০৭:১৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫
পরিষ্কার জ্বালানির অগ্রগতি সত্ত্বেও বৈশ্বিক নির্গমন কমছে ধীরগতিতে এআই বিনিয়োগে টেক জায়ান্টদের সামনে নতুন প্রশ্ন শীতের চাপে ইউক্রেন যুদ্ধের কৌশল ও কূটনীতি নতুন মোড়ে ভবিষ্যৎ গেমিংয়ের মঞ্চে আবুধাবি বিশ্ববিদ্যালয়, তরুণ প্রতিভায় নতুন দিগন্ত দুবাইয়ে প্রকৃতিনির্ভর পর্যটনের নতুন দিগন্ত, আরভি রুটে পাহাড়–সমুদ্র–মরুভূমির অভিজ্ঞতা চীনের সঙ্গে জার্মানির বাণিজ্য ঘাটতি নতুন উচ্চতার পথে, সতর্ক করছেন বিশ্লেষকেরা প্রাকযুদ্ধের বিএমডব্লিউ ক্যাব্রিওলেট পেবল বিচে গৌরব, ইতিহাসের গাড়িতে মঞ্চ জয় বয়স্কদের ওষুধের অতিভার: একসঙ্গে আটটির বেশি ওষুধে বাড়ছে মাথাঘুরে পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি ছুটিতে পরিবারের প্রযুক্তি ঝামেলা কমানোর সহজ কৌশল চীনের প্রযুক্তি উত্থান, অর্থনীতির ভেতরে গভীর ফাটল

জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের সুযোগ নেই: ফখরুল

নির্বাচনের আগে গণভোট নয়, বিভ্রান্তি না ছড়ানোর আহ্বান

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে কোনো গণভোট আয়োজনের সুযোগ নেই। তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন—বিভ্রান্তি না ছড়িয়ে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করায় মনোযোগ দিতে।

শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি-রব)–এর ৫৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা ও রাজনৈতিক সঙ্কট

ফখরুল বলেন, চলমান রাজনৈতিক সঙ্কটের জন্য বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দায়ী। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জনগণের ভরসা ভঙ্গ করেছে এবং তাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

তিনি বলেন, “আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই—জাতীয় নির্বাচনের আগে কোনো গণভোটের সুযোগ নেই। আমরা আগেই জানিয়েছি, গণভোট ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে। দুটি ব্যালট থাকবে—একটি জাতীয় নির্বাচনের জন্য এবং অন্যটি গণভোটের জন্য। এ বিষয়ে বিভ্রান্তির কোনো সুযোগ নেই।”

সারা দুনিয়াকে জানাতে হবে, আমরা এক: প্রধান উপদেষ্টা

ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা

বিএনপি মহাসচিব জানান, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস ঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী আগামী ফেব্রুয়ারিতে তাদের দল নির্বাচনে অংশ নেবে। তবে, একটি মহল বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ভিন্নখাতে নেওয়ার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

আন্দোলন বন্ধ করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আহ্বান

যেসব রাজনৈতিক দল গণভোটের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে, তাদের প্রতি ফখরুল আহ্বান জানান আন্দোলন থেকে সরে এসে নির্বাচনের দিকে মনোযোগ দিতে।

তিনি বলেন, “যারা রাস্তায় বিশৃঙ্খলা তৈরি করছেন, তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করছেন। একসময় আপনারা পাকিস্তানের প্রাদেশিক স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছেন—এখন দয়া করে জনগণের নির্বাচনের বিরোধিতা করবেন না।”

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ কখনো বিশ্বাসঘাতকদের ক্ষমা করে না। তাই আমি আহ্বান জানাই—পিছু হটুন, নির্বাচনে অংশ নিন এবং ভোটের মাধ্যমে জনগণের মতামত প্রতিফলিত হতে দিন।”

সংস্কার ও ঐকমত্য কমিশন নিয়ে ক্ষোভ

ফখরুল বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত সংস্কার কমিশন ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশন প্রায় এক বছর ধরে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করে বহু ক্ষেত্রে ঐকমত্যে পৌঁছেছিল।

