০৭:৫৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫
পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি-১০৮) নরকের শ্বাপদ ও অতিপ্রাকৃত কুকুর: ব্রিটেনের লোককথায় ভৌতিক কুকুরদের গল্প করপোরেট ছাঁটাই ও ব্যয়ের কড়াকড়ির মাঝেও কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত জেট ভ্রমণ বেড়েছে ৭৭ শতাংশ টিম্বার র‍্যাটলস্নেক: উত্তর আমেরিকার বনে এক ঝনঝনানো সতর্কতার প্রতীক কুশিয়ারা নদীতে নিখোঁজ শ্রমিকের লাশ উদ্ধার, অবৈধ বালু উত্তোলনে প্রশ্ন প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-৩০৬) মেঘনায় মা ইলিশ রক্ষায় সেনাবাহিনীর প্রথম সরাসরি অংশগ্রহণ, হিজলায় যৌথ অভিযানে ২৭ আটক দক্ষ ব্যবস্থাপকরা জানেন কোথায় কাকে বসাতে হয় — কর্মীদের সঠিক ভূমিকা নির্ধারণই সাফল্যের মূল রহস্য কয়রায় ৮ কেজি হরিণের মাংসসহ নারী আটক—সুন্দরবন ঘিরে চোরাশিকার রুট খতিয়ে দেখছে পুলিশ জাপানের আত্মসমর্পণের ৮০ বছর পর—চীন কীভাবে নতুনভাবে গড়ে তুলছে নিজের ‘বিজয়ের ইতিহাস’

করপোরেট ছাঁটাই ও ব্যয়ের কড়াকড়ির মাঝেও কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত জেট ভ্রমণ বেড়েছে ৭৭ শতাংশ

যুক্তরাষ্ট্রে করপোরেট দক্ষতা ও খরচ কমানোর কথা যতই বলা হোক, শীর্ষ নির্বাহীদের ব্যক্তিগত বিমানে ভ্রমণের জন্য যেন অর্থের অভাব নেই। মার্কিন নির্বাহী তথ্যসংস্থা ইকুইলার অনুযায়ী, আয়ের দিক থেকে শীর্ষ ৫০০ কোম্পানির অর্ধেকেরও বেশি এখন তাদের প্রধান নির্বাহীদের (CEO) ব্যক্তিগত বিমানে ভ্রমণের খরচ বহন করছে।

অন্যদিকে, এসব কোম্পানির অনেকেই কর্মী সংখ্যা কমাচ্ছে এবং অবশিষ্ট কর্মীদের ওপর অতিরিক্ত চাপ বাড়াচ্ছে। তবুও ২০২০ সালের তুলনায় তাদের ব্যক্তিগত বিমান ব্যয় বেড়েছে প্রায় ৭৬.৭ শতাংশ।


বিলাসে ভরপুর শীর্ষ নির্বাহীদের ভ্রমণ

ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা প্ল্যাটফর্মস ইনকর্পোরেটেড গত বছর শুধু প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গের বিমানের জন্য ব্যয় করেছে ১৫ লক্ষ ডলার। জাকারবার্গ নিজের জেট ব্যবহার করেন এবং ব্যবসায়িক কাজে সেই খরচ কোম্পানির ওপর চাপান।

জেপি মরগ্যান চেজের প্রধান নির্বাহী জেমি ডাইমন গত বছর বেতন, বোনাস ও শেয়ার সুবিধা হিসেবে পেয়েছেন ৩৬ মিলিয়ন ডলার—এর বাইরে কোম্পানি তাকে ব্যক্তিগত বিমানে ভ্রমণের জন্য দিয়েছে আরও ২৯৩,৭৫৩ ডলার।

এই ধরনের বিলাসী সুবিধা এখন করপোরেট জগতে এক ধরণের মর্যাদার প্রতীক হয়ে উঠেছে। তবে কোম্পানিগুলো সাধারণত এই সুবিধাগুলোর বাজারমূল্যের চেয়ে কম পরিমাণ রিপোর্ট করে, যেন সেগুলো কম চোখে পড়ে।

