ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বামপন্থি ছাত্রদের সঙ্গে মেলামেশার কারণে সামরিক ইনটেলিজেন্স তাঁকে নিশ্চয় চোখে চোখে রাখছে।
আনাতোল একবার কোনোরকমে তিনদিনের ছুটির ব্যবস্থা করেন এবং প্রফেসর বিজয়ারাঘবনের সঙ্গে মাদ্রাজে যান। সেখানে, মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি “গ্যালোয় ভন্ড (Galois theory)-এর উপর একটি ভাষণ দেন। দর্শকের সারিতে দুই ক্যাথলিক “নান”কে দেখে আনাতোল ভারী চমৎকৃত হয়েছিলেন।
পাশ্চাত্যের বস্তুবাদের উপরে বক্তৃতা দেয়ার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও আনাতোল’কে নিমন্ত্রণ করেছিল। একবার তো আনাতোল বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদের সদস্য ও ছাত্রদেরকে “দুই ট্রাক ভর্তি করে কুর্মিটোলায় নিয়ে আসেন তাঁর পিয়ানো বাজানো শোনাতে।
আনাতোল অত্যন্ত সজাগ ছিলেন যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বামপন্থি ছাত্রদের সঙ্গে মেলামেশার কারণে সামরিক ইনটেলিজেন্স তাঁকে নিশ্চয় চোখে চোখে রাখছে। একবার, এক নিরাপত্তা অফিসার বন্ধ মাতাল অবস্থায় আনাতোলকে তো বলেই দেয় যে “ঢাকা শহরের ‘লাল’-দের সঙ্গে ‘মাখামাখি’-র কথা সবাই খুব ভালো জানে এবং সময় এলে সময়মতো দিনের আলোয় স-ব বেরিয়ে আসবে হে।”
চট্টগ্রামের কাছে ছিল “সারভাইভাল ট্রেনিং ক্যাম্প”, অর্থাৎ যৎসামান্য মৌলিক সম্বল নিয়ে টিকে থাকার ট্রেনিং ক্যাম্প। আনাতোলকে সপ্তাহে একবার কখনোবা দুইবার সেই ক্যাম্পে সাপ্লাই পৌছে দিতে হতো। এই ট্রেনিং-এ অন্তর্ভুক্ত ছিল- জওয়ানদের জঙ্গলের কাছে ছেড়ে দেয়া হতো এবং জওয়ানদের কাজ ছিল নথ খুঁজে বের করে জঙ্গলের ভেতর থেকে বাইরে চলে আসা।
(চলবে)
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৩৮)