০৯:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৫৩) শাহজালালসহ দেশের সব বিমানবন্দরে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি আল-ওথমান মসজিদের পুনঃস্থাপন কাজ শেষের পথে, রমজানের আগেই পুনরায় খোলা হবে ভুলভাবে উপস্থাপিত বক্তব্য নিয়ে ব্যাখ্যা দিলেন মির্জা ফখরুল দিল্লিতে হামলার ছক তৈরির অভিযোগে ভারতের দাবি প্রত্যাখ্যান করল ঢাকা ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৯১২ জন সূত্রাপুরে দাঁড়িয়ে থাকা বাসে আগুনে আতঙ্ক হামাস যোদ্ধাদের আটকে থাকা পরিস্থিতি গাজা চুক্তির অগ্রগতি ব্যাহত করছে জাপানে উঁচু শহরের রোদে নতুন আতঙ্ক — ভাল্লুকের হামলা বাড়ছে, আতঙ্কে নাগরিকরা ডিএসইতে ১০ দিনের পতনের পর সূচক উত্থান; লেনদেন কমেছে সামান্য

নিরাপদ পৃথিবীর বার্তা: বাংলাদেশে উদ্‌যাপিত হলো ‘ওয়ান হেলথ ডে ২০২৫’

মানুষ, প্রাণী ও পরিবেশের একসাথে টেকসই ভবিষ্যৎ গড়ার অঙ্গীকার

বিশ্বব্যাপী ‘ওয়ান হেলথ ডে ২০২৫’ উদ্‌যাপন করছে বাংলাদেশ। এ উদ্‌যাপনের মূল উদ্দেশ্য মানুষ, প্রাণী ও পরিবেশের পারস্পরিক সম্পর্ককে স্বীকৃতি দেওয়া এবং একটি টেকসই ও নিরাপদ ভবিষ্যৎ গড়ার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করা।

এই উদ্যোগ আয়োজন করে আইসিডিডিআরবি, বাংলাদেশ সরকার, ওয়ান হেলথ সেক্রেটারিয়েট এবং ওয়ান হেলথ বাংলাদেশ প্ল্যাটফর্ম। অনুষ্ঠানের সহায়তায় ছিল সাসাকাওয়া হেলথ ফাউন্ডেশন। এতে অংশ নেন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধি, নীতিনির্ধারক, স্বাস্থ্য ও প্রাণিসম্পদ বিশেষজ্ঞ, গবেষক এবং শিক্ষাবিদরা।

এবারের প্রতিপাদ্য: “ওয়ান হেলথ – একসাথে নিরাপদ পৃথিবীর যাত্রা”

এ বছরের মূল বার্তা ছিল— মানুষ, প্রাণী ও পরিবেশের মধ্যে স্বাস্থ্যসচেতনতা ও সুরক্ষার জন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টার প্রয়োজনীয়তা জোরদার করা
আলোচনায় তুলে ধরা হয়, ওয়ান হেলথ দৃষ্টিভঙ্গি জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ, খাদ্য নিরাপত্তা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

প্রধান কার্যক্রম

অনুষ্ঠানে ছিল—

  • • মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন
  • • পোস্টার প্রদর্শনী ও পুরস্কার বিতরণ
  • • ওয়ান হেলথ ইন অ্যাকশন শীর্ষক প্রাণবন্ত প্যানেল আলোচনা

এ আলোচনায় বাংলাদেশের ওয়ান হেলথ আন্দোলনের সূচনা থেকে শুরু করে বর্তমান উদ্যোগগুলোতে নাগরিক অংশগ্রহণ কীভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে— তা নিয়ে বিস্তারিত বিশ্লেষণ হয়।

প্রধান বক্তাদের বক্তব্য

আইসিডিডিআরবি-এর নির্বাহী পরিচালক ড. আহমদ আমানুল্লাহ আহমদ বলেন,

“ওয়ান হেলথ শুধু বাংলাদেশের নয়, বরং নিম্ন ও মধ্য আয়ের সব দেশের জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ধারণা। আজকের অনুষ্ঠান আমাদের সবার জন্য যৌথ সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনার ও টেকসই সমাধান খোঁজার সুযোগ এনে দিয়েছে।”

ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ ডিরেক্টরেট-এর মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অনিরুদ্ধ চৌধুরী বলেন,

“আমরা পরিবেশের ভারসাম্য হারাচ্ছি। তাই সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা ছাড়া বড় ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবিলা সম্ভব নয়।”

