রাশিয়ার ক্রেমলিন জানিয়েছে, চলতি বছরের শেষের আগে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ভারত সফরের জন্য জোর প্রস্তুতি চলছে। রাশিয়ান কর্মকর্তারা আশা করছেন, এই সফর হবে ফলপ্রসূ ও তাৎপর্যপূর্ণ, যা দুই দেশের কৌশলগত সম্পর্ককে আরও গভীর করবে।
ডিসেম্বরেই পুতিনের সফরের সম্ভাবনা
ক্রেমলিনের ঘোষণায় বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট পুতিন আগামী ডিসেম্বর মাসে ভারত সফরে আসবেন। তিনি সর্বশেষ ২০২১ সালে ভারত সফর করেছিলেন—ইউক্রেনে রুশ সেনা অভিযান শুরু হওয়ার কয়েক মাস আগে।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ মস্কোতে সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা বর্তমানে পুতিনের ভারত সফরের প্রস্তুতি নিয়ে সক্রিয়ভাবে কাজ করছি।” তবে তিনি সফরের সময় নির্দিষ্ট কোনো চুক্তি বা আলোচনার বিস্তারিত জানাতে অস্বীকৃতি জানান।

যুক্তরাষ্ট্রের চাপ, ভারতের দৃঢ় অবস্থান
ভারত বর্তমানে রুশ তেল আমদানির অন্যতম বড় ক্রেতা। এই প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একাধিকবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যেন ভারত রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করেন।
তবুও ভারত তার অবস্থান পরিবর্তন করেনি। ফলে পুতিনের আসন্ন সফর কেবল কূটনৈতিক নয়, বরং জ্বালানি বাণিজ্য ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতার ক্ষেত্রেও একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ইউক্রেন যুদ্ধের পর প্রথম ভারত সফর
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরু হওয়ার পর এটি হবে পুতিনের প্রথম ভারত সফর। ২০২১ সালের বার্ষিক সম্মেলনের পর এটাই দুই দেশের নেতাদের মধ্যে সবচেয়ে বড় মুখোমুখি বৈঠক হতে যাচ্ছে।
এ সফরকে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক পুনর্মূল্যায়নের সুযোগ হিসেবেও দেখা হচ্ছে, বিশেষ করে এমন সময়ে যখন যুক্তরাষ্ট্র ভারতের ওপর রুশ জ্বালানি ও অস্ত্র ক্রয় কমানোর জন্য চাপ বাড়াচ্ছে।

মোদি-পুতিনের সাম্প্রতিক যোগাযোগ
গত বছর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাশিয়া সফর করেছিলেন বার্ষিক শীর্ষ বৈঠকে যোগ দিতে। এরপর থেকে মোদি ও পুতিন একাধিকবার ফোনে কথা বলেছেন, যেখানে ইউক্রেনের পরিস্থিতিও আলোচনায় এসেছে।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে চীনে আয়োজিত সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) সম্মেলনের সাইডলাইনে দুই নেতা সাক্ষাৎ করেন। সেখানে তারা কৌশলগত অংশীদারিত্বের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন, যা ৩ অক্টোবর ২৫ বছর পূর্ণ করেছে।
নতুন পারমাণবিক প্রকল্পে রাশিয়া-ভারত সহযোগিতা
রুশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভারতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য নতুন প্রযুক্তিগত পরিকল্পনা বা স্পেসিফিকেশন তৈরির কাজ চলছে। এই উদ্যোগ দুই দেশের জ্বালানি অংশীদারিত্বকে আরও মজবুত করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
#রাশিয়া #ভারত #পুতিন #মোদি #কূটনীতি #আন্তর্জাতিকসম্পর্ক #পারমাণবিকবিদ্যুৎকেন্দ্র #জ্বালানিবাণিজ্য #ইউক্রেনযুদ্ধ #সারাক্ষণরিপোর্ট
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















