০১:০৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫
টিম কারির স্মৃতিকথা ‘ভ্যাগাবন্ড’-এ জীবনের রঙিন অধ্যায় সুপার হেডলাইন: ভারতের সংবিধান বেঞ্চেরও বিশেষ ক্ষমতা আছে— মন্তব্য পাকিস্তানের বিচারপতি মাজহার দিওয়ালির রঙে শিল্পা ও শমিতা শেঠির বোনেদের মজা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৪৪) ভারতের ঋণসীমার আওতায় ‘চুক্তি বাতিলের তালিকা ভুল’— পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন অ-পরিশোধিত ঋণে চাপে ২৪ ব্যাংক ঝুঁকিতে, অর্থনীতির স্থিতিশীলতায় বড় ধাক্কা ১.৫৬ কোটি টাকা বকেয়া ও গ্যাস চুরির অভিযোগে আনন্ত জলিলের কারখানার গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন পর্নোগ্রাফি মামলায় দম্পতির পাঁচ দিনের রিমান্ড নারায়ণগঞ্জের প্রধান ফেরিঘাটে ভেসে উঠল এক তরুণের নগ্ন দেহ প্রেম-প্রতিশোধের নাটক: জোবায়েদকে হত্যায় উসকানির অভিযোগ বর্ষার বিরুদ্ধে

মলত্যাগের সময় ‘শেষ করতে না পারা’র অনুভূতি কোলন ক্যানসারের ইঙ্গিত

ভারতের এআইআইএমএস-প্রশিক্ষিত গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিস্ট ড. সৌরভ সেঠি সতর্ক করেছেন— মলত্যাগের সময় যদি মনে হয় ‘পুরোটা শেষ হয়নি’, তবে তা কোলন ক্যানসারের প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে। তাঁর মতে, এই ধরনের উপসর্গকে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই জীবনরক্ষার প্রথম ধাপ।

নীরব ঘাতক কোলন ক্যানসার

কোলন ক্যানসার সাধারণত খুব নীরবে বিকশিত হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে এর তেমন কোনো স্পষ্ট উপসর্গ দেখা যায় না। ফলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রোগটি ধরা পড়ে দেরিতে। তবে শরীর কিছু সূক্ষ্ম সংকেত দেয়, যেগুলো উপেক্ষা করা বিপজ্জনক হতে পারে। সময়মতো শনাক্ত হলে এই রোগে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা প্রায় ৯০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়।

এআইআইএমএস-প্রশিক্ষিত চিকিৎসকের সতর্কতা

ড. সৌরভ সেঠি, যিনি ভারতের এআইআইএমএস (AIIMS), হার্ভার্ড ও স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন, সম্প্রতি তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিওতে কোলন ক্যানসারের আটটি সতর্কবার্তা তুলে ধরেছেন। তিনি বলেছেন, এসব লক্ষণ প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা গেলে রোগ নিরাময়ের সম্ভাবনা অনেক বেশি। তিনি সময়ক্ষেপণ না করে দ্রুত কোলনোস্কপি পরীক্ষার পরামর্শ দিয়েছেন।

 

কোলন ক্যানসারের ৮টি সতর্কবার্তা

মলে রক্ত

ড. সেঠির মতে, উজ্জ্বল লাল বা কালচে রঙের মল কোলনের ভেতরে রক্তক্ষরণের ইঙ্গিত হতে পারে। যদিও অনেক সময় এটি হেমোরয়েড (পাইলস)-এর কারণেও হয়, তবে নিশ্চিত হতে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

মলত্যাগের ধরণে স্থায়ী পরিবর্তন

যদি কয়েক দিনের বেশি সময় ধরে কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া বা মলের গঠন সরু হয়ে যাওয়া দেখা যায়, এটি একটি বড় সতর্কবার্তা হতে পারে। মলত্যাগের নিয়মিত পরিবর্তন কোলনের অভ্যন্তরীণ সমস্যার ইঙ্গিত দেয়।

পেটব্যথা বা ক্র্যাম্প

ঘন ঘন পেটব্যথা, গ্যাস, ফুলে যাওয়া বা নতুনভাবে শুরু হওয়া ক্র্যাম্প— এগুলোরও কারণ অনুসন্ধান করা জরুরি। এসব উপসর্গ কোলনে অস্বাভাবিক বৃদ্ধি বা বাধার ইঙ্গিত হতে পারে।

