০৮:৫৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫
মার্কিন ডলার ভুলে যান, বরং পানি ও জ্বালানি সম্পদের দিকে নজর দিন পরিষ্কার জ্বালানির অগ্রগতি সত্ত্বেও বৈশ্বিক নির্গমন কমছে ধীরগতিতে এআই বিনিয়োগে টেক জায়ান্টদের সামনে নতুন প্রশ্ন শীতের চাপে ইউক্রেন যুদ্ধের কৌশল ও কূটনীতি নতুন মোড়ে ভবিষ্যৎ গেমিংয়ের মঞ্চে আবুধাবি বিশ্ববিদ্যালয়, তরুণ প্রতিভায় নতুন দিগন্ত দুবাইয়ে প্রকৃতিনির্ভর পর্যটনের নতুন দিগন্ত, আরভি রুটে পাহাড়–সমুদ্র–মরুভূমির অভিজ্ঞতা চীনের সঙ্গে জার্মানির বাণিজ্য ঘাটতি নতুন উচ্চতার পথে, সতর্ক করছেন বিশ্লেষকেরা প্রাকযুদ্ধের বিএমডব্লিউ ক্যাব্রিওলেট পেবল বিচে গৌরব, ইতিহাসের গাড়িতে মঞ্চ জয় বয়স্কদের ওষুধের অতিভার: একসঙ্গে আটটির বেশি ওষুধে বাড়ছে মাথাঘুরে পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি ছুটিতে পরিবারের প্রযুক্তি ঝামেলা কমানোর সহজ কৌশল

ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির জবাবে যুক্তরাষ্ট্রে আরও স্থানীয় কর্মী নিয়োগের ঘোষণা টাটা টেকনোলজিসের

যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর অভিবাসন নীতির প্রেক্ষিতে ভারতীয় প্রকৌশল সেবা প্রতিষ্ঠান টাটা টেকনোলজিস ঘোষণা করেছে—তারা দেশটিতে আরও বেশি স্থানীয় কর্মী নিয়োগ দেবে। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওয়ারেন হ্যারিস শুক্রবার এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানান।

অভিবাসন নীতির প্রভাব

ট্রাম্প প্রশাসন সম্প্রতি এইচ–ওয়ানবি ভিসার জন্য নতুন ফি আরোপের পরিকল্পনা করছে, যা প্রযুক্তি খাতে বহুল ব্যবহৃত একটি কর্মভিসা। অ্যামাজন, মেটা প্ল্যাটফর্মসসহ বহু বড় কোম্পানি বিদেশি কর্মীদের যুক্তরাষ্ট্রে পাঠাতে এই ভিসা ব্যবহার করে। প্রশাসনের দাবি, এই উদ্যোগ মার্কিন নাগরিকদের মজুরি প্রতিযোগিতা থেকে সুরক্ষা দেবে।

হ্যারিস বলেন, “ভিসা সংক্রান্ত আইন পরিবর্তনের প্রতিক্রিয়ায় আমরা যুক্তরাষ্ট্রে আরও বেশি স্থানীয় নাগরিক নিয়োগ দেব। এতে কর্মসংস্থান ও কার্যক্রমে স্থিতিশীলতা বাড়বে।”

Tata Technologies: Tata Tech to hire more locals in US as Trump cracks down on immigration, ETHRWorld

কর্মী ও আয়ের পরিসংখ্যান

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত বছর এইচ–ওয়ানবি ভিসা প্রাপকদের প্রায় তিন-চতুর্থাংশই ছিলেন ভারতীয় নাগরিক।

বর্তমানে টাটা টেকনোলজিসের বিশ্বজুড়ে বারো হাজারের বেশি কর্মী রয়েছে, যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মী কাজ করছেন।

পুনে–ভিত্তিক এই প্রতিষ্ঠানটি দেশভিত্তিক আয় প্রকাশ না করলেও, উত্তর আমেরিকা ২০২৪–২৫ অর্থবছরে তাদের মোট রাজস্বের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ অবদান রেখেছে—যার পরিমাণ প্রায় একান্ন দশমিক ছয় আট বিলিয়ন রুপি বা পাঁচ শত সাতাশি দশমিক নয় সাত মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