The $65 Million Perk for CEOs: Personal Use of the Corporate Jet Has Soared - WSJ

জনমত ও সংকোচনের যুগেও বাড়ছে ব্যক্তিগত বিমানযাত্রা

২০০৮ সালের আর্থিক সংকটের পর অনেক কোম্পানি ক্লাব সদস্যপদ বা কর পরিশোধ সুবিধা (“গ্রস-আপ” পেমেন্ট) বন্ধ করে দিলেও, ব্যক্তিগত বিমানে ভ্রমণ সুবিধা টিকে গেছে—বরং বেড়েছে।

অনেক কোম্পানি এখন শেয়ারহোল্ডারদের দেখাতে চায় যে তারা ‘বিলাসী’ নয়, কিন্তু নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে আবারও ব্যক্তিগত বিমানের আশ্রয় নিচ্ছে।

ইকুইলারের সিনিয়র পরিচালক অমিত বাটিশ বলেন: “নিরাপত্তা এখন বড় একটি বিষয়। শীর্ষ কর্মকর্তারা জনসম্মুখে ভ্রমণ করতে চান না। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে কোম্পানিগুলোকে তাদের স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করতে হয়।”


নিরাপত্তা উদ্বেগ ও যুক্তি

গত বছর ইউনাইটেডহেলথের প্রধান নির্বাহী ব্রায়ান থমসনের হত্যাকাণ্ড অনেক কোম্পানির কাছে সতর্কবার্তা হিসেবে এসেছে। যদিও ঘটনাটি বিমানবন্দরে ঘটেনি, তবুও এটি নিরাপত্তার ঝুঁকি তুলে ধরে।

মার্ক জাকারবার্গের উদাহরণই ধরা যাক—তিনি বহু বছর ধরে ১ ডলার নামমাত্র বেতন নেন, কিন্তু ২০২৪ সালে তার মোট ক্ষতিপূরণ ছিল ২৭.২ মিলিয়ন ডলার, যার মধ্যে ছিল ১৪ মিলিয়ন ডলার নিরাপত্তা খাতে এবং প্রায় ২.৬ মিলিয়ন ডলার ব্যক্তিগত বিমানের ব্যবহারে।

অ্যাটলাসিয়ানের প্রধান নির্বাহী মাইক ক্যানন-ব্রুকস, যিনি নিজেকে জলবায়ু কর্মী হিসেবে পরিচিত করেন, বলেছেন যে ব্যক্তিগত বিমানে উড়তে গিয়ে তার ভেতরে “গভীর নৈতিক দ্বন্দ্ব” তৈরি হয়। তবুও তিনি যুক্তি দেন, নিরাপত্তা তার পেশাগত বাস্তবতার অংশ, এবং তিনি এমন প্রযুক্তি ব্যবহার করেন যা বিমানের কার্বন নির্গমনের চেয়েও বেশি পরিমাণে কার্বন বাতাস থেকে সরিয়ে নেয়।


বিলাসের যুক্তি ও করপোরেট বাস্তবতা

করপোরেট জগৎ এখন তাদের ব্যক্তিগত বিমান ব্যবহারকে নানাভাবে যুক্তি দিচ্ছে—যেমন সময় বাঁচানো, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুবিধা ইত্যাদি। কিন্তু এর পেছনে ‘বিলাস’ও যে বড় কারণ, তা অস্বীকার করা যায় না।

Corporate jets: emblem of greed or a boon to business?

