বিশ্বের প্রায় ৬০টি দেশের জ্বালানি বিশেষজ্ঞ, নীতি নির্ধারক ও তরুণ পেশাজীবীরা একত্রিত হয়েছেন কুয়েতে অনুষ্ঠিত ৮ম ইয়ুথ এনার্জি ফোরাম ও ওয়ার্ল্ড পেট্রোলিয়াম কাউন্সিলের বার্ষিক সভায়। “Empowering the Future: Connecting Youth with Ideas and Knowledge” শীর্ষক এই দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানটি আয়োজন করেছে কুয়েতের তেল মন্ত্রণালয় ও ওয়ার্ল্ড পেট্রোলিয়াম কাউন্সিল। এর লক্ষ্য—তরুণদের ক্ষমতায়ন, উদ্ভাবনকে উৎসাহ দেওয়া এবং জ্বালানি খাতে টেকসই ভবিষ্যৎ নির্মাণ।
কুয়েতের তেলমন্ত্রীর আহ্বান: উদ্ভাবন ও সহযোগিতায় গড়তে হবে শক্তির ভবিষ্যৎ
ফোরামের উদ্বোধনী বক্তব্যে কুয়েতের তেলমন্ত্রী ড. তারেক আল-রৌমি বলেন,
“জ্বালানি খাতের ভবিষ্যৎ গড়ে উঠবে প্রকৃত বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব, উদ্ভাবন, দায়িত্বশীলতা ও টেকসই উন্নয়নের ভিত্তিতে।”
তিনি আরও বলেন, “তরুণরাই আমাদের তেলশিল্পের হৃদস্পন্দন, ভবিষ্যৎ গঠনের প্রকৃত সম্পদ—শুধু কুয়েত নয়, গোটা বিশ্বের জন্য।”
মন্ত্রীর মতে, ফোরামের উদ্দেশ্য কুয়েত ভিশন ২০৩৫ ও সরকারি অগ্রাধিকারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যার মূল লক্ষ্য তরুণদের ক্ষমতায়ন ও মানবসম্পদ উন্নয়ন।

তরুণ নেতৃত্ব গঠনে কুয়েতের বিনিয়োগ
ড. রৌমি জানান, কুয়েত ইতিমধ্যে হাজার হাজার তরুণ পেশাজীবীকে বিশেষ প্রশিক্ষণ কর্মসূচির মাধ্যমে নেতৃত্বের জন্য প্রস্তুত করেছে।
তিনি জোর দেন—বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত জ্ঞানকে পরিবেশগত এবং সামাজিক দায়িত্বের সঙ্গে যুক্ত করাই আগামী প্রজন্মকে বৈশ্বিক জ্বালানি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত করবে।
বৈশ্বিক তেলবাজারে স্থিতিশীলতার প্রতীক কুয়েত
মন্ত্রী রৌমি বলেন, কুয়েত দীর্ঘদিন ধরে ওপেক ও ওপেক+ জোটে ‘বিবেক ও ভারসাম্যের কণ্ঠস্বর’ হিসেবে ভূমিকা রেখে আসছে—যেখানে উৎপাদক ও ভোক্তা উভয়ের স্বার্থের ভারসাম্য রক্ষা করে টেকসই বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির জন্য নিরাপদ জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করা হচ্ছে।
তিনি উল্লেখ করেন, কুয়েত ১৯৬৮ সাল থেকে আরব এনার্জি অর্গানাইজেশনের (সাবেক OAPEC) সদরদপ্তরের আতিথ্য দিচ্ছে এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পর্যায়ে তেল, গ্যাস ও নবায়নযোগ্য শক্তির যৌথ কৌশলে অব্যাহত সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।
![]()
স্মার্ট ও টেকসই প্রকল্পে কুয়েতের পদক্ষেপ
কুয়েতের স্মার্ট ও টেকসই উদ্যোগের মধ্যে উল্লেখযোগ্য—
- • কুয়েত অয়েল কোম্পানির কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা উদ্ভাবন কেন্দ্র, যা মাইক্রোসফটের সহযোগিতায় গড়ে উঠেছে।
- • কুয়েত ন্যাশনাল পেট্রোলিয়াম কোম্পানির ডিজিটাল রূপান্তর প্রকল্প, যেখানে স্বয়ংক্রিয়তা ও সমন্বিত পরিচালন ব্যবস্থার উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
ওপেক মহাসচিব: ‘তরুণরাই নেতৃত্ব দেবে তেলশিল্পের ভবিষ্যৎ’
ফোরামে বক্তৃতা করেন ওপেক মহাসচিব হাইসম আল-গাইস। তিনি বলেন,
“তেলশিল্পের ভবিষ্যৎ তরুণদের হাতেই নির্ভর করছে। তাদের ক্ষমতায়ন ও বিনিয়োগ ছাড়া এই খাতের টেকসই অগ্রগতি অসম্ভব।”
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, “কুয়েতের তরুণরাই ১৯৩৪ সালে প্রথম তেল কনসেশন, ১৯৩৮ সালে বুরগান ক্ষেত্রের আবিষ্কার এবং ১৯৪৬ সালে প্রথম তেল রপ্তানির ঐতিহাসিক ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন।”
![]()
নিজের অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে আল-গাইস বলেন, দেশ-বিদেশে তেল বিপণন দল পরিচালনা থেকে শুরু করে ওপেক মহাসচিব হিসেবে কাজ করার প্রতিটি ধাপই তাঁকে তরুণ পেশাজীবীদের বিকাশে বিনিয়োগের গুরুত্ব উপলব্ধি করিয়েছে।
কুয়েতের এই ফোরাম শুধু একটি আন্তর্জাতিক সমাবেশ নয়—এটি তরুণ প্রজন্মের প্রতি আস্থা, উদ্ভাবন ও সহযোগিতার এক দৃষ্টান্ত। বিশ্ব জ্বালানি খাতের ভবিষ্যৎ এখন তাদের হাতেই, যারা টেকসই উন্নয়নের দিশা দেখাতে প্রস্তুত।
#কুয়েত,# জ্বালানি ফোরাম,# ওপেক, #তেল শিল্প, #তরুণ নেতৃত্ব,# টেকসই উন্নয়ন, #সারাক্ষণ রিপোর্ট
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















