০৬:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫
হিন্দু ভোটব্যাংকে ‘নজর’ জামায়াতের? আমেরিকায় প্রযুক্তি কর্মী তৈরির দৌড়, তবে  কি আগে চাকরি পাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা? বিশ্ববাজারে এআই বিনিয়োগে উত্তাপ — হংকং সম্মেলনে শেয়ারবাজারে বুদবুদের আশঙ্কা প্যারিসবাসীর জন্য ব্যতিক্রমী লটারি: ঐতিহাসিক সমাধিক্ষেত্রে সমাধিস্থ হওয়ার সুযোগ প্রাক্তন এফবিআই পরিচালক কমি মামলার সমালোচনা: একটি ফেডারেল বিচারকের তীব্র মন্তব্য পাকিস্তানের বর্তমান বাংলাদেশ নীতি কি পুরোনো ক্ষতকে আরও আঘাত করছে ভ্যাটিকান সিটি ও গুরুদ্বারা গুরু নানক দরবার দুবাইয়ের মধ্যে আন্তঃধর্মীয় সংহতির উদযাপন ঢাবিতে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষকের পদ বাতিলের প্রতিবাদে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ কোরিয়ান সিনেমায় হাস্যরসের জয়যাত্রা: কেন কোরিয়ান দর্শক আবার হাসছে নেটফ্লিক্সের ‘As You Stood By’ মৃগয়া, বন্ধুত্ব এবং নারীদের নেতৃত্বে থ্রিলারের মাধ্যমে হত্যা অনুসন্ধান

টেস্টোস্টেরন থেরাপিতে নারীদের পুনরুদ্ধারিত কামনা ও অপ্রত্যাশিত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

টেস্টোস্টেরন: নারীদের নতুন উত্তেজনা, পুরনো প্রশ্ন

একদল নারী দাবি করছেন, টেস্টোস্টেরনের উচ্চমাত্রার ব্যবহার তাদের জীবনে যেন এক “নতুন প্রাণের সঞ্চার” ঘটিয়েছে। তারা বলছেন, এই হরমোন তাদের যৌন ইচ্ছা, আত্মবিশ্বাস এবং সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতাকে পুনর্জীবিত করেছে। তবে এই পরিবর্তনের পেছনে রয়েছে কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া—যেমন চুল ঝরা, গলার স্বর পরিবর্তন এবং মানসিক অস্থিরতা।

যৌন ইচ্ছা পুনরুদ্ধারে “চমকপ্রদ” পরিবর্তন

ক্যালিফোর্নিয়ার ৪১ বছর বয়সী জেসিকা মেদিনা জানান, চার সন্তানসহ ব্যস্ত জীবনে টেস্টোস্টেরন নেওয়ার পর তার দাম্পত্য সম্পর্ক আমূল বদলে গেছে। আগে যেখানে যৌনতা প্রায় অনুপস্থিত ছিল, এখন তা সপ্তাহে ছয়বারেরও বেশি। তার ভাষায়, “আমাদের সম্পর্ক এখন আগের তুলনায় শতগুণ ঘনিষ্ঠ।”

অন্যদিকে, নিউ ইয়র্ক ও লস অ্যাঞ্জেলেসের মধ্যে একটি ফ্যাশন কোম্পানি পরিচালনাকারী ক্যাথরিন লিন বলেন, শক্তি বাড়াতে টেস্টোস্টেরন নেওয়ার পর তিনি শুধু শারীরিকভাবে উদ্যমীই নন, বহু বছর পর আবার যৌন আনন্দ উপভোগ করতে শুরু করেছেন।

তবে এই দুই নারীই এমন পরিমাণে টেস্টোস্টেরন নিচ্ছেন, যা নারীদের স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি।

The Role of Testosterone in Women's Health

টেস্টোস্টেরন: নারীদের শরীরে এর ভূমিকা

নারীদের জন্য টেস্টোস্টেরনও এক গুরুত্বপূর্ণ হরমোন—যা হাড়, পেশি ও যৌন ইচ্ছা নিয়ন্ত্রণ করে। কিশোরীবেলায় এর মাত্রা সর্বোচ্চ থাকে, এরপর বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা ধীরে ধীরে অর্ধেকে নেমে আসে।

