সমকালের একটি শিরোনাম “হাজার কোটি টাকা ব্যয়েও বাড়েনি ডাকসেবার মান”
‘রানার ছুটেছে তাই ঝুম ঝুম ঘণ্টা বাজছে রাতে, রানার চলেছে খবরের বোঝা হাতে’– আধুনিক প্রযুক্তির কল্যাণে চিঠির বস্তা নিয়ে রানারের এই ছোটাছুটি থেমে গেছে বহুদিন আগেই। ফোন, মেসেঞ্জার, ইমেইলের কল্যাণে আবেদন হারিয়েছে চিঠির হলুদ খাম। শুধু স্মৃতির স্মারক হিসেবে যেন নগর, গ্রামের কোথাও কোথাও চোখে পড়ে দুয়েকটি ভাঙাচোরা পোস্টবক্স।
ডাকবাক্সের মতোই এখন দুর্নীতি, জীর্ণ অবকাঠামো আর সেবা ব্যর্থতার ভারে কার্যত ধুঁকছে বাংলাদেশের ডাক সেবা। দ্রুতগতির এই যুগে সহজে এবং স্বাচ্ছন্দ্যে সেবা পেতে মানুষ ঝুঁকছে বেসরকারি কুরিয়ার সেবার ওপর। ডাক সেবায় গতি ফেরানো ও এর আধুনিকায়নে গত দেড় দশকে হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছিল বিগত সরকার। কিন্তু তথ্য-উপাত্ত বলছে, দুর্নীতি, অনিয়ম এবং যাচাই-বাছাই ছাড়া প্রকল্প গ্রহণের কারণে ডাক বিভাগের আধুনিকায়ন হয়েছে শুধু কাগজে-কলমে। বাস্তবে সেবা রয়ে গেছে সেই মান্ধাতা আমলের মতো। বিভিন্ন এলাকার ডাকঘরগুলোতে কোটি কোটি টাকার যন্ত্রপাতি অব্যবহৃত পড়ে আছে। পার্সেল, চিঠির পরিমাণ বাড়ছে না বরং দিন দিন কমছে।
এমন বাস্তবতায় অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশে আজ বৃহস্পতিবার পালিত হবে বিশ্ব ডাক দিবস। এ বছরের বিশ্ব ডাক দিবসের প্রতিপাদ্য– ‘জনগণের জন্য ডাক: স্থানীয় পরিষেবা, বৈশ্বিক পরিসর’। দিবস উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি ডাকঘরগুলোকে কমিউনিটিভিত্তিক অর্থনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন। ডাক দিবস উপলক্ষে ডাক বিভাগ দুই দিনব্যাপী কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
উন্নয়নের নামে পকেট ভারী
গত দেড় দশকে প্রায় হাজার কোটি টাকার একাধিক প্রকল্প হাতে নেয় ডাক বিভাগ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য পোস্ট ই-সেন্টার, মেইল প্রসেসিং সেন্টার ইত্যাদি। প্রকল্পগুলোর লক্ষ্য ছিল গ্রামীণ পর্যায়ে ডিজিটাল সেবা পৌঁছে দেওয়া এবং ডাক ব্যবস্থাকে সময়োপযোগী করা। কিন্তু বাস্তব চিত্র পুরো উল্টো। পোস্ট ই-সেন্টার প্রকল্প ২০১২ সালে শুরু হয়। এর আওতায় সারাদেশে সাড়ে ৮ হাজার ডাকঘরকে প্রায় ৫৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে আধুনিকায়ন করা হয়েছিল। প্রকল্প অনুযায়ী ইন্টারনেটসহ ২২ ধরনের সুবিধা থাকার কথা ডাকঘরে। কিন্তু দেশের অধিকাংশ এলাকায় ই-সেন্টারের খোঁজ নেই। কোথাও থাকলেও এক বা দুটি সেবা মেলে।
আজকের পত্রিকার একটি শিরোনাম “বাংলাদেশের জন্য দুঃসংবাদ, শান্তিরক্ষা মিশনের এক-চতুর্থাংশ ছাঁটাই করছে জাতিসংঘ”
জাতিসংঘ বিশ্বব্যাপী ৯টি শান্তিরক্ষা মিশনে আগামী কয়েক মাসে শান্তিরক্ষী বাহিনীর প্রায় এক-চতুর্থাংশ হ্রাস করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সিদ্ধান্তের মূল কারণ অর্থের ঘাটতি। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ তহবিলের অনিশ্চয়তা। জাতিসংঘের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে রয়টার্সকে বিষয়টি জানিয়েছেন। আর জাতিসংঘের এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বাংলাদেশও।
ওই কর্মকর্তা জানান, মোট প্রায় ২৫ শতাংশ শান্তিরক্ষী সৈন্য ও পুলিশকে তাদের সরঞ্জামসহ প্রত্যাহার করা হবে। পাশাপাশি এসব মিশনে কাজ করা অনেক বেসামরিক কর্মীও এর আওতায় পড়বেন। এর ফলে ১৩ থেকে ১৪ হাজার সৈন্য ও পুলিশ এবং উল্লেখযোগ্য বেসামরিক কর্মী এই ছাঁটাইয়ের আওতায় আসবেন।
ওয়াশিংটন জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনে সবচেয়ে বড় তহবিলদাতা। যুক্তরাষ্ট্র মোট তহবিলের ২৬ শতাংশের বেশি দান করে। চীন দ্বিতীয় বৃহত্তম তহবিলদাতা, প্রায় ২৪ শতাংশ দান করে। এই অর্থ প্রদান স্বেচ্ছাসেবী নয় এবং নির্ধারিত। তবে যুক্তরাষ্ট্রের এরই মধ্যে দেড় বিলিয়ন ডলার বকেয়া পড়েছে। নতুন বকেয়া যোগ হওয়ায় বর্তমানে মোট বকেয়ার পরিমাণ ২.৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি। জাতিসংঘ সূত্র জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র শিগগির ৬৮০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধের পরিকল্পনা করছে। যুক্তরাষ্ট্রের জাতিসংঘ মিশন এখনো এ বিষয়ে মন্তব্য করেনি।
আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একতরফাভাবে ২০২৪ ও ২০২৫ সালের জন্য বরাদ্দকৃত প্রায় ৮০০ মিলিয়ন ডলার শান্তি রক্ষা তহবিল বাতিল করেন। এ ছাড়া হোয়াইট হাউসের বাজেট অফিস ২০২৬ সালের জন্যও জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনের তহবিল বাতিলের প্রস্তাব করেছে। প্রস্তাবের পেছনে কারণ হিসেবে মালি, লেবানন ও কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে অভিযানের ব্যর্থতাকে উল্লেখ করা হয়েছে।