অজানা কারণে ওজন কমে যাওয়া

যদি খাদ্যাভ্যাস বা জীবনযাত্রায় কোনো পরিবর্তন ছাড়াই ওজন কমে যায়, তাহলে বুঝতে হবে শরীর প্রয়োজনীয় পুষ্টি শোষণ করতে পারছে না। এটি কোলন ক্যানসারের একটি সাধারণ লক্ষণ।

দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি বা দুর্বলতা

রক্তের ধীরে ধীরে ক্ষতি ও অ্যানিমিয়ার কারণে শরীরে ক্রমাগত ক্লান্তি, মাথা ঘোরা বা দুর্বলতা দেখা দিতে পারে। ড. সেঠি বলেছেন, এটি কোলন ক্যানসারের একটি গুরুত্বপূর্ণ সতর্ক সংকেত

অজানা অ্যানিমিয়া

যদি রক্ত পরীক্ষায় দেখা যায় আয়রনের মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে কম, বিশেষ করে পুরুষ বা মেনোপজ-পরবর্তী নারীদের ক্ষেত্রে, তবে এটি কোলন ক্যানসারের প্রাথমিক গোপন লক্ষণ হতে পারে।

মলত্যাগের পর শেষ হয়নি’ অনুভব

মলত্যাগের পরও যদি মনে হয় পেট পুরোপুরি খালি হয়নি বা বারবার একই অনুভূতি হয়, তা কোলনের অভ্যন্তরে টিউমার বা বাধা সৃষ্টি বা টিউমার বৃদ্ধির ইঙ্গিত হতে পারে।

পারিবারিক ইতিহাস

পরিবারে বা ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের মধ্যে যদি কারও কোলন ক্যানসারের ইতিহাস থাকে, তাহলে ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়। এমন ক্ষেত্রে নিয়মিত স্ক্রিনিং করানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে ড. সেঠি পরামর্শ দিয়েছেন।

সচেতন থাকুনদেরি করবেন না

এই তথ্যগুলো শুধুমাত্র জনসচেতনতা বৃদ্ধিমূলক উদ্দেশ্যে দেওয়া হয়েছে, কোনো চিকিৎসা পরামর্শ নয়। কোলন ক্যানসারের উপসর্গ দেখা দিলে নিজে সিদ্ধান্ত না নিয়ে অবিলম্বে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সময়মতো শনাক্ত হলে এই রোগ থেকে সেরে ওঠা সম্ভব।

#কোলনক্যানসার #স্বাস্থ্যসচেতনতা #AIIMS #গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি #সারাক্ষণ_রিপোর্ট

জনপ্রিয় সংবাদ

টিম কারির স্মৃতিকথা ‘ভ্যাগাবন্ড’-এ জীবনের রঙিন অধ্যায়

মলত্যাগের সময় ‘শেষ করতে না পারা’র অনুভূতি কোলন ক্যানসারের ইঙ্গিত

০৪:০৪:২৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫

ভারতের এআইআইএমএস-প্রশিক্ষিত গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিস্ট ড. সৌরভ সেঠি সতর্ক করেছেন— মলত্যাগের সময় যদি মনে হয় ‘পুরোটা শেষ হয়নি’, তবে তা কোলন ক্যানসারের প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে। তাঁর মতে, এই ধরনের উপসর্গকে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই জীবনরক্ষার প্রথম ধাপ।

নীরব ঘাতক কোলন ক্যানসার

কোলন ক্যানসার সাধারণত খুব নীরবে বিকশিত হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে এর তেমন কোনো স্পষ্ট উপসর্গ দেখা যায় না। ফলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রোগটি ধরা পড়ে দেরিতে। তবে শরীর কিছু সূক্ষ্ম সংকেত দেয়, যেগুলো উপেক্ষা করা বিপজ্জনক হতে পারে। সময়মতো শনাক্ত হলে এই রোগে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা প্রায় ৯০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়।