টেস্টোস্টেরনের ঘাটতি অনেক নারীর যৌন ইচ্ছা কমিয়ে দেয়, মানসিকভাবে দূর্বল করে তোলে এবং শারীরিক আনন্দের অনুভূতি হ্রাস করে। অথচ যুক্তরাষ্ট্রে পুরুষদের জন্য ৩০টিরও বেশি টেস্টোস্টেরন-ভিত্তিক ওষুধ অনুমোদিত হলেও, নারীদের জন্য এখনো কোনো অনুমোদিত পণ্য নেই।

চিকিৎসায় সীমাবদ্ধতা ও বিকল্প উৎস

এফডিএ অনুমোদনের অভাবে অধিকাংশ চিকিৎসক নারীদের টেস্টোস্টেরন দিতে দ্বিধা করেন। ফলে অনেক নারী বিকল্প উৎসের দিকে ঝুঁকছেন—যেমন মেড-স্পা, ওয়েলনেস সেন্টার, এমনকি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত “হরমোন ক্লিনিক”।

এইসব স্থানে প্রায়শই উচ্চমাত্রার টেস্টোস্টেরন দেওয়া হয়, যার খরচ বছরে হাজার ডলারেরও বেশি হতে পারে এবং এতে স্থায়ী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঝুঁকি থাকে।

মায়ো ক্লিনিকের নারীস্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক স্টেফানি ফবিওন বলেন, “অনেক কেন্দ্র নারীদের এমন মাত্রায় টেস্টোস্টেরন দিচ্ছে যা পুরুষদের জন্য স্বাভাবিক, কিন্তু নারীদের জন্য বিপজ্জনক।”

Social Media Statistics 2025 (Users & Revenue)

সোশ্যাল মিডিয়ায় “সেক্সুয়াল রিবেলিউশন”

ইনফ্লুয়েন্সার মার্সেলা হিল ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন, “বছরের পর বছর আমার কোনো যৌন ইচ্ছা ছিল না। এখন আমার স্বামী ঘরে ঢুকলেই শরীর গরম হয়ে যায়।”

এমন অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেওয়া নারীরা নিজেদের “নতুন জন্ম” পাওয়া হিসেবে বর্ণনা করছেন। তাদের গল্প অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ছে, যা অনেককেই প্রলুব্ধ করছে।

ঝুঁকি ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

ক্যালিফোর্নিয়ার উদ্যোক্তা থুই ইনস্টাগ্রামে বিজ্ঞাপন দেখে টেস্টোস্টেরনের একটি পিলেট ইমপ্লান্ট করান। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই তিনি শক্তি ফিরে পান, যৌন ইচ্ছাও বাড়ে। কিন্তু তিন মাসের মধ্যে মাথার চুল অর্ধেক পড়ে যায়।

উচ্চমাত্রার টেস্টোস্টেরনের সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলো—চুল পড়া, মুখে বা শরীরে অবাঞ্ছিত লোম গজানো, ত্বকে ব্রণ, গলার স্বর ভারী হয়ে যাওয়া, এমনকি ক্লিটোরিস বড় হয়ে যাওয়া। এগুলোর অনেকগুলোই স্থায়ী ক্ষতি ডেকে আনতে পারে।

একজন নারী, লিসা স্টেইনবাখ, বলেন যে টেস্টোস্টেরন নেওয়ার পর তার গলার স্বর স্থায়ীভাবে কর্কশ হয়ে গেছে।

How to Become a Sex Therapist: A Step-By-Step Guide – Forbes Advisor

মানসিক প্রভাব ও আবেগীয় পরিবর্তন

যৌন ইচ্ছা বাড়ার পাশাপাশি অনেক নারীর মধ্যে অতিরিক্ত রাগ, বিরক্তি ও মানসিক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। যৌন থেরাপিস্ট ট্যামি নেলসন বলেন, “আমি যৌনভাবে সক্রিয় ছিলাম, কিন্তু একই সঙ্গে এত বিরক্ত ও রাগান্বিত থাকতাম যে স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক রাখা কঠিন হয়ে পড়েছিল।”