বৈশ্বিক উপস্থিতি ও ক্লায়েন্ট

টাটা টেকনোলজিস বর্তমানে অন্তত চব্বিশটি দেশে প্রকৌশল ও প্রযুক্তি সেবা প্রদান করে, যার ক্লায়েন্ট তালিকায় রয়েছে জাগুয়ার ল্যান্ড রোভার, ভিয়েতনামের বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা ভিনফাস্ট এবং মার্কিন বিমান প্রস্তুতকারক বোয়িং।

চীন, সুইডেন, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে কোম্পানির সত্তর শতাংশের বেশি কর্মী স্থানীয় নাগরিক।

Tata Tech to hire more locals in US as Trump cracks down on immigration

বাজারে চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতির প্রভাবে গাড়ি নির্মাতাদের ব্যবসা সংকুচিত হওয়ায় ভারতীয় প্রকৌশল সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো কিছুটা চাপের মুখে রয়েছে। তবে হ্যারিস আশাবাদী—তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র এখনো একটি প্রাণবন্ত ও গুরুত্বপূর্ণ বাজার। আগামী ছয় থেকে নয় মাসের মধ্যে আমরা বাজারে পুনরুদ্ধারের লক্ষণ দেখছি।”

নতুন অধিগ্রহণ ও মুনাফা বৃদ্ধি

সম্প্রতি টাটা টেকনোলজিস জার্মান প্রতিষ্ঠান ইএস–টেক গ্রুপকে পঁচাত্তর মিলিয়ন ইউরো (সাতাশি দশমিক চার সাত মিলিয়ন ডলার) মূল্যে কেনার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। হ্যারিস জানান, আগামী বছরগুলোতে প্রতিষ্ঠানটি আরও “লক্ষ্যনির্দিষ্ট” অধিগ্রহণে আগ্রহী।

এ ছাড়া সর্বশেষ ত্রৈমাসিকে কোম্পানির মুনাফা পাঁচ শতাংশ বেড়েছে বলে জানানো হয়েছে।

ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন নীতি কঠোর হওয়ার ফলে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে কর্মী নিয়োগ জটিল হয়ে উঠছে। তবে টাটা টেকনোলজিসের স্থানীয় নিয়োগ বাড়ানোর এই সিদ্ধান্তকে বিশেষজ্ঞরা যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসা টিকিয়ে রাখার কৌশল হিসেবে দেখছেন।

#টাটা_টেকনোলজিস,# যুক্তরাষ্ট্র, #অভিবাসন_নীতি,# ট্রাম্প, #ভারতীয়_প্রযুক্তি, #স্থানীয়_নিয়োগ,# সারাক্ষণ_রিপোর্ট

জনপ্রিয় সংবাদ

মার্কিন ডলার ভুলে যান, বরং পানি ও জ্বালানি সম্পদের দিকে নজর দিন

ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির জবাবে যুক্তরাষ্ট্রে আরও স্থানীয় কর্মী নিয়োগের ঘোষণা টাটা টেকনোলজিসের

০৪:৫০:০৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর অভিবাসন নীতির প্রেক্ষিতে ভারতীয় প্রকৌশল সেবা প্রতিষ্ঠান টাটা টেকনোলজিস ঘোষণা করেছে—তারা দেশটিতে আরও বেশি স্থানীয় কর্মী নিয়োগ দেবে। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওয়ারেন হ্যারিস শুক্রবার এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানান।

অভিবাসন নীতির প্রভাব

ট্রাম্প প্রশাসন সম্প্রতি এইচ–ওয়ানবি ভিসার জন্য নতুন ফি আরোপের পরিকল্পনা করছে, যা প্রযুক্তি খাতে বহুল ব্যবহৃত একটি কর্মভিসা। অ্যামাজন, মেটা প্ল্যাটফর্মসসহ বহু বড় কোম্পানি বিদেশি কর্মীদের যুক্তরাষ্ট্রে পাঠাতে এই ভিসা ব্যবহার করে। প্রশাসনের দাবি, এই উদ্যোগ মার্কিন নাগরিকদের মজুরি প্রতিযোগিতা থেকে সুরক্ষা দেবে।

