০৩:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫
নাবিলা চৌধুরী: স্বপ্ন, সংগ্রাম ও সাফল্যের দীপ্ত দীর্ঘ যাত্রা ফিলিপস কালেকশনের মাস্টারপিস বিক্রি নিয়ে তীব্র বিতর্ক ২০২৫ সালের সেরা চলচ্চিত্র টার্গেটের ‘১০–৪’ নীতি: অদ্ভুত আচরণ, নাকি স্মার্ট ব্যবসায়িক কৌশল? আধুনিক সংস্কৃতির স্থবিরতা—সৃজনশীল সংকট নাকি স্বাভাবিক বিবর্তন? ব্যক্তিগত ফাইন্যান্স বৈষম্য বাড়ালেও এর গুরুত্বপূর্ণ সুফল অস্বীকার করা যায় না এআই-চালিত কাভার লেটার এখন আর যোগ্য প্রার্থী চিহ্নিত করতে কার্যকর নয় যুক্তরাষ্ট্রে ধনী মহল্লায় গোপনে গাছ হত্যা—অপরাধ, অর্থনীতি ও আইনের জটিল দ্বন্দ্ব ভারতে মতপ্রকাশের লড়াইয়ে কমেডিয়ানরা এখন ফ্রন্টলাইনে টিভির সবচেয়ে বাজে ড্রামা—সমালোচনার ঝড়ে তছনছ ‘অলস ফেয়ার’

টিভির সবচেয়ে বাজে ড্রামা—সমালোচনার ঝড়ে তছনছ ‘অলস ফেয়ার’

নতুন সিরিজ ‘অলস ফেয়ার’-এর শুরুতেই টানটান উত্তেজনা তৈরি হয়—কাজের জায়গায় তিক্ততা, এক দম্পতির অগোছালো ডিভোর্স কেস, আর শেষে নায়িকা কিম কার্দাশিয়ানের নিজের স্বামীও তাকে ছেড়ে চলে যায়। প্রতিটি দৃশ্যে তাকে শুধু আলাদা আলাদা পোশাকে দুঃখী মুখে দেখা যায়—কখনো স্যুটে, কখনো বোর্ডরুমে, আবার কখনো বিলাসবহুল লাউঞ্জওয়্যার-এ।

অবিশ্বাস্য এক দৃশ্য

দ্বিতীয় পর্ব নাটকটিকে আরও আলোচনায় আনে। মাত্র সাত মিনিটের মাথায় এক চরিত্র এতটাই হতাশ হয়ে পড়ে যে সে অফিসের বারান্দা থেকে নিচে লাফ দেয়। দৃশ্যটি ট্র্যাজেডি না কমেডি—তা বোঝা যায় না। তার সহকর্মী বলেই ওঠে, “আর এক মিনিটও সহ্য করতে পারেনি।” মনে হয়, সমালোচকরাও পারেননি।

সিরিজটি প্রায় সর্বত্রই বিরূপ প্রতিক্রিয়া পেয়েছে। দ্য গার্ডিয়ান শূন্য তারকা দিয়েছে, দ্য টাইমসও শূন্য দিয়েছে। রটেন টমেটোজে সমালোচকদের স্কোর একসময় ছিল ০ শতাংশ—এখন বেড়ে ৪ শতাংশ। ‘ভয়াবহ’, ‘নেতিবাচক’, এমনকি ‘এ পর্যন্ত নির্মিত সবচেয়ে বাজে টিভি ড্রামা’—এমন তকমাও জুটেছে। সমালোচনার ঝড়ই যেন দর্শকের কাছে বেশি বিনোদন দিচ্ছে।

অদ্ভুত চরিত্র, আরও অদ্ভুত নাম

প্রধান চরিত্রগুলোর নাম—আল্লুরা গ্রান্ট (কিম কার্দাশিয়ান), এমেরাল্ড গ্রিন ও ক্যারিংটন লেন। এগুলো রংয়ের শেড বা প্রাপ্তবয়স্ক চলচ্চিত্রের নায়িকার নামের মতো শোনালেও তারা আসলে ডিভোর্স আইনজীবী। বোর্ডরুমে বসে প্রি-নাপ নিয়ে কথা বললেই বোঝা যায়।