“কিছু বিষয়ে মতবিরোধ থাকলেও আমরা ‘ডিসেন্ট নোট’ দিয়েছিলাম এবং সবাই মিলে মূল সনদে স্বাক্ষর করেছিলাম,” বলেন তিনি।

তবে তিনি অভিযোগ করেন, ১৭ অক্টোবর বৃষ্টির মধ্যে স্বাক্ষরিত চূড়ান্ত সনদে বিএনপির মতামত প্রতিফলিত হয়নি। “আমাদের দেওয়া ‘ডিসেন্ট নোট’ সনদে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এতে আস্থার সেতুবন্ধন ভেঙে গেছে। তারা জনগণ ও আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে।”

দুপুরে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে বিএনপি

‘বিএনপি সংস্কারের বিরোধী নয়’

ফখরুল বলেন, বিএনপি সবসময় সংস্কারের পক্ষে ছিল এবং সংস্কার বিরোধী বলে যারা অভিযোগ তুলছেন, তারা জাতিকে বিভ্রান্ত করছেন।

“বিএনপি ১৯৭৯ সালে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হাত ধরে সংস্কারের মাধ্যমে জন্ম নিয়েছিল। তিনি একদলীয় শাসন থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনেন, নাগরিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন এবং বন্ধ থাকা গণমাধ্যম ও প্রতিষ্ঠানগুলো পুনরায় চালু করেন।”

তিনি আরও বলেন, “খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দেশ আবার সংসদীয় গণতন্ত্রে ফিরে আসে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালু হয়, যার অধীনে চারটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।”

জাতীয় সরকার গঠনের পরিকল্পনা

বিএনপি মহাসচিব জানান, নির্বাচনের পর দলটি দীর্ঘদিনের মিত্রদের সঙ্গে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠনের পরিকল্পনা করেছে।

“আমরা স্পষ্ট করে বলেছি, নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে জাতীয় সরকার গঠন করে সবাই মিলে দেশ পুনর্গঠনের কাজ করব,” বলেন ফখরুল।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “আমরা এমন একটি জনগণের সরকার চাই, যা সত্যিকার অর্থে জনগণের প্রতিনিধিত্ব করবে এবং দেশের বর্তমান সঙ্কট থেকে উত্তরণের পথ দেখাবে। এখন সময় এসেছে ঐক্যবদ্ধভাবে সামনে এগিয়ে যাওয়ার।”

 

#BNP #ফখরুল #জাতীয়নির্বাচন #গণভোট #অন্তর্বর্তীসরকার #বাংলাদেশরাজনীতি #সারাক্ষণরিপোর্ট

জনপ্রিয় সংবাদ

পরিষ্কার জ্বালানির অগ্রগতি সত্ত্বেও বৈশ্বিক নির্গমন কমছে ধীরগতিতে

জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের সুযোগ নেই: ফখরুল

০৮:০৪:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫

নির্বাচনের আগে গণভোট নয়, বিভ্রান্তি না ছড়ানোর আহ্বান

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে কোনো গণভোট আয়োজনের সুযোগ নেই। তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন—বিভ্রান্তি না ছড়িয়ে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করায় মনোযোগ দিতে।

শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি-রব)–এর ৫৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা ও রাজনৈতিক সঙ্কট

ফখরুল বলেন, চলমান রাজনৈতিক সঙ্কটের জন্য বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দায়ী। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জনগণের ভরসা ভঙ্গ করেছে এবং তাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

তিনি বলেন, “আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই—জাতীয় নির্বাচনের আগে কোনো গণভোটের সুযোগ নেই। আমরা আগেই জানিয়েছি, গণভোট ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে। দুটি ব্যালট থাকবে—একটি জাতীয় নির্বাচনের জন্য এবং অন্যটি গণভোটের জন্য। এ বিষয়ে বিভ্রান্তির কোনো সুযোগ নেই।”

