দুই দশকের উন্নয়নের যাত্রা
দুবাইয়ের সড়ক ও পরিবহন কর্তৃপক্ষ (RTA) প্রতিষ্ঠার ২০ বছর পূর্তি উদযাপন করেছে। এই দুই দশকে সংস্থাটি বিলিয়ন দিরহাম বিনিয়োগের মাধ্যমে শহরের পরিবহন ব্যবস্থা পুরোপুরি বদলে দিয়েছে। সড়ক, মেট্রো, ট্রাম, সাইকেল ট্র্যাক এবং পদচারী পথের সমন্বয়ে আজ দুবাই একটি স্মার্ট ও টেকসই পরিবহন নগরীতে পরিণত হয়েছে। এতে শুধু অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিই নয়, নাগরিকদের জীবনের মানও উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হয়েছে।
আরটিএর মহাপরিচালক ও নির্বাহী বোর্ডের চেয়ারম্যান মাত্তার আল তাইয়ার বলেন, “দূরদর্শী নেতৃত্ব ও পরিকল্পনার ফলে আমরা এমন এক পরিবহন ব্যবস্থা তৈরি করেছি, যা শহরের বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা সক্ষমতা এবং জনগণের জীবনযাত্রা উভয়কেই উন্নত করেছে।”
সড়ক ও গণপরিবহনে বিশ্বমানের অবকাঠামো
গত ২০ বছরে আরটিএ প্রায় ১৭৫ বিলিয়ন দিরহাম বিনিয়োগ করেছে সড়ক ও গণপরিবহন খাতে। বর্তমানে দুবাইয়ের সড়ক নেটওয়ার্ক ২৫ হাজার লেন-কিলোমিটারেরও বেশি, যা প্রতিদিন প্রায় ৩৫ লাখ যানবাহন চলাচল বহন করছে।

দুবাই মেট্রো ও ট্রাম মিলিয়ে এখন ১০০ কিলোমিটারের বেশি দূরত্ব জুড়ে কার্যকর পরিবহন সেবা দিচ্ছে। ২০০৬ সালে মাত্র ২৬টি পদচারী সেতু ও টানেল থাকলেও ২০২৪ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭৭-এ, যা নিরাপত্তা ও যাতায়াতের সুবিধা অনেক বাড়িয়েছে।
গণপরিবহনে নাগরিকদের সক্রিয় অংশগ্রহণ
২০০৬ সালে দুবাইয়ের গণপরিবহনে যাত্রী ছিল ২২ কোটি, যা ২০২৪ সালে বেড়ে ৭৪ কোটি ৭০ লাখে পৌঁছেছে। এখন শহরের দৈনিক চলাচলের ২১.৬ শতাংশই গণপরিবহনের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়, যা ২০০৬ সালে ছিল মাত্র ৬ শতাংশ।
আল তাইয়ার বলেন, “দুবাইয়ের গণপরিবহন একীভূত পরিকল্পনার অংশ—যেখানে মেট্রো, ট্রাম, বাস ও ট্যাক্সি সেবাগুলো পরস্পর সংযুক্ত থেকে নাগরিকদের নির্বিঘ্ন যাত্রা নিশ্চিত করে।”
মানবসম্পদ উন্নয়ন ও প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন
আরটিএর সাফল্যের অন্যতম ভিত্তি মানবসম্পদ উন্নয়ন। বর্তমানে সংস্থাটিতে ৪০০-এরও বেশি এমিরাতি প্রকৌশলী ও প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ কাজ করছেন, যারা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ডেটা সায়েন্স, স্মার্ট ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট ও স্বয়ংচালিত পরিবহন প্রযুক্তিতে পারদর্শী।
আল তাইয়ার বলেন, “দক্ষ মানবসম্পদই টেকসই অগ্রগতির আসল চাবিকাঠি। আমরা তরুণ নেতৃত্ব গড়ে তোলার জন্য নানা কর্মসূচি নিয়েছি, যাতে তারা ভবিষ্যতের উদ্ভাবনে নেতৃত্ব দিতে পারে।”
সরকারি সম্পদকে বাণিজ্যিক সাফল্যে রূপান্তর
আরটিএর অধীনে চারটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান—সালিক, পারকিন, দুবাই ট্যাক্সি এবং মাদা মিডিয়া—মিলিয়ে বর্তমানে ৮০ বিলিয়ন দিরহামেরও বেশি বাজারমূল্যের মালিক। সরকারি সম্পদকে বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক ও টেকসই মডেলে রূপান্তর করার এটি একটি সফল উদাহরণ।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা: পাঁচটি কৌশলগত অগ্রাধিকার
আরটিএ ভবিষ্যতের জন্য পাঁচটি কৌশলগত লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে—
১. কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক অবকাঠামোতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি,
২. টেকসই ও স্বয়ংচালিত পরিবহন ব্যবস্থার সম্প্রসারণ,
৩. নতুন ব্যবসায়িক মডেল ও স্টার্টআপ সহায়তা,
৪. তরুণ ও মেধাবী কর্মী গড়ে তোলা,
৫. স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বেসরকারি খাতের সঙ্গে অংশীদারিত্ব জোরদার।
#দুবাই #আরটিএ #স্মার্ট_পরিবহন #টেকসই_উন্নয়ন #মাত্তার_আল_তাইয়ার #দুবাই_মেট্রো #গণপরিবহন #সারাক্ষণ_রিপোর্ট
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