এআইআইএমএস-প্রশিক্ষিত চিকিৎসকের সতর্কতা

ড. সৌরভ সেঠি, যিনি ভারতের এআইআইএমএস (AIIMS), হার্ভার্ড ও স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন, সম্প্রতি তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিওতে কোলন ক্যানসারের আটটি সতর্কবার্তা তুলে ধরেছেন। তিনি বলেছেন, এসব লক্ষণ প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা গেলে রোগ নিরাময়ের সম্ভাবনা অনেক বেশি। তিনি সময়ক্ষেপণ না করে দ্রুত কোলনোস্কপি পরীক্ষার পরামর্শ দিয়েছেন।

 

কোলন ক্যানসারের ৮টি সতর্কবার্তা

মলে রক্ত

ড. সেঠির মতে, উজ্জ্বল লাল বা কালচে রঙের মল কোলনের ভেতরে রক্তক্ষরণের ইঙ্গিত হতে পারে। যদিও অনেক সময় এটি হেমোরয়েড (পাইলস)-এর কারণেও হয়, তবে নিশ্চিত হতে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

মলত্যাগের ধরণে স্থায়ী পরিবর্তন

যদি কয়েক দিনের বেশি সময় ধরে কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া বা মলের গঠন সরু হয়ে যাওয়া দেখা যায়, এটি একটি বড় সতর্কবার্তা হতে পারে। মলত্যাগের নিয়মিত পরিবর্তন কোলনের অভ্যন্তরীণ সমস্যার ইঙ্গিত দেয়।

পেটব্যথা বা ক্র্যাম্প

ঘন ঘন পেটব্যথা, গ্যাস, ফুলে যাওয়া বা নতুনভাবে শুরু হওয়া ক্র্যাম্প— এগুলোরও কারণ অনুসন্ধান করা জরুরি। এসব উপসর্গ কোলনে অস্বাভাবিক বৃদ্ধি বা বাধার ইঙ্গিত হতে পারে।

অজানা কারণে ওজন কমে যাওয়া

যদি খাদ্যাভ্যাস বা জীবনযাত্রায় কোনো পরিবর্তন ছাড়াই ওজন কমে যায়, তাহলে বুঝতে হবে শরীর প্রয়োজনীয় পুষ্টি শোষণ করতে পারছে না। এটি কোলন ক্যানসারের একটি সাধারণ লক্ষণ।

দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি বা দুর্বলতা

রক্তের ধীরে ধীরে ক্ষতি ও অ্যানিমিয়ার কারণে শরীরে ক্রমাগত ক্লান্তি, মাথা ঘোরা বা দুর্বলতা দেখা দিতে পারে। ড. সেঠি বলেছেন, এটি কোলন ক্যানসারের একটি গুরুত্বপূর্ণ সতর্ক সংকেত

অজানা অ্যানিমিয়া

যদি রক্ত পরীক্ষায় দেখা যায় আয়রনের মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে কম, বিশেষ করে পুরুষ বা মেনোপজ-পরবর্তী নারীদের ক্ষেত্রে, তবে এটি কোলন ক্যানসারের প্রাথমিক গোপন লক্ষণ হতে পারে।

মলত্যাগের পর শেষ হয়নি’ অনুভব

মলত্যাগের পরও যদি মনে হয় পেট পুরোপুরি খালি হয়নি বা বারবার একই অনুভূতি হয়, তা কোলনের অভ্যন্তরে টিউমার বা বাধা সৃষ্টি বা টিউমার বৃদ্ধির ইঙ্গিত হতে পারে।

পারিবারিক ইতিহাস

পরিবারে বা ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের মধ্যে যদি কারও কোলন ক্যানসারের ইতিহাস থাকে, তাহলে ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়। এমন ক্ষেত্রে নিয়মিত স্ক্রিনিং করানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে ড. সেঠি পরামর্শ দিয়েছেন।

সচেতন থাকুনদেরি করবেন না

এই তথ্যগুলো শুধুমাত্র জনসচেতনতা বৃদ্ধিমূলক উদ্দেশ্যে দেওয়া হয়েছে, কোনো চিকিৎসা পরামর্শ নয়। কোলন ক্যানসারের উপসর্গ দেখা দিলে নিজে সিদ্ধান্ত না নিয়ে অবিলম্বে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সময়মতো শনাক্ত হলে এই রোগ থেকে সেরে ওঠা সম্ভব।

#কোলনক্যানসার #স্বাস্থ্যসচেতনতা #AIIMS #গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি #সারাক্ষণ_রিপোর্ট