প্রাইভেট জেট কোম্পানি অ্যাডভান্সড এভিয়েশন টিমের প্রধান নির্বাহী গ্রেগ ব্রানসন-পিটস বলেন, “মহামারির সময় যখন বাণিজ্যিক ফ্লাইট সীমিত ছিল, অনেক কোম্পানি প্রথমবারের মতো চার্টার বিমানের সুবিধা নেয়। একবার ব্যক্তিগত ফ্লাইটে গেলে ফিরে যাওয়া কঠিন।”

তিনি যোগ করেন, “আমাদের ক্লায়েন্টরা নিজেদের পছন্দের রেস্টুরেন্টের খাবার পান, এমনকি ব্যক্তিগত নাম খোদাই করা ক্যাশমির কম্বল বা আরামদায়ক স্লিপারও।”


করপোরেট বৈষম্য ও কর্মীদের ক্ষোভ

স্টারবাকসের প্রধান নির্বাহী ব্রায়ান নিকল দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়া থেকে সিয়াটলে কোম্পানির সদর দপ্তরে যাতায়াত করেন ব্যক্তিগত বিমানে—এ ব্যয়ও বহন করে কোম্পানি।

সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিন ম্যাকহিউ বলেন, “ব্যবসায়িক বৈঠকের জন্য চার্টার বিমানের ব্যবহার এক কথা, কিন্তু ব্যক্তিগত অফিসে যাতায়াতের জন্য এটি অতিরিক্ত বিলাসিতা।”

এদিকে কোম্পানিটি কর্মীদের অফিসে ফিরতে বাধ্য করছে, ক্যাফে বন্ধ করছে এবং কর্মী ছাঁটাই করছে—যা কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি করেছে।

অন্যদিকে, যারা ছাঁটাই হয়েছেন বা চাকরি হারিয়ে নতুন কাজ খুঁজছেন, তাদের কাছে এসব খরচ অন্যায় মনে হয়। যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টা অঞ্চলের সফটওয়্যার বিশেষজ্ঞ জেনিফার পিটার্স বলেন, “আমি যখন দেখি কোনো কোম্পানি আমাকে নিয়োগ দিতে পারছে না, অথচ তাদের সিইওর বিমানের বাজেট আমার সম্ভাব্য বেতনের কয়েকগুণ, তখন সেটা ভণ্ডামি ছাড়া কিছু নয়।”

করপোরেট দুনিয়ার শীর্ষ নির্বাহীরা যতই যুক্তি দেখান—নিরাপত্তা, উৎপাদনশীলতা, বা পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি—তবু সাধারণ কর্মীদের চোখে এটি রয়ে গেছে স্পষ্ট এক বৈষম্যের প্রতীক।

সংকোচন, ছাঁটাই ও মিতব্যয়িতার যুগে ব্যক্তিগত জেটে বিলাসী ভ্রমণ নিঃসন্দেহে করপোরেট নৈতিকতার এক বেমানান প্রতিচ্ছবি।


#: করপোরেট_বৈষম্য, ব্যক্তিগত_জেট, কর্মী_ছাঁটাই, মার্ক_জাকারবার্গ, জেমি_ডাইমন, স্টারবাকস, যুক্তরাষ্ট্র_অর্থনীতি, করপোরেট_নৈতিকতা

জনপ্রিয় সংবাদ

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি-১০৮)

করপোরেট ছাঁটাই ও ব্যয়ের কড়াকড়ির মাঝেও কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত জেট ভ্রমণ বেড়েছে ৭৭ শতাংশ

০৫:০০:৫৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রে করপোরেট দক্ষতা ও খরচ কমানোর কথা যতই বলা হোক, শীর্ষ নির্বাহীদের ব্যক্তিগত বিমানে ভ্রমণের জন্য যেন অর্থের অভাব নেই। মার্কিন নির্বাহী তথ্যসংস্থা ইকুইলার অনুযায়ী, আয়ের দিক থেকে শীর্ষ ৫০০ কোম্পানির অর্ধেকেরও বেশি এখন তাদের প্রধান নির্বাহীদের (CEO) ব্যক্তিগত বিমানে ভ্রমণের খরচ বহন করছে।

অন্যদিকে, এসব কোম্পানির অনেকেই কর্মী সংখ্যা কমাচ্ছে এবং অবশিষ্ট কর্মীদের ওপর অতিরিক্ত চাপ বাড়াচ্ছে। তবুও ২০২০ সালের তুলনায় তাদের ব্যক্তিগত বিমান ব্যয় বেড়েছে প্রায় ৭৬.৭ শতাংশ।


