বিনামূল্যের খাবারে ব্যাপক খাদ্যবিষক্রিয়া
ইন্দোনেশিয়ার ইয়োগইয়াকার্তা প্রদেশে সরকারি বিনামূল্যের খাবার খেয়ে প্রায় ৭০০ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। প্রেসিডেন্ট প্রবোভো সুবিয়ানতো পরিচালিত ‘ফ্রি স্কুল মিল’ কর্মসূচির আওতায় রান্না করা এই খাবার থেকেই বিষক্রিয়ার ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
সরকার জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে। ইয়োগইয়াকার্তার গুনুংকিদুল অঞ্চলে দুটি স্কুলের মোট ৬৬০ জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়। স্থানীয় প্রশাসক এন্দাহ সুবেকতি কুন্তারিনিংশি বুধবার নিজের ইনস্টাগ্রামে এ তথ্য জানান।
প্রবোভোর নির্বাচনী অঙ্গীকার ও বিতর্কিত বাস্তবায়ন
এই বিনামূল্যের খাবার প্রকল্পটি ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে চালু হয় — যা প্রেসিডেন্ট প্রবোভোর অন্যতম প্রধান নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল। কিন্তু প্রকল্প শুরু হওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন স্থানে খাবারজনিত অসুস্থতার ঘটনা ঘটছে।
স্থানীয় বেসরকারি সংগঠন জেপিপিআই (JPPI) জানায়, এ বছরের ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত প্রায় ১৫ হাজার শিশু অসুস্থ হয়ে পড়েছে। সংগঠনটি কর্মসূচি স্থগিত করার দাবি জানিয়েছে।

ত্রুটিপূর্ণ সংরক্ষণ ও বিলম্বিত সরবরাহকেই দায়ী করা হচ্ছে
স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, খাবার সংরক্ষণে ত্রুটি ও দেরিতে সরবরাহই এসব বিষক্রিয়ার প্রধান কারণ। অনেক জায়গায় রান্না করা খাবার দীর্ঘ সময় অনুপযুক্ত পরিবেশে রাখা হয়েছিল।
জাতীয় পুষ্টি সংস্থা (BGN)-এর প্রধান দাদান হিন্দায়ানা জানিয়েছেন, গুনুংকিদুলের ঘটনাগুলো তদন্তাধীন এবং আশপাশের রান্নাঘরগুলো অস্থায়ীভাবে বন্ধ করা হয়েছে।
দেশজুড়ে ১১ হাজার রান্নাঘর, কিন্তু সক্ষমতা কম
সারা দেশে বর্তমানে প্রায় ১১ হাজার রান্নাঘর এই কর্মসূচির অধীনে কাজ করছে। বছরের শেষ নাগাদ প্রায় ৭ কোটি মানুষের কাছে বিনামূল্যের খাবার পৌঁছানোর লক্ষ্য রয়েছে, যদিও সরকারের প্রাথমিক লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮ কোটি ৩০ লাখ। রান্নাঘরের স্বল্পতার কারণে লক্ষ্য কমিয়ে আনা হয়েছে।
বিজিএন জানায়, খাবারের সতেজতা বজায় রাখতে এবং বিষক্রিয়া এড়াতে রান্নাঘরের কর্মীদের পরিমাণ ও পরিসর সীমিত করা হয়েছে।
![]()
তদারকি জোরদারে মন্ত্রিসভা কমিটি
বুধবার প্রেসিডেন্ট প্রবোভো স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও পুষ্টি সংস্থার প্রধানসহ একটি মন্ত্রিসভা দল গঠন করেছেন, যাতে কর্মসূচির তদারকি আরও জোরদার হয়।
সরকার এ বছর এই প্রকল্পের জন্য ১৭১ ট্রিলিয়ন রুপিয়াহ (প্রায় ১০.৩ বিলিয়ন ডলার) বরাদ্দ করেছে। তবে পুষ্টি সংস্থা জানিয়েছে, বছরের শেষে তারা এর মধ্যে মাত্র ৯৯ ট্রিলিয়ন রুপিয়াহ ব্যয় করতে পারবে।
জনস্বাস্থ্য উদ্বেগ ও সরকারের চ্যালেঞ্জ
ঘটনার পর রাজধানী জাকার্তায় সরকারবিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে। জাতীয় পুষ্টি সংস্থার ভবনের সামনে ‘বিনামূল্যের পুষ্টিকর খাবার (এমবিজি) কর্মসূচি’ বন্ধের দাবিতে মানুষ ব্যানার হাতে প্রতিবাদ করেছে।
এখন প্রশ্ন উঠেছে — যে কর্মসূচি দরিদ্র শিক্ষার্থীদের পুষ্টির নিশ্চয়তা দিতে শুরু হয়েছিল, সেটিই কি এখন জনস্বাস্থ্যের জন্য নতুন ঝুঁকি হয়ে উঠছে?
#ইন্দোনেশিয়া, #খাদ্যবিষক্রিয়া,# প্রবোভো সুবিয়ানতো, #স্কুল মিল কর্মসূচি,# জনস্বাস্থ্য,# জেপিপিআই,# বিজিএন, #ইয়োগইয়াকার্তা, #দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















