আদালতের রায়: প্রমাণের অভাবে খালাস
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ কর্মী ফারুক হোসেন হত্যা মামলায় জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের সঙ্গে যুক্ত ১০৫ জন আসামিকে খালাস দিয়েছেন আদালত। দীর্ঘ ১৩ বছর পর এই বহুল আলোচিত মামলার রায় ঘোষণা করা হলো রবিবার। আদালত বলেছে, পর্যাপ্ত সাক্ষ্য ও প্রমাণের অভাবে অভিযুক্তদের দোষী সাব্যস্ত করা সম্ভব হয়নি।
মামলার পটভূমি
মোট ১১৪ জনকে এই মামলায় আসামি করা হয়েছিল। বিচার চলাকালীন সময়ে নয়জন মারা যান। বাকি ১০৫ জনের মধ্যে মাত্র ২৫ জন রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
ফারুক হোসেন ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের ছাত্র এবং তৎকালীন নিষিদ্ধ ইসলামী ছাত্রশিবির ইউনিটের সক্রিয় বিরোধী সংগঠনের সদস্য।২০১০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ মখদুম হলে ছাত্রলীগ ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের মধ্যে সংঘর্ষে তিনি নিহত হন। পরদিন তার মরদেহ উদ্ধার করা হয় হলের পাশে একটি ম্যানহোল থেকে।
মামলা দায়ের ও তদন্ত প্রক্রিয়া
ফারুক হত্যার ঘটনায় তৎকালীন ছাত্রলীগ ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম অপু ৩৫ জন চিহ্নিত জামায়াত-শিবির সদস্য এবং ২০-২৫ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির বিরুদ্ধে মতিহার থানায় মামলা দায়ের করেন।
২০১২ সালের ২৮ জুলাই পুলিশ তদন্ত শেষে ১,২৬৯ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয়।
আসামিদের তালিকায় শীর্ষ জামায়াত নেতারা
এই মামলায় জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, মহাসচিব আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, নায়েবে আমির দেলওয়ার হোসেন সাঈদী, রাজশাহী মহানগর জামায়াতের আমির আতাউর রহমান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের সভাপতি শামসুল আলম গোলাপ ও সাধারণ সম্পাদক মোবারক হোসেনসহ মোট ১১৪ জনকে আসামি করা হয়েছিল।
দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়ার সমাপ্তি
প্রায় ১৩ বছর ধরে চলমান এই মামলার রায় রবিবার ঘোষণা করেন রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালত-১ এর বিচারক জুলফিকার উল্লাহ।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আলী আশরাফ মাসুম বলেন, অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ হওয়ায় আদালত সব আসামিকে খালাস দিয়েছেন।
এর ফলে দীর্ঘ সময় কারাবন্দি থাকা বা মামলা মোকদ্দমায় ভোগান্তির শিকার আসামিরা আইনি দিক থেকে মুক্তি পেলেন।
# রাজশাহী, ছাত্রলীগ, জামায়াত, শিবির, ফারুক_হোসেন, হত্যা_মামলা, আদালতের_রায়, বাংলাদেশ