সমকালের একটি শিরোনাম “শেখ হাসিনাকে ফেরত চায় ঢাকা, দিল্লির সাদামাটা প্রতিক্রিয়া”
মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দণ্ড পাওয়া ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তাঁর সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালকে ফিরিয়ে দিতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। রায়ের বিষয়ে ভারত পক্ষে-বিপক্ষে কিছু বলেনি। শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে দেবে কিনা–এ বিষয়েও গত এক বছরের মতোই নীরব রয়েছে। দুই দেশের বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তিতে ফেরত না দেওয়ার সুযোগ রয়েছে ভারতের। তবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জানিয়েছেন, শেখ হাসিনাকে ফেরাতে আবারও চিঠি দেওয়া হবে দিল্লিকে।
গতকাল সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামালকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন জুলাই গণহত্যার দায়ে। এর আগে গত ২ জুলাই আদালত অবমাননার দায়ে শেখ হাসিনাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন ট্রাইব্যুনাল।
গতকালের রায়ে শেখ হাসিনা একজন অভিযুক্ত থেকে পলাতক ফাঁসির আসামিতে পরিণত হয়েছেন। মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পর বিবৃতিতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের দ্বিতীয় কোনো দেশ আশ্রয় দিলে তা হবে অবন্ধুসুলভ আচরণ এবং ন্যায়বিচারের প্রতি অবজ্ঞা। ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই, তারা যেন অবিলম্বে দণ্ডপ্রাপ্ত এই দুই ব্যক্তিকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করে। দুই দেশের মধ্যে বিরাজমান প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুসারে এটি ভারতের জন্য অবশ্য পালনীয় দায়িত্ব।
শেখ হাসিনার সাজা কার্যকরে ভারতের কাছে ফেরত চাওয়া প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাংলাদেশের অবস্থান জানিয়ে চিঠি আজ রাতেই (সোমবার) বা কাল (মঙ্গলবার) সকালে, যেভাবেই হোক, পাঠানো হবে।’
শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে গত বছরের ডিসেম্বরে চিঠি দিয়েছিল বাংলাদেশ। ভারত প্রাপ্তি স্বীকার করলেও, চিঠির জবাব দেয়নি। আশ্রয় সাময়িক বললেও, তাঁকে ফেরত দেওয়ার বিষয়ে কথা বলেনি। এ প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এখন পরিস্থিতি ভিন্ন। বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে এবং তারা দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। ফেরত দেওয়ার অনুরোধ ভারত-বাংলাদেশের বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় প্রত্যর্পণ চুক্তির অধীনেই জানানো হবে।
আজকের পত্রিকার একটি শিরোনাম”হাসিনার রায়ে ১৬ বছরের গুম-খুনের শিকারদের ক্ষোভ কিছুটা প্রশমিত হবে: বিএনপি”
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড হওয়ায় ১৬ বছরের গুম-খুনের শিকারদের ক্ষোভ কিছুটা প্রশমিত হবে বলে মনে করছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। গতকাল সোমবার রায়ের পর দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায় এমনটি জানানো হয়।
আলোচনায় এই রায় নিয়ে দলটি একটি লিখিত প্রস্তাব দিয়েছে। তা আজকের পত্রিকার পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো।
লিখিত প্রস্তাবে বলা হয়, দীর্ঘ ষোলো বছরের ফ্যাসিবাদবিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ২০২৪ এর ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়েছে। এই দীর্ঘ রক্তাক্ত সংগ্রামে শতসহস্র বিরোধীদলীয় রাজনৈতিক নেতা-কর্মীসহ সমাজের সর্বস্তরের অসংখ্য নাগরিক গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, মামলা-হামলা, নির্যাতন-নিপীড়ন ও অবর্ণনীয় দুর্ভোগের শিকার হয়েছে।
