০৮:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সংঘর্ষে আহত ২০ জন, বাড়িঘর ভাঙচুর ৩৫ বলে শতক হাঁকালেন হাবিবুর, বাংলাদেশের দ্রুততম টি–২০ সেঞ্চুরির নতুন রেকর্ড ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু, ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ৭৯২ জন চীনের বিজনেস স্কুলে বৈশ্বিক ট্যালেন্ট ধরে রাখার নতুন উদ্যোগ বাগেরহাট কারাগারে ভারতীয় জেলের মৃত্যু ঝিনাইদহ সীমান্তে ভারত যাওয়ার চেষ্টা: সাত বাংলাদেশি আটক , একজন ছাড়া বাকিরা হিন্দু সম্প্রদায়ের ঝিনাইদহে সংঘর্ষে প্রবাসী নিহত; বাড়িতে আগুন সব থেকে বেশি অবহেলিত নারী ও শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য ইয়াংজি ডেল্টায় ‘লাভকেন্দ্রিক’ জরিমানা নিয়ন্ত্রণে চীনের নতুন আইন প্রয়োগ ব্যবস্থা গ্রামীণ ব্যাংকে ধারাবাহিক অগ্নিসংযোগের চেষ্টা: মধুখালী শাখায় নতুন ঘটনায় উদ্বেগ বাড়ছে

গণভোটে ‘না’ বলার সুযোগ নেই কেন—প্রশ্ন রিজভীর

প্রস্তাবিত গণভোটে ‘না’ অপশন না থাকার বিষয়ে রিজভীর প্রশ্ন
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী শনিবার প্রশ্ন তুলেছেন—গণভোটের প্রস্তাবিত চারটি প্রশ্নের যেকোনোটিতে অসহমতি থাকলে ভোটাররা কোথায় ‘না’ লিখবে?


গণভোটের প্রশ্নে স্পষ্ট ‘না’ অপশনের অনুপস্থিতি

রিজভী বলেন, “আমরা দেখেছি চারটি প্রশ্ন আছে, যেখানে ভোটারদের ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ বলতে হবে। কিন্তু ‘না’ বলার কোনো ঘরই নেই। যদি আমি কোনো প্রশ্নে একমত না হই, তাহলে কোথায় ‘না’ লিখব? গণভোট প্রক্রিয়ার এই ঘাটতি এখনও অমীমাংসিত।”

তিনি এসব মন্তব্য করেন রাজধানীর শ্যামলীতে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আয়োজনে অসুস্থ রেডিও শিল্পী আফরোজা নেজামীকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষে আর্থিক সহায়তা প্রদান শেষে।


বিশেষজ্ঞরাও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন

রিজভী জানান, গণভোটের ব্যালটে কোনো প্রশ্ন প্রত্যাখ্যান করার স্পষ্ট জায়গা থাকা জরুরি। “কেউ যদি কোনো প্রশ্নের সঙ্গে একমত না হন, তবে তা প্রত্যাখ্যানের আলাদা দৃশ্যমান ঘর থাকা উচিত। কিন্তু সেই ব্যবস্থা নেই।”


জনগণের জন্য প্রক্রিয়া পরিষ্কার হওয়া জরুরি

তিনি বলেন, তাড়াহুড়ো বা অস্পষ্টভাবে করা কোনো কাজ দীর্ঘস্থায়ী হয় না। “জাতীয় প্রক্রিয়া টেকসই করতে হলে তা হতে হবে স্পষ্ট, শক্তিশালী এবং অন্তত ৯০ শতাংশ মানুষের বোধগম্য। যদি মানুষ গণভোটের উদ্দেশ্যই না বোঝে, তবে পুরো প্রচেষ্টা অর্থহীন হয়ে যাবে।”


জুলাই চাটারের ভাষা সহজ করা উচিত: রিজভী

রিজভীর মতে, জুলাই চাটারের মূল বক্তব্য সাধারণ মানুষের কাছে সহজ ভাষায় পৌঁছানো দরকার। তিনি বলেন, মানুষ খাদ্য, বাসস্থান, চিকিৎসা, সন্তানদের শিক্ষা—এসব মৌলিক চাহিদার নিশ্চয়তা চায়। “যেকোনো চাটারের প্রথম শর্তই এগুলো। জুলাই চাটার এমনভাবে উপস্থাপন করা উচিত ছিল যাতে সবাই বুঝতে পারে গণভোট কেন প্রয়োজন।”


লক্ষ্য, আইনগত প্রক্রিয়া ও উদ্দেশ্য পরিষ্কার করা দরকার

রিজভী বলেন, গণভোটের লক্ষ্য, আইনি কাঠামো ও কেন এটি প্রয়োজন—এসব বিষয় সরকারকে পরিষ্কারভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে। “এগুলো নিয়ে মানুষ প্রশ্ন করছে, তাই আমরাও সেগুলো তুলে ধরছি।”


