র্কে ২৪ সেপ্টেম্বর ‘ব্লু ক্যাটালিস্ট’ নামে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এর মূল উদ্দেশ্য হলো প্রকৃতি-ভিত্তিক সমাধানের মাধ্যমে কার্বন ক্রেডিট উৎপাদন ও বাজার সম্প্রসারণ।

এই কর্মসূচি সিঙ্গাপুরের ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (EDB) দ্বারা সমর্থিত। এখানে প্রাথমিক পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য মানচিত্রায়ন, ম্যানগ্রোভ ও সামুদ্রিক গাছের চারা বাঁচিয়ে রাখা এবং প্রকল্প বাস্তবায়নে সক্ষম হবে।


WWF ও অন্যান্য অংশীদার

১২ মাসব্যাপী এই কর্মসূচির আওতায় প্রতিষ্ঠানগুলো বাস্তব সংরক্ষণ এলাকায় প্রযুক্তি পরীক্ষা করতে পারবে, যা পরিচালনা করবে বিশ্ববিখ্যাত সংরক্ষণ সংস্থা WWF। WWF তার বৈজ্ঞানিক জ্ঞান ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ নেটওয়ার্কের সহায়তা দেবে।

হ্যাচ ব্লু নামের একটি আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ ও উদ্ভাবনী প্রতিষ্ঠান এই উদ্যোগে কাজ করবে। তারা স্টার্ট-আপ প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিনিয়োগ আকর্ষণ ও ব্যবসা সম্প্রসারণে সহায়তা করবে।

২৪ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক ক্লাইমেট উইকের অংশ হিসেবে নর্থ আমেরিকা ক্লাইমেট সামিটে WWF-সিঙ্গাপুর, হ্যাচ ব্লু ও EDB এই সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করে। ডিসেম্বর মাসে WWF ও হ্যাচ ব্লু আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন আহ্বান ও কর্মসূচির বিস্তারিত জানাবে।


ব্লু কার্বন ও এর গুরুত্ব

‘ব্লু কার্বন’ বলতে উপকূলীয় ও সামুদ্রিক বাস্তুসংস্থানে জমা থাকা কার্বনকে বোঝায়। এর মধ্যে ম্যানগ্রোভ, সীগ্রাস ও উপকূলীয় জলাভূমি রয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বিশ্বের ৩০ শতাংশের বেশি ম্যানগ্রোভ ও সীগ্রাস অবস্থান করছে।

এই বাস্তুসংস্থান প্রতি হেক্টরে উষ্ণমণ্ডলীয় অরণ্যের চেয়ে বেশি কার্বন জমা রাখতে পারে। পাশাপাশি এটি ঝড় থেকে উপকূলীয় জনগণকে রক্ষা করে এবং বহু প্রজাতির প্রাণীর আবাসস্থল।

কার্বন ক্রেডিটের ধারণা অনুযায়ী, প্রতিটি ক্রেডিট মানে এক টন কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ বা নির্গমন প্রতিরোধ। কোম্পানিগুলো তাদের নিজেদের নির্গমন সমন্বয়ের জন্য এসব ক্রেডিট কিনে থাকে।


বর্তমান চ্যালেঞ্জ

WWF-সিঙ্গাপুরের প্রধান নির্বাহী বিবেক কুমার জানিয়েছেন, ব্লু কার্বন প্রকল্পের সম্ভাবনা বিশাল হলেও বাস্তবায়ন ও ফলাফল পরিমাপ করা কঠিন। হ্যাচ ব্লুর সহপ্রতিষ্ঠাতা ওয়েন মারফি বলেন, বর্তমানে স্বেচ্ছাসেবী কার্বন বাজারে ব্লু কার্বন প্রকল্প থেকে আসা ক্রেডিট মাত্র ০.২ শতাংশ।

