১২:২২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫
তীব্র তাপে বিশ্বজুড়ে বিদ্যুৎ গ্রিডে চাপ বিআরটিএতে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি, আইনশৃঙ্খলা ও পাসপোর্ট দপ্তরও শীর্ষে মগবাজার ফ্লাইওভার থেকে বোমা নিক্ষেপ, নিহত এক পথচারী অসম ভিআইপি সুবিধা নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘন: নির্বাচন কমিশনকে জানাল জামায়াত বড়দিন ও সাপ্তাহিক ছুটিতে টানা তিন দিন বন্ধ ব্যাংক ও শেয়ারবাজার বৃহস্পতিবার দেশে পালিত হবে বড়দিন, উৎসব ঘিরে শুভেচ্ছা ও বাড়তি নিরাপত্তা উপেক্ষিত রুমিন ফারহানা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ তরুণ ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের কর্মসংস্থানে বিশ্বব্যাংকের নতুন অর্থায়ন, বাংলাদেশে অনুমোদন ১৫০ কোটি ডলার তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনে সরকারের স্বাগত, পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস গাজীপুরে জাসাস নেতাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা

অফিসে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI): নতুন বাস্তবতা

মেটাভার্স থেকে এআই পর্যন্ত

কিছুদিন আগেও ভবিষ্যতের বড় প্রযুক্তি হিসেবে মেটাভার্সকে দেখা হয়েছিল। ২০২২ সালে ম্যাকিন্সি ধারণা দিয়েছিল, ২০৩০ সালের মধ্যে এটি ৫ ট্রিলিয়ন ডলারের বাজার তৈরি করবে। ফেসবুক পর্যন্ত নাম পাল্টে মেটা হয়ে যায়। অনেক প্রতিষ্ঠান “চিফ মেটাভার্স অফিসার” নিয়োগ করেছিল। কিন্তু কয়েক বছরের মধ্যেই এই স্বপ্ন ভেস্তে যায়। এখন কেবল ক’জনই এ নিয়ে কথা বলে।

আজকের বাস্তবতায় জেনারেটিভ এআই একেবারেই আলাদা চিত্র। যদিও শুরুতে কিছু প্রতিষ্ঠান প্রত্যাশিত ফল পাচ্ছে না বলে হতাশা প্রকাশ করেছে, তবুও অফিস সংস্কৃতিতে এটি ইতোমধ্যেই দৃশ্যমান পরিবর্তন এনেছে।


ব্যবহার বাড়ছে দ্রুত

কর্মীরা নিজেরাই এআই ব্যবহার শুরু করেছেন—কখনও অনুমতি নিয়ে, কখনও গোপনে। নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে, কাজের জায়গায় এআই ব্যবহারের হার দ্রুত বেড়েছে।

  • ওপেনএআই ও হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির এক গবেষণায় দেখা যায়, ২০২৪ সালের জুনে যেখানে প্রতিদিন গড়ে ২১ কোটি ৩০ লাখ কর্মসংক্রান্ত বার্তা এআই দিয়ে তৈরি হচ্ছিল, এক বছর পর সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৭১ কোটি ৬০ লাখে।
  • অ্যানথ্রপিকের “ইকোনমিক ইনডেক্স” অনুযায়ী, এখন এআই মূলত “অটোমেশন মোডে” বেশি ব্যবহার হচ্ছে—অর্থাৎ সরাসরি কাজ করিয়ে নেওয়া, যেখানে আগে “অগমেন্টেশন” বা সহযোগী ব্যবহারের হার বেশি ছিল।

অফিস জীবনে নতুন রূপ

এআই এখন অফিস আলোচনার অবিচ্ছেদ্য অংশ।

  • মিটিংয়ে বারবার শোনা যায়: “তাহলে আমার চাকরি এখনো রইল মনে হয়” কিংবা “আগামী প্রজন্মের জন্য চিন্তা বেশি”
  • এআই সম্পর্কিত জটিল শব্দ যেমন “অ্যালাইনমেন্ট”, “নন-ডিটারমিনিজম”, “এজেন্টিক”—যারা পুরোপুরি বোঝেন না তারাও ব্যবহার করছেন।
  • অফিসের বৈঠক, আলাপ, এমনকি কর্মদক্ষতার মূল্যায়নেও এআই ব্যবহার এখন সাধারণ ঘটনা। অনেক প্রতিষ্ঠান কর্মীদের এআই ব্যবহারের ড্যাশবোর্ড তৈরি করেছে।

পরীক্ষা ও নিয়োগে এআই

এআই শুধু সহায়ক নয়, পর্যবেক্ষকও হয়ে উঠছে।

  • এক চাকরিপ্রার্থী প্রশ্ন ঠিকভাবে শুনতে না পেরে বলেছিল: “কম্পিউটার শুনতে পায়নি, আবার বলবেন?”
  • নিয়োগ পরীক্ষায় এআই সফটওয়্যার নজর রাখছে—প্রার্থী ট্যাব বদলাচ্ছে কি না, উত্তর দিতে কত সময় নিচ্ছে, ইত্যাদি।
  • লেখালেখি-সংক্রান্ত কাজে ChatGPT সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হচ্ছে। এতে ব্যাকরণগত ভুল কমলেও তথ্যভিত্তিক ভুল বাড়ছে। আর অফিসের লেখা এখন আরও বেশি একরকম ও নিরস হয়ে যাচ্ছে।