বিশেষজ্ঞ র‍্যাচেল রুবিন বলেন, “টেস্টোস্টেরন এখন প্রায় ধর্মের মতো—অনেকে ঝুঁকির কথাই শুনতে চান না।”

চিকিৎসা ও সামাজিক বাস্তবতা

গবেষণায় দেখা গেছে, সাধারণ মাত্রায় টেস্টোস্টেরন নারীদের যৌন ইচ্ছা ও আত্মবিশ্বাস বাড়াতে কার্যকর হতে পারে। অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্যসহ কয়েকটি দেশে ইতিমধ্যেই নারীদের জন্য মানসম্মত টেস্টোস্টেরন ক্রিম অনুমোদিত হয়েছে, যেখানে ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২০১৯ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে ৪০০ শতাংশ বেড়েছে।

তবে যুক্তরাষ্ট্রে এখনো নারীদের নিজের উদ্যোগে বা বেসরকারি প্রেসক্রিপশনেই এই থেরাপি নিতে হয়।

Testosterone molecule - Stock Image - F010/6891 - Science Photo Library

“আরেকবার সুযোগ পেলে?”

থুই এখন তুলনামূলক নিরাপদ মাত্রায় টেস্টোস্টেরন নিচ্ছেন, তবে আগের “উত্তেজনাপূর্ণ দিনগুলো” তিনি মিস করেন। চুল এখনো পুরোপুরি গজায়নি, তবু তিনি বলেন—“আমি আবারও নিতাম। হ্যাঁ, হ্যাঁ, অবশ্যই!”

টেস্টোস্টেরন নারীদের মধ্যে যৌন ইচ্ছা ও শক্তির নতুন জোয়ার এনে দিচ্ছে, কিন্তু এর সীমা কোথায় তা এখনো স্পষ্ট নয়। চিকিৎসকেরা সতর্ক করছেন, এটি কোনো ‘অ্যান্টি-এজিং’ ওষুধ নয় এবং সম্পর্কের যোগাযোগের অভাব বা মানসিক দূরত্বের সমাধানও নয়।

অবশেষে, টেস্টোস্টেরনের এই উন্মাদনা হয়তো আধুনিক সমাজে নারীদের দমিত আকাঙ্ক্ষারই প্রতিফলন—যেখানে তারা শুধু যৌন ইচ্ছা নয়, নিজেদের অস্তিত্বকেও নতুন করে খুঁজে পেতে চাইছেন।

জনপ্রিয় সংবাদ

হিন্দু ভোটব্যাংকে ‘নজর’ জামায়াতের?

টেস্টোস্টেরন থেরাপিতে নারীদের পুনরুদ্ধারিত কামনা ও অপ্রত্যাশিত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

০৪:২৫:২২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ নভেম্বর ২০২৫

টেস্টোস্টেরন: নারীদের নতুন উত্তেজনা, পুরনো প্রশ্ন

একদল নারী দাবি করছেন, টেস্টোস্টেরনের উচ্চমাত্রার ব্যবহার তাদের জীবনে যেন এক “নতুন প্রাণের সঞ্চার” ঘটিয়েছে। তারা বলছেন, এই হরমোন তাদের যৌন ইচ্ছা, আত্মবিশ্বাস এবং সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতাকে পুনর্জীবিত করেছে। তবে এই পরিবর্তনের পেছনে রয়েছে কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া—যেমন চুল ঝরা, গলার স্বর পরিবর্তন এবং মানসিক অস্থিরতা।