কারণ হলো, সমুদ্রতলের পলি বা পানির নিচে জমা থাকা কার্বনের সঠিক পরিমাণ নির্ধারণ জটিল। বনাঞ্চলে লেজার বা স্যাটেলাইট স্ক্যান দিয়ে তুলনামূলক সহজে হিসাব করা গেলেও, সামুদ্রিক পরিবেশে এই প্রক্রিয়া অনিশ্চিত। এর ফলে বিনিয়োগকারীরা প্রত্যাশিত মুনাফা নিশ্চিতভাবে বুঝতে পারেন না।

এছাড়া, ২০২৩ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, গত ৪০ বছরে প্রায় অর্ধেক ম্যানগ্রোভ পুনরুদ্ধার প্রকল্প ব্যর্থ হয়েছে।


প্রযুক্তির ভূমিকা

নতুন কর্মসূচির মাধ্যমে প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার চেষ্টা হবে। যেমন—

  • ভূ-তাত্ত্বিক মানচিত্রায়ন (geospatial mapping) ব্যবহার করে বাস্তুসংস্থানের পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ।
  • সফটওয়্যার মডেলিংয়ের মাধ্যমে কার্বন জমা রাখার মাত্রা সময়ভিত্তিক বোঝানো।
  • নার্সারি উন্নয়নের মাধ্যমে ম্যানগ্রোভ পুনরুদ্ধার প্রকল্পের সফলতার হার বাড়ানো।

এগুলো বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াতে সহায়তা করবে এবং আরও ব্লু কার্বন প্রকল্প এগিয়ে নিতে অনুপ্রাণিত করবে।


সিঙ্গাপুরের কার্বন বাজার কৌশল

EDB-এর নির্বাহী ভাইস-প্রেসিডেন্ট লিম ওয়েই-লেন জানিয়েছেন, এই কর্মসূচি বাজারে বিদ্যমান ঘাটতি পূরণ করবে। সিঙ্গাপুর ইতিমধ্যে ২০৫০ সালের মধ্যে নেট-শূন্য নির্গমনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে এবং কার্বন বাজারকে সে লক্ষ্যে পৌঁছানোর একটি পথ হিসেবে বেছে নিয়েছে।

সিঙ্গাপুর অনুমান করেছে যে, এই দশকে প্রতি বছর প্রায় ২.৫১ মিলিয়ন টন নির্গমন উচ্চমানের কার্বন ক্রেডিট ব্যবহার করে সমন্বয় করা হবে। ২০৩০ সালে দেশটির মোট গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন ৬২.৫১ মিলিয়ন টন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যা ক্রেডিট ব্যবহারের মাধ্যমে ৬০ মিলিয়ন টনে নামিয়ে আনা হবে।

সরকার মনে করছে, কার্বন বাজার কেবল পরিবেশগত নয়, অর্থনৈতিক সুযোগও তৈরি করবে। এর মাধ্যমে স্থানীয়দের জন্য টেকসই উন্নয়ন, কার্বন বাজার যাচাই ও নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।


ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

সিঙ্গাপুরের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মহাপরিচালক বেনেডিক্ট চিয়া জানিয়েছেন, দেশটি জ্বালানি ও প্রকৃতি, এই দুই ধরনের প্রকল্প থেকে কার্বন ক্রেডিট আহরণের চেষ্টা করছে।

জ্বালানিতে ‘ট্রানজিশন ক্রেডিট’ বা কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র আগেভাগে বন্ধ করে নির্গমন কমানোকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। প্রকৃতির ক্ষেত্রে ঘানা, প্যারাগুয়ে ও পেরুতে পুনরুদ্ধার প্রকল্প থেকে কার্বন ক্রেডিট সংগ্রহে সিঙ্গাপুর ইতিমধ্যে চুক্তি করেছে।

২০২৫ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে আরও প্রস্তাব আহ্বান করা হবে বলে জানানো হয়েছে। বর্তমানে সিঙ্গাপুর নয়টি দেশের সঙ্গে কার্বন বাণিজ্য চুক্তি করেছে এবং তাদের অনুমোদিত তালিকায় ব্লু কার্বন প্রকল্পও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।


এই উদ্যোগ সফল হলে জলবায়ু, জীববৈচিত্র্য ও উপকূলীয় জনগোষ্ঠী—সবাই উপকৃত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।