জুলাই বিপ্লবের চেতনা: ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ

তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লবের মূল চেতনা হলো—বাংলাদেশকে এমনভাবে গড়ে তোলা যেখানে আর কোনো ফ্যাসিবাদী শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে, বিরোধীদল কথা বলতে পারে এবং নাগরিকরা নিরাপদে থাকতে পারে।


সহিংসতার দায় কার? রিজভীর অভিযোগ

রিজভী অভিযোগ করেন, সরকারের ভুল প্রশাসনে দেশকে অস্থিতিশীল করে তোলা হয়েছে। তিনি বলেন, “পতিত স্বৈরশাসক বিদেশে বসে সহিংসতা ও নাশকতা সংগঠিত করছেন। ঢাকা ও গাজীপুরে অগ্নিসন্ত্রাসে তা পরিষ্কার।”

তিনি আরও দাবি করেন, অগ্নিসন্ত্রাস বিএনপির নয়, বরং আওয়ামী লীগের ‘সংস্কৃতি’। “আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে হরতাল ডাকলে তারা নিজেদের লোক দিয়ে আগুন লাগিয়ে বিএনপিকে দোষ দিত। যুবলীগ-ছাত্রলীগের বহু সদস্য হাতে-নাতে ধরা পড়েছে।”


আগের অগ্নিসন্ত্রাসের দায়ও স্পষ্ট: রিজভী

তার মতে, সাম্প্রতিক অগ্নিসন্ত্রাসই দেখিয়ে দিয়েছে—অতীতের অগ্নিসন্ত্রাসের মূল হোতারা কারা। “এটা তাদের সংস্কৃতি—ফ্যাসিবাদী সংস্কৃতি।”


ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিতের দাবি

রিজভী বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে অবশ্যই ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে। “সবাইকে সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে।”


জোটগুলোর আন্দোলন নিয়ে মন্তব্য

জামায়াতসহ কিছু রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে নির্বাচনের আগে অনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (PR) ব্যবস্থা ও গণভোটের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে রিজভী বলেন, আলোচনাই সমস্যার শ্রেষ্ঠ সমাধান।

তিনি বলেন, “কোনো দল এমন কর্মসূচি দিলে যেন মনে হয় ফিরে আসার পথ নেই—এটা ঠিক নয়। আমাদের দেশে গণতন্ত্র সুদৃঢ় হওয়া দরকার। গণতন্ত্রে ‘ফেরার পথ নেই’—এমন কিছু নেই। আলোচনার সুযোগ থাকে, সমালোচনা থাকে, প্রতিবাদের অধিকার থাকে। কিন্তু যখন ফেরার পথ বন্ধ হয়ে যায়, তখনই গণতন্ত্র ধ্বংস হয়ে যায়।”


রাজনীতি গণভোট বিএনপি রুহুল_কবির_রিজভী জুলাই_চাটার নির্বাচন অগ্নিসন্ত্রাস

জনপ্রিয় সংবাদ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সংঘর্ষে আহত ২০ জন, বাড়িঘর ভাঙচুর

গণভোটে ‘না’ বলার সুযোগ নেই কেন—প্রশ্ন রিজভীর

০৬:৫৪:০৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫

প্রস্তাবিত গণভোটে ‘না’ অপশন না থাকার বিষয়ে রিজভীর প্রশ্ন
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী শনিবার প্রশ্ন তুলেছেন—গণভোটের প্রস্তাবিত চারটি প্রশ্নের যেকোনোটিতে অসহমতি থাকলে ভোটাররা কোথায় ‘না’ লিখবে?


গণভোটের প্রশ্নে স্পষ্ট ‘না’ অপশনের অনুপস্থিতি

রিজভী বলেন, “আমরা দেখেছি চারটি প্রশ্ন আছে, যেখানে ভোটারদের ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ বলতে হবে। কিন্তু ‘না’ বলার কোনো ঘরই নেই। যদি আমি কোনো প্রশ্নে একমত না হই, তাহলে কোথায় ‘না’ লিখব? গণভোট প্রক্রিয়ার এই ঘাটতি এখনও অমীমাংসিত।”

তিনি এসব মন্তব্য করেন রাজধানীর শ্যামলীতে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আয়োজনে অসুস্থ রেডিও শিল্পী আফরোজা নেজামীকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষে আর্থিক সহায়তা প্রদান শেষে।


বিশেষজ্ঞরাও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন

রিজভী জানান, গণভোটের ব্যালটে কোনো প্রশ্ন প্রত্যাখ্যান করার স্পষ্ট জায়গা থাকা জরুরি। “কেউ যদি কোনো প্রশ্নের সঙ্গে একমত না হন, তবে তা প্রত্যাখ্যানের আলাদা দৃশ্যমান ঘর থাকা উচিত। কিন্তু সেই ব্যবস্থা নেই।”


