০৩:২২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫
শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড নাবিলা চৌধুরী: স্বপ্ন, সংগ্রাম ও সাফল্যের দীপ্ত দীর্ঘ যাত্রা ফিলিপস কালেকশনের মাস্টারপিস বিক্রি নিয়ে তীব্র বিতর্ক ২০২৫ সালের সেরা চলচ্চিত্র টার্গেটের ‘১০–৪’ নীতি: অদ্ভুত আচরণ, নাকি স্মার্ট ব্যবসায়িক কৌশল? আধুনিক সংস্কৃতির স্থবিরতা—সৃজনশীল সংকট নাকি স্বাভাবিক বিবর্তন? ব্যক্তিগত ফাইন্যান্স বৈষম্য বাড়ালেও এর গুরুত্বপূর্ণ সুফল অস্বীকার করা যায় না এআই-চালিত কাভার লেটার এখন আর যোগ্য প্রার্থী চিহ্নিত করতে কার্যকর নয় যুক্তরাষ্ট্রে ধনী মহল্লায় গোপনে গাছ হত্যা—অপরাধ, অর্থনীতি ও আইনের জটিল দ্বন্দ্ব ভারতে মতপ্রকাশের লড়াইয়ে কমেডিয়ানরা এখন ফ্রন্টলাইনে

এআই-চালিত কাভার লেটার এখন আর যোগ্য প্রার্থী চিহ্নিত করতে কার্যকর নয়

কাভার লেটারের আগের ভূমিকা

একটি ভালো কাভার লেটার সাধারণত একজন প্রার্থীর সিভি এবং নির্দিষ্ট চাকরির চাহিদার মধ্যে সংযোগ তৈরি করে। এটি নিয়োগদাতাদের সাহায্য করত এমন প্রার্থী চিহ্নিত করতে, যাদের অভিজ্ঞতা সরাসরি মিল না থাকলেও দক্ষতা বা মনোভাব দিয়ে যোগ্যতার ইঙ্গিত দিত। পাশাপাশি এটি ছিল এক ধরনের সংকেত—প্রার্থী যে পদটির প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছেন এবং নিজে সময় নিয়ে আবেদন প্রস্তুত করেছেন, তা বোঝানোর একটি উপায়।

কিন্তু এই প্রচলিত ধারণা এখন বদলে গেছে।


এআই এসে বদলে দিল কাভার লেটার লেখার ধরণ

বড় ভাষা মডেল (LLM) আসার পর চাকরিপ্রার্থীরা বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত প্রতিটি চাহিদার সঙ্গে মিল রেখে খুব সহজেই নিখুঁত কাভার লেটার তৈরি করতে পারছেন—মাত্র এক ক্লিকে। এর ফলে সবাই যত্নশীল ও পরিশ্রমী বলে মনে হচ্ছে এবং দিনে শত শত আবেদন করাও সম্ভব হচ্ছে।

ডার্টমাউথ কলেজের আনা’ইস গালদিন এবং প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের জেসি সিলবার্টের নতুন গবেষণা (Freelancer.com-এর ডেটা ব্যবহার করে) দেখাচ্ছে, এই পরিবর্তন শ্রমবাজারে কী ধরনের প্রভাব ফেলছে।


কাভার লেটারের দৈর্ঘ্য বেড়ে গেছে

গবেষণায় দেখা গেছে, এআই আসার পর কাভার লেটারের দৈর্ঘ্য উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে গেছে।

এআই-এর আগের সময়ে মধ্যমা দৈর্ঘ্য ছিল ৭৯ শব্দ।
এআই-এর পরে তা বেড়ে ১০৪ শব্দ হয়েছে।
Freelancer.com-এর এআই টুল দিয়ে তৈরি কাভার লেটারের মধ্যমা দৈর্ঘ্য ১৫৯ শব্দ—মানুষের লেখা লেটারের দ্বিগুণেরও বেশি।

এর অর্থ হলো, এআই এমন কাভার লেটার তৈরি করছে যা আরও দীর্ঘ, আরও পরিশীলিত এবং দেখতে বেশি পরিশ্রমসাধ্য।


নিয়োগদাতারা এখন আর লিখিত মান নিয়ে আগ্রহী নন

এখনকার বড় পরিবর্তন হলো—নিয়োগকর্তারা আর কাভার লেটারের মান বা লিখিত “উদ্যম”কে গুরুত্ব দিচ্ছেন না।