অবশেষে ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতা-শ্রমিক, নারী-শিশুসহ সহস্রাধিক নাগরিকের আত্মদান, অন্ধত্ব, চিরপঙ্গুত্ব বরণের মধ্য দিয়ে ইতিহাসের জঘন্যতম ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ও আওয়ামী বাকশালী শাসনামলের পতন হয়েছে। সারা বিশ্বের জনমত এবং বাংলাদেশের জনগণের দাবি ও প্রত্যাশা ছিল, যেন পতিত স্বৈরাচার ও তার দোসরদের মানবতাবিরোধী ও নৃশংস, জঘন্য হত্যাকাণ্ড এবং গণহত্যায় অপরাধের বিচার করা হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রেখে আজকে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ও তার দুই দোসরের বিরুদ্ধে রায় ঘোষিত হয়েছে।
বণিকবার্তার একটি শিরোনাম “জনগণের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি ভারতের”
শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার পর একটি বিবৃতি দিয়েছে ভারত সরকার। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ রায়টি ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পর দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে বিবৃতিটি প্রকাশ করে।
এতে বলা হয়, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ঘিরে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ঘোষিত রায় ভারত লক্ষ করেছে। ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী হিসেবে বাংলাদেশের জনগণের শান্তি, গণতন্ত্র, অন্তর্ভুক্তি ও স্থিতিশীলতাসহ সামগ্রিক কল্যাণের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ ভারত। এ লক্ষ্য অর্জনে আমরা সব পক্ষের সঙ্গে গঠনমূলকভাবে যুক্ত থাকব।’
এদিকে ভারতে অবস্থান করা মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে ফেরত পাঠাতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। গত বছরের ডিসেম্বরেও শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণে ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল অন্তর্বর্তী সরকার। তবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গতকালের বিবৃতিতে এ বিষয়ে কিছু উল্লেখ করা হয়নি।
মানবজমিনের একটি শিরোন “কী ঘটেছিল জানালেন মেহজাবীন”
সময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে ২৭ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও হুমকির অভিযোগ উঠেছে। আমিরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি মেহজাবীন ও তার ভাই আলিসান চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলাটি করেন। আদালতে হাজির না হওয়ায় গত ১০ই নভেম্বর তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। গত রোববার সন্ধ্যায় তারা ঢাকার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিচারক তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। এ ছাড়া, গতকাল সকালে এক দীর্ঘ পোস্টে মেহজাবীন জানিয়েছেন আসলে তার সঙ্গে কী ঘটেছে। তিনি জানান, ২০২৫ সালের মার্চ মাসে দায়ের করা এই মামলা সম্পর্কে তিনি গত ৯ মাসে কিছুই জানতেন না। কারণ, অভিযোগকারী তার সঠিক ফোন নম্বর বা ঠিকানা পুলিশ বা আদালতকে দেননি। তিনি লিখেন, অভিযোগকারী দাবি করেন- ২০১৬ সাল থেকে আমার সঙ্গে ব্যবসা করছিলেন। কিন্তু তিনি একটি মেসেজ, হোয়াটসঅ্যাপ বা আমার নম্বরে পাঠানো উত্তর, এমনকি একটি স্ক্রিনশটও দেখাতে পারেননি। তিনি ২৭ লাখ টাকা দেয়ার দাবি করলেও কোনো ব্যাংক লেনদেন, চেক, বিকাশ লেনদেন, লিখিত চুক্তি, রসিদ বা কোনো সাক্ষীর প্রমাণ দেখাতে পারেননি। একটি কাগজপত্রও নেই। তার দাবি অনুযায়ী, ১১ই ফেব্রুয়ারি আমি তাকে চোখ বেঁধে হাতিরঝিলের একটি রেস্টুরেন্টে নিয়ে গিয়েছিলাম। গত ৯ মাসে তিনি রেস্টুরেন্ট বা রাস্তার এক সেকেন্ডেরও সিসিটিভি ফুটেজ বা কোনো সাক্ষী দেখাতে পারেননি। কোনো পুলিশ স্টেশনের ফোন কল বা কোনো কোর্টের নোটিশ বা ডকুমেন্ট পাইনি। একটি নোটিশ পেলেও আমি আগেই আইনি ব্যবস্থা নিতাম। মেহজাবীন জানান, মামলার কোনো ভিত্তি না থাকলেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানার খবর পেয়েই তিনি আইনি প্রক্রিয়া মেনে জামিন নিয়েছেন।
সারাক্ষণ ডেস্ক 


