জনগণের জন্য প্রক্রিয়া পরিষ্কার হওয়া জরুরি

তিনি বলেন, তাড়াহুড়ো বা অস্পষ্টভাবে করা কোনো কাজ দীর্ঘস্থায়ী হয় না। “জাতীয় প্রক্রিয়া টেকসই করতে হলে তা হতে হবে স্পষ্ট, শক্তিশালী এবং অন্তত ৯০ শতাংশ মানুষের বোধগম্য। যদি মানুষ গণভোটের উদ্দেশ্যই না বোঝে, তবে পুরো প্রচেষ্টা অর্থহীন হয়ে যাবে।”


জুলাই চাটারের ভাষা সহজ করা উচিত: রিজভী

রিজভীর মতে, জুলাই চাটারের মূল বক্তব্য সাধারণ মানুষের কাছে সহজ ভাষায় পৌঁছানো দরকার। তিনি বলেন, মানুষ খাদ্য, বাসস্থান, চিকিৎসা, সন্তানদের শিক্ষা—এসব মৌলিক চাহিদার নিশ্চয়তা চায়। “যেকোনো চাটারের প্রথম শর্তই এগুলো। জুলাই চাটার এমনভাবে উপস্থাপন করা উচিত ছিল যাতে সবাই বুঝতে পারে গণভোট কেন প্রয়োজন।”


লক্ষ্য, আইনগত প্রক্রিয়া ও উদ্দেশ্য পরিষ্কার করা দরকার

রিজভী বলেন, গণভোটের লক্ষ্য, আইনি কাঠামো ও কেন এটি প্রয়োজন—এসব বিষয় সরকারকে পরিষ্কারভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে। “এগুলো নিয়ে মানুষ প্রশ্ন করছে, তাই আমরাও সেগুলো তুলে ধরছি।”


জুলাই বিপ্লবের চেতনা: ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ

তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লবের মূল চেতনা হলো—বাংলাদেশকে এমনভাবে গড়ে তোলা যেখানে আর কোনো ফ্যাসিবাদী শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে, বিরোধীদল কথা বলতে পারে এবং নাগরিকরা নিরাপদে থাকতে পারে।


সহিংসতার দায় কার? রিজভীর অভিযোগ

রিজভী অভিযোগ করেন, সরকারের ভুল প্রশাসনে দেশকে অস্থিতিশীল করে তোলা হয়েছে। তিনি বলেন, “পতিত স্বৈরশাসক বিদেশে বসে সহিংসতা ও নাশকতা সংগঠিত করছেন। ঢাকা ও গাজীপুরে অগ্নিসন্ত্রাসে তা পরিষ্কার।”

তিনি আরও দাবি করেন, অগ্নিসন্ত্রাস বিএনপির নয়, বরং আওয়ামী লীগের ‘সংস্কৃতি’। “আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে হরতাল ডাকলে তারা নিজেদের লোক দিয়ে আগুন লাগিয়ে বিএনপিকে দোষ দিত। যুবলীগ-ছাত্রলীগের বহু সদস্য হাতে-নাতে ধরা পড়েছে।”


আগের অগ্নিসন্ত্রাসের দায়ও স্পষ্ট: রিজভী

তার মতে, সাম্প্রতিক অগ্নিসন্ত্রাসই দেখিয়ে দিয়েছে—অতীতের অগ্নিসন্ত্রাসের মূল হোতারা কারা। “এটা তাদের সংস্কৃতি—ফ্যাসিবাদী সংস্কৃতি।”


ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিতের দাবি

রিজভী বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে অবশ্যই ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে। “সবাইকে সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে।”


জোটগুলোর আন্দোলন নিয়ে মন্তব্য

জামায়াতসহ কিছু রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে নির্বাচনের আগে অনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (PR) ব্যবস্থা ও গণভোটের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে রিজভী বলেন, আলোচনাই সমস্যার শ্রেষ্ঠ সমাধান।

তিনি বলেন, “কোনো দল এমন কর্মসূচি দিলে যেন মনে হয় ফিরে আসার পথ নেই—এটা ঠিক নয়। আমাদের দেশে গণতন্ত্র সুদৃঢ় হওয়া দরকার। গণতন্ত্রে ‘ফেরার পথ নেই’—এমন কিছু নেই। আলোচনার সুযোগ থাকে, সমালোচনা থাকে, প্রতিবাদের অধিকার থাকে। কিন্তু যখন ফেরার পথ বন্ধ হয়ে যায়, তখনই গণতন্ত্র ধ্বংস হয়ে যায়।”


রাজনীতি গণভোট বিএনপি রুহুল_কবির_রিজভী জুলাই_চাটার নির্বাচন অগ্নিসন্ত্রাস