যৌন ইচ্ছা পুনরুদ্ধারে “চমকপ্রদ” পরিবর্তন

ক্যালিফোর্নিয়ার ৪১ বছর বয়সী জেসিকা মেদিনা জানান, চার সন্তানসহ ব্যস্ত জীবনে টেস্টোস্টেরন নেওয়ার পর তার দাম্পত্য সম্পর্ক আমূল বদলে গেছে। আগে যেখানে যৌনতা প্রায় অনুপস্থিত ছিল, এখন তা সপ্তাহে ছয়বারেরও বেশি। তার ভাষায়, “আমাদের সম্পর্ক এখন আগের তুলনায় শতগুণ ঘনিষ্ঠ।”

অন্যদিকে, নিউ ইয়র্ক ও লস অ্যাঞ্জেলেসের মধ্যে একটি ফ্যাশন কোম্পানি পরিচালনাকারী ক্যাথরিন লিন বলেন, শক্তি বাড়াতে টেস্টোস্টেরন নেওয়ার পর তিনি শুধু শারীরিকভাবে উদ্যমীই নন, বহু বছর পর আবার যৌন আনন্দ উপভোগ করতে শুরু করেছেন।

তবে এই দুই নারীই এমন পরিমাণে টেস্টোস্টেরন নিচ্ছেন, যা নারীদের স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি।

The Role of Testosterone in Women's Health

টেস্টোস্টেরন: নারীদের শরীরে এর ভূমিকা

নারীদের জন্য টেস্টোস্টেরনও এক গুরুত্বপূর্ণ হরমোন—যা হাড়, পেশি ও যৌন ইচ্ছা নিয়ন্ত্রণ করে। কিশোরীবেলায় এর মাত্রা সর্বোচ্চ থাকে, এরপর বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা ধীরে ধীরে অর্ধেকে নেমে আসে।

টেস্টোস্টেরনের ঘাটতি অনেক নারীর যৌন ইচ্ছা কমিয়ে দেয়, মানসিকভাবে দূর্বল করে তোলে এবং শারীরিক আনন্দের অনুভূতি হ্রাস করে। অথচ যুক্তরাষ্ট্রে পুরুষদের জন্য ৩০টিরও বেশি টেস্টোস্টেরন-ভিত্তিক ওষুধ অনুমোদিত হলেও, নারীদের জন্য এখনো কোনো অনুমোদিত পণ্য নেই।

চিকিৎসায় সীমাবদ্ধতা ও বিকল্প উৎস

এফডিএ অনুমোদনের অভাবে অধিকাংশ চিকিৎসক নারীদের টেস্টোস্টেরন দিতে দ্বিধা করেন। ফলে অনেক নারী বিকল্প উৎসের দিকে ঝুঁকছেন—যেমন মেড-স্পা, ওয়েলনেস সেন্টার, এমনকি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত “হরমোন ক্লিনিক”।

এইসব স্থানে প্রায়শই উচ্চমাত্রার টেস্টোস্টেরন দেওয়া হয়, যার খরচ বছরে হাজার ডলারেরও বেশি হতে পারে এবং এতে স্থায়ী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঝুঁকি থাকে।

মায়ো ক্লিনিকের নারীস্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক স্টেফানি ফবিওন বলেন, “অনেক কেন্দ্র নারীদের এমন মাত্রায় টেস্টোস্টেরন দিচ্ছে যা পুরুষদের জন্য স্বাভাবিক, কিন্তু নারীদের জন্য বিপজ্জনক।”

Social Media Statistics 2025 (Users & Revenue)

সোশ্যাল মিডিয়ায় “সেক্সুয়াল রিবেলিউশন”

ইনফ্লুয়েন্সার মার্সেলা হিল ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন, “বছরের পর বছর আমার কোনো যৌন ইচ্ছা ছিল না। এখন আমার স্বামী ঘরে ঢুকলেই শরীর গরম হয়ে যায়।”

এমন অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেওয়া নারীরা নিজেদের “নতুন জন্ম” পাওয়া হিসেবে বর্ণনা করছেন। তাদের গল্প অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ছে, যা অনেককেই প্রলুব্ধ করছে।