এক দৃশ্যে কিম কার্দাশিয়ানকে দেখা যায় ওয়েস্টকোট, টাই ও প্রকাশ্য থঙ পরে—‘গুরুত্বপূর্ণ’ আইনজীবীর সংজ্ঞা যেন এখানেই। তারা শুধু আইনজীবী নন, নিজেদের ‘নারীবাদী আইনজীবী’ দাবি করেন। কারণ, তারা আলাদা আইন-ফার্ম খুলেছেন, আর কথায় কথায় ‘পিতৃতন্ত্র’সহ নানা শব্দ ব্যবহার করেন। কিম বলেন, “জ্ঞানই তালার চাবি”—তারপর আবার বোঝান, “সঠিকভাবে ঘোরালেই হবে।”

সংলাপ—সিরিজের সবচেয়ে দুর্বল দিক

দর্শক স্বাভাবিকভাবেই ভাবতে পারেন—এই সংলাপই কি সেই দামী আইনি জ্ঞান? আসল সমস্যাটি হলো, যেন কেউ স্ক্রিপ্টের জন্য পরিশ্রমই করেনি।

একসময় মর্যাদাপূর্ণ টিভি ড্রামায় বাস্তব জীবনের মতো কথোপকথন থাকত—খারাপ রান্নাঘরে ভালো গল্প। এখনকার সিরিজে রয়েছে বিলাসবহুল কিচেন আইল্যান্ড, কিন্তু সংলাপ ভয়াবহ। এক চরিত্র তো বলে ফেলে—“চল দলবদ্ধতায় দলকে আবার ফিরিয়ে আনি।”

কার্দাশিয়ান যেহেতু সোশ্যাল মিডিয়া ও রিয়্যালিটি শোর চকচকে দুনিয়া থেকে এসেছেন, এই সিরিজেও সেই ভানাভঙ্গি স্পষ্ট। এটি যেন বাস্তব জীবনের অনুকরণ নয়—বরং ইনস্টাগ্রামকে অনুকরণ করা জীবনের অনুকরণ। ফল—ভয়ানক খারাপ।

তবে রান্নাঘরগুলো সত্যিই দারুণ সুন্দর—এটাই সিরিজটির একমাত্র উজ্জ্বল দিক।

সারাক্ষণ রিপোর্ট


#টিভিড্রামা #রিভিউ #কিমকার্দাশিয়ান #অলসফেয়ার #সারাক্ষণরিপোর্ট #বিনোদন #টিভিসিরিজ #সমালোচনা

জনপ্রিয় সংবাদ

নাবিলা চৌধুরী: স্বপ্ন, সংগ্রাম ও সাফল্যের দীপ্ত দীর্ঘ যাত্রা

টিভির সবচেয়ে বাজে ড্রামা—সমালোচনার ঝড়ে তছনছ ‘অলস ফেয়ার’

১২:২১:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫

নতুন সিরিজ ‘অলস ফেয়ার’-এর শুরুতেই টানটান উত্তেজনা তৈরি হয়—কাজের জায়গায় তিক্ততা, এক দম্পতির অগোছালো ডিভোর্স কেস, আর শেষে নায়িকা কিম কার্দাশিয়ানের নিজের স্বামীও তাকে ছেড়ে চলে যায়। প্রতিটি দৃশ্যে তাকে শুধু আলাদা আলাদা পোশাকে দুঃখী মুখে দেখা যায়—কখনো স্যুটে, কখনো বোর্ডরুমে, আবার কখনো বিলাসবহুল লাউঞ্জওয়্যার-এ।

অবিশ্বাস্য এক দৃশ্য

দ্বিতীয় পর্ব নাটকটিকে আরও আলোচনায় আনে। মাত্র সাত মিনিটের মাথায় এক চরিত্র এতটাই হতাশ হয়ে পড়ে যে সে অফিসের বারান্দা থেকে নিচে লাফ দেয়। দৃশ্যটি ট্র্যাজেডি না কমেডি—তা বোঝা যায় না। তার সহকর্মী বলেই ওঠে, “আর এক মিনিটও সহ্য করতে পারেনি।” মনে হয়, সমালোচকরাও পারেননি।

