1. নেভিল মাসকেলাইন: আকাশের প্রতি অদম্য আগ্রহ
নেভিল মাসকেলাইন ছিলেন একজন অসাধারণ পরিশ্রমী ও নিবেদিত মানুষ। ১৭৬০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে, গভীর রাতে তিনি ঘণ্টার পর ঘণ্টা আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতেন, এমনকি একটি কাছাকাছি ঘড়ির টিকটিক শব্দ শোনার চেষ্টা করতেন। নিজেকে ঠান্ডা থেকে রক্ষা করতে, তিনি উল, সিল্ক এবং লিনেন দিয়ে তৈরি অত্যাধুনিক একটি প্যাডেড স্যুট পরতেন, যা ব্রিটিশ শীতে তার পরিশ্রম সহ্য করার জন্য যথেষ্ট ছিল।
2. ‘লুনার ডিস্টেন্স মেথড’ এর উন্নয়ন
মাসকেলাইন তার লক্ষ্য নিয়ে অত্যন্ত নিষ্ঠাবান ছিলেন, এবং তার লক্ষ্য ছিল সমুদ্রে দীর্ঘতা (longitude) নির্ধারণের জন্য একটি নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবন করা। এই পদ্ধতিটি ছিল ‘লুনার ডিস্টেন্স মেথড’, যেখানে সমুদ্রযাত্রীরা চাঁদ এবং একটি নির্দিষ্ট তারা-এর মধ্যে কোণগত দূরত্ব পরিমাপ করতেন এবং তা গ্রিনউইচ সময়ের সঙ্গে তুলনা করতেন। এই পদ্ধতির জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যগুলি মাসকেলাইনের তারকাগুলির গতি নিয়ে সৃষ্ট নিবিড় অধ্যয়নের ফলস্বরূপ পাওয়া যেত।
3. একটি দলীয় প্রচেষ্টা
তবে, এই কাজটি একক প্রচেষ্টা ছিল না। মাসকেলাইন তার সহকারী ডেভিড কিনব্রুকের সঙ্গে ঠান্ডায় ভরা রাতগুলি কাটিয়েছিলেন এবং একদল গণিতজ্ঞদের (যাদের ‘কম্পিউটার’ বলা হত) নিয়োগ করেছিলেন, যারা দূর থেকে চাঁদের অবস্থান হিসাব করতেন। এছাড়া, মাসকেলাইন একটি ‘কম্পেয়ার’ দলের ব্যবস্থা করেছিলেন, যারা গণনাগুলির সঠিকতা যাচাই করত। তাদের পরিশ্রমের ফলস্বরূপ, দুইজন গণিতজ্ঞকে একে অপরের কাজ অনুকরণ করতে দেখা গিয়েছিল, যা পরবর্তীতে শুধরে নেওয়া হয়।
4. নটিক্যাল অ্যালমানাক: নেভিগেশনের জন্য নতুন মাইলফলক
এই কঠোর পরিশ্রমের ফলস্বরূপ, ১৭৬৭ সালের ৬ জানুয়ারি প্রকাশিত হয় ‘নটিক্যাল অ্যালমানাক’, যা সমুদ্রযাত্রীদের জন্য অপরিহার্য একটি নেভিগেশন টুল ছিল। এটি দীর্ঘতা হিসাব করার সময়টিকে ঘণ্টার বদলে মিনিটে পরিণত করে। প্রতি বছর হালনাগাদ হওয়া এই অ্যালমানাকটি সমুদ্রযাত্রীর প্রশিক্ষণের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হয়ে ওঠে এবং গ্রিনউইচের সাথে সম্পর্কিত অবস্থান নির্ধারণের নতুন রীতি তৈরি করে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 




