এই ছাঁটাইয়ের ফলে দক্ষিণ সুদান, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, লেবানন, কসোভো, সাইপ্রাস, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, পশ্চিম সাহারা, ইসরায়েল ও সিরিয়ার মধ্যে গোলান উচ্চ ভূমি উদাসীন এলাকা এবং আবিই—দক্ষিণ সুদান ও সুদানের যৌথ প্রশাসিত এলাকায় শান্তি রক্ষা মিশনে প্রভাব পড়বে।
বণিকবার্তার একটি শিরোনাম “গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের ইউটিউব চ্যানেলে তথ্যচিত্র প্রকাশ”
অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্যচিত্র প্রকাশ করা হয়েছে। তদন্ত কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা কে এম খালিদ বিন জামান জানিয়েছেন, তথ্যচিত্রটিতে কমিশন কীভাবে গুমের শিকার ব্যক্তিদের সন্ধানে চেষ্টা চালিয়ে গেছে এবং সত্য উদঘাটনের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পথে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছে, সে বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে।
বিশেষভাবে গোপন বন্দিশালা আবিষ্কার, নষ্টপ্রায় প্রমাণ সংগ্রহ এবং আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিচারপ্রাপ্তির সুযোগ সৃষ্টির বিষয়গুলো উপস্থাপন করা হয়েছে। কমিশন পুলিশ, র্যাব, গোয়েন্দা সংস্থা ও অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছে। নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিণতি নির্ণয়ে নিরবচ্ছিন্ন অনুসন্ধান চালিয়েছে।
একইসঙ্গে গুম হওয়া ব্যক্তিদের জন্য ‘ডিসঅ্যাপিয়ারেন্স সার্টিফিকেট’ ইস্যুর সুপারিশ এবং সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ আইনের সংশোধনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর বিষয়ে নীতিগত পরামর্শ দিয়েছে কমিশন। এ তথ্যচিত্র শুধু অনুসন্ধানের বিবরণ নয়; এটি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং রাষ্ট্রের প্রতি জনআস্থা পুনর্গঠনের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রামাণ্য দলিল বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
মানবজমিনের একটি শিরোন “আইজিপি ও বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো হলো হাসিনাসহ ৩০ জনের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা”
গুমের দুই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পুলিশের মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) কাছে পাঠিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে দায়িত্বপ্রাপ্ত বাহিনীর ১২ দপ্তরে পাঠানো হয় এই পরোয়ানা। বৃহস্পতিবার সকালে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছে ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার কার্যালয়।
এ প্রসঙ্গে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, ‘গতকাল বিকালেই দুই মামলায় ৩০ আসামির বিরুদ্ধে জারি হওয়া গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আইজিপি ও ১২টি দপ্তরে পাঠিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।’
১২ দপ্তর হলো-চিফ অব আর্মি স্টাফ, চিফ অব জেনারেল স্টাফ, এডজুটেন্ট জেনারেল (আর্মি হেডকোয়ার্টার), ডিজি ডিজিএফআই, ডিজি এনএসআই, প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (আর্মড ফোর্সেস ডিভিশন), প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব, ডিরেক্টর মিলিটারি ইন্টেলিজেন্স, ডিরেক্টর পার্সোনেল সার্ভিস ডিরেক্টরেট (বাংলাদেশ সেনাবাহিনী), কমান্ডেন্ট আর্মি সিকিউরিটি ইউনিট, প্রভোস্ট মার্শাল ও সিইও (আর্মি এমপি ইউনিট ফর ইনফরমেশন)।
এর আগে, বুধবার টাস্কফোর্স ফর ইন্টারোগেশন সেলে (টিএফআই) গুমের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল-১। একইসঙ্গে জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলে (জেআইসি) গুমের ঘটনায় আরেক মামলায় শেখ হাসিনাসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। একই দিন সকালে এই দুই মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেন প্রসিকিউশন।
মামলায় ডিজিএফআইয়ের সাবেক পাঁচ ডিজিসহ সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে অনেকেই এখনো কর্মরত রয়েছেন। তবে ফরমাল চার্জ (আনুষ্ঠানিক অভিযোগ) দাখিলের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সংশোধিত আইন অনুযায়ী তারা কোনো পদে থাকতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর।