মিশরে উচ্চ গতির ট্রেনের উদ্বোধন
মিশরের দ্রুতগতির রেলব্যবস্থায় বড় পরিবর্তন আনতে সিমেন্স মোবিলিটি নতুন উচ্চ গতির ট্রেন উন্মোচন করেছে। সিমেন্সের ভেলারো মডেলের এই ট্রেন ঘণ্টায় ২৫০ কিলোমিটার (১৫৫ মাইল) গতিতে চলতে পারে। ৯ নভেম্বর নিউ কায়রোতে ট্রান্সMEA ২০২৫ প্রদর্শনীতে এটি প্রথমবার উন্মোচিত হয়।
ট্রেনের বৈশিষ্ট্য
মিশরের পরিকল্পিত ২,০০০ কিলোমিটার (১,২০০ মাইল) দীর্ঘ উচ্চ গতির রেল নেটওয়ার্কে মোট ৪১টি ট্রেন চলবে। তিনটি প্রধান লাইনের মাধ্যমে এই নেটওয়ার্ক দেশের প্রধান শহরগুলোকে যুক্ত করবে। সিমেন্স জানায়, নেটওয়ার্কটি দেশের প্রায় ৯০% মানুষের জন্য সহজপ্রাপ্য হবে এবং যাতায়াতের সময় ৫০% পর্যন্ত কমে যাবে। প্রকল্পটি ২০১৮ সালে প্রথম ঘোষণা করা হয়। আরব কন্ট্রাক্টরস ও অরাসকম কনস্ট্রাকশনের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এতে যুক্ত আছে।

ডিজাইন ও নির্মাণের অগ্রগতি
উচ্চ গতির ট্রেনগুলো জার্মানিতে ডিজাইন ও নির্মাণ করা হচ্ছে। মরুভূমির কঠোর আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে উন্নত ফিল্টারেশন সিস্টেম এবং শক্তিশালী কুলিং ব্যবস্থা যুক্ত করা হয়েছে, যা বালি, গরম ও ধুলো থেকে সুরক্ষা দেবে।
ডেসিরো ট্রেনের প্রথম যাত্রা
৯ নভেম্বর সিমেন্সের ডেসিরো হাই-ক্যাপাসিটি রিজিওনাল ট্রেনের প্রথম দফা যাত্রা শুরু হয়। কায়রোর পশ্চিমে ৬ অক্টোবরের এলাকার ডিপো থেকে ট্রেনটি ছাড়ে। এর সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার (৯৯ মাইল)। এটি নতুন স্থাপিত একটি শুকনো বন্দরের পাশ দিয়ে চলে। ২৬০,০০০ কন্টেইনার ধারণক্ষম এই বন্দরটি ৬৬০ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘সবুজ লাইন’ বা সেজ ক্যানাল রেলওয়ের অংশ।

উচ্চ গতির রেল নেটওয়ার্কের গুরুত্ব
সিমেন্স জানায়, নতুন উচ্চ গতির রেল নেটওয়ার্ক মিশরের মালবাহী পরিবহন ক্ষমতা ৪৬% পর্যন্ত বাড়াবে। মিশরের শিল্প উন্নয়ন ও পরিবহন মন্ত্রী লেফটেন্যান্ট জেনারেল কামেল এল-ওয়াজির ডেসিরোর প্রথম যাত্রাকে দেশের পরিবহন ব্যবস্থার আধুনিকায়নের একটি ঐতিহাসিক অগ্রগতি বলে উল্লেখ করেন।
আফ্রিকার অন্য উচ্চ গতির রেল উদ্যোগ
মিশরই প্রথম নয়—২০১৮ সালে মরক্কো আফ্রিকার প্রথম উচ্চ গতির রেল লাইন চালু করে, যা তাংগিয়ার ও কাসাব্লাঙ্কাকে ঘণ্টায় ৩২০ কিলোমিটার (২০০ মাইল) গতিতে সংযুক্ত করে। অন্যান্য দেশও এগোচ্ছে—নাইজেরিয়া ৪,০০০ কিলোমিটার (২,৪৮৫ মাইল) দীর্ঘ রেল নেটওয়ার্ক নির্মাণের পরিকল্পনা করছে, যা লাগোসকে পোর্ট হারকোর্টের সঙ্গে যুক্ত করবে।

আফ্রিকান ইউনিয়নের উচ্চ গতির রেল পরিকল্পনা
আফ্রিকান ইউনিয়নও দীর্ঘমেয়াদি একটি উচ্চ গতির রেল নেটওয়ার্কের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। ‘আফ্রিকান ইন্টিগ্রেটেড হাই স্পিড রেলওয়ে নেটওয়ার্ক’-এর প্রাথমিক ধাপ ২০২৩ সালে সম্পন্ন হয় এবং ১৭টি পাইলট প্রকল্প নির্বাচিত হয়েছে। পরিকল্পনা সফল হলে পরিবহন ব্যয় ৪০% কমবে এবং আফ্রিকার অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য ৫০%–এর বেশি বাড়বে বলে আশা করছে ইউনিয়ন।






#মিশর #উচ্চ_গতির_ট্রেন #সিমেন্স #রেল_নেটওয়ার্ক #আফ্রিকা #মরক্কো #নাইজেরিয়া #পরিবহন #অবকাঠামো #সারাক্ষণ_রিপোর্ট
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