সারা দুনিয়াকে জানাতে হবে, আমরা এক: প্রধান উপদেষ্টা

ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা

বিএনপি মহাসচিব জানান, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস ঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী আগামী ফেব্রুয়ারিতে তাদের দল নির্বাচনে অংশ নেবে। তবে, একটি মহল বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ভিন্নখাতে নেওয়ার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

আন্দোলন বন্ধ করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আহ্বান

যেসব রাজনৈতিক দল গণভোটের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে, তাদের প্রতি ফখরুল আহ্বান জানান আন্দোলন থেকে সরে এসে নির্বাচনের দিকে মনোযোগ দিতে।

তিনি বলেন, “যারা রাস্তায় বিশৃঙ্খলা তৈরি করছেন, তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করছেন। একসময় আপনারা পাকিস্তানের প্রাদেশিক স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছেন—এখন দয়া করে জনগণের নির্বাচনের বিরোধিতা করবেন না।”

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ কখনো বিশ্বাসঘাতকদের ক্ষমা করে না। তাই আমি আহ্বান জানাই—পিছু হটুন, নির্বাচনে অংশ নিন এবং ভোটের মাধ্যমে জনগণের মতামত প্রতিফলিত হতে দিন।”

সংস্কার ও ঐকমত্য কমিশন নিয়ে ক্ষোভ

ফখরুল বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত সংস্কার কমিশন ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশন প্রায় এক বছর ধরে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করে বহু ক্ষেত্রে ঐকমত্যে পৌঁছেছিল।

“কিছু বিষয়ে মতবিরোধ থাকলেও আমরা ‘ডিসেন্ট নোট’ দিয়েছিলাম এবং সবাই মিলে মূল সনদে স্বাক্ষর করেছিলাম,” বলেন তিনি।

তবে তিনি অভিযোগ করেন, ১৭ অক্টোবর বৃষ্টির মধ্যে স্বাক্ষরিত চূড়ান্ত সনদে বিএনপির মতামত প্রতিফলিত হয়নি। “আমাদের দেওয়া ‘ডিসেন্ট নোট’ সনদে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এতে আস্থার সেতুবন্ধন ভেঙে গেছে। তারা জনগণ ও আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে।”

দুপুরে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে বিএনপি

‘বিএনপি সংস্কারের বিরোধী নয়’

ফখরুল বলেন, বিএনপি সবসময় সংস্কারের পক্ষে ছিল এবং সংস্কার বিরোধী বলে যারা অভিযোগ তুলছেন, তারা জাতিকে বিভ্রান্ত করছেন।

“বিএনপি ১৯৭৯ সালে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হাত ধরে সংস্কারের মাধ্যমে জন্ম নিয়েছিল। তিনি একদলীয় শাসন থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনেন, নাগরিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন এবং বন্ধ থাকা গণমাধ্যম ও প্রতিষ্ঠানগুলো পুনরায় চালু করেন।”

তিনি আরও বলেন, “খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দেশ আবার সংসদীয় গণতন্ত্রে ফিরে আসে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালু হয়, যার অধীনে চারটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।”

জাতীয় সরকার গঠনের পরিকল্পনা

বিএনপি মহাসচিব জানান, নির্বাচনের পর দলটি দীর্ঘদিনের মিত্রদের সঙ্গে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠনের পরিকল্পনা করেছে।

“আমরা স্পষ্ট করে বলেছি, নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে জাতীয় সরকার গঠন করে সবাই মিলে দেশ পুনর্গঠনের কাজ করব,” বলেন ফখরুল।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “আমরা এমন একটি জনগণের সরকার চাই, যা সত্যিকার অর্থে জনগণের প্রতিনিধিত্ব করবে এবং দেশের বর্তমান সঙ্কট থেকে উত্তরণের পথ দেখাবে। এখন সময় এসেছে ঐক্যবদ্ধভাবে সামনে এগিয়ে যাওয়ার।”

 

#BNP #ফখরুল #জাতীয়নির্বাচন #গণভোট #অন্তর্বর্তীসরকার #বাংলাদেশরাজনীতি #সারাক্ষণরিপোর্ট