সরকারের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জুলাই সনদের বাস্তবায়ন সংক্রান্ত সুপারিশ নিয়ে নতুন এক রাজনৈতিক অচলাবস্থা তৈরি করেছে। তবে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, এই সংকট খুব শিগগিরই কেটে যাবে।
শুক্রবার ইন্সটিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশে গণসমাহতি আন্দোলনের ৫ম জাতীয় কাউন্সিলে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, অন্তর্বর্তী সরকার ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সৃষ্ট এই সংকট দূর হবে। এই দেশের মানুষ পরাজয় মেনে নেয় না, তারা কখনও পরাজিত হয়নি, ভবিষ্যতেও হবে না।”
নির্বাচনমুখী ঐক্যের আহ্বান
মির্জা ফখরুল বলেন, “যা ঘটেছে, তা অতীত। এখন প্রয়োজন সমস্যাগুলোর সমাধান। আসুন, আমরা সবাই একসঙ্গে নির্বাচনমুখী হই এবং জনগণের কল্যাণে কাজ করি।”
তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, তারা যেন নিজেরাই সৃষ্টি করা প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করে সহযোগিতার পরিবেশ তৈরি করে।
ঐক্য ও সহযোগিতা বজায় রাখার অঙ্গীকার
বিএনপি মহাসচিব পুনরায় দলটির ঐক্য ও সহযোগিতার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে বলেন, “আমরা অতীতেও আপনাদের পাশে ছিলাম, ভবিষ্যতেও থাকব। তবে আপনারাই সৃষ্টি করা বাধাগুলো দূর করতে হবে।”
তিনি বলেন, অনেকেই বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন, কিন্তু তিনি কখনও আশাহীন হননি—না ব্যক্তিগত জীবনে, না রাজনীতিতে। “কারণ আমি বিশ্বাস করি, সত্য ও ন্যায় সর্বদা জয়ী হয়,” বলেন ফখরুল।
দেশের উন্নতির স্বার্থে রাজনৈতিক ঐক্য
ফখরুল বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভেদ থাকতে পারে, কিন্তু দেশের উন্নতির জন্য আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ। আমাদের মনে রাখতে হবে, এই দেশ আমাদের, এই জনগণ আমাদের। তাদের ঐক্যবদ্ধ করেই সব ষড়যন্ত্র ও অপশক্তির মোকাবিলা করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের দল, মত ও দিক ভিন্ন হতে পারে, কিন্তু বাংলাদেশের প্রশ্নে আমরা সবাই এক—সবচেয়ে আগে বাংলাদেশ।”
তরুণদের ভূমিকা নিয়ে মন্তব্য
মির্জা ফখরুল বলেন, অনেক সময় তিনি ভেবেছেন কেন নতুন প্রজন্ম অন্যায়ের বিরুদ্ধে নীরব। “গত ১৬ বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সেই প্রতিবাদী চেহারা আর দেখা যায়নি,” তিনি উল্লেখ করেন।
“তবে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে আমরা দেখেছি, শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, সারা দেশের তরুণরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছে,” বলেন তিনি।
গণসমাহতি আন্দোলনের প্রতি শুভেচ্ছা
বিএনপি মহাসচিব গণসমাহতি আন্দোলনের জাতীয় কাউন্সিলের সফলতা কামনা করেন এবং আশা প্রকাশ করেন যে, এই আয়োজন দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী করবে।
কাউন্সিলে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ভাসানী জনশক্তি পার্টির সভাপতি শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, এবি পার্টির সভাপতি মজিবুর রহমান মঞ্জু ও জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা বক্তব্য দেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন গণসমাহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 

