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবু সাঈদ যোগ করেন,

“ওয়ান হেলথের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে মন্ত্রণালয় পর্যায়ে আরও সক্রিয় সহযোগিতা ও সমন্বয় প্রয়োজন।”

আইসিডিডিআরবি-এর বিজ্ঞানী ড. তানিমা নাসরিন বলেন,

“আজ আমরা ওয়ান হেলথের মাধ্যমে একটি সুস্থ ও নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার প্রকাশ করছি। নাগরিক সচেতনতা ও তথ্যভিত্তিক পদক্ষেপই হবে এই যাত্রার মূল শক্তি।”

বৈজ্ঞানিক আলোচনার মূল দিক

প্যানেল আলোচনায় বিশেষজ্ঞরা জুনোটিক রোগ (মানুষ ও প্রাণীর মধ্যে ছড়ায় এমন রোগ)অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (ওষুধ প্রতিরোধী জীবাণু) এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবিলার উপায় নিয়ে মতবিনিময় করেন।

তাদের মতে—

  • • মানুষ, প্রাণী ও পরিবেশের সমন্বিত সহযোগিতাই টেকসই সমাধানের পথ।
  • • ঝুঁকিপূর্ণ পেশাজীবীদের সুরক্ষা ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে স্থানীয় পর্যায়ের কার্যক্রম জরুরি।
  • • অ্যান্টিবায়োটিকের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার কমানো এখন সময়ের দাবি।

তরুণদের অংশগ্রহণ ও পুরস্কার

দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে আগত শিক্ষার্থীরা ১০টি পোস্টার উপস্থাপন করেন। এর মধ্যে সেরা তিনটি দল প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অর্জন করে পুরস্কার গ্রহণ করেছে।

ওয়ান হেলথ ডে: একটি বৈশ্বিক আন্দোলন

প্রতি বছর ৩ নভেম্বর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ওয়ান হেলথ ডে উদ্‌যাপন করা হয়, যা মানুষ, প্রাণী ও পরিবেশের আন্তঃসম্পর্ককে স্মরণ করিয়ে দেয়।
বাংলাদেশেও এই উদ্যোগ ক্রমেই নাগরিক ও নীতিনির্ধারকদের মাঝে সচেতনতা বাড়াচ্ছে।

এই দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে—

  • • স্বাস্থ্যঝুঁকি প্রতিরোধ
  • • খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ
  • • অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ মোকাবিলা
  • • এবং জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ সম্ভব হবে আগামী প্রজন্মের জন্য।

 

#OneHealth #ওয়ানহেলথ২০২৫ #স্বাস্থ্যওপরিবেশ #বাংলাদেশ

জনপ্রিয় সংবাদ

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৫৩)

নিরাপদ পৃথিবীর বার্তা: বাংলাদেশে উদ্‌যাপিত হলো ‘ওয়ান হেলথ ডে ২০২৫’

০৭:০৬:০১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫

মানুষ, প্রাণী ও পরিবেশের একসাথে টেকসই ভবিষ্যৎ গড়ার অঙ্গীকার

বিশ্বব্যাপী ‘ওয়ান হেলথ ডে ২০২৫’ উদ্‌যাপন করছে বাংলাদেশ। এ উদ্‌যাপনের মূল উদ্দেশ্য মানুষ, প্রাণী ও পরিবেশের পারস্পরিক সম্পর্ককে স্বীকৃতি দেওয়া এবং একটি টেকসই ও নিরাপদ ভবিষ্যৎ গড়ার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করা।

এই উদ্যোগ আয়োজন করে আইসিডিডিআরবি, বাংলাদেশ সরকার, ওয়ান হেলথ সেক্রেটারিয়েট এবং ওয়ান হেলথ বাংলাদেশ প্ল্যাটফর্ম। অনুষ্ঠানের সহায়তায় ছিল সাসাকাওয়া হেলথ ফাউন্ডেশন। এতে অংশ নেন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধি, নীতিনির্ধারক, স্বাস্থ্য ও প্রাণিসম্পদ বিশেষজ্ঞ, গবেষক এবং শিক্ষাবিদরা।

এবারের প্রতিপাদ্য: “ওয়ান হেলথ – একসাথে নিরাপদ পৃথিবীর যাত্রা”