পরিবর্তনের পথে অফিস

সব মিলিয়ে, এআই এখনো পুরোপুরি “বিপ্লব” ঘটায়নি। তবে অফিসের আচরণ, ভাষা ও কর্মপদ্ধতিতে পরিবর্তনের ছাপ স্পষ্ট।

এক কথায়—এটি মেটাভার্সের মতো স্বপ্নভঙ্গ নয়, বরং বাস্তব রূপ নিচ্ছে ধীরে ধীরে।

জনপ্রিয় সংবাদ

তীব্র তাপে বিশ্বজুড়ে বিদ্যুৎ গ্রিডে চাপ

অফিসে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI): নতুন বাস্তবতা

০১:১৫:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

মেটাভার্স থেকে এআই পর্যন্ত

কিছুদিন আগেও ভবিষ্যতের বড় প্রযুক্তি হিসেবে মেটাভার্সকে দেখা হয়েছিল। ২০২২ সালে ম্যাকিন্সি ধারণা দিয়েছিল, ২০৩০ সালের মধ্যে এটি ৫ ট্রিলিয়ন ডলারের বাজার তৈরি করবে। ফেসবুক পর্যন্ত নাম পাল্টে মেটা হয়ে যায়। অনেক প্রতিষ্ঠান “চিফ মেটাভার্স অফিসার” নিয়োগ করেছিল। কিন্তু কয়েক বছরের মধ্যেই এই স্বপ্ন ভেস্তে যায়। এখন কেবল ক’জনই এ নিয়ে কথা বলে।

আজকের বাস্তবতায় জেনারেটিভ এআই একেবারেই আলাদা চিত্র। যদিও শুরুতে কিছু প্রতিষ্ঠান প্রত্যাশিত ফল পাচ্ছে না বলে হতাশা প্রকাশ করেছে, তবুও অফিস সংস্কৃতিতে এটি ইতোমধ্যেই দৃশ্যমান পরিবর্তন এনেছে।


ব্যবহার বাড়ছে দ্রুত

কর্মীরা নিজেরাই এআই ব্যবহার শুরু করেছেন—কখনও অনুমতি নিয়ে, কখনও গোপনে। নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে, কাজের জায়গায় এআই ব্যবহারের হার দ্রুত বেড়েছে।

  • ওপেনএআই ও হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির এক গবেষণায় দেখা যায়, ২০২৪ সালের জুনে যেখানে প্রতিদিন গড়ে ২১ কোটি ৩০ লাখ কর্মসংক্রান্ত বার্তা এআই দিয়ে তৈরি হচ্ছিল, এক বছর পর সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৭১ কোটি ৬০ লাখে।
  • অ্যানথ্রপিকের “ইকোনমিক ইনডেক্স” অনুযায়ী, এখন এআই মূলত “অটোমেশন মোডে” বেশি ব্যবহার হচ্ছে—অর্থাৎ সরাসরি কাজ করিয়ে নেওয়া, যেখানে আগে “অগমেন্টেশন” বা সহযোগী ব্যবহারের হার বেশি ছিল।

অফিস জীবনে নতুন রূপ

এআই এখন অফিস আলোচনার অবিচ্ছেদ্য অংশ।

  • মিটিংয়ে বারবার শোনা যায়: “তাহলে আমার চাকরি এখনো রইল মনে হয়” কিংবা “আগামী প্রজন্মের জন্য চিন্তা বেশি”
  • এআই সম্পর্কিত জটিল শব্দ যেমন “অ্যালাইনমেন্ট”, “নন-ডিটারমিনিজম”, “এজেন্টিক”—যারা পুরোপুরি বোঝেন না তারাও ব্যবহার করছেন।
  • অফিসের বৈঠক, আলাপ, এমনকি কর্মদক্ষতার মূল্যায়নেও এআই ব্যবহার এখন সাধারণ ঘটনা। অনেক প্রতিষ্ঠান কর্মীদের এআই ব্যবহারের ড্যাশবোর্ড তৈরি করেছে।

পরীক্ষা ও নিয়োগে এআই

এআই শুধু সহায়ক নয়, পর্যবেক্ষকও হয়ে উঠছে।

  • এক চাকরিপ্রার্থী প্রশ্ন ঠিকভাবে শুনতে না পেরে বলেছিল: “কম্পিউটার শুনতে পায়নি, আবার বলবেন?”
  • নিয়োগ পরীক্ষায় এআই সফটওয়্যার নজর রাখছে—প্রার্থী ট্যাব বদলাচ্ছে কি না, উত্তর দিতে কত সময় নিচ্ছে, ইত্যাদি।
  • লেখালেখি-সংক্রান্ত কাজে ChatGPT সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হচ্ছে। এতে ব্যাকরণগত ভুল কমলেও তথ্যভিত্তিক ভুল বাড়ছে। আর অফিসের লেখা এখন আরও বেশি একরকম ও নিরস হয়ে যাচ্ছে।

পরিবর্তনের পথে অফিস

সব মিলিয়ে, এআই এখনো পুরোপুরি “বিপ্লব” ঘটায়নি। তবে অফিসের আচরণ, ভাষা ও কর্মপদ্ধতিতে পরিবর্তনের ছাপ স্পষ্ট।

এক কথায়—এটি মেটাভার্সের মতো স্বপ্নভঙ্গ নয়, বরং বাস্তব রূপ নিচ্ছে ধীরে ধীরে।