আবু ধাবি খুব শিগগিরই টালাবাত অ্যাপের মাধ্যমে ড্রোন ব্যবহার করে খাবার ও মুদি পণ্য ডেলিভারি ব্যবস্থা চালু করতে যাচ্ছে। পরীক্ষামূলক উড়ান ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে, আর কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই গ্রাহকরা এই নতুন সেবা ব্যবহার করতে পারবেন।
ড্রোন ডেলিভারি কীভাবে কাজ করবে
টালাবাত অ্যাপ থেকে অর্ডার করলেই ড্রোন নির্দিষ্ট ড্রপ-অফ স্টেশনে খাবার পৌঁছে দেবে। কেটু কোম্পানির (K2) স্ট্র্যাটেজি বিভাগের ভাইস-প্রেসিডেন্ট ওয়ালিদ আল-ব্লুশি জানান, ড্রোনগুলো টালাবাত-কিচেন বা রেস্টুরেন্ট থেকে উড়ে এসে এসব স্টেশনে খাবার নামাবে। বর্তমানে শহরের বিভিন্ন স্থানে একাধিক ড্রপ-অফ স্টেশন স্থাপনের পরিকল্পনা চলছে।
ড্রপ-অফ স্টেশন ব্যবহারের নিয়ম
ব্যবহারকারীরা একটি কোড—যেমন কিউআর কোড বা পাসওয়ার্ড—ব্যবহার করে তাদের অর্ডার সংগ্রহ করতে পারবেন। প্রতিটি স্টেশন নিরাপদভাবে তৈরি, যাতে খাদ্য পণ্য ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
পরীক্ষামূলক উড়ান ও প্রস্তুতি
ইতোমধ্যে দুটি ড্রোন আবু ধাবি অটোনোমাস উইকের ড্রিফট-এক্স প্রদর্শনীতে পরীক্ষামূলক ফ্লাইট পরিচালনা করছে। ড্রিফট-এক্স চলাকালীনই টালাবাতের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি সই হবে, জানান আল-ব্লুশি। তাঁর দাবি, কেটু খুব দ্রুতগতিতে কাজ করে—৪৫ দিনের কম সময়ে সম্পূর্ণ কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব।

ঘরবাড়িতে সরাসরি ডেলিভারি নয়
এ মুহূর্তে বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্টের ছাদে ড্রোন নামানোর সম্ভাবনা নিয়ে কোনো গবেষণা হয়নি। তাই প্রাথমিকভাবে শহরের বিভিন্ন স্থানে ড্রপ-অফ স্টেশনই ব্যবহার করা হবে।
প্যাকেজিং ও পরিবেশগত টেকসই নকশা
আবু ধাবির আবহাওয়ার কথা বিবেচনা করে ড্রোন ডেলিভারির প্যাকেজিং বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে, যাতে তাপমাত্রা ও আর্দ্রতার প্রভাব খাবারে না পড়ে।
ড্রোনের সক্ষমতা
বর্তমান পরীক্ষামূলক ড্রোনগুলো ১০ থেকে ২০ কেজি পর্যন্ত ওজন বহন করতে পারে এবং ৫ থেকে ১০ কিমি পর্যন্ত উড়তে সক্ষম। এটি প্রুফ-অফ-কনসেপ্ট (POC) ধাপ; ভবিষ্যতে ক্ষমতা আরও বাড়ানো হবে।
নুন-এর সঙ্গে কেটুর পূর্ববর্তী প্রকল্প
কেটু ইতোমধ্যে নুন কোম্পানির সঙ্গে স্বয়ংক্রিয় ভূমি-ভিত্তিক ডেলিভারি পরীক্ষা করেছে। নুন-ওয়্যারহাউস থেকে আল রাহা বিচ পর্যন্ত এই সেবা চালু রয়েছে। তবে টালাবাত প্রকল্প কেটুর প্রথম আকাশভিত্তিক ডেলিভারি উদ্যোগ।
পরবর্তী ধাপ: অনুমোদন ও বিধিনিষেধ
ড্রিফট-এক্স শেষ হওয়ার পর আইটিসি আবু ধাবি মোবিলিটি বিভাগের সঙ্গে আরও পরীক্ষা করা হবে। তাদের অনুমোদনের পর ড্রোন ডেলিভারি শহরের লজিস্টিক ব্যবস্থায় যুক্ত হবে।

নিরাপত্তা ও আকাশপথ ব্যবস্থাপনা
সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো আকাশপথ নিয়ন্ত্রণ। ফেডারেল GCAA-এর সঙ্গে আলোচনা চলছে, যাতে ড্রোন উড়ানে কোনো বাধা না থাকে এবং আইনগত সব নিয়ম মানা হয়। ওয়ালিদ আল-ব্লুশি আশাবাদী যে আবু ধাবি দ্রুতই এটি বাস্তবায়ন করবে।
ড্রোন ডেলিভারির ভবিষ্যৎ
খরচ এখনো হিসাবের মধ্যে থাকলেও আল-ব্লুশির মতে, ড্রোন ও স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তিই ভবিষ্যতের পরিবহন ব্যবস্থা। আকাশে, স্থলে বা সমুদ্রে—স্বয়ংক্রিয় রোবটই ভবিষ্যতের লজিস্টিক খাতের চিত্র বদলে দেবে। মানুষও খুব সহজেই এ প্রযুক্তির সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারবে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