সিরিজটি প্রায় সর্বত্রই বিরূপ প্রতিক্রিয়া পেয়েছে। দ্য গার্ডিয়ান শূন্য তারকা দিয়েছে, দ্য টাইমসও শূন্য দিয়েছে। রটেন টমেটোজে সমালোচকদের স্কোর একসময় ছিল ০ শতাংশ—এখন বেড়ে ৪ শতাংশ। ‘ভয়াবহ’, ‘নেতিবাচক’, এমনকি ‘এ পর্যন্ত নির্মিত সবচেয়ে বাজে টিভি ড্রামা’—এমন তকমাও জুটেছে। সমালোচনার ঝড়ই যেন দর্শকের কাছে বেশি বিনোদন দিচ্ছে।

অদ্ভুত চরিত্র, আরও অদ্ভুত নাম

প্রধান চরিত্রগুলোর নাম—আল্লুরা গ্রান্ট (কিম কার্দাশিয়ান), এমেরাল্ড গ্রিন ও ক্যারিংটন লেন। এগুলো রংয়ের শেড বা প্রাপ্তবয়স্ক চলচ্চিত্রের নায়িকার নামের মতো শোনালেও তারা আসলে ডিভোর্স আইনজীবী। বোর্ডরুমে বসে প্রি-নাপ নিয়ে কথা বললেই বোঝা যায়।

এক দৃশ্যে কিম কার্দাশিয়ানকে দেখা যায় ওয়েস্টকোট, টাই ও প্রকাশ্য থঙ পরে—‘গুরুত্বপূর্ণ’ আইনজীবীর সংজ্ঞা যেন এখানেই। তারা শুধু আইনজীবী নন, নিজেদের ‘নারীবাদী আইনজীবী’ দাবি করেন। কারণ, তারা আলাদা আইন-ফার্ম খুলেছেন, আর কথায় কথায় ‘পিতৃতন্ত্র’সহ নানা শব্দ ব্যবহার করেন। কিম বলেন, “জ্ঞানই তালার চাবি”—তারপর আবার বোঝান, “সঠিকভাবে ঘোরালেই হবে।”

সংলাপ—সিরিজের সবচেয়ে দুর্বল দিক

দর্শক স্বাভাবিকভাবেই ভাবতে পারেন—এই সংলাপই কি সেই দামী আইনি জ্ঞান? আসল সমস্যাটি হলো, যেন কেউ স্ক্রিপ্টের জন্য পরিশ্রমই করেনি।

একসময় মর্যাদাপূর্ণ টিভি ড্রামায় বাস্তব জীবনের মতো কথোপকথন থাকত—খারাপ রান্নাঘরে ভালো গল্প। এখনকার সিরিজে রয়েছে বিলাসবহুল কিচেন আইল্যান্ড, কিন্তু সংলাপ ভয়াবহ। এক চরিত্র তো বলে ফেলে—“চল দলবদ্ধতায় দলকে আবার ফিরিয়ে আনি।”

কার্দাশিয়ান যেহেতু সোশ্যাল মিডিয়া ও রিয়্যালিটি শোর চকচকে দুনিয়া থেকে এসেছেন, এই সিরিজেও সেই ভানাভঙ্গি স্পষ্ট। এটি যেন বাস্তব জীবনের অনুকরণ নয়—বরং ইনস্টাগ্রামকে অনুকরণ করা জীবনের অনুকরণ। ফল—ভয়ানক খারাপ।

তবে রান্নাঘরগুলো সত্যিই দারুণ সুন্দর—এটাই সিরিজটির একমাত্র উজ্জ্বল দিক।

সারাক্ষণ রিপোর্ট


#টিভিড্রামা #রিভিউ #কিমকার্দাশিয়ান #অলসফেয়ার #সারাক্ষণরিপোর্ট #বিনোদন #টিভিসিরিজ #সমালোচনা