ল্যাবের ভঙ্গুর পরীক্ষা থেকে টানা অপারেশন
হার্ভার্ড ও এমআইটির গবেষকেরা জানিয়েছেন, তারা এমন একটি কোয়ান্টাম প্রসেসর চালাতে পেরেছেন যা দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধারাবাহিকভাবে স্থিতিশীল থেকেছে। এতদিন কোয়ান্টাম বিট বা কিউবিট কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে নষ্ট হয়ে যেত, ডিকোহেয়ার হতো, অর্থাৎ তথ্যের কোয়ান্টাম বৈশিষ্ট্য ভেঙে পড়ত। এবার গবেষকেরা বলছেন তারা “অ্যাটমিক লস” নাটকীয়ভাবে কমিয়ে এনেছেন, মানে কিউবিটগুলোকে সুরক্ষিত ও বিচ্ছিন্ন রাখতে পেরেছেন এমনভাবে যে সিস্টেম দীর্ঘক্ষণ নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করেছে। এর মানে দাঁড়ায়, আগে যেখানে পরীক্ষা ছিল “দেখো, ১০ সেকেন্ড টিকেছে,” এখন আলোচনা হচ্ছে “আমরা পুরো একটা টাস্ক শেষ করেছি।”
কেন এটা বড় কথা? সাধারণ কম্পিউটার তথ্য ধরে ০ বা ১ হিসেবে। কিউবিট একইসঙ্গে একাধিক অবস্থায় থাকতে পারে, তাই একই সময়ে বহু সমাধান পথ পরীক্ষা করা যায়। এটা নতুন ওষুধের মলিকিউলার সিমুলেশন, ব্যাটারি কেমিস্ট্রি, জটিল লজিস্টিক প্ল্যানিং বা শক্তিশালী কড ভাঙার মতো কাজকে ত্বরান্বিত করতে পারে। কিন্তু সমস্যা হলো স্থিতিশীলতা। যতক্ষণ কিউবিট ভেঙে না পড়ে, ততক্ষণই আপনি “কোয়ান্টাম সুবিধা” পান। দুই ঘণ্টার স্থিতিশীল রান দেখায় যে এই সুবিধা এখন শুধু কাগজে নয়, বাস্তবে পরীক্ষামূলক ওয়ার্কলোডে ঢুকছে।
এবার পালা বাণিজ্যিক চাপের
এই মাইলফলক মানে প্রতিযোগিতা আরও তীব্র হবে। যুক্তরাষ্ট্রের ল্যাব, বড় ক্লাউড কোম্পানি আর বিশেষায়িত কোয়ান্টাম স্টার্টআপ এখন এমন গ্রাহক টার্গেট করতে পারবে যারা আগে কেবল তত্ত্ব শুনছিল — ওষুধ প্রস্তুতকারী, প্রতিরক্ষা কন্ট্রাক্টর, নবায়নযোগ্য শক্তি বা ব্যাটারি গবেষক। মডেলটি সুপারকম্পিউটিং-এর মতো: সবার ডেস্কে কোয়ান্টাম মেশিন নয়, বরং কয়েকটি অতি-নিরাপদ কোর সিস্টেম, যেখানে আপনি সময় ভাড়া নেবেন।
এই গতি নতুন নিরাপত্তা ঝুঁকিও তোলে। সরকারগুলো “পোস্ট-কোয়ান্টাম ক্রিপ্টোগ্রাফি” নিয়ে দৌড়াচ্ছে — এমন এনক্রিপশন স্ট্যান্ডার্ড বানাতে যা ভবিষ্যতের কোয়ান্টাম আক্রমণেও সুরক্ষিত থাকবে। যদি স্থিতিশীল, ঘন্টার পর ঘন্টা চলা কোয়ান্টাম সিস্টেম সত্যিই দোরগোড়ায় এসে থাকে, তবে এই মানদণ্ডগুলো দ্রুত বাধ্যতামূলক হবে। প্রশ্নটা তাই শুধু “কবে আসবে” নয়; “কার হাতে থাকবে” এবং “কোন নিয়মে ব্যবহার হবে।”
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