ঝুঁকি ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

ক্যালিফোর্নিয়ার উদ্যোক্তা থুই ইনস্টাগ্রামে বিজ্ঞাপন দেখে টেস্টোস্টেরনের একটি পিলেট ইমপ্লান্ট করান। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই তিনি শক্তি ফিরে পান, যৌন ইচ্ছাও বাড়ে। কিন্তু তিন মাসের মধ্যে মাথার চুল অর্ধেক পড়ে যায়।

উচ্চমাত্রার টেস্টোস্টেরনের সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলো—চুল পড়া, মুখে বা শরীরে অবাঞ্ছিত লোম গজানো, ত্বকে ব্রণ, গলার স্বর ভারী হয়ে যাওয়া, এমনকি ক্লিটোরিস বড় হয়ে যাওয়া। এগুলোর অনেকগুলোই স্থায়ী ক্ষতি ডেকে আনতে পারে।

একজন নারী, লিসা স্টেইনবাখ, বলেন যে টেস্টোস্টেরন নেওয়ার পর তার গলার স্বর স্থায়ীভাবে কর্কশ হয়ে গেছে।

How to Become a Sex Therapist: A Step-By-Step Guide – Forbes Advisor

মানসিক প্রভাব ও আবেগীয় পরিবর্তন

যৌন ইচ্ছা বাড়ার পাশাপাশি অনেক নারীর মধ্যে অতিরিক্ত রাগ, বিরক্তি ও মানসিক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। যৌন থেরাপিস্ট ট্যামি নেলসন বলেন, “আমি যৌনভাবে সক্রিয় ছিলাম, কিন্তু একই সঙ্গে এত বিরক্ত ও রাগান্বিত থাকতাম যে স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক রাখা কঠিন হয়ে পড়েছিল।”

বিশেষজ্ঞ র‍্যাচেল রুবিন বলেন, “টেস্টোস্টেরন এখন প্রায় ধর্মের মতো—অনেকে ঝুঁকির কথাই শুনতে চান না।”

চিকিৎসা ও সামাজিক বাস্তবতা

গবেষণায় দেখা গেছে, সাধারণ মাত্রায় টেস্টোস্টেরন নারীদের যৌন ইচ্ছা ও আত্মবিশ্বাস বাড়াতে কার্যকর হতে পারে। অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্যসহ কয়েকটি দেশে ইতিমধ্যেই নারীদের জন্য মানসম্মত টেস্টোস্টেরন ক্রিম অনুমোদিত হয়েছে, যেখানে ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২০১৯ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে ৪০০ শতাংশ বেড়েছে।

তবে যুক্তরাষ্ট্রে এখনো নারীদের নিজের উদ্যোগে বা বেসরকারি প্রেসক্রিপশনেই এই থেরাপি নিতে হয়।

Testosterone molecule - Stock Image - F010/6891 - Science Photo Library

“আরেকবার সুযোগ পেলে?”

থুই এখন তুলনামূলক নিরাপদ মাত্রায় টেস্টোস্টেরন নিচ্ছেন, তবে আগের “উত্তেজনাপূর্ণ দিনগুলো” তিনি মিস করেন। চুল এখনো পুরোপুরি গজায়নি, তবু তিনি বলেন—“আমি আবারও নিতাম। হ্যাঁ, হ্যাঁ, অবশ্যই!”

টেস্টোস্টেরন নারীদের মধ্যে যৌন ইচ্ছা ও শক্তির নতুন জোয়ার এনে দিচ্ছে, কিন্তু এর সীমা কোথায় তা এখনো স্পষ্ট নয়। চিকিৎসকেরা সতর্ক করছেন, এটি কোনো ‘অ্যান্টি-এজিং’ ওষুধ নয় এবং সম্পর্কের যোগাযোগের অভাব বা মানসিক দূরত্বের সমাধানও নয়।

অবশেষে, টেস্টোস্টেরনের এই উন্মাদনা হয়তো আধুনিক সমাজে নারীদের দমিত আকাঙ্ক্ষারই প্রতিফলন—যেখানে তারা শুধু যৌন ইচ্ছা নয়, নিজেদের অস্তিত্বকেও নতুন করে খুঁজে পেতে চাইছেন।