আগে কিছু আবেদন খুব স্পষ্টভাবে যত্ন নিয়ে লেখা মনে হত, যা ভালো প্রার্থীর ইঙ্গিত দিত। তাই প্রতিটি কাভার লেটার মনোযোগ দিয়ে পড়া হত।
কিন্তু এখন প্রায় সব আবেদনই যত্নসহকারে লেখা দেখায়—এআই-এর কারণে—ফলে কোনো আবেদনই আর আলাদা করে নজর কাড়ছে না।

গবেষকেরা এআই দিয়ে প্রতিটি কাভার লেটারকে ৯টি মানদণ্ডে স্কোর করেন, যেমন—প্রার্থী বিজ্ঞাপন পড়েছেন কি না, ভাষা স্পষ্ট কি না, লেখার গঠন ঠিক আছে কি না। স্কোর ছিল ০ থেকে ১৮-এর মধ্যে।

এআই-এর আগের মধ্যমা স্কোর ছিল ৩.৯।
এআই-এর পরে মধ্যমা স্কোর প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।

এর মানে—এআই সবার আবেদনপত্র একইভাবে উন্নত করে দিচ্ছে, ফলে ভালো ও দুর্বল প্রার্থীর মধ্যে পার্থক্য মুছে যাচ্ছে।


এর অর্থনৈতিক প্রভাব

এআই আসার আগে একটি সুন্দর, যত্নবান আবেদনপত্র প্রার্থীর আয় বাড়াতে পারত—একটি কাজের জন্য গড়ে ২৬ ডলার পর্যন্ত। যেখানে প্ল্যাটফর্মে মধ্যমা আয় ১০০ ডলার, সেখানে এটি ছিল বড় সুবিধা।

এআই আসার পরে এই বাড়তি সুবিধা পুরোপুরি হারিয়ে গেছে।

গালদিন এবং সিলবার্টের হিসাবে দেখা যায়, প্ল্যাটফর্মে মজুরি এখন প্রায় ৫% কম এবং নিয়োগ ১.৫% কম হয়েছে।

কারণ—নিয়োগদাতারা ভালো প্রার্থী আলাদা করে চেনার উপায় পাচ্ছেন না, ফলে নতুন কর্মীদের সবাইকে কম মজুরি দিচ্ছেন। এতে মোট প্রার্থীর মানও কমে যাচ্ছে।
ব্যবসার দৃষ্টিতে কম মজুরি দেওয়ায় খরচ কমছে, তাই নিয়োগদাতারা লাভবান।
কিন্তু কর্মীদের মোট ক্ষতি নিয়োগদাতাদের লাভের চেয়ে বেশি।


#এআই_চাকরি #কাভার_লেটার_প্রভাব #ডিজিটাল_শ্রমবাজার


আপনি চাইলে আমি এটিকে নিউজ রিপোর্ট, বিশ্লেষণধর্মী লেখা বা আরও সংক্ষিপ্ত সংস্করণেও রূপান্তর করে দিতে পারি।

জনপ্রিয় সংবাদ

শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড

এআই-চালিত কাভার লেটার এখন আর যোগ্য প্রার্থী চিহ্নিত করতে কার্যকর নয়

১২:৩৯:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫

কাভার লেটারের আগের ভূমিকা

একটি ভালো কাভার লেটার সাধারণত একজন প্রার্থীর সিভি এবং নির্দিষ্ট চাকরির চাহিদার মধ্যে সংযোগ তৈরি করে। এটি নিয়োগদাতাদের সাহায্য করত এমন প্রার্থী চিহ্নিত করতে, যাদের অভিজ্ঞতা সরাসরি মিল না থাকলেও দক্ষতা বা মনোভাব দিয়ে যোগ্যতার ইঙ্গিত দিত। পাশাপাশি এটি ছিল এক ধরনের সংকেত—প্রার্থী যে পদটির প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছেন এবং নিজে সময় নিয়ে আবেদন প্রস্তুত করেছেন, তা বোঝানোর একটি উপায়।

কিন্তু এই প্রচলিত ধারণা এখন বদলে গেছে।


এআই এসে বদলে দিল কাভার লেটার লেখার ধরণ

বড় ভাষা মডেল (LLM) আসার পর চাকরিপ্রার্থীরা বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত প্রতিটি চাহিদার সঙ্গে মিল রেখে খুব সহজেই নিখুঁত কাভার লেটার তৈরি করতে পারছেন—মাত্র এক ক্লিকে। এর ফলে সবাই যত্নশীল ও পরিশ্রমী বলে মনে হচ্ছে এবং দিনে শত শত আবেদন করাও সম্ভব হচ্ছে।

