ওয়াশিংটনের নতুন ভূমিকা: পর্যবেক্ষক নয়, কার্যত ম্যানেজার
গাজা যুদ্ধবিরতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এখন শুধু মধ্যস্থ নয়, মাঠপর্যায়ের তত্ত্বাবধায়ক। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারকো রুবিও ইসরায়েলের দক্ষিণে একটি সমন্বয় কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন, যেখানে প্রায় ২০০ মার্কিন সেনা ও কূটনীতিক, পাশাপাশি সাইপ্রাস, গ্রিস, ফ্রান্স, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডার প্রতিনিধিরা একসঙ্গে কাজ করছেন। এই সেন্টারের কাজ হলো চুক্তি বাস্তবায়ন দেখা: গাজায় সাহায্য যাচ্ছে কি না, ইসরায়েল আক্রমণ থামাচ্ছে কি না, হামাস নতুন করে হামলা করছে কি না। ভাষ্যত এটিকে বলা হচ্ছে “স্থিতিশীলতা মিশন”, দখলদার উপস্থিতি নয়। কিন্তু বাস্তব বার্তা স্পষ্ট — যুক্তরাষ্ট্র এখন যুদ্ধবিরতির প্রতিটি ধাপ হাতে ধরে চালাতে চায়।
চুক্তি অনুযায়ী হামাস জীবিত জিম্মিদের ছেড়েছে, নিহতদের দেহাবশেষ ফেরত দেওয়া শুরু করেছে, আর বড় আক্রমণ বন্ধ রেখেছে বলে জানানো হয়েছে। ইসরায়েল পাল্টা কয়েকটি ইউনিট গাজা শহুরে এলাকা থেকে টেনে আনার কথা বলেছে এবং মানবিক ত্রাণ ঢুকতে দিচ্ছে বলে দাবি করছে। তবে সাম্প্রতিক এক হামলায় দুই ইসরায়েলি সেনা নিহত হওয়ার পর ইসরায়েলি বাহিনী যে “টার্গেটেড অপারেশন” চালিয়েছে, গাজার পক্ষ সেটিকে নতুন বোমা হামলা বলছে। এই ঘটনাই দেখাচ্ছে যুদ্ধবিরতি কতটা নড়বড়ে।
চাপ, রাজনীতি ও সীমানা
রুবিও প্রকাশ্যে বলেছেন, “প্ল্যান বি নেই।” অর্থাৎ এই কাঠামো ভেঙে পড়লে বিকল্প কোনো তাৎক্ষণিক রোডম্যাপ নেই। একই সঙ্গে তিনি ইসরায়েলকে সতর্ক করেছেন যে পশ্চিম তীর দখল জোরদার করার যে আইনগত ধাপ কিছু রাজনীতিক তুলছেন, সেটি পুরো গাজা চুক্তিকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও বলেছেন, একতরফা অ্যানেক্সেশন তিনি সমর্থন করেন না। এই ভাষা দেখাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র এখন শুধু মিত্র নয়; একধরনের চাপের অংশীদারও।
ওয়াশিংটন চাইছে গাজায় যুদ্ধবিরতি ধরে রাখা, জিম্মিদের দেহাবশেষ ফেরত আনা, মানবিক সহায়তা ঢোকানো এবং ধাপে ধাপে এমন এক শাসন কাঠামো দাঁড় করানো যেখানে হামাস নেই কিন্তু ফিলিস্তিনি প্রশাসনিক উপস্থিতি আছে। ইসরায়েল চাইছে নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ বজায় থাকুক এবং হামাস নিরস্ত্র হোক। গাজার সাধারণ মানুষের জন্য প্রশ্ন অনেক সহজ: বেঁচে থাকার মতো সহায়তা ও স্থায়ী বিরতি তারা কখন পাবে। এই সমীকরণ এখন দৈনিকভাবে একটি মার্কিন-পরিচালিত কন্ট্রোল রুমে পরিমাপ করা হচ্ছে, অর্থাৎ যুদ্ধবিরতি হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের নিজের পরীক্ষার মাঠ।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















