এই শীতল ঋতুর সন্ধ্যায় উপভোগের জন্য আদর্শ এক উষ্ণ, স্বাদে ভরপুর মেনু—একটি সতেজ সালাদ, হালকা কিন্তু ঘন স্বাদের ফরাসি ফিশ স্ট্যু এবং শেষে একটি মোলায়েম টার্ট।
প্রারম্ভিক পদ: বিট ও শসার সতেজ সালাদ
শীতল দিনে শুরুতে সতেজতার ছোঁয়া দিতে বিট ও শসার সালাদ দারুণ মানিয়ে যায়।
ঝাঁঝালো মাস্টার্ড ভিনিগারেট, তার সাথে ট্যারাগন ও ডিলের সুগন্ধ—এই সালাদ প্রথম কামড়েই জাগিয়ে তোলে রুচি।
গ্রীনহাউসের শসা—ছোট পার্সিয়ান বা লম্বা ইংরেজি ধরনের—গরমকালের সবজি শেষ হয়ে যাওয়ার পরও সালাদের প্রয়োজন মেটাতে সাহায্য করে।
বিট সারা বছরই পাওয়া যায়, আর মাঝারি আকারের বিট রান্না করাও সহজ। তবে সেগুলো সেদ্ধ বা বেক হতে এক ঘণ্টা পর্যন্ত লেগে যায়।
যদি আগে থেকে বিট রান্না করে রাখা যায়, তাহলে প্রয়োজনের সময় সহজেই ব্যবহার করা যায়। নরম হয়েছে কি না তা চেক করতে ছুরির ডগা বিটে ঢুকিয়ে দেখলেই হবে।
রান্নার পর খোসা ছাড়িয়ে বিট ও শসাকে আলাদা-আলাদাভাবে মেশান, যাতে বিটের রঙ শসায় না লাগে।
লেটুস পাতার ওপর পাশাপাশি সাজিয়ে পরিবেশন করলে দেখতে যেমন সুন্দর লাগে, খেতেও তেমনি সতেজ।
মূল পদ: ফরাসি ঐতিহ্যের উষ্ণ ফিশ স্ট্যু
শীতল রাতে উষ্ণতা দিতে ফিশ স্ট্যুর মতো আর কিছু নেই। ফ্রান্সের উত্তর আটলান্টিক উপকূলে জেলেরা দিনের শেষে বেঁচে থাকা ছোট মাছ, কাটার অংশ, কিছু ঝিনুক বা অবশিষ্ট সামুদ্রিক খাবার দিয়ে দ্রুত এই স্ট্যু তৈরি করতেন।
ওয়াইন আর কয়েকটি হার্ব দিয়ে তৈরি সেই মন ভরানো খাবার পরবর্তীকালে “লা শদ্রে”—নামে পরিচিত হয়—যে পাত্রে রান্না হতো, তার নাম ছিল ‘শদিয়ের’।
পরবর্তীতে এটি কানাডার উপকূল হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছে “চাউডার” নামে জনপ্রিয় হয়—বিশেষ করে কড ফিশ দিয়ে রান্না করা। তারপর ধীরে ধীরে এটি আরও ঘন, দুধ-ভিত্তিক চাউডারে পরিণত হয়।
উত্তর ফ্রান্সে আজও লা শদ্রে অত্যন্ত জনপ্রিয়। এখানে খাবারটি সাধারণত সাদা ওয়াইন, প্রচুর মাখন ও ক্রিম দিয়ে তৈরি হয়।
আধুনিক রেসিপিতে চার ধরনের মাছের ফিলে, স্কুইড ও কিছু ঝিনুক বা কাঁকড়া ব্যবহার করা হয়।
কীভাবে তৈরি হয় এই স্ট্যু
প্রথমে ধীরে ধীরে পেঁয়াজ, লিক, শ্যালট ও রসুন ভাজা হয়।
এরপর সাদা ওয়াইন, থাইম, পার্সলে, তেজপাতা এবং পানি যোগ করে হালকা সবজি-স্টক বানানো হয়।
এই স্টকে মাছগুলো আস্তে আস্তে সেদ্ধ হয়।
এই সংস্করণে রকফিশ, কড, মাশেল ও স্কুইড ব্যবহার করা হয়েছে।
রান্নার সময় মাছ কিছুটা ভেঙে যায়, স্কুইড ও মাশেল স্ট্যুতে গভীর লোনাজাত সুবাস যোগ করে।
ফলাফল—হালকা কিন্তু দারুণ স্বাদে ভরা এক বাটি স্ট্যু।
অনেকে স্ট্যুতে আলু যোগ করেন, আবার কেউ আলাদা করে সেদ্ধ আলু পরিবেশন করতে পছন্দ করেন।
কারও কারও রেসিপিতে শেষ মুহূর্তে ক্রিম যোগ করা হয়, তবে এই সংস্করণে পরিবেশনের সময় প্রতিটি বাটিতে ক্রেম ফ্রেশ যোগ করা হয়।
উপর থেকে ছড়িয়ে দেওয়া হয় কুচি করা পার্সলে।
বাগেট থেকে তৈরি মাখন-মাখানো খসখসে ক্রুটন—এই স্ট্যুর সঙ্গে প্রায় বাধ্যতামূলক।
মিষ্টান্ন: সুইস ঐতিহ্যের আখরোট–কারামেল টার্ট
ডেসার্টে রয়েছে এক বিশেষ টার্ট, যার শিকড় সুইজারল্যান্ডের এনগাডিন অঞ্চলে।
তিনি জানান, ফরাসি বেকারিতে কাজ করার সময় শরতে এই টার্ট ছিল খুব জনপ্রিয়।
এই টার্টে আখরোটের বদলে পেকান বাদাম ব্যবহার করা হয়েছে। সেগুলো মোলায়েম কারামেলে মিশিয়ে মাখনযুক্ত ময়দার খোলের মধ্যে ভরে বেক করা হয়।
ফলাফল—সোনালি, খসখসে, সুগন্ধে ভরা এক দারুণ পেস্ট্রি।
বেক করার এক–দুই দিন পর খেতে সবচেয়ে ভালো লাগে।
পাতলা স্লাইসে পরিবেশন করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যদিও স্বাদ এমন যে একটি টুকরো খেয়ে থামা কঠিন।
#ফরাসি_রান্না #সারাক্ষণ_রিপোর্ট #ফিশ_স্ট্যু #সুইস_টার্ট #শীতের_রান্না #রেসিপি #স্ট্যু #ফরাসি_ঐতিহ্য
সারাক্ষণ রিপোর্ট 




