বিলাসে ভরপুর শীর্ষ নির্বাহীদের ভ্রমণ

ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা প্ল্যাটফর্মস ইনকর্পোরেটেড গত বছর শুধু প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গের বিমানের জন্য ব্যয় করেছে ১৫ লক্ষ ডলার। জাকারবার্গ নিজের জেট ব্যবহার করেন এবং ব্যবসায়িক কাজে সেই খরচ কোম্পানির ওপর চাপান।

জেপি মরগ্যান চেজের প্রধান নির্বাহী জেমি ডাইমন গত বছর বেতন, বোনাস ও শেয়ার সুবিধা হিসেবে পেয়েছেন ৩৬ মিলিয়ন ডলার—এর বাইরে কোম্পানি তাকে ব্যক্তিগত বিমানে ভ্রমণের জন্য দিয়েছে আরও ২৯৩,৭৫৩ ডলার।

এই ধরনের বিলাসী সুবিধা এখন করপোরেট জগতে এক ধরণের মর্যাদার প্রতীক হয়ে উঠেছে। তবে কোম্পানিগুলো সাধারণত এই সুবিধাগুলোর বাজারমূল্যের চেয়ে কম পরিমাণ রিপোর্ট করে, যেন সেগুলো কম চোখে পড়ে।

The $65 Million Perk for CEOs: Personal Use of the Corporate Jet Has Soared - WSJ

জনমত ও সংকোচনের যুগেও বাড়ছে ব্যক্তিগত বিমানযাত্রা

২০০৮ সালের আর্থিক সংকটের পর অনেক কোম্পানি ক্লাব সদস্যপদ বা কর পরিশোধ সুবিধা (“গ্রস-আপ” পেমেন্ট) বন্ধ করে দিলেও, ব্যক্তিগত বিমানে ভ্রমণ সুবিধা টিকে গেছে—বরং বেড়েছে।

অনেক কোম্পানি এখন শেয়ারহোল্ডারদের দেখাতে চায় যে তারা ‘বিলাসী’ নয়, কিন্তু নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে আবারও ব্যক্তিগত বিমানের আশ্রয় নিচ্ছে।

ইকুইলারের সিনিয়র পরিচালক অমিত বাটিশ বলেন: “নিরাপত্তা এখন বড় একটি বিষয়। শীর্ষ কর্মকর্তারা জনসম্মুখে ভ্রমণ করতে চান না। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে কোম্পানিগুলোকে তাদের স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করতে হয়।”


নিরাপত্তা উদ্বেগ ও যুক্তি

গত বছর ইউনাইটেডহেলথের প্রধান নির্বাহী ব্রায়ান থমসনের হত্যাকাণ্ড অনেক কোম্পানির কাছে সতর্কবার্তা হিসেবে এসেছে। যদিও ঘটনাটি বিমানবন্দরে ঘটেনি, তবুও এটি নিরাপত্তার ঝুঁকি তুলে ধরে।

মার্ক জাকারবার্গের উদাহরণই ধরা যাক—তিনি বহু বছর ধরে ১ ডলার নামমাত্র বেতন নেন, কিন্তু ২০২৪ সালে তার মোট ক্ষতিপূরণ ছিল ২৭.২ মিলিয়ন ডলার, যার মধ্যে ছিল ১৪ মিলিয়ন ডলার নিরাপত্তা খাতে এবং প্রায় ২.৬ মিলিয়ন ডলার ব্যক্তিগত বিমানের ব্যবহারে।

অ্যাটলাসিয়ানের প্রধান নির্বাহী মাইক ক্যানন-ব্রুকস, যিনি নিজেকে জলবায়ু কর্মী হিসেবে পরিচিত করেন, বলেছেন যে ব্যক্তিগত বিমানে উড়তে গিয়ে তার ভেতরে “গভীর নৈতিক দ্বন্দ্ব” তৈরি হয়। তবুও তিনি যুক্তি দেন, নিরাপত্তা তার পেশাগত বাস্তবতার অংশ, এবং তিনি এমন প্রযুক্তি ব্যবহার করেন যা বিমানের কার্বন নির্গমনের চেয়েও বেশি পরিমাণে কার্বন বাতাস থেকে সরিয়ে নেয়।