হ্যারিস বলেন, “ভিসা সংক্রান্ত আইন পরিবর্তনের প্রতিক্রিয়ায় আমরা যুক্তরাষ্ট্রে আরও বেশি স্থানীয় নাগরিক নিয়োগ দেব। এতে কর্মসংস্থান ও কার্যক্রমে স্থিতিশীলতা বাড়বে।”

Tata Technologies: Tata Tech to hire more locals in US as Trump cracks down on immigration, ETHRWorld

কর্মী ও আয়ের পরিসংখ্যান

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত বছর এইচ–ওয়ানবি ভিসা প্রাপকদের প্রায় তিন-চতুর্থাংশই ছিলেন ভারতীয় নাগরিক।

বর্তমানে টাটা টেকনোলজিসের বিশ্বজুড়ে বারো হাজারের বেশি কর্মী রয়েছে, যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মী কাজ করছেন।

পুনে–ভিত্তিক এই প্রতিষ্ঠানটি দেশভিত্তিক আয় প্রকাশ না করলেও, উত্তর আমেরিকা ২০২৪–২৫ অর্থবছরে তাদের মোট রাজস্বের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ অবদান রেখেছে—যার পরিমাণ প্রায় একান্ন দশমিক ছয় আট বিলিয়ন রুপি বা পাঁচ শত সাতাশি দশমিক নয় সাত মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

বৈশ্বিক উপস্থিতি ও ক্লায়েন্ট

টাটা টেকনোলজিস বর্তমানে অন্তত চব্বিশটি দেশে প্রকৌশল ও প্রযুক্তি সেবা প্রদান করে, যার ক্লায়েন্ট তালিকায় রয়েছে জাগুয়ার ল্যান্ড রোভার, ভিয়েতনামের বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা ভিনফাস্ট এবং মার্কিন বিমান প্রস্তুতকারক বোয়িং।

চীন, সুইডেন, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে কোম্পানির সত্তর শতাংশের বেশি কর্মী স্থানীয় নাগরিক।

Tata Tech to hire more locals in US as Trump cracks down on immigration

বাজারে চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতির প্রভাবে গাড়ি নির্মাতাদের ব্যবসা সংকুচিত হওয়ায় ভারতীয় প্রকৌশল সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো কিছুটা চাপের মুখে রয়েছে। তবে হ্যারিস আশাবাদী—তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র এখনো একটি প্রাণবন্ত ও গুরুত্বপূর্ণ বাজার। আগামী ছয় থেকে নয় মাসের মধ্যে আমরা বাজারে পুনরুদ্ধারের লক্ষণ দেখছি।”

নতুন অধিগ্রহণ ও মুনাফা বৃদ্ধি

সম্প্রতি টাটা টেকনোলজিস জার্মান প্রতিষ্ঠান ইএস–টেক গ্রুপকে পঁচাত্তর মিলিয়ন ইউরো (সাতাশি দশমিক চার সাত মিলিয়ন ডলার) মূল্যে কেনার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। হ্যারিস জানান, আগামী বছরগুলোতে প্রতিষ্ঠানটি আরও “লক্ষ্যনির্দিষ্ট” অধিগ্রহণে আগ্রহী।

এ ছাড়া সর্বশেষ ত্রৈমাসিকে কোম্পানির মুনাফা পাঁচ শতাংশ বেড়েছে বলে জানানো হয়েছে।

ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন নীতি কঠোর হওয়ার ফলে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে কর্মী নিয়োগ জটিল হয়ে উঠছে। তবে টাটা টেকনোলজিসের স্থানীয় নিয়োগ বাড়ানোর এই সিদ্ধান্তকে বিশেষজ্ঞরা যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসা টিকিয়ে রাখার কৌশল হিসেবে দেখছেন।

#টাটা_টেকনোলজিস,# যুক্তরাষ্ট্র, #অভিবাসন_নীতি,# ট্রাম্প, #ভারতীয়_প্রযুক্তি, #স্থানীয়_নিয়োগ,# সারাক্ষণ_রিপোর্ট