ডার্টমাউথ কলেজের আনা’ইস গালদিন এবং প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের জেসি সিলবার্টের নতুন গবেষণা (Freelancer.com-এর ডেটা ব্যবহার করে) দেখাচ্ছে, এই পরিবর্তন শ্রমবাজারে কী ধরনের প্রভাব ফেলছে।


কাভার লেটারের দৈর্ঘ্য বেড়ে গেছে

গবেষণায় দেখা গেছে, এআই আসার পর কাভার লেটারের দৈর্ঘ্য উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে গেছে।

এআই-এর আগের সময়ে মধ্যমা দৈর্ঘ্য ছিল ৭৯ শব্দ।
এআই-এর পরে তা বেড়ে ১০৪ শব্দ হয়েছে।
Freelancer.com-এর এআই টুল দিয়ে তৈরি কাভার লেটারের মধ্যমা দৈর্ঘ্য ১৫৯ শব্দ—মানুষের লেখা লেটারের দ্বিগুণেরও বেশি।

এর অর্থ হলো, এআই এমন কাভার লেটার তৈরি করছে যা আরও দীর্ঘ, আরও পরিশীলিত এবং দেখতে বেশি পরিশ্রমসাধ্য।


নিয়োগদাতারা এখন আর লিখিত মান নিয়ে আগ্রহী নন

এখনকার বড় পরিবর্তন হলো—নিয়োগকর্তারা আর কাভার লেটারের মান বা লিখিত “উদ্যম”কে গুরুত্ব দিচ্ছেন না।

আগে কিছু আবেদন খুব স্পষ্টভাবে যত্ন নিয়ে লেখা মনে হত, যা ভালো প্রার্থীর ইঙ্গিত দিত। তাই প্রতিটি কাভার লেটার মনোযোগ দিয়ে পড়া হত।
কিন্তু এখন প্রায় সব আবেদনই যত্নসহকারে লেখা দেখায়—এআই-এর কারণে—ফলে কোনো আবেদনই আর আলাদা করে নজর কাড়ছে না।

গবেষকেরা এআই দিয়ে প্রতিটি কাভার লেটারকে ৯টি মানদণ্ডে স্কোর করেন, যেমন—প্রার্থী বিজ্ঞাপন পড়েছেন কি না, ভাষা স্পষ্ট কি না, লেখার গঠন ঠিক আছে কি না। স্কোর ছিল ০ থেকে ১৮-এর মধ্যে।

এআই-এর আগের মধ্যমা স্কোর ছিল ৩.৯।
এআই-এর পরে মধ্যমা স্কোর প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।

এর মানে—এআই সবার আবেদনপত্র একইভাবে উন্নত করে দিচ্ছে, ফলে ভালো ও দুর্বল প্রার্থীর মধ্যে পার্থক্য মুছে যাচ্ছে।


এর অর্থনৈতিক প্রভাব

এআই আসার আগে একটি সুন্দর, যত্নবান আবেদনপত্র প্রার্থীর আয় বাড়াতে পারত—একটি কাজের জন্য গড়ে ২৬ ডলার পর্যন্ত। যেখানে প্ল্যাটফর্মে মধ্যমা আয় ১০০ ডলার, সেখানে এটি ছিল বড় সুবিধা।

এআই আসার পরে এই বাড়তি সুবিধা পুরোপুরি হারিয়ে গেছে।

গালদিন এবং সিলবার্টের হিসাবে দেখা যায়, প্ল্যাটফর্মে মজুরি এখন প্রায় ৫% কম এবং নিয়োগ ১.৫% কম হয়েছে।

কারণ—নিয়োগদাতারা ভালো প্রার্থী আলাদা করে চেনার উপায় পাচ্ছেন না, ফলে নতুন কর্মীদের সবাইকে কম মজুরি দিচ্ছেন। এতে মোট প্রার্থীর মানও কমে যাচ্ছে।
ব্যবসার দৃষ্টিতে কম মজুরি দেওয়ায় খরচ কমছে, তাই নিয়োগদাতারা লাভবান।
কিন্তু কর্মীদের মোট ক্ষতি নিয়োগদাতাদের লাভের চেয়ে বেশি।


#এআই_চাকরি #কাভার_লেটার_প্রভাব #ডিজিটাল_শ্রমবাজার


আপনি চাইলে আমি এটিকে নিউজ রিপোর্ট, বিশ্লেষণধর্মী লেখা বা আরও সংক্ষিপ্ত সংস্করণেও রূপান্তর করে দিতে পারি।