বিলাসের যুক্তি ও করপোরেট বাস্তবতা

করপোরেট জগৎ এখন তাদের ব্যক্তিগত বিমান ব্যবহারকে নানাভাবে যুক্তি দিচ্ছে—যেমন সময় বাঁচানো, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুবিধা ইত্যাদি। কিন্তু এর পেছনে ‘বিলাস’ও যে বড় কারণ, তা অস্বীকার করা যায় না।

Corporate jets: emblem of greed or a boon to business?

প্রাইভেট জেট কোম্পানি অ্যাডভান্সড এভিয়েশন টিমের প্রধান নির্বাহী গ্রেগ ব্রানসন-পিটস বলেন, “মহামারির সময় যখন বাণিজ্যিক ফ্লাইট সীমিত ছিল, অনেক কোম্পানি প্রথমবারের মতো চার্টার বিমানের সুবিধা নেয়। একবার ব্যক্তিগত ফ্লাইটে গেলে ফিরে যাওয়া কঠিন।”

তিনি যোগ করেন, “আমাদের ক্লায়েন্টরা নিজেদের পছন্দের রেস্টুরেন্টের খাবার পান, এমনকি ব্যক্তিগত নাম খোদাই করা ক্যাশমির কম্বল বা আরামদায়ক স্লিপারও।”


করপোরেট বৈষম্য ও কর্মীদের ক্ষোভ

স্টারবাকসের প্রধান নির্বাহী ব্রায়ান নিকল দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়া থেকে সিয়াটলে কোম্পানির সদর দপ্তরে যাতায়াত করেন ব্যক্তিগত বিমানে—এ ব্যয়ও বহন করে কোম্পানি।

সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিন ম্যাকহিউ বলেন, “ব্যবসায়িক বৈঠকের জন্য চার্টার বিমানের ব্যবহার এক কথা, কিন্তু ব্যক্তিগত অফিসে যাতায়াতের জন্য এটি অতিরিক্ত বিলাসিতা।”

এদিকে কোম্পানিটি কর্মীদের অফিসে ফিরতে বাধ্য করছে, ক্যাফে বন্ধ করছে এবং কর্মী ছাঁটাই করছে—যা কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি করেছে।

অন্যদিকে, যারা ছাঁটাই হয়েছেন বা চাকরি হারিয়ে নতুন কাজ খুঁজছেন, তাদের কাছে এসব খরচ অন্যায় মনে হয়। যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টা অঞ্চলের সফটওয়্যার বিশেষজ্ঞ জেনিফার পিটার্স বলেন, “আমি যখন দেখি কোনো কোম্পানি আমাকে নিয়োগ দিতে পারছে না, অথচ তাদের সিইওর বিমানের বাজেট আমার সম্ভাব্য বেতনের কয়েকগুণ, তখন সেটা ভণ্ডামি ছাড়া কিছু নয়।”

করপোরেট দুনিয়ার শীর্ষ নির্বাহীরা যতই যুক্তি দেখান—নিরাপত্তা, উৎপাদনশীলতা, বা পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি—তবু সাধারণ কর্মীদের চোখে এটি রয়ে গেছে স্পষ্ট এক বৈষম্যের প্রতীক।

সংকোচন, ছাঁটাই ও মিতব্যয়িতার যুগে ব্যক্তিগত জেটে বিলাসী ভ্রমণ নিঃসন্দেহে করপোরেট নৈতিকতার এক বেমানান প্রতিচ্ছবি।


#: করপোরেট_বৈষম্য, ব্যক্তিগত_জেট, কর্মী_ছাঁটাই, মার্ক_জাকারবার্গ, জেমি_ডাইমন, স্টারবাকস, যুক্তরাষ্ট্র_অর্থনীতি, করপোরেট_নৈতিকতা