এ বছরের মূল বার্তা ছিল— মানুষ, প্রাণী ও পরিবেশের মধ্যে স্বাস্থ্যসচেতনতা ও সুরক্ষার জন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টার প্রয়োজনীয়তা জোরদার করা
আলোচনায় তুলে ধরা হয়, ওয়ান হেলথ দৃষ্টিভঙ্গি জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ, খাদ্য নিরাপত্তা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

প্রধান কার্যক্রম

অনুষ্ঠানে ছিল—

  • • মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন
  • • পোস্টার প্রদর্শনী ও পুরস্কার বিতরণ
  • • ওয়ান হেলথ ইন অ্যাকশন শীর্ষক প্রাণবন্ত প্যানেল আলোচনা

এ আলোচনায় বাংলাদেশের ওয়ান হেলথ আন্দোলনের সূচনা থেকে শুরু করে বর্তমান উদ্যোগগুলোতে নাগরিক অংশগ্রহণ কীভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে— তা নিয়ে বিস্তারিত বিশ্লেষণ হয়।

প্রধান বক্তাদের বক্তব্য

আইসিডিডিআরবি-এর নির্বাহী পরিচালক ড. আহমদ আমানুল্লাহ আহমদ বলেন,

“ওয়ান হেলথ শুধু বাংলাদেশের নয়, বরং নিম্ন ও মধ্য আয়ের সব দেশের জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ধারণা। আজকের অনুষ্ঠান আমাদের সবার জন্য যৌথ সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনার ও টেকসই সমাধান খোঁজার সুযোগ এনে দিয়েছে।”

ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ ডিরেক্টরেট-এর মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অনিরুদ্ধ চৌধুরী বলেন,

“আমরা পরিবেশের ভারসাম্য হারাচ্ছি। তাই সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা ছাড়া বড় ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবিলা সম্ভব নয়।”

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবু সাঈদ যোগ করেন,

“ওয়ান হেলথের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে মন্ত্রণালয় পর্যায়ে আরও সক্রিয় সহযোগিতা ও সমন্বয় প্রয়োজন।”

আইসিডিডিআরবি-এর বিজ্ঞানী ড. তানিমা নাসরিন বলেন,

“আজ আমরা ওয়ান হেলথের মাধ্যমে একটি সুস্থ ও নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার প্রকাশ করছি। নাগরিক সচেতনতা ও তথ্যভিত্তিক পদক্ষেপই হবে এই যাত্রার মূল শক্তি।”

বৈজ্ঞানিক আলোচনার মূল দিক

প্যানেল আলোচনায় বিশেষজ্ঞরা জুনোটিক রোগ (মানুষ ও প্রাণীর মধ্যে ছড়ায় এমন রোগ)অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (ওষুধ প্রতিরোধী জীবাণু) এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবিলার উপায় নিয়ে মতবিনিময় করেন।

তাদের মতে—

  • • মানুষ, প্রাণী ও পরিবেশের সমন্বিত সহযোগিতাই টেকসই সমাধানের পথ।
  • • ঝুঁকিপূর্ণ পেশাজীবীদের সুরক্ষা ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে স্থানীয় পর্যায়ের কার্যক্রম জরুরি।
  • • অ্যান্টিবায়োটিকের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার কমানো এখন সময়ের দাবি।

তরুণদের অংশগ্রহণ ও পুরস্কার

দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে আগত শিক্ষার্থীরা ১০টি পোস্টার উপস্থাপন করেন। এর মধ্যে সেরা তিনটি দল প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অর্জন করে পুরস্কার গ্রহণ করেছে।

ওয়ান হেলথ ডে: একটি বৈশ্বিক আন্দোলন

প্রতি বছর ৩ নভেম্বর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ওয়ান হেলথ ডে উদ্‌যাপন করা হয়, যা মানুষ, প্রাণী ও পরিবেশের আন্তঃসম্পর্ককে স্মরণ করিয়ে দেয়।
বাংলাদেশেও এই উদ্যোগ ক্রমেই নাগরিক ও নীতিনির্ধারকদের মাঝে সচেতনতা বাড়াচ্ছে।

এই দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে—

  • • স্বাস্থ্যঝুঁকি প্রতিরোধ
  • • খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ
  • • অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ মোকাবিলা
  • • এবং জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ সম্ভব হবে আগামী প্রজন্মের জন্য।

 

#OneHealth #ওয়ানহেলথ২০২৫ #স্বাস্থ্যওপরিবেশ #বাংলাদেশ