সীমা ছাড়ানো অপরাধের জন্য একক নিয়ম
হ্যানয়ে সই হতে যাচ্ছে জাতিসংঘের নেতৃত্বে এক বহুপাক্ষিক সাইবারক্রাইম চুক্তি, যার লক্ষ্য সীমান্ত ছাড়িয়ে যাওয়া অনলাইন অপরাধ দমন করা। এই কাঠামো র্যানসমওয়্যার, আর্থিক জালিয়াতি, তথ্য চুরি এবং এনক্রিপটেড মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহার করা সংঘবদ্ধ অপরাধচক্র পর্যন্ত কভার করবে। মূল ধারণা হলো: যে ডেটা বা সন্দেহভাজন এখন তিনটি দেশে ছড়িয়ে যেতে পারে, তা মোকাবিলার জন্য আর আলাদা আলাদা দ্বিপাক্ষিক অনুরোধে মাস কাটবে না; বরং দ্রুত প্রমাণ আদান-প্রদান ও গ্রেপ্তারি সহযোগিতা বাধ্যতামূলক হবে।
সমর্থকদের যুক্তি, বর্তমান অবস্থা নিরাপত্তা বাহিনীকে পিছিয়ে রাখে। হ্যাকার গ্রুপগুলো এক দেশে তথ্য চুরি করে, অন্য দেশে সার্ভার চালায়, তৃতীয় দেশে টাকা তুলে ফেলে। এই চুক্তি ডিজিটাল প্রমাণের মানদণ্ড ও সময়সীমা নির্ধারণ করবে এবং ঠিক কোন ধরনের হ্যাকিং বা ডেটা ব্রিচ “আন্তর্জাতিক সাইবার অপরাধ” বলে গণ্য হবে তা স্পষ্ট করবে।
গোপন নজরদারির ঝুঁকি
সমালোচকরা সতর্ক করছেন, চুক্তির ভাষা এতটাই বিস্তৃত যে কিছু সরকার ভিন্নমত, লিক হওয়া সরকারি নথি বা অনুসন্ধানী সাংবাদিকতাকেও “সাইবারক্রাইম” বলে আখ্যা দিতে পারে। তখন তারা বিদেশি প্ল্যাটফর্ম বা ক্লাউড কোম্পানির কাছে ব্যবহারকারীর চ্যাট লগ, অবস্থান ডেটা বা লেনদেনের ইতিহাস দাবি করতে পারবে। ছোট ও মাঝারি অর্থনীতির দেশগুলো চাইছে স্পষ্ট সুরক্ষা ধারা, যাতে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বা মানবাধিকারকর্মীদের টার্গেট করা না যায়। আলোচকরা বলছেন, সইয়ের মুহূর্ত পর্যন্ত এই গ্যারান্টি নিয়ে দরকষাকষি চলতে পারে।
বড় শক্তিগুলোর কৌশলও এখানে জড়িত। যুক্তরাষ্ট্র ও চীন উভয়েই সাইবার আক্রমণকে সার্বভৌম নিরাপত্তা ইস্যু হিসেবে তুলে ধরে। রাশিয়া পশ্চিমা অভিযোগের মুখে রয়েছে রাষ্ট্র-সমর্থিত হ্যাকিং নিয়ে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া শিল্প গোপনীয়তা চুরির ঝুঁকিতে চিন্তিত। তাই একক ছাতার নিচে সবাইকে আনা কূটনৈতিক দিক থেকেও তাৎপর্যপূর্ণ। প্রশ্ন হলো, প্রয়োগ কতটা সমান হবে। শক্তিশালী রাষ্ট্র যদি শুধু নিজের সুবিধামতো সহযোগিতা করে, তাহলে ছোট রাষ্ট্রগুলো এই ফ্রেমওয়ার্ককে পক্ষপাতদুষ্ট বলবে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















